বেলা আড়াইটার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয় বলে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মিজান মালিক ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে নুরুল ইসলামের প্রতিষ্ঠিত যমুনা ফিউচার পার্ক প্রাঙ্গণে বেলা দেড়টায় জোহর নামাজ শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বলে তিনি জানান। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
নুরুল ইসরাম বাবুল সোমবার বিকাল ৩টার ৪০ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
গত ১৪ জুন জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে নুরুল ইসলাম বাবুল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। করোনায় তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ীর চিকিৎসায় এভার কেয়ারের ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহবুদের নেতৃত্ব ১০ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর বাইরে চীনের চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সিঙ্গাপুরের মাউন্ড এলিজাবেথ হাসপাতালের দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন।
দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা বাবুল স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাবুলের স্ত্রী সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান জাতীয় সংসদের এমপি (সংরক্ষিত আসন) সালমা ইসলাম। ছেলে শামীম ইসলাম যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তার তিন মেয়ে- রোজালিন ইসলাম, মনিকা ইসলাম এবং সোনিয়া ইসলাম যমুনা গ্রুপের পরিচালক।
যমুনা গ্রুপ বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পগ্রুপ। ১৯৪৬ সালে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করা নুরুল ইসলাম বাবুল ১৯৭৪ সালে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। মেধা, দক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার মাধ্যমে একে একে শিল্প ও সেবাখাতে গড়ে তোলেন ৪১টি প্রতিষ্ঠান।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে নুরুল ইসলাম একজন আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা। বর্তমানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছে এই যমুনা গ্রুপে।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক, যমুনা নির্মাণাধীন মেরিয়টস হোটেলসহ শিল্প ও সেবাখাতে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে গ্রুপটি। ইলেট্রনিক্স, বস্ত্র, ওভেন গার্মেন্টস, রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, বেভারেজ টয়লেট্রিজ, নির্মাণ এবং আবাসন খাতে ব্যবসায় শীর্ষস্থানে রয়েছে এই গ্রুপ।
সর্বশেষ করোনার চিকিৎসায় কুড়িলে ৩০০ ফিটের কাছে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে এর প্রাথমিক আলোচনাও শেষ করেছিলেন।
করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকার অনুদানও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও করোনা মোকাবিলায় সহজ ও সুলভ মূল্যে যমুনা তৈরি করছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। গুণগত মানের দিক থেকে যমুনা গ্রুপ স্বাস্থ্যসম্মত পিপিই তৈরি করছে।