%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
বাগেরহাটে মাটির চুলার কারিগরদের জীবন চরম দুর্ভোগে
রাজিয়া বেগম প্রায় দুই যুগ ধরে মাটির চুলা তৈরি করে বিক্রি করছেন। রাজিয়ার মাও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভৈরব নদের পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে থেকে চুলা তৈরি করেছেন। প্রায় ১৫ বছর ধরে রাজিয়ার স্বামী কামরুল ইসলাম নিরুদ্দেশ রয়েছেন। এক ছেলে নিয়ে রাজিয়ার সংসার। চুলা বিক্রি করে তার সংসার চলে। চুলা বিক্রি হলে খাবার জোটে আর বিক্রি না হলে খাবারের জন্য রাজিয়াকে বিকল্প পথ খুঁজতে হয়।
বাগেরহাটে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ এই মাটির চুলা তৈরি করা হয়। কয়েক যুগ ধরে শহরের ভৈরব নদের পাড়ে এই মৃৎশিল্পের দেখা মেলে। নারীরা নিজেদের দক্ষতা আর সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে নদের চর থেকে পলিমাটি তুলে চুলা তৈরি করেন। ওই নদের পাড়ে সাজিয়ে রেখে চুলা বিক্রি করা হয়। তবে সেই চুলা তৈরির কারিগরদের কষ্টের শেষ নেই। নদের পাড়ে ঝুপড়ি ঘরেই তাদের সংসার। সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জানিয়েছে তারা। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক চুলা তৈরির কারিগরদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা গেছে, মাটি দিয়ে তৈরি করা চুলার ঐতিহ্য রয়েছে। এক সময় গ্রাম-বাংলায় রান্না-বান্নার মূলভিত্তি ছিল মাটির চুলা। শহর-বন্দর-গ্রাম থেকে সর্বত্রই চুলার ব্যবহার রয়েছে। হোক সে মাটির চুলা বা অন্য কোন চুলা। চুলা ছাড়া রান্না অসম্ভব। বাগেরহাট ভৈরব নদের চর থেকে মাটি তুলে শহর রক্ষা বাঁধের পাশে তৈরি করা হচ্ছে গ্রামীণ মাটির চুলা। কারিগররা একমুঠো দুমুঠো করে একের পর এক মাটি সাজিয়ে তৈরি করে চুলা।
চুলা তৈরির কারিগর রাজিয়া বেগম জানান, নদের চর থেকে পলিমাটি তুলে একমুখ ও দুই মুখসহ বিভিন্ন সাইজ এবং নানা ডিজাইনের চুলা তৈরি করে। একটি চুলা বিক্রির উপযোগী হতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। একটি চুলা ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। প্রায় ৩০ বছর ধরে নদের পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে থেকে তিনি মাটির চুলা তৈরি করে বিক্রি করছেন। স্বামী নিরুদ্দেশ থাকায় এক ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। চুলা বিক্রি হলে খাবার জোটে আর বিক্রি না হলে খাবার জোটে না। নিজের ঘর না থাকায় নদের পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে তার জীবন চলছে। একটি ঘরের জন্য দারে দারে ধন্না দিয়েও আজও পর্যন্ত ঘর মেলনি। সরকারের কাছে ঘরের দাবি রাজিয়ার।
মাটির চুলা তৈরির আরেক কারিগর জোসনা বেগম। তিনিও ভৈরব নদ পাড়ের বাসিন্দা। প্রায় ৩০ বছর ধরে জোসনা বেগম মাটির চুলা তৈরি করছেন। ৮ বছর আগে তার স্বামী আসলাম হওলাদার মারা গেছেন। তারও সংসার চলে চুলা বিক্রির টাকায়। শুধু রাজিয়া আর জোসনা বেগম নয় আরও বেশ কয়েকজন নারী ভৈরব নদ থেকে মাটি তুলে চুলা তৈরি করে বিক্রি করছেন। গ্রামীণ মাটির চুলা তৈরির এসব কারিগরদের সংসার চলছে অনেক কষ্টে।
পড়ুন: ব্যাপক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার মধ্যেও চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা
ব্যাপক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার মধ্যেও চলছে ব্যাটারিচালিত রিকশা
চলমান জ্বালানি সংকটের মধ্যে সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কিছু কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, সারা দেশে বিপুল সংখ্যক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু রয়েছে; যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতি আরও বাড়ছে।
জেলার পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষ জেলার বাসিন্দাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এমন ব্যাপক লোডশেডিংয়ের জন্য কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা একটি শীর্ষস্থানীয় কারণ বলে মনে করছে তারা।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার তথ্যমতে, পৌরসভায় নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা দুই হাজার ৪০০ হলেও বাস্তবে এ ধরনের প্রায় চার হাজার রিকশা রাস্তায় চলাচল করছে।
এতে বলা হয়েছে, এই যানবাহনগুলো প্রতিদিন গড়ে ৩৩ হাজার ইউনিট এবং প্রতি মাসে ৯লাখ ৯০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
এতে আরও বলা হয়, একটি পরিবার প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার মানে মোট তিন হাজার ৩০০ পরিবার এই পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে; যা ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চার্জার স্টেশনের মালিকরা জানান, রিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে তারা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা নেন। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশার চালককে দৈনিক ৩০০ টাকা দিতে হয় মালিককে।
তারা আরও জানান,‘একটি সম্পূর্ণ চার্জযুক্ত ব্যাটারি চালিত রিকশা ২০০ কিলোমিটার যেতে পারে। কখনও কখনও দীর্ঘ দূরত্ব চালানোর জন্য বিকালের মধ্যে চার্জ কমে যায়। ’
জেলার ইজিবাইক চালক মো. কালাম বলেন, এই ধরনের রিকশার একজন চালক প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করেন।
ঠাকুরগাঁও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, চার্জিং স্টেশনের জন্য আলাদা বিদ্যুতের দর রয়েছে। ‘ব্যাটারি চালিত রিকশা চার্জ করার জন্য ফ্ল্যাট রেট ৭ টাকা ৬৪ পয়সা, অফ পিক রেট ৬টাকা ৮৮ পয়সা এবং পিক রেট ৯ টাকা ৫৫ পয়সা।
মামুনুর বলেন, যারা ডবল ট্যারিফ মিটার ব্যবহার করেন তারা পিক এবং অফ পিক রেট অনুযায়ী তাদের বিল পরিশোধ করেন; আর যাদের একক ট্যারিফ মিটার, তারা ফ্ল্যাট রেট হারে তাদের বিল পরিশোধ করে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকে প্রভাবিত করে জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দৈনিক দুই ঘণ্টা লোডশেডিং এর বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পরে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সংশোধিত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘এলাকা অনুযায়ী, আমরা সারা দেশে প্রতিদিন এক ঘণ্টার লোডশেডিং শুরু করব। প্রয়োজন হলে, সিদ্ধান্তটি এক সপ্তাহ পরে পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার দেশে মোট ১৯১৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লোডশেডিং অধিকাংশ বিতরণ সংস্থার
সরকার রাত ৮ টার মধ্যে শপিং মল বন্ধ, এয়ার কুলারের সীমাবদ্ধ ব্যবহার সহ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। এছাড়া অফিসের সময় সীমিত করার এবং সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনাও চলছে।
গণপরিবহন বন্ধ, খুলনাবাসী নগর পরিবহন ফেরার অপেক্ষায়
খুলনা নগরীতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার এবং সাধারণভাবে নগরবাসীর চলাচলের জন্য মুক্তিযুদ্ধের পর খুলনা শহরে ‘নগর পরিবহন’ নামে একটি পরিবহন পরিষেবা চালু করা হয়। প্রাথমিকভাবে ৬০টি বাস দিয়ে এই সেবা চালু হয়। ২০১৭ সালে ৫৫টি বাসই চলাচলের যোগ্যতা হারায়।
২০১৮ সালে পরিবহন পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৮ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ‘নগর পরিবহন’ পুনরায় চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ জনপ্রিয়তা পান। তবে চার বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করলেও এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
যদিও সেই প্রতিশ্রুতিতে খালেক নির্বাচিত হয়েছেন এবং গত চার বছর ধরে কেসিসি মেয়র হলেও এখন পর্যন্ত তিনি নগর পরিবন সেবা চালু করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতি ২০১৯ সালে গণপরিবহন হিসেবে চারটি বাস চালু করেছে। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাপের মুখে পরে পরিষেবাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া ২০১৬ সালে বিআরটিসি খুলনার সড়কে পাঁচটি দোতলা বাস (ডাবল ডেকার) নামিয়েছিল। সেটিও অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে নগর পরিবহন সার্ভিস আবার চালুর দাবি জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফুন্নাহার পলাশী বলেন, প্রতিদিন আমাকে কাজের জন্য ডাকবাংলো থেকে ফুলতলা যেতে হয়। তবে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারব কিনা এই নিয়ে চিন্তায় থাকি। নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থার অভাবে আমার মতো মানুষদের জীবনকে প্রতিনিয়ত বিপদে ফেলছে।
পলাশী জানান, মাহেন্দ্র চালকরা বেশি যাত্রী নেয়ার জন্য রাস্তায় অসংখ্যবার থামায়, এতে করে মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে।তাছাড়া মাহেন্দ্র চালকরা তাদের যানবাহন যাত্রী ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাড়ে না। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়। এছাড়া মহেন্দ্রগুলো থেকে বিকট শব্দ বের হওয়ায় যাত্রীদের শোনার ক্ষমতাও ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় লণ্ডভণ্ড সিলেট-ছাতক রেলপথ
খুলনার রূপসা উপজেলার নতুন বাজার এলাকার ব্যবসায়ী খলিদ হোসাইন বলেন, অটোরিকশা চালকদের অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে সীমিত আয়ের মানুষজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তিনি বলেন, সীমিত আয়ের চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের আয়ের সিংহভাগই যাতায়াত খরচে চলে যায়। তবে গণপরিবহন ব্যবস্থা থাকলে এমনটা হতো না। এ ছাড়া অটোরিকশার কারণে যানজটের ফলে এক সময়ের সুন্দর খুলনা শহর এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, তারা তাদের উদ্বেগে গণপরিবহন চালুর দাবিতে একাধিক মানববন্ধন করেছেন, কিন্তু সব বিফলে গেছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একই দাবিতে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছি। ১৭ জুলাই খুলনা সিটি মেয়রেরর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। ১৮ জুলাই খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে ও ১৯ জুলাই বিআরটিএর পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এছাড়া একই দাবিতে ২৩ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে নিরাপদ সড়ক চাই।
আরও পড়ুন: দৃশ্যমান হলো রূপসা রেল সেতু
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। আগে চলতো এখন চলে না কেন জানি না। এটা প্রশাসন জানে। কেউ যদি চালাতে চায় তার নিজ দায়িত্বে চালাবে।
তিনি বলেন, আমাদের কয়েকটি রাস্তা একনেকে পাশ আছে সেগুলো করতে পারলে আমরা ‘নগর পরিবহন’ চালু করবো। যেহেতু একনেকে পাশ করা রাস্তাগুলো কেডিএ করেনি। রাস্তা প্রস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি নতুন কোনো গাড়ি আনতে পারবো না।
জেলে-পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: নিজস্ব রূপে ফিরেছে সুন্দরবন
জুন, জুলাই ও আগস্ট তিন মাস সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজনন মৌসুম। এই সময়ে বনের নদী-খালে মাছ শিকারে বনবিভাগের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এছাড়া নির্দিষ্ট এ সময়ে বনের অভ্যন্তরে ও অভয়ারণ্যে পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর ফলে যেন নিজস্ব রূপে ফিরেছে অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘বিশ্বখ্যাত সুন্দরবন দেখার আগ্রহ রয়েছে দেশ-বিদেশের সব বয়সী মানুষের। প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে সুন্দরবনে ছুটে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে সেই ভ্রমণের সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘সুনসান নীরবতায় বনের প্রকৃতিতে ভিন্ন রূপের সৃষ্টি হয়েছে। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বনজুড়ে নীরবতা বিরাজ করছে। গাছপালা যেন হাত বাড়িয়ে ডাকছে। পাখির কলকাকলীতেও মুখর সুন্দরবন। সেই ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর দেখা মিলছে।’
জানা গেছে, নানা প্রজাতির গাছপালা, পশুপাখি ও প্রাণীর বিচরণস্থল সুন্দরবনে সারা বছর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে দর্শনার্থীরা শুধু হরিণ, বানর, কচ্ছপ ও কুমিরের দেখা পান। বাকি সব প্রাণী মানুষের কোলাহল ও নৌযানের শব্দে বনের গহীনে বিচরণ করে। কিন্তু গত দেড় মাস ধরে মানুষের পদচারণা ও নৌযানের শব্দ না থাকায় প্রাণীর ঝাঁক চলে আসছে নদী ও খালের পাড়সহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিনের নীরবতার কারণে আগে যে সব প্রাণী অহরহ দেখা যেতো না, সেগুলোর দেখা মিলছে। পুরো সুন্দরবনে বছরে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ভ্রমণ করে থাকেন। আর তাদের পরিবহনে ব্যবহার হয় প্রায় ২৫ হাজার নৌযান। গত ১ জুন থেকে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। তাই মানুষ ও নৌযান চলাচল না থাকায় বনের পরিবেশ পাল্টে গেছে।’
পড়ুন: সুন্দরবনে ৩ মাস মাছ ধরা নিষেধ
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
আশ্রয়ণ: বাগেরহাটে শেফালীসহ ৪৫ পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
দীর্ঘ ৪০ বছরের সংসার জীবনে শেফালী দাসের বসতঘর কমপক্ষে ২০ বার গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে অথবা ভাঙা পড়েছে। রাস্তার পাশে আবার কখনো বা নদীর চরে বা অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর বেঁধে বসতি গড়ে ওই নারী। স্বামী আর তিন মেয়েকে নিয়ে এইভাবে সংসার চলছিল ৬০ বছর বয়সী ভূমিহীন শেফালী দাসের।
নিজেরা স্থায়ীভাবে একটি ঘর তৈরি করে বসবাস করবে এমন স্বপ্ন দেখেছিল ওই পরিবারটি। বাগেরহাটের রামপালের গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্পে শেফালী দাসকে জমিসহ ঘর দিয়ে তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পুরণ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নতুন ঘরের খুঁশিতে আত্মহারা শেফালী দাস আনন্দ অশ্রু ঝড়ালেন। এখন তিনি স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন। মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৪৫টি পরিবার জমিসহ গৃহ পাচ্ছেন।
শুধু শেফালী দাস নয়, গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকেল্পর বাসিন্দা বিউটি সরকার, তাসলিমা বেগম, সাবেরা বেগম, ফুলজান বেগম, আফরোজা বেগম, ইব্রাহিম হাওলাদার এবং ইউনুছ তালুকদারসহ সবার জীবনের গল্প প্রায় একই রকম। ভূমিহীন ওই সব পরিবারগুলোর নদীর চরে, কখনো অন্যের জমিতে ঝুঁপড়ি ঘরে তাদের জীবন চলছিল। সবার স্বপ্ন ছিল একখন্ড জমিতে তাদের নিজেদের ঘর হবে। কিন্তু ভূমিহীন ওই সব পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ছিল না। মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমি ও গৃহ পেয়ে এসব ভূমিহীনদের স্বপ্ন পুরণ হচ্ছে।
পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা
স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা
জনগণের দোরগোড়ায় টেকসই স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে দেশের স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ৮টি বিভাগীয় হাসপাতালে ১০০ শয্যার ক্যান্সার ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে।
এছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপনের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও চলছে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, সৌদি সরকারের সহায়তায় একটি প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিট স্থাপন শুরু করেছে সরকার।
এছাড়া জেলা সদর পর্যায়ে ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ‘মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
নথিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৫ হাজার শয্যার বিশ্বমানের আধুনিক হাসপাতালে পুনর্নির্মাণ ও রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে।
এছাড়া পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ের মেডিকেল কলেজে পূর্ণাঙ্গ মানসিক স্বাস্থ্য ইউনিট স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
পড়ুন: জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
জনবল সংকটের কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) পরিষেবা প্রায় নয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে করে জেলায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে কারণ ইতোমধ্যেই দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে।
জেলার বাসিন্দারা বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটগুলো খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সূত্র মতে, ২০২০ সালে ২১ মার্চ ‘সাজেদা ফাউন্ডেশন’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি করে যে তারা আইসিইউ এবং এইচডিইউ রোগীদের নিজস্ব জনবল এবং ভেন্টিলেটরসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে দুই মাসের জন্য চিকিৎসা দেবে।
চুক্তি অনুযায়ী, ফাউন্ডেশন পরে হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় ছয়টি আইসিইউ শয্যা, আটটি এইচডিইউ শয্যা, দুটি ভেন্টিলেটর এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করে।
আরও পড়ুন: বন্যায় লণ্ডভণ্ড সিলেট-ছাতক রেলপথ
ফাউন্ডেশনের ৪৪ জন সদস্যের একটি দল এর মধ্যে ১০ জন চিকিৎসক, ১৪ জন আইসিইউ স্টাফ নার্স, সাত জন ওয়ার্ডবয়, একজন করে ল্যাব টেকনোলজিস্ট ও এক্স-রে টেকনোলজিস্ট এবং অন্যান্যরা মিলে একই বছর ২৬ জুলাই থেকে বিশেষ করে করোনার সময় রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার গত বছরের ৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিটগুলোর উদ্বোধন করলেও ফাউন্ডেশনটি অনেক আগেই রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিল।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন ৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিগুলোর উদ্বোধন করেন। তবে এর অনেক আগেই ফাউন্ডেশনটি রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিল।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকল যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকলেও জনবল সংকটের কারণে ৯ মাস আইসিইউ বিভাগ এবং এইচডিইউ পরিষেবাটি বন্ধ রয়েছে। কারণ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ফাউন্ডেশন তাদের জনবল নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা আমিনু ইসলাম ও আব্দুল কাদের ইউএনবিকে বলেন, গত বছর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালুর খবর পেয়ে তারা খুবই খুশি হয়েছিলেন, কারণ এই জেলায় সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালে আইসিইউ বেড নেই।
আরও পড়ুন: দৃশ্যমান হলো রূপসা রেল সেতু
চালুর দুই মাস পর দুটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা আইসিইউও এইচডিইউ ইউনিটগুলো স্থায়ীভাবে চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের তৎকালীন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাফিজ উল্লাহ সানি ইউএনবিকে জানিয়েছে, চুক্তি অনুসারে করোনা মহামারি সময়ে চুয়াডাঙ্গায় সাজেদা ফাউন্ডেশন সরঞ্জাম ও জনবল দিয়ে দুই মাস আইসিইউ এবং এইচডিইউ ইউনিটের সেবা দিয়েছে।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সাজেদা ফাউন্ডেশন আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিটটির সম্পূর্ণ সেটআপ হাসপাতালগুলোকে দান করে দেয় এবং জনবল চলে যায়।
তিনি জানান, তারা একটি সার্ভে করে দেখেছেনে যে জনবলের স্বল্পতার কারণে ইউনিটগুলোর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ব্যয়বহুল ভেন্টিলেটরসহ সরঞ্জামগুলো অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থাকায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান ইউএনবিকে জানান, ফাউন্ডেশন রোগীদের চিকিৎসা ও সরঞ্জাম দান করার সময় তিনি হাসপাতালের দায়িত্বে ছিলেন না।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: খুলনার পর্যটন শিল্পের দুয়ার উন্মোচন
তিনি জানান, কার্যকরী জনবল নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না হওয়ায় আইসিইউ বিভাগ থাকলেও তা চালানো সম্ভব নয়। তাই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ডা. আতাউর বলেন, আমরা বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইউনিটগুলো আবারও চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি।
রেললাইনের পতিত জমিতে আনারস চাষে সফল কৃষক
কৃষক আব্দুল কাদেরের বাড়িতে তার এক বন্ধু বেড়াতে এলে সঙ্গে নিয়ে আসেন আনারকলি জাতের আনারস। সুমিষ্ট সেই আনারস খেয়ে স্বপ্ন দেখেন এর জাত বাড়ানোর। বাড়ির পাশে এর কাণ্ডও রোপণ করেন। পরে ওই গাছে ফল দেখে অবাক কাদের চিন্তা করেন এ আনারসের বাণিজ্যিক চাষাবাদের।
তবে বিপত্তি বাঁধে উপযুক্ত জমি নিয়ে। পানি জমে না এমন ঢালু ও উঁচু জমি আনারস চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু লালমনিরহাটের জমি সব সমতল হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও আনারস চাষে লাভের সুযোগ খুবই কম।
তবে অদম্য কৃষক আব্দুল কাদের ২০০৮ সালে বাড়ির পাশে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল লাইনের ঢালু জমিতেই পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেন তার স্বপ্নের আনারস। এতে সফলও হন তিনি।
আরও পড়ুন: মাচায় ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন!
কৃষক আব্দুল কাদের লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের লাল ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা।
তিনি বলেন, আনারকলি জাতের এ আনারস ভারতের শিলিগুরিতে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের হয়। তবে তার বাগানে ফলেছে আড়াই থেকে তিন কেজি ওজন পর্যন্ত। ওজন কিছুটা কম হলেও স্বাদে কমতি নেই। এই জন্য এর চাহিদাও অনেক বেশি।
পদ্মা সেতুর কারণে বাগেরহাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর ভিড়
ঈদের ছুটিতে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ষাট গম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাট জেলার সব দর্শনীয় স্থান।
রবিবার বাংলাদেশে পালিত হয়েছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এলাকার ঐতিহ্যবাহী স্থানে ভিড় করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করছে শিশুরা। বিনোদন পার্কগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ ঈদ উপলক্ষে সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করেছে।
মঙ্গলবার ষাট গম্বুজ মসজিদ, হযরত পীর খানজাহান মাজার, বারাকপুর সুন্দরবন রিসোর্টে সাম্প্রতিক পরিদর্শনের সময় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী দেখা গেছে। কেউ কেউ তাদের মোবাইল ফোন দিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন স্মৃতি হিসেবে আনন্দের মুহূর্তগুলো ক্যাপচার করতে আবার কেউ কেউ করেছেন ভিডিও।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে তিন দিনে ১১ কোটি টাকা টোল আদায়
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে।
ষাট গম্বুজ মসজিদ ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত হয়েছে। ৬০০ বছরেরও বেশি আগে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
যদিও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যটি সারা বছরই দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে, তবে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের সংখ্যা থাকে বেশি। অনেকেই এখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পর্যটকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও মাজার শরিফ, খাঞ্জেলি দিঘি, মোহাম্মদ তাহেরের মাজার, জিন্দাপীরের মাজার, একগম্বুজ মসজিদ, বিবি বেগনীর মসজিদ, পচা দিঘি, চুনখোলা মসজিদ ও সিংরা মসজিদেও পর্যটকদের ভিড় ছিল।
ঢাকা, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে দর্শনার্থীরা জেলার ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখতে ভিড় জমায় এখানে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে টোল আদায়ে নতুন রেকর্ড
এছাড়া অযোধ্যা মঠ, বারাকপুর সুন্দরবন রিসোর্ট, বাগেরবাজার পৌরসভা পার্ক, চুলকাঠি, চন্দ্রমহল পার্কও ছিল দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত।
দুই দশক ভোটবঞ্চিত নারায়ণপুরের অর্ধলাখ মানুষ
একটি ঝু্লে থাকা মামলার কারণে দুই দশক যাবত ভোট দিতে পারছেন না মতলব দক্ষিণ উপজেলার ছয় ইউনিয়নের মধ্যে সমৃদ্ধ ‘নারায়ণপুর’ইউনিয়নের অর্ধলাখ বাসিন্দা। এ ব্যাপারে সকলের মনে দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থবির হয়ে আছে এলাকার সব ধরনের উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘গ্রাম হবে শহর’ তা আর বাস্তবায়িতই হচ্ছে না অন্তত এই নারায়ণপুরে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সুত্র জানায়, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নকে সরকার, পৌরসভা ঘোষণা করেছিল ২০১০ সালে। এ ব্যাপারে সরকারি গ্যাজেটও প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই সময়ের স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর এ পৌরসভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন। তিনমাস একজন পৌর প্রশাসকও দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে এর সীমানা নির্ধারণ ( ল্যান্ড ডিমারকেশন) সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে উচ্চ আদালতে দায়ের করা হয় একটি মামলা। এর সমাধান হয়নি দীঘর্কাল যাবত। মামলাটি এখনও চলমান। মামলার এ জটিলতায় ইতোমধ্যে প্রায় ১২ বছর চলে গেলো। এর আগে এ ইউনিয়নে সাত বছরে কোন নির্বাচনও হয়নি। কেবল জাতীয়/সংসদীয় নির্বাচন হয়েছে কয়েকবার। মামলার কারণে গত দুই দশক এ ইউনিয়নের/এলাকার ৫০ হাজার লোক ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নি। এর মধ্যে অন্যান্য ইউনিয়নে মহা আনন্দমুখর পরিবেশে ৩ বার ইউনিয়ন পরিষদ ভোট হয়েছে । দু বার জাতীয় নির্বাচন হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে দেয়াল ধসে নিহত ১, আহত ৩
সবর্শেষ এ ইউনিয়নে ভোট হয়েছিল ২০০৩ সালে-জানান, উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাহের ভুইয়া।
ফলে দুই দশক ধরে ভোটবঞ্চিত ওই এলাকার ৫০ হাজার নারী- পুরুষ। স্থবির হয়ে আছে সকল উন্নয়ন কাজ ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৯ দশমিক ২ বর্গ কিলোমিটারের এ ইউনিয়নে ৫০ হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। আছে ৯টি ওয়ার্ড। ৩০ টির মতো মহল্লা। নারায়ণপুর বাজার মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি বিখ্যাত ও জমজমাট বাজার- যা দিনরাত ব্যস্ত থাকে। এখানে আছে ডিগ্রি কলেজ, হাই স্কুল ও অনেক প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাহের ভুইয়া ইউএনবি কে জানান, ২০০৩ সালে সবশেষ ভোট হয়েছিল। ২০১০ সালে নারায়ণপুর ইউনিয়নকে পৌরসভা ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই বছরের ১৫ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নারায়ণপুর পৌরসভা গেজেট প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। অথচ পৌরসভার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল মোস্তফা তালুকদার। এরপর থেকেই ঝুলে আছে এ ইউনিয়ন এলাকার নির্বাচন। যদিও সাধারণ মানুষ চায় সব সমস্যার সমাধান করে দ্রুত নির্বাচন দেয়া হোক। আমরা ভোট নিতে প্রস্তুত ।
তিনি জানান, এ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৩২০১৭। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৫১৯৬ । এটা পুরনো ভোটার তালিকা। মামলা নিষ্পত্তি হলে ভোটার সংখ্যা অনেক বাড়বে।
কারণ গত ২০ বছরে অনেক ভোটার বেড়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসার তোফায়েল হোসেন জানান, মামলা উঠে গেলে আপডেট ভোটার তালিকা হবে। ভোটার বাড়বে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ২ মাদরাসা শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পুকুর থেকে যুবকের লাশ উদ্বার