%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে থামছে না মৃত্যুর মিছিল, এক বছরে নিহত ৩২০
ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দুটিতে থামছে না মৃত্যুর মিছিল। রুট দুটিতে গত ১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩২০ জন, আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন।
অতিরিক্ত গতি ও অদক্ষ চালকের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে বলা হচ্ছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
গত এক বছরে এই ২ মহাসড়কে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩২০জন। আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন।
সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জন মারা যান। এর আগে ৮ মার্চ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাস উল্টে ৩ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা: ১৮ মাসের ইয়াসিন বাবার পর মাকে হারালো, মৃত্যু বেড়ে ১৫
এছাড়াও জানুয়ারি মাসে ২টি ঘটনায় ফরিদপুরে মহাসড়কে ৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল, মোটরসাইকেলের অনিয়মতান্ত্রিক চলাচল ও পথচারী পারাপারে অসতর্কতা কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে বলে মনে করছেন হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে বা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার এবং জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সড়কে মোটরসাইকেলের কারণে নিরাপত্তা সংকট বাড়ছে
গত ১ বছরে এক্সপ্রেসওয়েতে ১৩৫টি দুর্ঘটনায় ১৩১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ভাঙ্গা অংশে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৬৭ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৯৪ জন।
হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিওনের আওতাধীন ৩৮১ কিলোমিটার মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৫টি হাইওয়ে থানা, একটি ফাঁড়ি ও দুইটি ক্যাম্প।
হাইওয়ে পুলিশ মাদারীপুর রিজিওন ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত এক বছরে মহাসড়ক দুটিতে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে যানবাহন চালানোর দায়ে ২৮ হাজার ৪০৪টি যানবাহনের মালিককে মামলা দিয়ে ৯ কোটি ৪৩ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দুটিতে গত এক বছরে ৪৩২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সড়কে আমাদের চলাচলে আরও সচেতন হতে হবে। তা না হলে থামবে না মৃত্যুর মিছিল। শুধু যাত্রীদেরই নয়, মালিক ও শ্রমিকদের বড় ভূমিকা রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে মহাসড়ক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: সড়ক যোগাযোগে উন্নতির কারণে ঈদযাত্রায় কমেছে নৌপথের যাত্রী
জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি গ্যাস যোগ করতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা
২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ফিট পার ডে) গ্যাস যুক্ত করার আশায় দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে মোট ৪৮টি কূপ খনন সম্পন্ন করতে চায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলা।
আগামী বছরের মধ্যে পেট্রোবাংলার নিজস্ব কোম্পানি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ কাজ করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সময়মতো পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের বিষয়ে বেশ সিরিয়াস এবং যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া এড়াতে বাধ্যতামূলক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার বিধান থেকে ছাড় চাইব।’
বিদ্যুৎ, শিল্পসহ বিভিন্ন খাত যখন গ্যাস সংকটের সম্মুখীন তখন জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ এমএমসিএফডি বা প্রতিদিন মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: নসরুল হামিদ
ইউএনবির হাতে আসা এক সরকারি নথি অনুসারে, পরিকল্পিত ৪৮টি কূপের মধ্যে ২৩টি বাপেক্সের (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড) রিগ (কূপ খননযন্ত্র) ব্যবহার করে খনন করা হবে। বাকি ২৫টি ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় বিদ্যমান অনশোর গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে ঠিকাদারদের দ্বারা খনন করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেট্রোবাংলার আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে সরকারের চলমান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব কূপ খনন করা হবে।’
তবে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু কূপের অনুমোদন প্রক্রিয়া বাকি থাকায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সূত্র জানায়, রিজার্ভ কমে যাওয়ায় গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে পেট্রোবাংলা এ কর্মসূচি হাতে নেয়।
দেশের মোট ২৯টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে এবং প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস চাহিদা মেটাতে আরও ১ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সেলারেট এনার্জির এলএনজি সরবরাহ চুক্তি সই
কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় ক্ষেত্রগুলোর গ্যাস উৎপাদন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, গ্যাসের মজুদ কমে যাচ্ছে।
বর্তমানে দেশে মোট ৩০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাসের মধ্যে ৯ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। ২১ টিসিএফ ইতোমধ্যে উত্তোলন করা হয়েছে।
সারা দেশে গ্যাসভিত্তিক অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও নতুন নতুন শিল্পকারখানা স্থাপিত হওয়ায় গ্যাসের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।
পেট্রোবাংলার একটি প্রক্ষেপণের দৃশ্য-২ অনুযায়ী, ২০২৯-৩০ সালে দেশে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ হাজার ৯২ এমএমসিএফডি, ২০৩৪-৩৫ সালে ৬ হাজার ৭২ এমএমসিএফডি এবং ২০৪০-৪১ সালে ৬ হাজার ৯৮৬ এমএমসিএফডি।
পেট্রোবাংলার আরেক কর্মকর্তা জানান, প্রকৃতপক্ষে ৪৮টি কূপ খননের পরিকল্পনা চলমান পরিকল্পনারই অংশ, যার আওতায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কূপ খননের কাজ শেষ হয়েছে।
এসব কূপের মধ্যে রয়েছে ভোলা উত্তর-২, টগবী-১, ইলিশা-১, শ্রীকাইল উত্তর-১, শরীয়তপুর-১, তিতাস-২৪, বিয়ানীবাজার-১, কৈলাশটিলা-২, সিলেট-১০, রশিদপুর-২ ও সুন্দলপুর-৩।
নতুন খননকৃত এসব কূপ এখন জাতীয় গ্রিডে ১২৬ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহে অবদান রাখছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অফশোর তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহ্বান করেছে পেট্রোবাংলা
টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য মূলধন ব্যয় বাড়াবে সরকার: সরকারি নথি
টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মধ্যমেয়াদি (২০২৫-২৬ অর্থবছর) মূলধন ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
সরকার মনে করছে মূলধন ব্যয় বাড়ানোর বিকল্প নেই, তাই এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা অর্থনীতির উৎপাদন স্তরে গভীর প্রভাব ফেলছে।
চলতি সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নথি থেকে ইউএনবি জানতে পেরেছে, ‘মধ্যমেয়াদি মূলধন ব্যয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ডব্লিউটিওর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক কাঠামো সমন্বয়ের উদ্যোগ এনবিআরের
২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা নন-এডিপি মূলধন ব্যয়ের মাধ্যমে মূলধন বিনিয়োগ বরাদ্দ করেছে।
'মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬)' শীর্ষক সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী তা জিডিপির ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এডিপির লক্ষ্য হবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ, সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূর করা।
এডিপি হচ্ছে সরকারি খাতের মূলধন গঠনের প্রধান উৎস। তথ্য বলছে, বিভিন্ন অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নের তারতম্য হয়।
২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যে বাজেট বরাদ্দের শতকরা হিসেবে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৬ থেকে ৮৮ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জিডিপির শতকরা হিসেবে বাস্তবায়ন হয়েছে ৩ দশমিক ৬ থেকে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
নথিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়াতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বার্ষিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২৬ অর্থবছরে কৃষিতে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ
সরকার আইবিএএস ++ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও চালু করেছে, সম্পর্কিত সব মন্ত্রণালয়কে এই প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করেছে এবং তহবিল পরিচালনা ও প্রকাশের প্রক্রিয়াটি সহজ করেছে।
এছাড়া গত অর্থবছরে প্রকল্প পরিচালকদের সরকারি তহবিলের সব কিস্তি ছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়।
এসব উদ্যোগ প্রকল্প অর্থের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, অপচয় রোধ এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মধ্যমেয়াদে এডিপির আকার অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হবে।
এডিপি এবং নন-এডিপি মূলধন ব্যয় সরকারি ব্যয়ের মাধ্যমে মূলধন গঠনের দুটি প্রধান বিভাগ।
এছাড়া মূলধন ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে ঋণ ও অগ্রিম, রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থায়নকৃত উন্নয়ন কর্মসূচি, নন-এডিপি প্রকল্প এবং নন-এডিপি এফএফডব্লিউ (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) ও হস্তান্তর।
উন্নয়ন বাজেটের প্রাক্কলিত আকার ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। উন্নয়ন বাজেটের প্রধান উপাদান এডিপি, এর আনুষঙ্গিক ব্যয় ৯৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গল্প অনেক দেশের জন্য অনুপ্রেরণা: বিশ্বব্যাংক এমডি
সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আরও ৩ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সরকারের অনুমোদন পেতে বেসরকারি খাতে আরও তিনটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরকারি সূত্র মতে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১০০ মেগাওয়াট, জামালপুরের ইসলামপুরে ৩০০ মেগাওয়াট এবং রাজবাড়ীর সদর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।
বাঁশখালীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে যে হংকংয়ের হুইহেং উইন্ড পাওয়ার লিমিটেড ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড বাংলাদেশ। ইসলামপুরের ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে এসএএল-জিটেক কনসোর্টিয়াম এবং রাজবাড়ীর ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে কনসোর্টিয়াম অব সানগ্রো রিনিউয়েবল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট পিটিই এবং থিয়ে পাওয়ার (সিঙ্গাপুর)।
আরও পড়ুন: বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগ ইতোমধ্যে তিনটি কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তিনটি পৃথক প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘সিসিজিপি প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করলে বিদ্যুৎ বিভাগ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) তাদের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করতে বলবে।’
তবে এসব কেন্দ্র থেকে সৌরবিদ্যুতের শুল্কের বিস্তারিত প্রকাশ না করলেও প্রায় ১০ মার্কিন সেন্টের শুল্কে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় বিপিডিবি এসব কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কিনবে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌর বিদ্যুতের অংশ বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। এর আওতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যমান ৩ শতাংশের নিচে থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি জরুরি: নসরুল হামিদ
তিনি ২০ মার্চ বার্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ডায়ালগ ২০২৪-এ 'জ্বালানি খাতে কপ২৮ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন - সুযোগ, সীমাবদ্ধতা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ: দ্য ওয়ে হেড' শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের মাল্টি-স্টেকহোল্ডার গোলটেবিল বৈঠকে দেশের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বর্তমানে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ৯৮৯ দশমিক ৬১ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭১ দশমিক ৪৮ মেগাওয়াট অগ্রিড এবং অবশিষ্ট ৬১৮ দশমিক ১৩টি অন-গ্রিড।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি এবং অফ-গ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫ হাজার মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ বিভাগের দাপ্তরিক নথিপত্রে দেখা যায়, গত তিন বছরে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৬০৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রায় ১৩টি সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
নথিগুলোর উল্লেখ করে এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) এবং মনোনয়নের বিজ্ঞপ্তি (এলওআই) জারি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প (৩০+৭০) ১০০ মেগাওয়াট এবং বাকি ১১টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়ছে লোডশেডিং-তাপপ্রবাহ
সড়ক যোগাযোগে উন্নতির কারণে ঈদযাত্রায় কমেছে নৌপথের যাত্রী
পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এই পরিবর্তন স্পষ্ট চোখে পড়ে। এজন্য ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত লঞ্চ চালু করা হবে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
নৌপথের যাত্রার চ্যালেঞ্জগুলো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভ্রমণের সময় দীর্ঘ হওয়ায় লঞ্চ মালিকদের পরিচালন ব্যয়ও বেশি হয়। এর ফলে ভ্রমণকারীরা নৌপথে যাত্রা বাতিল করে বিকল্প পথে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপথ যাত্রী পরিবহন সমিতির (বিআইডব্লিউপিসিএ) সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে।’
আরও পড়ুন: বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৭টায়
উপরন্তু সদরঘাট টার্মিনালের দিকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণেও যাত্রীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এর কারণেও নৌপথে যাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন মাত্র ৫০-৫৫টি লঞ্চ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এগুলোতে আগের সময়ের চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।
বাদল জোর দিয়ে বলেন, যাত্রী না বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে ঈদের ছুটির ভিড় দেখা গেলে পরিষেবা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
অতীতে ঈদের মৌসুমে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যা্ত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এ বছর দৃশ্যপট আমূল বদলে গেছে, যাত্রী সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মন্দা সত্ত্বেও, যাত্রীদের সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে, ভাড়া বাড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের নৌপথের ওপর নির্ভরশীলতার কথা তুলে ধরে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া বলেন, বরিশাল ও চাঁদপুর থেকে যাত্রী কমে গেছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে উল্লেখ করেছেন, সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে লঞ্চ ভ্রমণ অনেকেরই পছন্দের। তবে বিভিন্ন কারণে গত আঠারো মাসে এর পৃষ্ঠপোষকতা ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আশীষ দে বলেন, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এবারের ঈদে আনুমানিক ২৫ লাখ মানুষ লঞ্চে ঢাকা ছাড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির জানান, সদরঘাটে ঈদের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটি যত ঘনিয়ে আসছে যাত্রী সংখ্যা ততই বাড়তে পারে বলে আশাবাদী তিনি।
আরও পড়ুন: ঈদে পর্যটন খাতে মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের
ঈদে পর্যটন খাতে মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের
পৃথিবীর দীর্ঘতম (১২০ কিলোমিটার) প্রাকৃতিক সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে চলতি পর্যটন মৌসুমের বড় অংশ কেটেছে পর্যটক খরায়। জাতীয় নির্বাচন, মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা ও ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ মৌসুমে পর্যটন খাত ছিল বিশাল ক্ষতির মুখোমুখি। পর্যটকশূন্যতার এই মন্দা কাটতে শুরু করে জানুয়ারির শেষের দিক থেকে। কক্সবাজারমুখী হতে শুরু করে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতের কারণে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ছেদ পড়ে। অধিকাংশ পর্যটক পছন্দের সেন্টমার্টিনে যেতে না পেরে অতৃপ্ত মনে কক্সবাজার ছাড়েন। নাফ নদীর সীমান্তে নিরাপত্তা বিবেচনায় ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় এবার পর্যটকরা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ পাননি। তারপরও গত দেড় মাসেই কক্সবাজার শহর ও আশপাশের পর্যটনকেন্দ্রে ভরপুর পর্যটক ছিল। হইহুল্লোড়-উচ্ছ্বাসের সেই সমুদ্রসৈকতে রমজান মাস জুড়ে এখন চলছে সুনসান নীরবতা।
এবার ঈদের ছুটির সঙ্গে পড়ছে পয়লা বৈশাখ। এ সময়ে ৮ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
এর মধ্যে পর্যটকনির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও সংস্কারমূলক কাজ চালানো হচ্ছে। অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁয় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় মেরামত করানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঈদের পরে মাসখানেক পর্যটকের আনাগোনা বাড়বে বলে আশা করেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ফলে পর্যটক বরণে ব্যবসায়ীদের নানা উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শতাধিক মৃত জেলিফিশ
ঈদকে ঘিরে কক্সবাজার ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে নতুন করে সাজানো হয়েছে নানান স্পট। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের আগমন হবে এমন প্রত্যাশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসনের তথ্যসেবা ও অভিযোগকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা বিচ কর্মী বেলাল হোসেন বলেন, হাতে গোনা পর্যটক নামছেন সৈকতে। যারা আসছেন, তাদের বেশিরভাগই স্থানীয়। এতে তথ্যসেবা কেন্দ্রে খুব একটা চাপ নেই।
সৈকতে তারকা মানের হোটেল কক্স টুডে’র জেনারেল ম্যানেজার (রিজার্ভেশন) আবু তালেব শাহ বলেন, ‘আমাদের হোটেলে কক্ষ আছে ১৭০টি। হোটেলটির পর্যটক নেই বললেই চলে। যারা আসছেন, তাদের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে হোটেলের সংস্কারকাজও চলছে।’
ঈদ ও বাংলা নববর্ষে পর্যটক সমাগমের সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি।
একই অবস্থা শহরের অভিজাত হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সায়মন রিসোর্ট, সি গাল, লং বিচ, সি প্যালেস, হোটেল কল্লোল, রয়েল রিসোর্টসহ মাঝারি হোটেল ও রিসোর্টগুলোর।
শহরের দরিয়া ট্যুর অপারেটরের পরিচালক মো. মোরশেদ জানান, কক্সবাজারে ট্রেন চলাচলের কারণে হাজারখানেক নিয়মিত পর্যটক আসছেন। ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটি উপলক্ষে এখন থেকেই হোটেল বুকিং দিচ্ছেন পর্যটকরা। এ সময় ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের বরণে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন অফার দিচ্ছেন।
কক্সবাজার হোটেল, রিসোর্ট গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, এখন হোটেল-রেস্তোরাঁর সংস্কারকাজ চলছে। এর মধ্যে কর্মচারীদের একটি বড় অংশকে ঈদের অগ্রিম বেতন-বোনাস দিয়ে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘রোজা শেষে ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের টানা ৭ থেকে ৮ দিনের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম হবে। তখন পর্যটকনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যেও চাঙাভাব দেখা দেবে। এ জন্য পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
আবুল কাসেম সিকদার জানান, পর্যটক টানতে রোজার মাসে হোটেল-রিসোর্ট ও গেস্টহাউসের কক্ষ ভাড়ায় সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। ঈদ পর্যন্ত এ ছাড় চলবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সম্প্রতি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া টানা ছুটি, বিশেষ দিনে বাড়তি টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়।’
জেলা জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, ‘পর্যটকদের সেবা ও ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। পর্যটকরা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য পর্যটন এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে।’
আরও পড়ুন: বেড়াতে এসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শিশুর মৃত্যু
বাকৃবি: একজনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই ৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বর্তমানে অধ্যয়ন করছেন ৬ হাজার ১৯৯ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া প্রতি বছর স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হচ্ছেন ১ হাজার ১১৬ জন শিক্ষার্থী। তবে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
উন্নত বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকলেও বাকৃবির হেল্থ কেয়ার সেন্টারে আলাদা কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ইউনিট বা স্থায়ী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। ফলে এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা হতাশা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্ণতা থেকে সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট শিক্ষক ৫৮৭ জন। বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের কাউন্সেলিং করার নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও তা নিয়মিত হয় না বলে জানা যায়।
ফলে পড়াশোনা ও পরীক্ষার মানসিক চাপ, সামান্য ঘটনায় অসহিষ্ণু আচরণ, রাগ-ক্ষোভের জেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, ছোট খাটো বিষয় থেকে ঝগড়া, মারামারি, অসদাচারণের মতো একাধিক ঘটনা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
ঈদের কেনাকাটা ও ভ্রমণে কার্ড পেমেন্টে মোটা অঙ্কের ছাড় দিচ্ছে ব্যাংকগুলো
ঈদের কেনাকাটা, ভ্রমণ, ইফতার ও সেহরিতে খাওয়ার আনন্দ বাড়িয়ে দিচ্ছে ক্যাশলেস পেমেন্ট। ব্যাংকগুলোর মোটা অঙ্কের ছাড় ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) কারণে ক্রেডিট কার্ড হোল্ডাররা এ সুবিধার সর্বোত্তম ব্যবহার করছেন।
বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে এবারের ঈদ উপলক্ষে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়, ক্যাশব্যাক ও বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।
ঈদের পোশাক, জুতা, গয়নাসহ বিভিন্ন পণ্য কেনায় ছাড় দিচ্ছে কিছু ব্যাংক। এ ছাড়া পুরো রমজান মাস জুড়ে ইফতারের মূল্যে ছাড় দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এছাড়াও রয়েছে বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফারসহ নানা 'ঈদ উপহার'।
সংশ্লিষ্টদের মতে, উৎসব ঘিরে পণ্য ও সেবার দাম বাড়ানোর প্রবণতা বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই চলছে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, এ ধরনের প্রবণতা ধীরে ধীরে কমছে; বদলে যাচ্ছে চিত্র। এখন বাংলাদেশেও উৎসবের সময় পণ্যের দামে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের জন্য ৫, ৬ ও ৭ এপ্রিল খোলা থাকবে ব্যাংক
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন ইউএনবিকে বলেন, 'ডিসকাউন্টের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তারা নগদ এড়াতে অনেক সুবিধা দেয়, যা নগদ অর্থ বহন করার ঝুঁকিকে নিরুৎসাহিত করে এবং কার্ডে ক্রয়কে উৎসাহ দেয়।’
তিনি আরও জানান, ব্যাংকগুলো তাদের কার্ড হোল্ডারদের জন্য বিশেষ অফারের ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, প্রায় ৩০০ লাইফস্টাইল স্টোর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত অফার দিচ্ছে এবং ৫০টিরও বেশি গয়না প্রতিষ্ঠান তাদের কার্ডহোল্ডারদের জন্য ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে।
এছাড়া অনলাইনে কেনাকাটায় কার্ড পেমেন্টে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাবেন গ্রাহকরা। পাশাপাশি ১৩০টিরও বেশি রেস্টুরেন্টে ইফতার ও ডিনারে 'বাই ওয়ান গেট ওয়ান' অফার বা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে।
এরই সঙ্গে ঈদে বাড়ি ফেরা ও বিদেশ ভ্রমণে বিমান ভাড়ার ওপর বিভিন্ন অফার ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ৩১ মার্চ থেকে নতুন নোট বিনিময় শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
স্ট্যানচার্টের হেড অব কনজ্যুমার ব্যাংকিং সাব্বির আহমেদ জানান, ক্যাশলেস কেনাটাকায় উৎসাহিত করতে স্ট্যানচার্ট বর্তমানে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে। গ্রাহকদের ঈদ আরও আনন্দময় করতে ৭ ধরনের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে এ সুবিধা দে্ওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, গ্রাহকরা আমাদের কার্ড অফারের সুবিধা ও সুযোগ-সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে ক্যাশলেস কেনাকাটা করবেন।’
ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সৌম্য বসু ইউএনবিকে বলেন, ‘নন-ক্যাশ ফর্ম পেমেন্টের বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা সত্যিকারের ক্যাশলেস বাংলাদেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে আমরা দেখছি, অনলাইন ও অফলাইনে কেনাকাটা ও অন্যান্য ব্যয়ের ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত নিরাপত্তা ও গতিসহ ডিজিটাল পেমেন্টের বিভিন্ন সুবিধা পেতে কার্ড ব্যবহার করছেন ভিসা কার্ডধারীরা।’
সৌম্য আরও বলেন, 'আমরা আশা করি ঈদের আগের দিনগুলোতে ডিজিটাল লেনদেনের এই ধারা আরও বেগবান হবে। ভিসা নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা, ব্যবহার সহজীকরণ ও সক্ষমতার মাধ্যমে আমাদের কার্ডহোল্ডারদের আরও সক্রিয় করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: ঈদ অবকাশ: ভিসা-মুক্ত এশিয়ায় সেরা ভ্রমণ গন্তব্য
ইউসিবির 'ইউপে'র স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড প্রোডাক্ট বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মৌলুদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘ইউপের ব্যবহারকারীরা যাতে পবিত্র রমজান মাসে কোনো অতিরিক্ত চাপ ছাড়াই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে এবং নির্বিঘ্নে ঈদ উৎসব উপভোগ করতে পারে সেজন্য দেশজুড়ে ইউপের হাজার হাজার মার্চেন্ট পয়েন্ট রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের গ্রাহকদের জীবনযাত্রার আরও সুবিধার্থে আমরা সম্প্রতি চালু করেছি ইউসিবি-ইউপে কো-ব্র্যান্ডেড প্রিপেইড কার্ড। এটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলেও ব্যবহার করতে পারবেন।’
ঈদ উৎসবের আনন্দ দ্বিগুণ করতে রমজানে ব্যবহারকারীদের জন্য ইউপে আকর্ষণীয় অফারও নিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
ঈদ উপলক্ষে ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, এনবিআরসি ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ বেশকিছু ব্যাংক কেনাকাটা ও ভ্রমণে এমএফএস- বিকাশ ও নগদ পেমেন্টে মূল্যছাড় দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
বাংলাদেশের সড়কে মোটরসাইকেলের কারণে নিরাপত্তা সংকট বাড়ছে
যানজটের মধ্যেও কম সময়ে যাতায়াত এবং তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় মোটরসাইকেল বেশ জনপ্রিয় বাহনে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশে। তবে সড়কে নিরাপত্তার সংকট তৈরি করেছে এই বাহন।
যদিও ২০২২ সালের তুলনায় গত বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার কমেছে। তবে, এখনও দুর্ঘটনায় প্রধান ভূমিকা পালন করছে দুই চাকার এই বাহন। মৃত্যুর পাশাপাশি অঙ্গহানি, জীবনমানে পরিবর্তনসহ সামগ্রিকভাবে মোটরসাইকেল সম্পর্কিত দুর্ঘটনা ভয়াবহ পরিস্থিত তৈরি করে চলেছে।
সচেতন নাগরিক সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর) উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বছরে মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৩-৪০ শতাংশই ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। চলতি বছরের শুরু থেকেই এই পরিসংখ্যান ঊর্ধ্বমুখী।
এনসিপিএসআরআরের পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৮ থেকে ১০ জন মারা যান। যেসব ঘটনার অনেকটাই গণমাধ্যমে আসে না।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৪৬৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৯৬: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
সমস্যাটির মূলে রয়েছে সড়কে অপ্রাপ্তবয়স্ক, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের উপস্থিতি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও পুলিশের কঠোর পদক্ষেপের অভাবকে এর অন্যতম কারণ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
এনসিপিএসআরআরের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, সড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বৃদ্ধি, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোর লাইসেন্স না থাকা, বেপরোয়া চলাচল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বৃদ্ধির কারণ।
এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিআরটিএ’র পদক্ষেপ জোরদারের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ক্রমবর্ধমান এই সমস্যা মোকাবিলায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও লাইসেন্সবিহীন চালক এবং অনিবন্ধিত মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযানের প্রস্তাব করেন আশীষ কুমার।
টানা ৩ মাস সব জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথাও বলেন তিনি। এই পদক্ষেপকে তিনি সড়কে নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের (আরএসএফ) বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে সারা দেশে ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৭৪ জন নারী ও ১ হাজার ১২৮টি শিশুসহ ৬ হাজার ৫২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ১২ শতাংশ মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী।
আরএসএফ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে। যেখানে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যায় ২০২২ সালে। তবে, ২০২৩ সালে এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কারণ, আগের বছরের তুলনায় দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও প্রাণহানির ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।
এসব সত্ত্বেও আরএসএফের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সতর্ক অবস্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশের মোট মোটরযানের ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল। যার উল্লেখযোগ্য অংশই চালাচ্ছে কিশোর ও তরুণরা। যা ট্রাফিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর থেকে প্রমাণ হয়, কঠোর নজরদারি ও আইনের প্রয়োগে অভাব রয়েছে। মূলত এসব কারণেই দুঃখজনক পরিণতিগুলো ঘটছে।
ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও বাসের মতো বড় যানবাহনগুলোর সঙ্গে মোটরসাইকেলের ঘন ঘন সংঘর্ষের বিষয় তুলে ধরেন সাইদুর রহমান।
আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা কিছুটা বাড়লেও ২০২৩ সালে প্রাণহানি কমেছে ১৫ শতাংশ
তিনি বলেন, এই যানবাহনগুলোর চালকদের অনেকাংশের প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকে না। তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রমও করতে হয়। এ কারণে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। এরপরও মোটরসাইকেল জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কমার ক্ষেত্রে হাইওয়ে পুলিশের সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন সাইদুর রহমান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবু রায়হান মো. সালেহও একই অভিমত জানান। তিনি দুর্ঘটনা কমাতে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগের বিষয় উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বেপরোয়া গতিতে ও লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল চালানো রোধে পুলিশ তৎপর। তবে এক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে অতি উৎসাহী হয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে চালকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মোটরসাইকেল চালানো থেকে বিরত থাকতে মা-বাবার দায়িত্বের প্রতি জোর দেন। মা-বাবা ও অভিভাবকদের সতর্কতা বাড়লে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার প্রবণতা আরও কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে এই নিরাপত্তা সংকটে অংশীজনরা সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। এই পরিসংখ্যান ও চিত্রগুলো সামনের দিনগুলোতে চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দেয় এবং তারা কিছু পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
তারা বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। এতে সড়ক হবে সবার জন্য নিরাপদ।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল চলাচলে নজরদারি বাড়ান: কাদের
ডব্লিউটিওর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক কাঠামো সমন্বয়ের উদ্যোগ এনবিআরের
বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতি অনুযায়ী একটি পদক্ষেপে বাংলাদেশের শুল্ক কাঠামোর একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা গ্রহণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে ৬০ টি শুল্ক সীমা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বর্তমান আমদানি-রপ্তানি শুল্ক এবং সংশ্লিষ্ট মাশুল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত নির্ধারিত হারকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রাথমিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে- ছয়টি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত দেয়।
একটি সরকারি নথিতে বিশদ এই উদ্যোগটি ২০২৬ সালের মধ্যে ডব্লিউটিও-সম্মত নির্ধারিত শুল্কের মধ্যে আনতে ধীরে ধীরে এই হারগুলো সামঞ্জস্য করার পরিকল্পনা নির্ধারণ করে। নির্ধারিত ট্যারিফগুলো ডাব্লুটিওতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ (এমএফএন) শুল্ক হারের প্রতিনিধিত্ব করে,এটি এমন একটি সর্বোচ্চ সীমা যা প্রয়োগ করা শুল্ক অতিক্রম করতে পারে না। এই নিয়ন্ত্রক কাঠামো নিশ্চিত করে যে বাণিজ্য নীতিগুলো অনুমানযোগ্য এবং স্থিতিশীল থাকে, যা ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেয়।
দেশগুরো সাধারণত ডাব্লুটিওতে যোগদানের সময় বা পরবর্তী বাণিজ্য আলোচনার মাধ্যমে বেধে দেওয়া শুল্ক নিয়ে আলোচনা করে, নীতির নমনীয়তা বজায় রাখতে এই হারগুলো তাদের প্রয়োগ করা শুল্কের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে। তবে, যথাযথ সমন্বয় ছাড়াই এই নির্ধারিত হারগুলো অতিক্রম করা আন্তর্জাতিক বিরোধ এবং ক্ষতিপূরণের দাবির দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা মেনে চলার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: ৭ মাসে ২ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় এনবিআরের, প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি
বাংলাদেশের পুনর্বিন্যাস প্রচেষ্টা ডব্লিউটিও সদস্যদের মধ্যে একটি বিস্তৃত প্রবণতা প্রতিফলিত করে, যেখানে উন্নত, উন্নয়নশীল এবং রূপান্তরিত অর্থনীতিগুলো নির্ধারিত শুল্ক হারের সঙ্গে আমদানির অনুপাতকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে, যা বিশ্ব বাজারের স্থিতিশীলতা বাড়িয়েছে।
উপরন্তু, সরকার ন্যূনতম আমদানি মূল্যের প্রয়োজনীয়তা দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে এটি ৫৫টি আইটেম থেকে সরিয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে অবশিষ্ট ১৩০টি পণ্য থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়ার কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়েছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য আমদানি প্রক্রিয়া সহজতর করা এবং আরও প্রতিযোগিতামূলক বাজারের পরিবেশকে উৎসাহিত করা।
নথিতে শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখা দেওয়া হয়েছে, যাতে স্থানীয় শিল্পগুলো প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত না হয় এবং রাজস্ব সংগ্রহ শক্তিশালী থাকে তা নিশ্চিত করে।
এনবিআরের কৌশলের মধ্যে রয়েছে দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার সময় দেশীয় খাতের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সতর্ক ভারসাম্যমূলক আইন করা।
কাস্টমস শুল্কের এই ক্রমবর্ধমান সমন্বয় এবং ন্যূনতম আমদানি মূল্য বিলুপ্তি বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় আরও নিরবচ্ছিন্নভাবে সংহত করতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নকে উন্নীত করে।
আরও পড়ুন: নিবন্ধিত কোম্পানির ৯২ শতাংশই আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি: এনবিআর