বাংলাদেশ
বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
বাংলাদেশকে ‘দীর্ঘদিনের বন্ধু ও উত্তম অংশীদার’ বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
রূপপুর প্রকল্পের আওতায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পারমাণবিক খাতের জন্য অত্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
পুতিন বলেছেন, পারমাণবিক সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান এমন ৮০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং এ সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি না, বরং একটি সম্পূর্ণ পারমাণবিক সেক্টর তৈরি করছি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্প গড়ে উঠেছে এবং আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলে এটি করছি।’
বৃহস্পতিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট ১-এ রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেন।
শুক্রবার রাশিয়ান পক্ষের দেওয়া তার বক্তৃতার ইংরেজি অনুলিপি অনুসারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পটি দুই দেশের স্বার্থ পূরণ করে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা
তিনি বলেনি, ‘অবশ্যই এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি বাস্তব ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।’
পুতিন বলেন, ‘এই তরুণ প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে আমাদের দেশও ছিল এবং এর অর্থনীতির উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম আমরা। পাশাপাশি আমরা প্রধান শিল্প ও জ্বালানি কাঠামোগুলো নির্মাণে সহায়তা করছি, যাতে বাংলাদেশের জনগণ এর সুফল পেতে থাকে।’
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির একজন স্বীকৃত বিশ্বনেতা হিসেবে তিনি বলেন, রোসাটম সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডের পাশাপাশি পরিবেশগত ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে উন্নত প্রকৌশল সমাধান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) নিয়মকানুন ও সুপারিশ কঠোরভাবে মেনে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ভিদের শারীরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত ও নির্ভরযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পে তাদের সহায়তার জন্য আইএইএ-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
পুতিন বলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার প্রচেষ্টা কেবল স্থাপনা নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ‘আমরা পারমাণবিক প্রকল্পের সমগ্র জীবনচক্র জুড়ে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সহায়তা করব। যার মধ্যে চুল্লির জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ, উদ্ভিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
গত বছর থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা প্ল্যান্টে প্রাথমিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলো তদারকি করবেন। এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের প্রয়োজনীয় পেশাগত দক্ষতা এবং জ্ঞান তাদের শুধু পারমাণবিক শিল্পেই নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক খাতেও নিয়োগের সুযোগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এনার্জি ইউনিট ১-এ রাশিয়ান পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহের একটি প্রশংসাপত্র আমাদের বাংলাদেশি সহকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করব। এর পরে রূপপুর সরকারি পারমাণবিক সুবিধার মর্যাদা পাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতি তার ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি; স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ; বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান; রূপপুর প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণের একটি সাধারণ ঠিকাদারের সিইও আন্দ্রেই পেট্রোভ।
স্টেট কর্পোরেশন রোসাটম ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্তঃসরকারি চুক্তির অধীনে পাবনা জেলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
প্ল্যান্টটি ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসহ দুটি প্রজন্মের ৩+ চুল্লি নিয়ে গঠিত হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সাইটে কাজ করছেন ৪ হাজারেরও বেশি রাশিয়ান নাগরিকসহ ২০ হাজার বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নিকট যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবির জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
বিশ্বকাপ জিতলে ক্রিকেটারদের বিএমডব্লিউ দেবে নগদ
পেমেন্ট ক্যাম্পেইনে বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দিয়ে হইচই ফেলে দেওয়া মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ এবার ১৫টি বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
চলমান বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, তাহলে দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে এ উপহার দেওয়া হবে।
নগদ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এই ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ জিতলে সেটি হবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অর্জন।
তিনি আরও বলেন, এমন বিশেষ অর্জনকে উদযাপন করতে তখন সব দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে একটি করে বিএমডব্লিউ উপহার দেব আমরা।
বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক আগে থেকেই নানাভাবে কাজ করে আসছে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ।
আরও পড়ুন: নগদ-এর অর্জন মানে ডাক বিভাগের অর্জন: মোস্তাফা জব্বার
মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও হাল আমলের মেহেদী হাসান মিরাজ এই প্রতিষ্ঠানটির ব্র্যান্ডের হয়ে কাজ করছেন।
এবার জাতীয় দলের সব ক্রিকেটারের জন্য বিশেষ উপহারের ঘোষণা দিয়ে তাদের উৎসব আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে নগদ।
সম্প্রতি সাকিব-তামিমের একটি ভিডিও কন্টেন্ট প্রকাশ করেছে নগদ। ক্রিকেট বিশ্বকাপ একেবারে দুয়ারে দাঁড়িয়ে গত মঙ্গলবার প্রকাশ হয়েছে এই ভিডিওটি। অনলাইনে ও অফলাইনে এখন এই কনটেন্ট নিয়েই চলছে বিস্তর আলোচনা।
কনটেন্টটির মাধ্যমে স্বপ্ন আর সাহস নিয়ে বাংলাদেশের জন্য আবারও আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সাকিব আর তামিম। ভিডিওর একপর্যায়ে সাবিক-তামিম তাদের সুখের স্মৃতি তুলে ধরেন।
আর শেষে এসে দুজনে এক হয়ে যান বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত করার জন্য। সারা দেশকে তারা আহ্বান জানান ‘এক’ হয়ে আরেকবার গর্জে ওঠার জন্য।
এই ভিডিওর জন্য সাকিব ও তামিমকে এক করার পেছনের কথা বলতে গিয়ে নগদের প্রতিষ্ঠাতা তানভীর এ মিশুক বলেন, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা জাতীয় দলের সঙ্গে থাকতে চান তিনি সবসময়। আর এই চাওয়া থেকেই তিনি ঘোষণা দেন, বাংলাদেশ দল যদি বিশ্বকাপ জেতে, স্কোয়াডের ১৫ সদস্যের সবাইকে একটি করে বিএমডব্লিউ দেবে নগদ। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সব ক্রিকেটার দলকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্যই খেলবেন। পেছনে কী হয়েছে বা না হয়েছে, এসব ভুলে সবাই এখন মাঠের খেলায় মন দেবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি আশা করি, সবাই এখন মাঠে নিজেদের শতভাগ উজাড় করে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার জন্যই খেলবে।
এর আগে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে বহু বছর পর এক ফ্রেমে আনতে পারার পেছনের কথা বলতে গিয়ে তানভীর এ মিশুক বলেন, সাকিব তামিমকে একসঙ্গে আনার চিন্তাটা এসেছে স্বপ্ন ও সাহস থেকে। সাকিব তামিমকে আমরা সবসময় মাঠেই দেখেছি একসঙ্গে। একসঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে অনেক খেলা জিতিয়েছেন তারা। আমার ইচ্ছা ছিল, তাদের যদি মাঠের বাইরেও একসঙ্গে দেখা যায়, তাহলে চমৎকার হয়। এটা হয়তো এর আগে কেউ চেষ্টা করেননি। দুজনকে একসঙ্গে কীভাবে এনেছি? সেই স্বপ্নটা থেকে সাহসটা করেছি। আমি বিশ্বাস করি ১৭ কোটি মানুষ চায় সাকিব তামিম একসঙ্গে থাকুক, একসঙ্গে খেলুক, একসঙ্গে জয় নিয়ে আসুক।
আরও পড়ুন: 'নগদ' এর সাফল্যে একটি মহল বরাবরই নাখোশ: টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ইয়াবা ও নগদ অর্থসহ ভারতীয় নাগরিক আটক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে: প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকে ‘সফল’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আপনার অর্জন খুবই আকর্ষনীয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বাইডেন
তিনি বলেন, ‘বহুপাক্ষিক ফোরামে আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। আন্তর্জাতিক ইস্যু সম্পর্কে, আমি আশা করি এটি সহযোগিতার পরিধি প্রসারিত করবে। সামগ্রিক বিবেচনায়, আমি মনে করি এই অধিবেশনে (ইউএনজিএ) বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল হয়েছে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদান ও সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ বছরের অধিবেশনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে উদারতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তার ভাষণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে মানবতার অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো সম্মিলিতভাবে মোকাবিলায় বিভক্তি, বিচ্ছিন্নতা ও বিচ্ছিন্নতার ওপর ঐক্য, সংহতি ও বহুপাক্ষিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেছেন যে, সরকার দেশের সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে ও এটি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেন যুদ্ধ, মহামারি ও রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব নিয়ে সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সন্ত্রাসী হুমকি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার, সহিংসতা উস্কে দেওয়া, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। তিনি বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি অনুসরণ করে।
একই সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য মানবাধিকার ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করার দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জরুরি পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক 'ফুড ব্যাংক' প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল ফসলের গবেষণা ও উন্নয়নে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
পাশাপাশি তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা পুনর্বাসন, মহামারি, এসডিজি অর্জনে খাদ্য সহযোগিতা এবং অন্যান্য ইস্যুতে অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে যোগ দেন।
কমিউনিটি ক্লিনিক সম্পর্কিত একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস, ডিজিটাল ও আধুনিক ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানসহ পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অগ্রাধিকার উপস্থাপন করেন।
এ ছাড়া তিনি নিউইয়র্কে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে 'এসডিজি সামিট-লিডার্স ডায়ালগ-৪ (এসডিজি অর্জনে সমন্বিত নীতি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাইড ইভেন্টে ভবিষ্যতে যেকোনো মহামারি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি কাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি আয়োজিত কমিউনিটি সংবর্ধনায় যোগ দেন এবং বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
নিউইয়র্কে অবস্থানকালে গভীর সমুদ্র থেকে বৃহৎ আকারে মাছ আহরণ রোধ এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় 'গভীর সাগর সম্পর্কিত জাতিসংঘের চুক্তি' সই করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া হাঙ্গেরির সঙ্গে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতির বিষয়ে কাজাখস্তানের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানকালে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশ নেন। এ ছাড়া ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাবিষয়ক এপিপিজি'র সভাপতি রুশনারা আলীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসাবিষয়ক ছায়ামন্ত্রীসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী এখন লন্ডনে
ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পিএমও কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ তহবিল পরিচালনা পর্ষদের শ্রদ্ধাঞ্জলি
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ তহবিল এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছেন।
এসময় নবগঠিত পর্ষদের সভাপতি মো. মকবুল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিনুর রহমানসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ
টেকনাফে ২ লাখ ৫৫ হাজার ইয়াবা জব্দ
কক্সবাজারের টেকনাফে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার ইয়াবা জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফের আচারবুনিয়া বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ এসব ইয়াবা জব্দ করে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ইয়াবা জব্দ
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়ন-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
অভিযানকালে বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে দুইজন বস্তা ফেলে পালিয়ে যায়। বস্তা দুটি থেকে ২ লাখ ৫৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি।
বিজিবি পরে অভিযান চালিয়েও মাদককারবারীদের কাউকে আটক করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: টেকনাফ সীমান্তে লক্ষাধিক ইয়াবা জব্দ, আটক ৩
ঢাকায় রাশিয়ায় অধ্যয়নের সুযোগ নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
ঢাকায় অবস্থিত রাশিয়ান হাউস রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের সহযোগিতায় প্রদত্ত বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে রাশিয়ায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সম্পর্কে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এর সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কো-অপারেশনের (সিআইএসি) সহযোগিতায় একটি শিক্ষামূলক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
রাশিয়ান হাউসের ডিরেক্টর পাভেল দভইচেনকভ রাশিয়ান শিক্ষা ব্যবস্থার হালনাগাদ তথ্য এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম https://education-in-russia.com এ প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া এবং নথি জমা দেওয়ার বিশদ বিবরণ দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা রাশিয়ায় বৃত্তির জন্য মনোনীত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে পারে এবং বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত সম্ভাবনার বিষয়ে কথা বলেন। রাশিয়ান প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি সেবা, বেসরকারি কোম্পানি ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সিনিয়র পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন উল্লেখ করেন।
তিনি রাশিয়ায় উচ্চ শিক্ষার অধ্যয়নের সুবিধার্থে রাশিয়ান হাউসে রাশিয়ান ভাষার কোর্সে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
সকলকে ঢাকার রাশিয়ান হাউসে ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী সেমিনারে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
টানা বর্ষণে গাজীপুরে ভেঙে পড়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে নগরবাসী
টানা বৃষ্টিতে গাজীপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ও ড্রেন উপচে গিয়ে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে পানি জমে থাকায় যানজট লেগে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস মোড় পানিতে তলিয়ে থাকায় সেখানেও ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।
জেলা শহরের প্রধান বাজার জয়দেবপুর বাজার ও বাসস্ট্যান্ড সড়ক গত রাত থেকেই পানির নিচে ডুবে আছে। অনেক দোকানপাটেও পানি ঢুকে মালামালের ক্ষতি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও ছুটির দিনের সাধারণ ক্রেতারা।
তারা বলছেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের মতো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।
আরও পড়ুন: নাটোর শহরে অব্যাহত ভারী বর্ষণে অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
গাজীপুরে ভারী বর্ষণে মাটির দেয়াল ধসে দম্পতির মৃত্যু
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় শুক্রবার ভোরে অবিরাম বর্ষণে মাটির দেয়াল ধসে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ ফোনে ইউএনবিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন নিহতরা হলেন এমারত হোসেন ও তার স্ত্রী আছিয়া বেগম।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০ জন আহত
স্থানীয়রা জানান, রতনপুর এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে টানা বর্ষণে দম্পতির বাড়ির মাটির দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে।
ভোরে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ ঘরের দেয়াল ধসে পড়ে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয় বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: গভীর সমুদ্রে দুর্ঘটনা কবলিত লাইটার জাহাজ থেকে ১৪ নাবিক উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গায় ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারি’ প্রতিষ্ঠা করল পুলিশ
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনের বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামে ব্যতিক্রমী ফটো গ্যালারিসহ লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন। এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, উন্নয়ন ও সোনার বাংলার ছবিগুলো,যেগুলো কথা বলছে ১৯৪৭-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত প্রত্যেকটি ঘটনার। এছাড়া ১৯৪৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নানান ঘটনাবলির ৩০০টি ছবি স্থান পেয়েছে গ্যালারিতে। এগুলো বাংলাদেশ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব ও ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশের উন্নয়নকে তুলে ধরার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারিতে ফটো গ্যালারি, বুক কর্নার এবং মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অবদান, চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, প্রত্যেকটি ঘটনার সাদা কালো ও রঙিন সব দুর্লভ ছবি ঠাই পেয়েছে গ্যালারিতে।
এই গ্যালারিটি তৈরির কার্যক্রম ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু করেছিলেন পুলিশ সুপার। যা একই বছরের ২৩ জুন শেষ হয়েছে। পরিত্যক্ত ঘরটির দেয়ালের রঙ, র্যাক, ওয়ালর্যাক, লাইটিংসহ নতুন ডিজাইনে সাজানো হয়েছে। পরিপাটি ও সজ্জিত পরিবেশে তৈরি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গ্যালারিতে রয়েছে আটটি কংক্রিটের দেয়াল, একটি বুক কর্নার, তিনটি স্ট্রিং-ওয়াল, তিনটি বোর্ডের ওয়াল, দুটি স্মৃতি স্মারক কর্নার। যার প্রথম দেয়ালে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও বহির্বিশ্ব, দ্বিতীয় দেয়ালে ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বীকৃতি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে ১৪ লাখ কর্মসংস্থান হবে: মুখ্য সচিব
তৃতীয় দেয়ালে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ সালের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী, শিক্ষা জীবন এবং ঘটনা প্রবাহ। চতুর্থ দেয়ালে রক্তাক্ত ৭১। পঞ্চম দেয়ালে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অতঃপর থমকে যাওয়া উন্নয়ন। ৬ষ্ঠ দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদান। সপ্তম দেয়ালে চুয়াডাঙ্গার মহান মুক্তি সংগ্রাম। অষ্টম দেয়ালে রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আলোকবর্তিকায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা।
উদ্যোক্তা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি চুয়াডাঙ্গাতে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করার পর পুলিশ লাইন্সের এই পরিত্যক্ত কক্ষটি নিয়ে ভাবতে থাকি। পরে আমার মাথায় আসে, আমি তো একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী। ফলে আমার মাথায় আসে যে চুয়াডাঙ্গার যারা শিক্ষার্থী রয়েছে, চুয়াডাঙ্গাবাসী রয়েছে, তাদের জন্য কিছু একটা করে রেখে যাওয়া। তারপর থেকেই অবসর সময়ে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামের এই গ্যালারির কাজ শুরু করি। মূলত দেশ ও জাতির ইতিহাস তুলে ধরতেই আমার এ প্রয়াস। এরপর দিনরাত পরিশ্রম করেছি এর পিছনে। প্রতিটি ছবি আর তথ্য সারাদেশ থেকে সংগ্রহ করেছি এবং আমি নিজে বার বার করে এটা চেক করেছি, কোনো ভুল তথ্য যেন এই গ্যালারি না থাকে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি এটা শেষ করতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী, শিক্ষা জীবন এবং ঘটনা প্রবাহ। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা আর চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এরকম নানা তথ্য ও দুর্লভ সব ছবি এই গ্যালারিতে সন্নিবেশিত করেছি। ছবিগুলো সংগ্রহ করার কাজ ছিল বেশ কঠিন। দেশ-বিদেশ থেকে ছবি সংগ্রহ করেছি। ফ্রেমে বাঁধানো ছবিগুলো জীবন্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। তার কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়ন করছেন। অল্প দিনেই এটি উদ্বোধন করা হবে। অনেক গুণী মানুষ দেখেছেন।
সবশেষে পুলিশ সুপার বলেন, আগামী প্রজন্ম যারা আসবে, তারা হচ্ছে এই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সব ইতিহাস একটা কক্ষের মধ্যে ঘুরেই জানতে পারবে। আর এটাই হবে আমার সার্থকতা।
এদিকে, ডিজিটাল বাংলাদশ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার ছবি ও তথ্য এবং বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের ছবিসহ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘৭১’এর ২৫ মার্চের বেতার বার্তা প্রেরণের যন্ত্রসহ এই গ্যালারি দেখতে শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত আসছেন।
এই গ্যালারি পরিদর্শনে আসা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, উন্নয়ন ও সোনার বাংলার কথা বলছে দুর্লভ সব ছবিগুলো।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ যে এক সুতোই বাধা গ্যালারিতে ঢুকলে মুহূর্তে তা বোঝা যায়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে নেপালের উচ্চ পর্যায়ের সংসদীয় প্রতিনিধি দল
দিলীপ কুমার বলেন, আমার মতো বা শুধু নেতৃস্থানীয় মানুষের জন্য না, এটা এই প্রজন্মকে দেখানো খুব জরুরি। এটা যত দ্রুত সম্ভব উন্মুক্ত করে দিলে এটা পরিপূর্ণ রুপ পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এর আগে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গায় এসেছেন। এমন করে কেউ ভাবেননি। আমি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে চুয়াডাঙ্গাবাসীর পক্ষ আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা শিশু অধিকারকর্মী মেহেরাব্বীন সানভী বলেন, একটি ঘরের আটটি দেয়াল ঘুরে দেখলেই বাংলাদেশের পুরো ইতিহাস জানা যায় এবং জাতির পিতার জীবন সম্পর্কে জানা যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের এমন আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। আমি যেহেতু শিশুদের নিয়ে কাজ করি, শিশুরাও এখানে আসলে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস সহজেই জানতে পারবে।
পরিদর্শনে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, এমন একটি আয়োজনের জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই। দুর্লভ সব ছবি আর ছোট ছোট ক্যাপশনে যেভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবু হোসেন বলেন, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার একটি পরিত্যক্ত ঘরকে যেভাবে সাজিয়েছেন আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এখানে সন্নিবেশিত করেছেন, সত্যিই এটা প্রশংসার দাবি রাখে।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমীন বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের এমন ভাবনা ও তার বাস্তবায়ন সত্যিই প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় ৭০ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায় চুয়াডাঙ্গায় ৭০ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়
নাটোরে শিশু ধর্ষণ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ১৭ বছর পর গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব সদর দপ্তরের সহায়তায় গত রাতে (বৃহস্পতিবার) গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে আত্নগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে নাটোর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা।
আব্দুল কুদ্দুস (৩৯) একই গ্রামের সিহাব আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
নাটোর র্যাব ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারী পরিচালক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ২০০৬ সালের ২০ জুন বাগাতিপাড়া উপজেলার খাটখৈর গ্রামের ৮ বছরের শিশুকে বাদাম দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় একটি আখ খেতে নিয়ে যায় আব্দুল কুদ্দুস। এরপর শিশুটিকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করে লাশ সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশের অভিযোগপত্র ও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পলাতক অবস্থায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় পৌনে ৩ লাখ টাকার জাল নোট জব্দ, গ্রেপ্তার ২
রাজশাহীতে ছিনতাইকারীর হামলায় আহত কলেজছাত্রের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ১