বাংলাদেশ
দেশে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি, আক্রান্ত ৪
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি একজন ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ১৬ জন ঢাকার মধ্যে এবং ২০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১০ জন
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৮৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২৭ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৬৪২ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৩০৬ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ৩৩৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯ জন
দেশে ১৪ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এসময় নতুন করে ১৪ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩০ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ১১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ কোটি ৮১ লাখ ছাড়াল
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩০৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৮ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে মৃত্যু নেই, শনাক্ত ১৩
নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে ৫দিন ক্লাস হবে: শিক্ষামন্ত্রী
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে পাঁচদিন ক্লাস হবে এবং দুইদিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কয়দিন বন্ধ থাকবে তা একটি নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমে সপ্তাহে পাঁচদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হবে। বাকি দুইদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাঁদপুর সার্কিট হাউজে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত শিক্ষাক্রম। গতবছর আমাদের শিক্ষাক্রমে ছিল ছয়দিন শ্রেণীকক্ষে পাঠদান। যখন বিদ্যুৎ নিয়ে সঙ্কট ছিলো তখন সেটাকে আমরা পাঁচদিন করেছি। তখনই বলা হয়েছিলো যে এখন বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে করা হচ্ছে, কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমেও পাঁচদিনই শ্রেণীকক্ষে পাঠদান হবে।
আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজে উপবৃত্তির ৭৫১ কোটি টাকা বিতরণ শুরু
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে যে নিয়ম, আমাদের দেশেও তা। আর তাছাড়া শিক্ষকদেরও ১-২ দিন সময়ের দরকার। তাদেরও একটু বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। আবার শিক্ষার্থীদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কারিগরি বিভাগে তার আগের ১০বছর কোন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। গত চার বছরে সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে।
তিনি বলেন, সবসময়ই কোনো না কোনো শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন, কাজেই কিছু কিছু পদ শূন্য হয়।আবার সেই চাহিদা অনুযায়ী আমরা সেগুলোতে নিয়োগ দেই। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া যে খুব সহজ তাও নয়।
তিনি আরও বলেন, এমুহূর্তে আমাদের কোনো শিক্ষক সঙ্কট নেই। কোথাও শূন্য থাকলে তা পূরণ হয়ে যাচ্ছে।এসময় জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারীসহ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার ফল ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে
জুন থেকে স্কুল ফিডিং চালু হবে: প্রতিমন্ত্রী
রমজানে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
আসন্ন রমজানে মানুষ চাল নিয়ে বিব্রত কর অবস্থায় পড়বে না বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, আমা করছি বোরোতে বাম্পার ফলন হবে। ফলে দেশে চাল আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে রমজান মাস, খাদ্য মন্ত্রণালয় মুলত রেশনিং, কাবিখা, টিআর, ওএমএস কর্মসূচির চাল বিতরণ করে থাকি। বিতরণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্ববৃহৎ বিতরণ ব্যবস্থা চলছে। ২৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা প্রতিনিয়তই বিতরণ চলছে। হিসেব অনুযায়ী এ সময় ওএমএস বন্ধ থাকে। শুধু সিটিতে কিছু থাকে। বর্তমানে আমাদের সিটি, জেলা উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে চলছে। ওএমএস'র আওতায় যারা নিম্ন আয়ের লোক তারা ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে ৩ কেজি আটা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ১ মার্চ থেকে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া শুরু হবে। এটা বছরে ৫ মাস চলে, মার্চ, এপ্রিল, মে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেয়া হয়। আমাদের ওএমএস এ এক কোটির ওপরে পরিবার বছর জুড়েই ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি আটা পাবে।
এছাড়া, রমজানে বিশেষ প্রোগ্রাম হিসেবে ভিজিএফ এর আওতায় এককোটির বেশি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সেখানে মিয়নমার থেকে আমদানি করা আতপ চাল দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: চালের দাম বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই: খাদ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমাদের বেসরকারি আমদানি খোলা রয়েছে। তবে কম আসছে। কারণ দেশে এখন প্রচুর চাল আছে। সরকারি মজুতও প্রচুর রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বিতরণ যেমন অনেক বেশি পাশাপাশি মজুদও সবচেয়ে বেশি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৮ মেট্রিক টন মজুদ রয়েছে। আমাদের যেমন বিতরণ হচ্ছে তেমনি সংগ্রহও হচ্ছে। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টন চাল সংগ্রহ হচ্ছে। যদিও আমাদের ৫ লাখ মেট্রিকটন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সেখানে আমাদের ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩০ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ হয়েছে। চুক্তি হয়েছিলো ৪ লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ মেট্রিকটন। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। আমাদের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও মজুদ ভালো।
তাহলে ধান সংগ্রহ হয়নি কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ধান সংগ্রহের জন্য সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেয়। কারণ কৃষকরা যাতে মিলার, মজুদদার বা খরিদদারের কাছে প্রতারিত না হয়। বাজারে যদি দাম কম থাকে তাহলে কৃষকরা সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারে। এবছর সরকারি মূল্য থেকে বাজারে মূল্য বেশি থাকায় কৃষকদের সরকারের কাছে ধান দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য বাজারেই পাচ্ছে। অতএব প্রসার দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান নিতে চাই না। আমি মনে করি কৃষকরা খুব ভালো আছে, সুখে আছে।
বৈশ্বিক সংকটের চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দেশনার কারণে আমাদের দেশে বৈশ্বিক সংকটের তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি এবং ফেলতে পারবে না। আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে, কোন দুর্বিপাক না হলে রোবোতেও বাম্পার ফলন হবে। ফলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে না বলে আমি মনে করি।
চালের দাম কমছে না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সব কিছু যদি বিচার বিশ্লেষণ করেন যেমন,-ডলারের দাম, উৎপাদন খরচ সব কিছু বিবেচনা করলে আমি মনে করি বৈশ্বিক এই সংকটে চালে দাম স্থিতিশীল আছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে যে হাহাকার নেই, এটাই আমাদের জন্য অনেক বড় পাওনা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য তো ওএমএস, কাবিখা আছে। আর অসাধারণের জন্য এরোমেটিক, প্যাকেট, সিলকি আছে। তাহলে মধ্যবিত্তরা কোথায় যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কি শুধু সাধারণ মানুষ যায়, সেখানে অনেক মধ্যবিত্তও যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খাদ্যশস্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
চকচকে চাল বর্জন করে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চাল খাওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চায়: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা (মার্কিন) বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তারা আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়।’
বৃহস্পতিবার মোমেন সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) ছিল ‘বাংলাদেশের জন্য একটি দারুণ দিন’।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, তারা সকলেই বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন এবং গভীর সম্পর্কের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের আগমনের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধারাবাহিক বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে: ডেরেক শোলে
মোমেন বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তারা সম্পর্ক জোরদার করতে এসেছে।’
ডেরেক শোলে বুধবার বলেছেন, ৫১ বছর ধরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ব্যাপারে ‘আশাবাদী’।
শোলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। আমাদের মধ্যে খুব দৃঢ় অংশীদারিত্বের ৫১ বছর পার হয়েছে। আমরা পরবর্তী ৫১ বছর এবং তার পরের সম্পর্কের জন্যও অপেক্ষা করছি। আমাদের উভয়ের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে আমাদের অনেকগুলো সম্ভানাময় ক্ষেত্রও রয়েছে; যেগুলো নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী: মার্কিন কাউন্সেলর চোলেট
ফ্রান্সের ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুবিথধার কথা তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। ফ্রান্সের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। ফ্রান্সের বিনিয়োগকারীরা এসব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশকিছু সুযোগ- সুবিধা দিচ্ছে।
ফ্রান্সে ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি ওইসিডি আয়োজিত ‘প্রমোটিং এন্ড ইনাব্লিং রিসপনসিবল বিজনেস কনডাক্টর ইন দ্য গ্লোবাল ইকনোমিক’- শীর্ষক মিনিস্টারিয়াল মিটিং এ যোগদান করে এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ফ্রান্সের ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে টিপু মুনশী এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, লেদার, মেডিকেল পণ্য, সিরামিক, এনার্জি এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একশতটি স্পেশাল ইকনোমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে, এর অনেকগুলোতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এগুলোতেও বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
ফ্রান্সে অবস্থিত বিজনেজ কমিউনিটি আয়োজিত অপর এক মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করতে হবে এবং ফ্রান্সে অবস্থিত সকল প্রবাসীকে রেমিটেন্স প্রোপার চ্যানেলে বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। ফ্রান্সের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে যেকোন জটিলতা সরকার গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করবে। এসময় ইউরো-বাংলা বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন এবং ফ্রান্স বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম এর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী হাঙ্গেরির ফরেন অ্যান্ড ট্রেড মিনিস্টার পিটার এসজিজার্টো এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী হাঙ্গেরিতে পড়া লেখার জন্য বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভিসা সহজ করার আহ্বান জানান। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ডাবল ট্যাক্সেশন পরিহারে চুক্তি সইয়ের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন।
ফ্রান্সে ১৪-১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মিটিং এ বাংলাদেশের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। অন্য দু'জন হলেন এফবিসিসিআই এর সাবেক প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম, এমপি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।
সভায় মার্কেট বেজ ইকনোমিক প্রিন্সিপাল, ওপেন, ফ্রি, ফেয়ার, রুলবেজ, মাল্টিলেটারেল ট্রেডিং সিস্টেম এবং সরকারের দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণ এবং মানবাধিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়ে।
উল্লেখ্য, দু'দিনব্যাপী এ মিটিং এ ২৫টি দেশের মন্ত্রী, ইউএন বডি, ইইউ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধি এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ভ্যাটের পরিধি বাড়ান: বাণিজ্যমন্ত্রী
আমরা শান্তি চাই, তবে বহিঃশক্তির আক্রমণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, দেশে কোনো বহিঃশক্তির আক্রমণ হলে উপযুক্ত জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বহি:শক্তির যে কোন আক্রমণ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীকে পর্যাপ্ত সক্ষম করে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি’
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দশম টাইগারস রিইউনিয়নে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না।
তিনি বলেন যে আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাসী।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি মাওয়া-জাজিরায় শেখ রাসেল সেনানিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং মিঠামইন, রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন সেনানিবাস নির্মাণের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আর্মি এভিয়েশন ফরওয়ার্ড ঘাঁটি এবং লালমনিরহাটে এভিয়েশন স্কুল নির্মাণের কাজও চলছে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সরকার সেনাবাহিনীতে নতুন কম্পোজিট ব্রিগেড ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড যুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আহ্বান জানাল প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রতিটি বাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী অস্ত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বাংলাদেশকে শান্তির দেশে রূপান্তর করতে চায়।
তিনি বলেন, এ জন্য আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করেছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলো বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হয়েছে, যাতে উন্নত দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে খাবারের দাম অত্যধিক বেড়েছে এবং খাবার পেতেও সমস্যা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তবে বাংলাদেশের ভূমি উর্বর এবং মানুষও অনেক দক্ষ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে যে জমি আছে, তারা তাতে ফসল ফলাক; যাতে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার আঘাত বাংলাদেশে না লাগতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি সত্য কিন্তু এর পাশাপাশি আমাদের এটা (খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি) ততদিন অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন না এই (রাশিয়া-ইউক্রেন) যুদ্ধ থামে এবং এই মন্দার কবল থেকে বিশ্ব মুক্তি পায়।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা যাতে বাংলাদেশে প্রভাব না ফেলতে পারে সেজন্য কঠোর পরিশ্রম করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং খোলা জীপে চড়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
তিনি একটি মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেন।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে: মার্কিন কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রী
ইবিতে ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন: ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে তিনদিনের মধ্যে এ কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন শিক্ষককে রাখতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
কমিটি গঠনের পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির রিপোর্টও ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত দু’জনকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে।
আদেশে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসিন।
পরে আদালত এটি আবেদন আকারে নিয়ে যেতে বললে বুধবার তিনি রিট করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, ইবির ভিসি, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
আরও পড়ুন: ইবি শিক্ষকের গাড়ির ধাক্কায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
বৃহস্পতিবার রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী গাজী মো. মহসিন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেছে অভিযুক্তরা।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের গণরুমে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেত্রীর নাম সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহযোগী তাবাসসুম ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার ছাত্রী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম রাত ৮টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রজাপতি-২ রুমে যেতে বলেন। অসুস্থ থাকায় সেদিন তিনি যেতে পারেননি। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তাবাসসুম। ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম দফায় র্যাগিং করে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে হলের প্রভোস্টের সহযোগিতায় তখন সেটা সম্ভব হয়নি।
পরদিন রবিবার ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ ৭-৮ জন মিলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে গণরুমে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এসময় তাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় মারা হয় এবং মুখ চেপে ধরে গালিগালাজ করা হয়। এমনকি তাকে ময়লা গ্লাস মুখ দিয়ে পরিষ্কার করতে বলেন সানজিদা। পরে ওই ছাত্রীকে জামা খুলতে বলেন অভিযুক্তরা। জামা না খুললে পুনরায় মারতে থাকেন তাকে। এরপর জোর করে তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেন তারা। এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যার হুমকিও দেয়া হয় ভুক্তভোগীকে।
আরও পড়ুন: হিরো আলমকে তাচ্ছিল্য করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও বৈষম্যমূলক: টিআইবি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে বৈবাহিক অবস্থা লিখতে বাধ্য করা যাবে না: হাইকোর্ট
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থা লিখতে বাধ্য করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। তিনি রায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মেয়েটি এখন কী করবে?’- শীর্ষক এক প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী ফারিহা ফেরদৌস ওনাহিদ সুলতানা জেনি।
ওই পত্রিকার সংবাদ অনুসারে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৬ জুন দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ধর্ষণের শিকার হন মেয়েটি। ধর্ষকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেয়ার জন্য গ্রামের লোকজন চাপ দিতে থাকেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে এ নিয়ে সালিসও হয়। কিন্তু সেখানে অভিযুক্ত যুবক সবকিছু অস্বীকার করেন। সালিস ভেঙে যায়। প্রতিপক্ষের হুমকির মুখে মেয়ের পরিবার মামলা করতে পারে না। একপর্যায়ে সন্তানসম্ভবা হলে মেয়েটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। তখন ওসিসি থেকেই ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলার পর পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ওই যুবক, মেয়ে ও তার সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় প্রমাণ হয় ওই যুবকই শিশুটির বাবা। আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। আদালত ওই মেয়েটিকে ‘মহিলা সহায়তা কর্মসূচি’র রাজশাহী বিভাগীয় আবাসনকেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেখানে থাকা অবস্থায় মেয়েটির এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা চলাকালে ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রামেক হাসপাতালে মেয়েটি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। আবাসনকেন্দ্রে থাকতেই এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪.১৯ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। পরে সেখানেই থেকে এইচএসসি পরীক্ষাও অংশ নেন। পরবর্তীতে আইনজীবী আশুরা খাতুন এবং জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী দিল সেতারার সহযোগিতায় মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে আসেন। এরই মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এবার জিপিএ-৩.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।
আরও পড়ুন: আদর্শ প্রকাশনীর বইমেলায় স্টল বরাদ্দ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
এদিকে ২০১৭ সালের ৩০ মে আদালতের রায়ে ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। আদালতের রায়ে সন্তানের দায়ভার বাবাকে নিতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাবার এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সন্তান হওয়ার কারণে বিবাহিত না হলেও তাকে ফেলা হয়েছে বিবাহিত নারীর কাতারে। তিনি নার্সিং কলেজের ফরমই পূরণ করতে পারবেন না। বিয়ে না করলেও তার সন্তান রয়েছে। তাকে এখন বিবাহিত নারী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। অথবা ফরমে তাকে স্বামী পরিত্যক্তা লিখতে হবে। মেয়েটি কোনো দলেই পড়েন না।
এ অবস্থায় রিট দায়েরের পর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। রুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাওয়া কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে একটি অর্থপূর্ণ নীতিমালা কেন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
এছাড়াও মেয়েটিকে অবিলম্বে নার্সিং কলেজে ভর্তি করতে নির্দেশ দেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি কালো দাগ সৃষ্টি করেছে: হাইকোর্ট
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ৭.৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে সুইডেন
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে দু’দিনের সফর শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটির পক্ষ থেকে ৭৯ মিলিয়ন ক্রোনা বা ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন।
এই অনুদানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রান্নার জন্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, কক্সবাজারের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উন্নয়ন এবং শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের দক্ষতায় উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে।
নিরাপদ জ্বালানি ও শক্তির জন্য এ সকল কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি)-এর যৌথ কার্যক্রম ‘সেফ এক্সেস টু ফুয়েল এন্ড এনার্জি প্লাস, ফেইজ ২’ (সেফ+২) এর আওতাধীন।
রাষ্ট্রদূত লিন্ডে বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দানকারী স্থানীয় বাংলাদেশিদের জীবনে সেফ+২ প্রোগ্রামের ইতিবাচক প্রভাব দেখে আমি মুগ্ধ। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমনের একটি প্রভাব পড়েছিল কক্সবাজারের বনভূমির একটি বড় অংশের ওপর। সেফ+২ এর মাধ্যমে বিস্ময়করভাবে শরণার্থী শিবিরগুলোর আশেপাশের জায়গাগুলোতে সবুজায়ন ও বনায়ন পুনরায় হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই যে শরণার্থীরা এখন পরিচ্ছন্ন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না করছে, এর মাধ্যমে বনভূমি এবং তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিরা দক্ষতা উন্নয়ন ও জীবিকার কাজে জড়িত হচ্ছে। যা অসাধারণ একটি অর্জন। এখানে অবদান রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসডিজি অ্যাডভোকেট বেলজিয়ামের রানী ম্যাথিল্ডে
প্রকল্পের আহ্বায়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, ‘সুইডেনের সরকার ও এর জনগণের এই অনুদানের মাধ্যমে আমরা এক লাখ ৯০ হাজার শরণার্থী পরিবারকে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) দিতে পারব। এই পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শরণার্থীদের সুস্থতা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে। কেননা, এর মাধ্যমে নিশ্বাসের সঙ্গে কম ধোঁয়া ঢুকে এবং এটি বনে গিয়ে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও অন্যান্য সুরক্ষা ঝুঁকি রোধ করে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের একটি সফল পুনর্বাসন হবে এবং টেকসইভাবে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ কমবে।’
এলপিজি ও উন্নত জ্বালানিবান্ধব রান্নার সরঞ্জাম বিতরণের মাধ্যমে লাকড়ির ব্যবহার ও এর সঙ্গে গাছ কাটার পরিমাণ কমানো যায়। এই কার্যক্রমের প্রথম ধাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত চার লাখ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
পুরো প্রক্রিয়াটি আরও কার্যকরী হয় একই সময়ে গাছ লাগানো, পুনরায় বনায়ন এবং ঝিরি ও পানি নিষ্কাশনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে। এই যৌথ কার্যক্রমে পরিবেশের উন্নয়ন ও কৃষি বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগণকে সাহায্য করবে।
২০১৯ সালে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর নেতৃত্বে শুরু হওয়া সেফ+ কার্যক্রমটিকে প্রথম থেকেই সুইডেন সহায়তা দিয়ে এসেছে। প্রথম ধাপের সফলতা ও অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে ২০২২ সালের জুলাইতে এর দ্বিতীয় ধাপ সেফ+২ শুরু হয়। এই কার্যক্রমের দ্বিতীয় ধাপকে বর্তমানে সহায়তা দিচ্ছে সুইডেন ও কানাডা সরকার।
প্রায় ছয় বছর আগে মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজার এলাকায় ঘনবসতিপূর্ণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে এবং আরও ৩০ হাজার শরণার্থী বাস করছে ভাসান চরে।
আরও পড়ুন: থাই সরকারের প্রতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্য করার আহ্বান এপিএইচআর’র
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি, অস্ত্রসহ ২ জঙ্গি গ্রেপ্তার: র্যাব