%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে হাজারো নেতাকর্মীর ঢল
রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যে নগরীতে পৌঁছেছেন।
শনিবার সকাল থেকেই সমাবেশে যোগ দিতে নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীরা রাজশাহী মহানগরীর হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছান।
সমাবেশস্থলে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী মিছিল ও স্লোগান দিচ্ছেন। সকাল ৯টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ দেখতে পান ইউএনবির রাজশাহী প্রতিনিধি।
বৃহস্পতিবার আগে থেকেই নগরীতে পৌঁছানো নেতাকর্মীরা ভেন্যু সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নেন।
জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হবে এবং এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে নগরীতে পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরী ও এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং নগরীর সব প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
সাদা পোশাকেও পুলিশ পুরো এলাকায় টহল দিচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১৭টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের পূর্বে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি
রাজশাহীতে বিএনপি’র নবম বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
পরিবহন ধর্মঘট ও নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে শনিবার রাজশাহীতে নবম বিভাগীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি।
বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজশাহী মহানগর বিএনপি নগরীর মাদরাসা মাঠে সমাবেশের আয়োজন করবে।
এখন পর্যন্ত আটটি সফল জনসভার মাধ্যমে প্রধান বিরোধী দলটি সংখ্যায় এবং সাংগঠনিক ক্ষমতার দিক থেকে তার শক্তি প্রমাণ করেছে। এমনকি বিএনপি জনসভা সফলে সকল বাধা মোকাবিলায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জনসভা সফল করতে এই অঞ্চলে তারা বাস ও অটোরিকশা ধর্মঘট মানবে না।
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ: আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল
রাজশাহীতে শনিবার সকাল ১১টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশের জন্য মাদরাসা মাঠে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে যোগ দিতে এই গণসমাবেশের আগের দিন শুক্রবার দুপুর থেকে রাজশাহী শহরে বিভাগীয় নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নেমেছে।
এর আগের বিভাগীয় সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীরা অবস্থান করলেও প্রশাসনের বাধার কারণে রাজশাহীতে সমাবেশস্থলে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ঢুকতে পারেন নি। অবস্থান নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ এবং আশপাশ এলাকায়।
এদিকে গণপরিবহন ধর্মঘটের পর শুক্রবার থেকে থ্রি হুইলার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এপরও বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে রাজশাহী ঢুকছেন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার সকাল থেকে বেশ কিছু মোটরসাইকেল বহর রাজশাহীতে ঢুকতে দেখা যায়।
সকালে নওগাঁর মান্দা এলাকা থেকে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাজশাহী আসে।
এছাড়াও বগুড়া থেকে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসেছেন নেতারা। তবে পথে পথে তল্লাশির নামে পুলিশের বাধা ও মাঝপথ থেকে বহরটিকে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। নৌকায় করেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে পৌঁছান।
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে খালেদা জিয়ার যোগদানের প্রশ্নই আসে না: বিএনপি
খালেদা জিয়ার জনসভায় যাওয়ার চিন্তা অলীক ও উদ্ভট: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া বিএনপির জনসভায় যাওয়া না যাওয়ার আলোচনা অবাস্তব ও এটি উদ্ভট অলীক চিন্তা।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি, আদালত থেকে কোনো জামিন পাননি। তিনি নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেই দিনটিতে জন্মদিনের কেক কাটেন। এরপরও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় তিনি কারাগারের বাইরে আছেন। এখন যদি তারা এ রকম চিন্তা করে থাকে তাহলে সরকার তাকে কারাগারে পাঠাতে বাধ্য হবে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের নেভি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের পুণর্মিলনী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে তিনি ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে বেগম জিয়ার অংশ নেয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি শীতের পাখি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদ দিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাচ্ছে কেন-এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, প্রথমত: নয়া পল্টনের সামনে বড় জোর পঞ্চাশ হাজার মানুষ ধরে। অর্থাৎ তাদের জনসভায় যে পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ হবে না এটি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। আর দ্বিতীয়ত: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, কার্যত স্বাধীনতাই ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সেখানেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। বিএনপি তো পাকিস্তানের দোসর, তাদের মহাসচিব বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। সেই কারণে এই উদ্যান তাদের পছন্দ নয়।
কিন্তু বড় জনসভার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই হচ্ছে উত্তম এবং তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, তাদের চাওয়া অনুযায়ী উদ্যান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে কি ব্যবস্থা-এ প্রশ্নে তিনি বলেন, বিএনপি তো বিশৃঙ্খলাই করতে চায়। সে কারণেই তারা নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেয়া হবে না। জনগণই তাদের প্রতিহত করবে।
চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে পুরো চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের মাঝে যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, এতে আমরা নিশ্চিত যে এটা স্মরণকালের বৃহত্তম এবং লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে ইনশাল্লাহ।
এর আগে মহসিন কলেজের প্রাক্তনীদের পুণর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, কোনো বিদ্যাপীঠের কার্যক্রম শুধুমাত্র পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে একজন ছাত্র অনেক কিছু শেখে, তার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটে।
তিনি বলেন, আমার স্কুলই আমার জীবনের ভিত রচনা করে দিয়েছে। একইভাবে কলেজেও সুমঙ্গল মুৎসুদ্দি স্যারসহ আরও অনেক শিক্ষক ছিলেন যাদের সান্নিধ্য না পেলে আমি আজকের এই জায়গায় দাঁড়াতে পারতাম না। চট্টগ্রামের অন্যতম সেরা এই কলেজের অ্যলামনাই এসোসিয়েশন আরও সমাজহিতৈষী কর্মসূচি নেবে যেগুলো সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেবে, আশাপ্রকাশ করেন ড. হাছান।
মহসিন কলেজ অ্যলামনাই এসোসিয়েশন ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।
আরও পড়ুন: এদেশের জঙ্গিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা: তথ্যমন্ত্রী
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে খালেদা জিয়ার যোগদানের প্রশ্নই আসে না: বিএনপি
১০ ডিসেম্বর রাজধানীর বহুল আলোচিত সমাবেশে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়ে কিছু বিরোধী নেতার উগ্র মন্তব্যে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও, বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, প্রোগ্রামে তাকে নিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।
তারা আরও বলেন, রাজধানীতে তাদের ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বিএনপির অন্যান্য ৯টি বিভাগীয় কর্মসূচির মতো যেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিবেন এবং দলের পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন।
তবে দলের নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বদ্ধপরিকর।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেছেন, তারা যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চান। কারণ তারা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির পর সরকারের পদত্যাগের দাবি আদায়ে আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করবেন।
আরও পড়ুন: আইজিপির কাছে ‘গায়েবী’ মামলার প্রতিকার চাইল বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের ঢাকার সমাবেশ নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই। এটি অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো। আমি জানি না কেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এবং কিছু মিডিয়া আমাদের চেয়ারপার্সনের সমাবেশে অংশগ্রহণের কথা বলছে। আমাদের স্থায়ী কমিটি কখনই এই বিষয়ে আলোচনা করেনি এবং আমাদের এমন কোনো পরিকল্পনাও ছিল না।’
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তারা তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।
তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে তাদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে মোড় নেয়ার কোনো সুযোগ তারা দেবেন না। আমরা আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেব না, কোনো বিবেকহীন পদক্ষেপ নেব না।গত ৮ অক্টোবর ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে।
দুই দিন পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, খালেদা জিয়া ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেবেন এবং পরে দলের আরও কিছু নিম্ন-স্তরের নেতা আমান ও ফারুকের মতোই কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা অবশ্য বলেছেন, খালেদাকে নিয়ে আমান ও ফারুকের বক্তব্য তাদের ব্যক্তিগত মতামত।এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শর্তসাপেক্ষে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া খালেদা ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দিলে আদালত ব্যবস্থা নেবে।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে মুক্ত করা হয়েছে। কারণ তার পরিবার একটি আবেদন জমা দিয়েছে যে তিনি খুব অসুস্থ ছিলেন বলে তিনি চলাচল করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন যদি ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে যোগ দেন, তাহলে প্রমাণ হবে যে তার পরিবারের আবেদনে যা লেখা ছিল তা মিথ্যা ছিল।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদাকে ছয় মাসের জন্য কারাগার থেকে মুক্তি দেয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় জেল থেকে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ কয়েকবার বাড়িয়েছে সরকার। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন ৭৬ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপার্সন।
২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি। ইতোমধ্যে আটটি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে এবং নবম সমাবেশ শনিবার রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিশাল জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
দলটি নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি চাইলেও ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে সরকার।জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ঢাকার জনসভায় খালেদার অংশগ্রহণ গণমাধ্যম ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের জল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। ‘আমাদের দায়িত্বশীল নেতাদের কেউ এ বিষয়ে কথা বলেননি।’
লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সমাবেশ সফল করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। ‘এটি অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে। আমাদের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য সব ধরনের চক্রান্ত ও উসকানি সম্পর্কে সতর্ক থাকব আমরা।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবে জনসভায় খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করে মন্তব্য করছেন।
‘ম্যাডাম (খালেদা) গৃহবন্দি এবং তিনি খুব অসুস্থ। আমরা কখনই বলিনি যে সে আমাদের প্রোগ্রামে অংশ নেবে। কিন্তু সরকার এই ইস্যুতে খারাপ খেলা খেলছে।’
‘আমরাও রাজধানীতে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করব এবং তারপর বাড়ি ফিরব। আমাদের অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই।’বৃহস্পতিবার পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি নেতা বলেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে তারা তাকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‘আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে বদ্ধপরিকর। কোনো ভেন্যু নিয়ে আমাদের অন্য কোনো পরিকল্পনা নেই।’
আরও পড়ুন: খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
না’গঞ্জে বিএনপি-জামাত-গণঅধিকারের ১৯৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনের সড়ককে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের স্থান হিসেবে পছন্দ করার বিষয়টির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, সড়কটি দখল করলে সীমাহীন যানজট ও নগরবাসীর অপরিসীম ভোগান্তির কারণ হবে।
তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাঠে সমাবেশের আয়োজনের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দাবির মাধ্যমে চূড়ান্ত স্বাধীনতার বীজ বোনা হয়: জয়
তাদের অভিপ্রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তিনি মন্তব্য করেন যে এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো সরু সড়কে বেশী লোকের সমাগম দেখানো।
ওই পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘দলীয় কর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বসে আর না উঠার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। ২০১৪-২০১৫ সালের মতো লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে দেশে আবারও জ্বালাও-পোড়াও করতে চায়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘পুলিশ পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাব করা হয়েছে যে যেহেতু বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি তাই সোহরাওয়ার্দী মাঠ তাদের জন্য ভালো হবে। আওয়ামী লীগ সেখানে নিয়মিত সমাবেশ করে। একই সঙ্গে নগরীর মানুষ ব্যাপক যানজট থেকে মুক্তি পাবে।’
তিনি সতর্ক করে বলেছেন যে, ‘রাস্তা বন্ধ করে জনগণকে দুর্ভোগ ও অনিশ্চয়তায় ফেলে বাংলাদেশের জনবিচ্ছিন্ন দল বিএনপির অপরাজনীতি বন্ধ হোক।’
আরও পড়ুন: ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পর হত্যাকাণ্ড চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করে: জয়
মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি: জয়
মিছিল নিয়ে রাজশাহীর সমাবেশে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন
আগামী কালের গণসমাবেশকে কেন্দ্র রাজশাহীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা দুই দিন আগে থেকেই আসতে শুরু করেছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বুধবার রাত থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা যে যার মতো সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। সমাবেশের পাশে ঈদগাহ মাঠে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছেন তারা। সমাবেশস্থলে ঢুকতে পুলিশের বাধা থাকায় পাশেই ঈদগাহ মাঠে নেতকর্মিরা অবস্থান নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন জেলে উপজেলা থেকে নেতা কর্মিরা মিছিল নিয়ে নগরীতে প্রবেশ করে। সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক, পিকআপ ভাড়া করে, ট্রেনে করে, কেউ পাঁয়ে হেটে মিছিল নিয়ে রাতেই সমাবেশস্থলে পৌঁছেন।
রাজশাহীর ঈদগাহ মাঠে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা ত্রিপল বিছিয়ে ছাময়ানা টাঙ্গিয়ে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন। এক পাশে চলছে রান্নার কাজ।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে গতকাল সমাবেশস্থলে এসেছেন ষাটোর্ধ তবিবুর রহমান।
তিনি জানান, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সিএনজি, অটোরিকশা, পায়ে হেঁটে পুলিশের বাধা পেরিয়ে রাজশাহী আসতে সময় লেগেছে ১২ ঘন্টা। এখানে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরকারে অনিয়মের প্রতিবাদ করতেই অনেক দূর থেকে কষ্ট করে গনসমাবেশে এসেছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের পূর্বে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি
রওশন এরশাদের সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় গুলশানের একটি হোটেলে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতি না দিলে সংসদে যাবে না জাপা
সাক্ষাৎকালে বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে চীনের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় বিরোধীদলীয় নেতা চীনের সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য রাহগির আল মাহি (সাদ) এরশাদ এবং বিরোধী দলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ্।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরেছেন রওশন এরশাদ, জাপায় ঐক্যের ডাক
আইজিপির কাছে ‘গায়েবী’ মামলার প্রতিকার চাইল বিএনপি
দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা নতুন ‘গায়েবী’ মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলুর নেতৃত্বে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপি’র সঙ্গে দেখা করে এবং এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি চিঠিও তাকে হস্তান্তর করে।
বৃহস্পতিবার প্রতিনিধি দলটি দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়ে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা এবং ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে দলের পরিকল্পিত সমাবেশ নিয়ে আইজিপির সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পাঁয়তারার অভিযোগ
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বুলু বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বোমা নিক্ষেপ করে গায়েবী মামলা করছে। ‘আমাদের লোকজনকে গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাই আমরা
আমাদের মহাসচিবের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইজিপির কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছি।’
তিনি জানান, তারা আইজিপিকে আরও বলেছেন যে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং গায়েবী মামলায় গ্রেপ্তারের জন্য তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ‘আমরা এর একটি প্রতিকার চেয়েছি এবং তিনি আমাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও তাদের দলের ৫০ নেতাকর্মীকে হাইকোর্টের গেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে স্লোগান দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢাকার জনসভায় যোগদানের আহ্বান জানিয়ে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে নরসিংদীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবী’ মামলা করা হয়েছে। ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানালে আমরা বোমা ফাটাবো কেন?
বিএনপি মহাসচিবের চিঠি দিয়ে বুলু বলেন, ২২ আগস্ট থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ছয় হাজার ৭২৩ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫ হাজার ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৬৯টি গায়েবী মামলার তালিকা আইজিপিকে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দিন: ফখরুল
এছাড়া গ্রেপ্তার ৫৫৯ বিএনপি নেতাকর্মীর তালিকাও পুলিশ প্রধানের কাছে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা সমাবেশের বিষয়টি তুলে ধরেন। ‘আমরা বলেছি নয়াপল্টনে সভা করতে চাই। আমরা ১৩ নভেম্বর এবং ২০ নভেম্বর নয়াপল্টন আমাদের সভাস্থলের জন্য দু’টি চিঠি (ডিএমপিতে) পাঠিয়েছিলাম। আমরা দ্বিতীয় কোনো ভেন্যু চাইনি।’
তিনি বলেন, পুলিশ কর্তৃপক্ষ তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আয়োজন করার আহ্বান জানিয়ে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ‘আমরা বলেছি এটা আজ আমাদের বিষয় নয়...আমাদের স্থায়ী কমিটি এবং মহাসচিব এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।’
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
বৈঠকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার(২৯ নভেম্বর) ২৬ শর্তে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয় ডিএমপি।
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে নয়াপল্টনে তাদের দল যাতে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশের পূর্বে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি
ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পাঁয়তারার অভিযোগ
ফরিদপুরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার পর উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের পাঁয়তারার অভিযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম ও সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা এ অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে নেতারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বুধবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের জুলুম, নির্যাতন এবং ভুয়া ও গায়েবি মামলার প্রতিবাদে সারা দেশে আহুত প্রতিবাদ সভার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুর মহানগর বিএনপির নেতৃত্বে ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্বরে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম।
বিবৃতিতে ঘটনার বিবরণে বলা হয়, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি মঞ্চে ওঠার আগে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা নিজেরা মাথায় পুলিশের মতো হেলমেট পরে বেপরোয়াভাবে ইট, পাটকেল, লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সভায় অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
এ সময় তারা স্টেজের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে সভা বানচাল করে দেয় এবং সভার ব্যানার পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। এ সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুকের গুলি ছোড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং সভায় উপস্থিত নেতা কর্মীদের ওপর বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করে।
এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ. এফ. এম. কাইয়ুম জঙ্গী ও মহানগর মহিলা দলের সভাপতির স্বামী ও বিএনপিকর্মী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এছাড়া এই আওয়ামী লীগের আক্রমণে ফরিদপুর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
এ সময় পুলিশ বিএনপির প্রায় ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে এবং ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার পরিকল্পনা করে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার পাঁয়তারা করছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
পরে সন্ধ্যায় আহতদের সমবেদনা জানাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম, বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক ও মহানগর মহিলা দলের সভাপতির বাড়িতে উপস্থিত হন।
নেতারা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং গ্রেপ্তারদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ: আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল
১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের সমাবেশের অনুমতি এবং দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কথা বলতে পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি পুলিশ সদর দপ্তরে গেলে দুপুর ১টার দিকে বৈঠক শুরু হয়।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দিন: ফখরুল
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে এ্যানি বলেন, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে তাদের দলকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে এবং সমাবেশের আগে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ করতে আইজিপিকে অনুরোধ করবেন।
এর আগে মঙ্গলবার ২৬ শর্তে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে পারে বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে আ.লীগের ফাঁদে পা দিবে না বিএনপি: গয়েশ্বর