লাইফস্টাইল
তিন দিনব্যাপী শিশুদের আন্তজার্তিক শিল্প প্রদর্শিনী শুরু
ঢাকা, ২৭ আগস্ট (ইউএনবি)-তিন দিনব্যাপী শিশুদের আন্তজার্তিক শিল্প প্রদর্শিনী ‘পেইন্ট ইওর ড্রিম- ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন আর্ট ফেস্টিভ্যাল’ শুরু হয়েছে।
ফোকাস বাংলাদেশের বার্ষিক আয়োজন শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার বাংলাদেশ ক্লাবে এ আয়োজন শুরু হয়।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ইরান, বুলগেরিয়া, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, আজারবাইজান, পাকিস্তান, কানাডা, মালয়েশিয়া, সার্বিয়া সহ ১৩টি দেশের ৩০০ জনের বেশি শিশু শিল্পী অংশগ্রহণ করেছে।
প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পী বীরেন সোম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- তাসিক আহমেদ, খান মোহাম্মদ বিলাল,ড.রাশেদ সুখন, তাহমিনা শিল্পী, মো.শহীদ হোসেন।
আয়োজক মো. কাওসার হোসেন বলেন, ‘এই ধরনের অনুষ্ঠান শিশুদের মধ্যে সংস্কৃতি, দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত বিনিময়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ এর মাধ্যমে তারা তাদের স্বপ্নকে রঙ ও সীমাহীন কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশ করে।’
আরও পড়ুন:গ্রিসে বিশেষ প্রদর্শনীতে 'হাসিনা: এ ডটারস টেল'
ঢাকায় গাড়ি চালানো শেখার জন্য কয়েকটি নির্ভরযোগ্য ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
গাড়ি চালানোর জন্য একটি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মালিকানা সব কিছু নয়। এর সাথে প্রয়োজন গাড়ি চালানো শেখার জন্য একজন পেশাদারের নিকট প্রশিক্ষণ। রাজধানী ঢাকায় অনেক ড্রাইভিং স্কুল আছে যারা এই পেশাদার প্রশিক্ষণ প্রদান করে। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে স্টিয়ারিং ঘুরানো এবং অ্যাক্সেলারেটার ও ব্রেক কন্ট্রোলের মাঝেই এই প্রশিক্ষণ সীমাবদ্ধ নয়। গাড়ি চালানোর সময় অন্য ড্রাইভারদের দিকে খেয়াল রাখা, চালক হওয়ার দায়িত্ব বোঝা, ট্র্যাফিক সিগন্যাল এবং মহাসড়কে গাড়ি চালানোর নিয়মগুলো সম্পর্কে প্রত্যেক ড্রাইভারকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। আজকের ফিচারটিতে তাই ঢাকার কয়েকটি নির্ভরযোগ্য ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
ঢাকার সেরা ১০টি ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট
এটি বিআরটিসি (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন) কর্তৃক পরিচালিত দেশব্যাপি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের একটি উদ্যোগ। এই সরকারি প্রতিষ্ঠানের কোর্সগুলোর প্রশিক্ষকদের সবাই ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর লাইসেন্স প্রাপ্ত। কোর্স শেষ হওয়ার পর লাইসেন্স-এর জন্য টেস্ট তেজগাঁওয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতেই দেয়া যায়। টেস্ট পরিচালিত হয় ড্রাইভিং কম্পেটেন্সি টেস্ট বোর্ডের অধীনে।
হাল্কা গাড়ির জন্য ৪ সপ্তাহের বেসিক ড্রাইভিং কোর্স ফি ৬,০০০ টাকা, যেখানে ৮ সপ্তাহের ভারী গাড়ি চালানো শিখতে প্রয়োজন হবে ৯,০০০ টাকা। অ্যাডভান্স্ড শিখতে হলে ২ সপ্তাহের হাল্কা গাড়ি ড্রাইভিং কোর্স ফি ৩,৫০০ টাকা এবং ভারী গাড়ি ড্রাইভি কোর্স ফি ৪,৫০০/=। ৩,৫০০ টাকা লাগবে ২ সপ্তাহের মোটর সাইকেল ড্রাইভিং কোর্সের জন্য।
পড়ুন: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
মা টেকনিক্যাল ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
গুলশান ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল কেন্দ্রিক এই ট্রেনিং সেন্টারটির কোর্সগুলো বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) প্রশিক্ষিত মাস্টার দ্বারা পরিচালিত। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের জন্যও আছে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। দেড় থেকে দুই মাসের কোর্সগুলোতে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা সহ লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
ফুল, মিডিয়াম এবং শর্ট এই তিন ক্যাটাগরির ড্রাইভিং কোর্স-এ ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ফি নেয়া হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের পছন্দের ভিত্তিতে অটো বা ম্যানুয়েল অথবা উভয় গিয়ারের গাড়িতেই ট্রেনিং দেয়া হয়। এই কোর্সগুলো মর্নিং ও ইভিনিং দুই শিফটে করানো হয়ে থাকে। মর্নিং শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে আর ইভিনিং শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ।
বাংলাদেশ ড্রাইভিং ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (বিডিডিটিআই)
বিডিডিটিআই সারা রাজধানী জুড়ে ধানমন্ডি, গুলশান, উত্তরা, মিরপুরস্থ এলাকায় ড্রাইভিং শেখানোর কাজ করে আসছে। এখানে আছে প্রশিক্ষণকালীন হোস্টেলে থাকার সুবিধা। সুসজ্জিত বড় শ্রেণীকক্ষগুলো যথেষ্ট সংখ্যক প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দানের জন্য উপযুক্ত। প্রশিক্ষকদের প্রত্যেকে বন্ধুত্বের সহিত প্রতিটি সমস্যার সমাধান করে থাকে। এমনকি দুর্বল প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য আলাদাভাবে অতিরিক্ত যত্নের সাথে শেখানো হয়।
পড়ুন: চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়
অবশ্য ব্যক্তিগত বা ওয়ান টু ওয়ান সেশনের জন্য কোর্স ফি তুলনামূলক ভাবে বেশি। এদের বিশেষত্ব হচ্ছে কোর্স শেষে প্রার্থীকে নিজেদের ইনস্টিটিউটেই এরা চাকরির সুযোগ করে দেয়। বিডিডিটিআইয়ের কোর্সগুলো প্রাথমিক, মধ্যম ও অভিজ্ঞ; এই তিন স্তরে বিভক্ত। বাইক, ম্যানুয়াল ও অটো; তিন গাড়ির জন্যই তারা ড্রাইভিং শিখিয়ে আসছে। গাড়ি ও কোর্সের ধরনের উপর ভিত্তি করে কোর্স ফি ২,৫০০ থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
পাথওয়ে ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল
মিরপুর কেন্দ্রিক এই ট্রেনিং স্কুলটি বিআরটিএ নিবন্ধিত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান পাথওয়ের একটি কার্যক্রম। ব্যবহারিক ক্লাসের পাশাপাশি থিওরি ক্লাস তো আছেই; তার সাথে প্রতিটি ড্রাইভিং ব্যবহারিক ক্লাস গ্রুপ ভিত্তিক হয় না বরং প্রত্যেকের জন্য পৃথকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দেশের সর্বস্তরের নারী-পুরুষের সাথে সাথে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্যও আছে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি যানবাহনের ইঞ্জিন মেকানিক্যাল এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে সরেজমিনে শেখানো হয়।
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিনামূল্যে শেখারও সুযোগ আছে। পাথওয়ের প্রতিটি প্রশিক্ষক বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত এবং এদের মাধ্যমে সড়কে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। কোর্স ও গাড়ি ভেদে কোর্স ফিগুলো ৩০০০ থেকে ৯০০০ টাকা।
পড়ুন: ভ্রমণের উপকারিতা: দেশ বিদেশ ভ্রমণ আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে পারে?
শিমু ড্রাইভিং স্কুল
ঢাকার প্রসিদ্ধ ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারগুলোর মধ্যে শিমু ড্রাইভিং স্কুল একটি পরিচিত নাম। মিরপুর ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন এলাকা কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠিত সেন্টারটি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত। শুরু থেকেই সড়ক নিরাপত্তাকে একটি প্রধান উদ্বেগ হিসাবে বিবেচনা করে এটি সর্বোত্তম ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে। তাই সঠিকভাবে ড্রাইভিং শেখার জন্য প্রতি মাসে এখানে অনেক নারী-পুরুষ ভর্তি হচ্ছেন।
জনসাধারণকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি শিমু ড্রাইভিং স্কুল অনেক সরকারি-বেসরকারি কর্পোরেট কোম্পানির জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সরবরাহ করেছে। ড্রাইভিং স্কুলটির পরিচালক নূর নবী শিমুর লেখা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ বইটিও বেশ নামকড়া। এর দুটি কোর্সের মধ্যে ১ মাস ব্যাপি গোল্ডেন কোর্স ফি ৮,০০০ টাকা এবং ২০ দিনের সিলভার কোর্সটির মূল্য ১০,০০০ টাকা।
ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল
দেশ বরেণ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সুবিধা দিয়ে আসছে। রাজধানীর প্রধান এলাকা গুলশান ও উত্তরাকে কেন্দ্র করে তারা বিস্তার করেছে তাদের এই কার্যক্রমটি। এদের ট্রেনিং সমূহের মধ্যে আছে ১২ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ এবং ৩৫ দিনের অনাবাসিক প্রশিক্ষণ। এদের ড্রাইভিং সিমুলেটর সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে প্রগতিশীল ধারায় গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা দেয়।
পড়ুন: চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়
প্রশিক্ষণে গাড়ির চালানোর সময় দারুণ ভাবে ব্লাইন্ড সাইট কাটিয়ে ওঠা রপ্ত করানো হয়। মোট ৩৩টি ক্লাসের মধ্যে ২৮টি ড্রাইভিং ক্লাস এবং ৩টি সিমুলেটর সহ ৫টি তত্ত্বীয় ক্লাস। শুধু ড্রাইভিং-এর জন্য ফি ৮,৫৫০ টাকা যেখানে লার্নিং কার্ড সহ শিখতে গেলে ৯৯৪০ টাকা খরচ করতে হবে। আর অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স সহ খরচ ১৫,৬০০ টাকা এবং পেশাদারের ক্ষেত্রে ১৪,৬০০ টাকা।
এশিয়া ড্রাইভিং স্কুল
পুরান ঢাকার ড্রাইভিং স্কুলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই ড্রাইভিং স্কুলটি। ড্রাইভিং পরীক্ষার প্রতিটি সেকশন একদম হাতে ধরে ধরে বুঝানোর জন্য লাইসেন্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে সবাই ভীড় জমান আজিমপুর রোডের সলিমুল্লাহ এতিমখানা মার্কেটের এই ট্রেনিং সেন্টারটিতে।
বিআরটিএ এবং ট্রাফিক পুলিশ অনুমোদিত এই ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারের কোর্স ফি বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ২,০০০ থেকে ৫,৫০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়ে থাকে। কোর্সগুলোতে গাড়ি চালনার প্রাথমিক ধারণা থেকে শুরু করে যাবতীয় গাড়ির ইঞ্জিন বোঝানো হয়ে থাকে।
পড়ুন: এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে কি করবেন ? এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
তালতলা মোটর ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল
খিলগাঁও এলাকায় গাড়ি চালানো শেখার সেরা মাধ্যমগুলোর মধ্যে এই ট্রেনিং সেন্টারটি অন্যতম। মালিক মোহাম্মদ আলী হোসাইন নিজে একজন দক্ষ গাড়ি চালক এবং তিনিই এখানে প্রধান প্রশিক্ষক। গাড়ির লাইসেন্স ও রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে স্থানীয় ড্রাইভিং সেন্টারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এই প্রশিক্ষকের কাছ থেকে।
৬,০০০ টাকায় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রশিক্ষণার্থীরা গাড়ি নিয়ে সাবলীল ভাবে সড়কে উঠে যেতে পারেন। বিআটিএ অনুমোদিত এই প্রশিক্ষণালয়ে রয়েছে মহিলাদের জন্যও ড্রাইভিং শেখার সুব্যবস্থা।
ন্যাশনাল ড্রাইভিং স্কুল
ধানমন্ডিতে ড্রাইভিং-এ হাত পাকাপোক্ত করার জন্য নির্ভরযোগ্য নাম হচ্ছে ন্যাশনাল ড্রাইভিং স্কুল। গাড়ি চালনার থিওরি ও ব্যবহারিক ক্লাসের পাশাপাশি এখানে রয়েছে যান্ত্রিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ। দীর্ঘ যাত্রায় নিরাপদে গাড়ি চালানোর জন্য সুযোগ্য করে গড়ে তোলার পর প্রশিক্ষণার্থীদেরকে সরবরাহ করা হয় ড্রাইভিং সনদ।
পড়ুন: পণ্য, সেবা ক্রয়ে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করার উপায়
৮,৫০০ টাকার ৩০টি ক্লাসের কোর্সের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত আছে ২৪টি ব্যবহারিক ক্লাস এবং ৬টি থিওরি ক্লাস। সেন্টারটির অবস্থান ধানমন্ডি-২৭ নাম্বারে হওয়ার কারণে এর প্রশিক্ষণার্থীরা ছড়িয়ে আছেন আশেপাশের পান্থপথ থেকে শুরু করে লালমাটিয়া ও মোহাম্মদপুর পর্যন্ত। গাড়ির লাইসেন্স এবং ইন্সুরেন্স সম্পর্কিত কাজের জন্যও প্রশিক্ষণার্থীরা এখান থেকে অনেক সহায়তা পেয়ে থাকেন।
টিটিআই ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার
বিআরটিএ অনুমোদিত এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বর্ণপদকে ভূষিত হওয়া একমাত্র ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র টিটিআই। বিআরটিএ প্রত্যয়িত পেশাদার প্রশিক্ষক এম. এ. রব টিটিআই-এর পরিচালক এবং তিনি নিজের তত্ত্বাবধানেই গাড়ি চালানো শেখান।
পান্থপথের গ্রীণরোড সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত এই ড্রাইভিং স্কুলটিতে সাপ্তাহিক ৫ দিন ক্লাসের ১ মাসের কোর্স-এ ফি নেয়া হয় ১০,০০০ টাকা। ছাত্র-ছাত্রীরা বিশেষ ছাড়ে এখান থেকে ড্রাইভিং শিখে নিতে পারেন। নারীদের প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। টিটিআই-এর সফল প্রশিক্ষণার্থীরা শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মাটিতেও নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছেন।
পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
শেষাংশ
গাড়ি চালানো শেখার জন্য ঢাকার এই ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টারগুলোর মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতা সাড়া জীবনের পাথেয় হয়ে থাকবে। তাছাড়া যন্ত্রাংশের কারিগরি জ্ঞান সহ গাড়ি চালানো শেখা স্বাধীনতার নামান্তর। দেশের যে কোন সড়কে একজন দক্ষ গাড়ি চালক স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে বিচরণ করতে পারেন। সড়ক দূর্ঘটনার আশঙ্কা কমাতে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ আবশ্যক। প্রতিটি গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে চালকের নিজের নিরাপত্তার পাশাপাশি অন্যান্য আরোহীদের জীবনের দায়িত্বও চালকের উপর থাকে। তাই জীবনের জন্য অত্যন্ত দরকারি এই দক্ষতাটি অর্জনের জন্য সঠিক ড্রাইভিং স্কুল নির্বাচন করা জরুরি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর ১০টি উপায়
যে কোন ধরনের সড়কে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন হওয়ায় মোটরসাইকেল চালকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিক সতর্ক থাকতে হয়। গুরুতর আহত থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকায় মোটরবাইক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য পূর্ব সতর্কতার কোন বিকল্প নেই। ছোটখাটো বাধাও অনেক ক্ষেত্রে ভয়ানক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাড়ায়। সাধারণ গাড়িতে গাড়ির দৃষ্টিগোচর আকার সহ সিট বেল্ট বাধার নিরাপত্তাজনিত সুযোগ গ্রহণের অবকাশ থাকে। কিন্তু মোটরসাইকেলে এগুলোর কোনটাই নেই। তাছাড়া চালকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো আরো বিপজ্জনক করে তুলেছে ছোট এই যানটিকে। তাই চলুন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় সতর্কতামুলক কার্যকলাপগুলোর ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
মোটরবাইক দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানোর ১০টি সতর্কতামূলক পন্থা
মোড় ঘুরার জায়গাগুলোতে সতর্ক থাকা
শুধু মোটর বাইক নয়; যে কোন গাড়িই এই জায়গাগুলো পার হবার সময় হর্ন বাজিয়ে যায়। কিন্তু শুধু হর্নই নয়, গতিও কমিয়ে আনা উচিত। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের মত ছোট গাড়িগুলো প্রায়ই অন্যান্য বড় গাড়ি চালকদের চোখ এড়িয়ে যায়।
তাছাড়া ঢাকার রাস্তার কিছুক্ষণ পর পর মোড় থাকায় অনেকেই এসব ব্যাপার তেমন আমলে নেন না। অথবা মাথায় থাকলেও ঘন ঘন হর্ন বাজানো বা গতি কমানোর প্রতি ধৈর্য্য সবার থাকে না। আর ট্রাফিক জ্যামের কারণে এই জায়গাগুলো আরো দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তাই এমন অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখাও মোটরসাইকেল চালানোর একটি পূর্ব শর্ত।
পড়ুন: চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়
গতি কমানো বা থামার সময় সাবধানে পিছনটা দেখে নেয়া
সিগনালে বা রাস্তার পাশে থামার সময় স্বাভাবিক ভাবেই মোটরসাইকেল চালকদের গতি কমাতে হয়। এ সময়টা সতর্ক ভাবে লুকিং গ্লাসে পেছনে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। এমন অবস্থায় প্রধান সড়ক থেকে ফুটপাত সংলগ্ন পাশে চলে আসতে হবে এবং ব্রেক লাইট কয়েকবার ফ্ল্যাশ করতে হবে। সিগনালের থামার সময় সব গাড়িই গতি কমাতে থাকে, তাই এক্ষেত্রে সংঘর্ষ লাগার আশঙ্কা কম থাকে।
কিন্তু নিজের প্রয়োজনে বা কোন সমস্যার কারণে থামতে হলে পিছনে দ্রুত বেগে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। বাইক পুরো না থামিয়ে গিয়ারে রাখা যেতে পারে। এতে সবেগে আসন্ন কোন গাড়ি কাছে এসে আঘাত করবে বলে মনে হলে চট করে বাইক দূরে সরিয়ে নেয়া যাবে।
ট্র্যাফিক জ্যাম এবং পার্ক করা গাড়ির মাঝে মোটরসাইকেল চালানোর সময় সতর্ক থাকা
ঢাকার মত রাস্তায় এটি খুব সাধারণ একটি দৃশ্য হলেও এর ফলাফল অনেক ভয়াবহ হতে পারে। দেখা গেলো হুট করে কোন একজন চালক বা প্যাসেঞ্জার তার গাড়ির দরজা খুলে দিলো। আবার পেছনের কোন একটি গাড়ি চালক ভুল করে অ্যাক্সেলেটারে চাপ দেয়ায় ঠেলে বাইককে সামনে নিয়ে যেতে পারে। এতে বাইক সহ বাইক চালক ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পড়ুন: চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়
আবার যে কোন এক পাশের কোন এক গাড়ির পাশ দিয়ে একজন পথচারী বেরিয়ে আসলো। এ সময় সংঘর্ষ এড়াতে মোটর বাইকের সাথে পাশের কোন গাড়ির সাথে সংঘর্ষ লেগে যেতে পারে।
নিজেকে খুব সহজে দৃষ্টিগোচর করে তোলা
প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গাড়ি চালক রাস্তায় চলার সময় মোটরসাইকেল খেয়াল করে না। মোটরসাইকেল অন্য গাড়ির তুলনায় আকারে ছোট। তাই মোটর বাইক চালকদেরকেই আগ বাড়িয়ে নিজেদের অবস্থানের জানান দিতে হবে। এর সমাধান হিসেবে উজ্জ্বল বর্ণের পোশাক পরিধান করা যেতে পারে। বিশেষ করে রাতে বাইকের লাইটগুলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে এবং অন্ধকারে স্পষ্ট চোখে পড়ে এমন বর্ণের পোশাক পড়তে হবে।
মোড় ঘুরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মোটর বাইক চালক অন্যান্য গাড়ি চালকদের ব্লাইন্ড স্পটে পড়ে না যান। এজন্য মোড় ঘুরার ক্ষেত্রে প্রতি দুই গাড়ির মাঝে যথেষ্ট দূরত্ব রাখতে হবে এবং গতি অবশ্যই অনেক নিচে নামিয়ে আনতে হবে।
পড়ুন: এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে কি করবেন ? এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
ঘন ঘন ওভারটেকিং প্রবণতা পরিত্যাগ করা
মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো গাড়িচালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা। লং ড্রাইভে গাড়িগুলো পরস্পরের সাথে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়। এতে শুধু সেই গাড়িগুলোরই সমস্যা হয় না, কখনো কখনো আশেপাশের লোকেরাও দুর্ঘটনার শিকার হন।
বড় রাস্তাগুলোতে গতি একদম কমিয়ে আনারও উপায় থাকে না। কারণ সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে পেছনের সবেগে চলমান গাড়িটির সাথে ধাক্কা লেগে যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে নিজের জন্য রাস্তার যে কোন একটি পাশ ঠিক করে একটি নির্দিষ্ট বেগে গাড়ি চালানো যেতে পারে। নিজে ওভারটেক না করে বরং লুকিং গ্লাসে দেখে পেছনের গাড়ির অবস্থা বুঝে তাকে পাশ কাটিয়ে যেতে দেয়া উত্তম।
অনেকে দুটি বড় গাড়ির মাঝে যথেষ্ট ফাঁক দেখতে পেয়ে তার মাঝ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে সামনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি তারা পুরোপুরি নিশ্চিতও থাকে না যে সেই জায়গায় তারা ফিট করবে কিনা। এমন দুঃসাহসিক কার্যকলাপ কখনোই চেষ্টা করা উচিত নয়। এরকম একে অপরের সাথে সমান্তরাল অবস্থানে থাকা দুটি লড়ি, ট্রাক বা বাসের মাঝ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।
পড়ুন: পণ্য, সেবা ক্রয়ে প্রতারিত হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করার উপায়
অন্য যানবাহনের ওভারটেকিং-এ নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা
যারা মোটামুটি সবকিছু বুঝে নিজের জন্য এক পাশ বেছে নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন তাদেরকে অন্যান্য চালকদের মানসিকতার দিকটিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা প্রত্যেকে হয়ত শান্ত মোটর বাইক চালক নন। তারা কোন রকম পূর্বাভাস না দিয়েই অন্য গাড়ির পথের উপর চলে আসে।
এছাড়া বড় গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি অনেক সময় অনিচ্ছাবশত ঘটে। কারণ মোটরসাইকেল চালকরা খুব সহজেই ব্লাইন্ড স্পটগুলোতে ফিট করে যায়। এ অবস্থায় যে কোন চালকই মোটরসাইকেলটিকে খুঁজে পেতে ভুল করবে। এর সমাধান হিসেবে তাদের উপর দোষ না চাপিয়ে মোটর বাইকারদের উচিত নিজেদেরকে আরো বেশি দৃষ্টিগোচর করে তোলা।
চালকের রিয়ার-ভিউ মিররে চোখ রাখলে তারাও মোটর বাইক চালককে দেখতে পাবে। তাদের গাড়ি চালানোর প্যাটার্নের দিকে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে। রাস্তায় জ্যাম তেমন বেশি না থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই তারা ওভারটেক করে সামনে এগুতে চাইবে। এ সময় তাদের সাথে প্রতিযোগিতা না করে তাদেরকে সামনে যেতে দেয়া উত্তম।
পড়ুন: বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
এক্ষেত্রে তারা জোরে গাড়ি চালাতে উদ্যত হচ্ছে কিনা তা খেয়াল করা যেতে পারে। তাদের টার্ন সিগনাল, তাদের চারপাশে দেখার জন্য মাথা নড়াচড়া করা প্রভৃতি কার্যকলাপগুলো ওভারটেকিং-এর লক্ষণ দেখাবে। তাদের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে এই সচেতনতাটুকু বেশ কার্যকর।
ইউ টার্ন নেয়ার সময় সতর্কতা
এই বিপজ্জনক অবস্থাটিতে দুই দিকে খেয়াল রাখতে হয়। এক অপর রাস্তার উল্টো পাশ থেকে কোন গাড়ি কত দ্রুত আসছে। আর দুই মোটর বাইকের সাথে আরো কোন গাড়ি ইউ টার্ন নিচ্ছে কিনা। ঢাকার রাস্তায় অবশ্য এই দুটি ছাড়াও আরো বিভিন্ন দিকে দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।
তবে প্রাথমিক ভাবে উল্টো পাশের গাড়ি থেকে যতটুকু দূরত্ব বজার রাখা যায় ততই ভালো। আর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো বাইকের গতি অনেক কমিয়ে আনা। আইল্যান্ডের সাথে বাইক লেগে যাচ্ছে কিনা সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
মোটরসাইকেলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের রুটিন চেক
মোটরসাইকেলটির নিরবচ্ছিন্ন চলমান অবস্থা বজায় রাখতে এর যন্ত্রাংশ ঠিক রাখা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের তালিকায় ইঞ্জিন, ব্রেক, টায়ার, হেডল্যাম্প, টার্ন সিগনাল, এবং জ্বালানি রাখতে হবে।
মোটরসাইকেল চালানোর সময় ফোনে কথা না বলা
মোটরসাইকেল চালানোর সময় কখনই মোবাইল ফোনে কথা বলা ঠিক নয়। দু’হাতকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ব্যবহার করতে হবে মোটর বাইক চালানোর কাজে। এমনকি ব্লুটুথ দিয়েও ফোনে কথা বলা উচিত নয়। কারণ এটি গাড়ি চালানো থেকে মনকে বিচলিত করে। খুব জরুরি হলে ধীর গতিতে রাস্তার একেবারে ফুটপাত সংলগ্ন জায়গায় বাইক থামিয়ে তারপর ফোন ধরা যেতে পারে।
খারাপ আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানো এড়িয়ে চলা
ঝর, বৃষ্টির মত প্রতিকূল আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানো একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। মোটরসাইকেল চালানোর আদর্শ রাস্তা হলো শুষ্ক রাস্তা। ভেজা রাস্তায় টায়ারের ঘর্ষণ ক্ষমতা কম থাকে। পারতপক্ষে এই ধরনের পরিস্থিতিতে গাড়ি না চালানোই উত্তম। তবে খুব প্রয়োজন হলে গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। খারাপ আবহাওয়ায় মোটর বাইকের দৃশ্যমানতা কমে যাওয়াটাও একটা সাধারণ ব্যাপার।
পড়ুন: মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
শেষাংশ
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য উপরোক্ত উপায়গুলো যে বিষয়টির উপর সব থেকে গুরুত্বারোপ করছে তা হলো অল্প গতিতে মোটরসাইকেল চালানো। মোটরসাইকেলের সব দুর্ঘটনার পেছনে মুলত এই দ্রুত গতিই দায়ী। হুট করে সামনে কোন কিছু এসে পড়লে খুব জোরে ব্রেক কষা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মোটরবাইক চালককে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। এমনকি কখনো এমন কিছু পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে ভাগ্যের দয়ার উপর ছেড়ে দিতে হয়। তাই সবচেয়ে নিরাপদমূলক কাজ হলো, বাইককে সব সময় অল্প গতিতে রাখা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও নিদেনপক্ষে এ সময় চট করে নিজেকে নিরাপদ অবস্থায় নিয়ে যাবার জন্য চিন্তা করা যায়।
হৃদরোগে আক্রান্ত ৯২ শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিল কাতার চ্যারিটি
জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত ৯২ গরীর ও অসহায় শিশুর বিনামূল্যে অপারেশন হয়েছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে।
আর্ন্তজাতিক দাতব্য সংস্থা কাতার চ্যারিটির অর্থায়নে গত ১৩ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্পে শিশুদের এই ব্যয়বহুল অপারেশন হয়। কাতার থেকে আসা একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এই মেডিকেল ক্যাম্পে অংশ নেয়।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলোজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার জানান, ‘ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার পুরোপুরি অর্থায়ন করেছে কাতার চ্যারিটি। ৯২ শিশুকে হৃৎপিনণ্ডে ছিদ্রজনিত কারণে প্রয়োজনীয় ডিভাইস দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়
তিনি বলেন, ‘এসব শিশুরা খুবই দরিদ্র পরিবারের। ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা বহন করার কোন সামর্থ্যই তাদের পরিবারের ছিল না। কাতার চ্যারিটি দরিদ্র এই পরিবারগুলোর সন্তানদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।’
কাতার চ্যারিটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ড.আমিন হাফিজ ওমর বলেন, ‘জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা কার্যক্রমে বিভিন্ন দেশের প্রখ্যাত শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, টেকনোলোজিস্ট ও অ্যানেসথেটিস্টরা অংশ নিয়েছেন। খুব শিগগিরই এসব শিশু পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে।’
প্রতিবছরই এই হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন:উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
গবেষণা নির্ভর বিদ্যাপীঠের জন্মস্থান জার্মানি জ্ঞানের এক সমৃদ্ধশালী বিশ্বকোষ। ইউরোপীয়ান দেশটির ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছে কিউএস (কোয়াককোয়ারেল সাইমন্ডস) র্যাঙ্কিং-এ। সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো- বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কোন অর্থই খরচ করতে হয় না। দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পনেরশটিরও বেশি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ দিয়ে আসছে। এগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের মতো অধিক চাহিদা সম্পন্ন কোর্সগুলোই প্রধান, যেখানে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা হয়। আজকের আর্টিকেলটি আলোচনা হবে জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের জন্য আবেদন পদ্ধতি নিয়ে।
জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের জন্য পর্যায়ক্রমিক আবেদন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: জার্মানিতে স্নাতকোত্তর নিয়ে যথেষ্ট জ্ঞানার্জন ও পরিকল্পনা
আবেদন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য অনেক আগে থেকেই মাস্টার্স ও পিএইচডির ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। আর এই তথ্যগুলোই তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করবে। প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে, শিক্ষার্থীর স্নাতক করা বিষয়টির উপর স্নাতকোত্তর করার সুযোগ জার্মানির বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিচ্ছে কিনা। খুব সহজে নিজের পছন্দের বিষয়টি খুঁজে নেয়ার জন্য কমুনিটি ওয়েবসাইট ডাড-এর সাহায্য নেয়া যেতে পারে। বিনাখরচে পড়ার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টির শহরের প্রতিও নজর দেয়া উচিত। স্বাভাবিক ভাবেই উন্নত শহরে চাকরির ব্যবস্থা সহজসাধ্য হয়ে থাকে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রেস্ট্রিক্টেড ক্যাটাগরির কিছু কোর্স থাকে, যেগুলোতে ভর্তির আসন সংখ্যা থাকে সীমিত। এখানে সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের ভেতর থেকেই বাছাই করা হয়ে থাকে। আর কিছু থাকে নন-রেস্ট্রিক্টেড প্রোগ্রাম। এখানে তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা পূরন করলেই অফার-লেটার পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচনের সময় এই রেস্ট্রিক্টেড ও নন-রেস্ট্রিক্টেড বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
তারপরেই আসছে খরচেই বিষয়টি। পড়াশোনার খরচ না থাকলেও একজন শিক্ষার্থী জার্মানিতে যেয়ে পড়াশোনার সময় প্রথম বছর তার থাকা-খাওয়ার খরচ চালাতে পারবে কিনা তার জন্য সিকিউরিটি মানির ব্যবস্থা করতে হয়। এই অঙ্কটি এখন পর্যন্ত ১০,৩৩২ ইউরো বা প্রায় ১০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি হলেও, সামনের উইন্টার সেশন অর্থাৎ ২০২৩-এর শিক্ষার্থীদের জন্য ১১,১৭২ ইউরো বা ১০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৬ টাকা হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাবার পর ভিসা হওয়ার আগে জার্মানিতে নির্দিষ্ট ব্যাংকে এই টাকাটা পাঠিয়ে দিতে হয়। খুব কম সময়ের মধ্যে এতগুলো টাকা একসাথে ব্যবস্থা করা খুব কঠিন ব্যাপার। তাই মনস্থির করার পর পরই এই টাকা ব্যবস্থা করার চেষ্টা শুরু করতে হবে।
শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ থেকেই জার্মানির নির্দিষ্ট ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকাটা পাঠাতে হয়, যেটা শিক্ষার্থীর নামেই ব্লক্ড অ্যাকাউন্ট হিসেবে জমা থাকে। শিক্ষার্থীকে জার্মানিতে যাওয়ার পর প্রতি মাসে ৮৬১ ইউরো করে এক বছরে পুরো টাকাটা তুলতে পারবে। পূর্ব পরিকল্পনার সময় এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন ও খরচের বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নিতে হবে।
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত প্রতি বছরে ২টি সেশনে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। একটি সামার সেশন; যেখানে আবেদনের সময়সীমা থাকে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি হলো উইন্টার, এবং এখানে আবেদন করতে ১ মে থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আবেদনের ক্রিয়াকলাপ শুরু করার সময় এই সময়সীমার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা আবশ্যক।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
দ্বিতীয় ধাপ: আইইএলটিএস সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য টেস্ট
জার্মানিতে প্রায় সব স্নাতকোত্তর কোর্সই স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়। জার্মানি ভাষা শেখাটাতে স্বাভাবিক ভাবেই পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জবে সুবিধা পাওয়া যায়। তবে ইংরেজি বলতে পারা লোকদের জন্যও জার্মানি বেশ সাবলীল। তাই নূন্যতম ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর যথেষ্ট জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা ও জীবন ধারণের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য। তবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ের উপর নির্ভর করে জিআরই বা জিম্যাটও চাইতে পারে। এর জন্য আগেই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে চাহিদাগুলো জেনে নিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়
→ (অনার্স, বিএসসি, বিবিএ, বিএ) স্নাতক সহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
(স্টাডি গ্যাপ সর্বোচ্চ ৪ বছরের বেশি গ্রহণযোগ্য নয়)
→ যারা এখনো গ্রেডিং সিস্টেমের আওতাভুক্ত হননি তাদের জন্য মিনিমাম পাসিং গ্রেড সংযুক্ত করতে হবে
→ পাসপোর্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ স্টাডি প্ল্যান সহ মোটিভেশন লেটার
→ ২টি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে জার্মানিতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের উপর শিক্ষার্থীর নিজের স্নাতক করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের নিকট থেকে ১টি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)
→ জার্মানির ব্যাঙ্কে ব্লক্ড অ্যাকাউন্টের নথি
→ ইউরো পাস সিভি
এছাড়াও কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো কিছু কাগজপত্র দরকার হতে পারে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালো করে অধ্যয়ন করে নিতে হবে। সকল কাগজপত্র যোগাড় করে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, শিক্ষা বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, এবং ঢাকার জার্মান এম্ব্যাসি থেকে সত্যায়ন করতে হবে। অথবা বিকল্প হিসেবে নোটারি করা যেতে পারে।
পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
চতুর্থ ধাপ: আবেদন পদ্ধতি
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার আবেদনের জন্য সবচেয়ে সহজ ও বিনাখরচের মাধ্যম হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্ব স্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র আগে থেকেই স্ক্যান করে রাখতে হবে। তবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় হার্ড কপি চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে ফেডেক্স বা ডিএইচএলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় কুরিয়ার করতে হবে। এখানে কিছু খরচ করতে হবে। এছাড়াও ইউনি অ্যাসিস্টের মাধ্যমেও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে ইউনি অ্যাসিস্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এখানে আবেদনপত্রসহ সত্যায়িত বা নোটারী করা কাগজগুলোর এক সেট ইউনি অ্যাসিস্টের এর ঠিকানায় ডিএইচএল বা ফেডেক্স দিয়ে পাঠাতে হয়। এখানে বেশ ভালো পরিমাণ খরচ হয়ে যায়।
একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে যেটার ডেডলাইন খুব কাছাকাছি, স্বাভাবিক ভাবেই সেটাতে আগে আবেদন করতে হবে। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ইন্টারফেস এক রকম নয়। কিন্তু যে তথ্যগুলো প্রদান করতে হয় তা ঘুরে ফিরে প্রায়ই একই। তাই এক্ষেত্রে একটু সাবধানতার সাথে আবেদন ফর্ম পূরন করলে তেমন জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যানকপি আপলোড সহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এখানে কোন রকম টাকাপয়সা খরচ হবে না, বরঞ্চ সাথে সাথেই বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনপত্র পেয়ে যাবে। এমনকি কৃতকার্য হলে অফার-লেটারটিও খুব কম সময়েই শিক্ষার্থীর ইমেইলে চলে আসবে।
পঞ্চম ধাপ: ভিসার জন্য আবেদন
বাংলাদেশের জার্মান এম্বেসির বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক। আজকে এপায়নমেন্টের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করলে ইন্টার্ভিউয়ের ডাক পেতে পেতে ১০ থেকে ১২ মাস লেগে যাচ্ছে। এই বিড়ম্বনাটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পুরনের সকল প্রচেষ্টা এক নিমেষেই ভেঙে গুড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই সময় হিসাব করে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজগুলো করার মুহুর্তে আগে ভাগেই রেজিষ্টেশন করে রাখা ভালো। যারা ২০২৩-এর উইন্টার সেশনটা ধরতে চান তাদের জন্য সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে বছরের শুরুতে তথা জানুয়ারিতেই এপায়নমেন্টের রেজিষ্টেশন করে রাখা। তাহলে অক্টোবর থেকে নভেম্বর নাগাদ ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের ডেট পাওয়া যেতে পারে।
জার্মান এম্ব্যাসী থেকে ইন্টার্ভিউ ডেট দেয়ার পূর্বে যাবতীয় কাগজপত্রের সফট-কপি চেয়ে শিক্ষার্থীকে ইমেইল করা হবে। এর ৭ দিনের মধ্যে ঐ মেইলের রিপ্লাইয়ে সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতে হবে। দরকারি কাগজপত্রগুলো হলো-
→ ইনরোলমেন্ট সনদ
→ আবেদনকারির সম্প্রতি তোলা বায়োমেট্রিক্যাল পাসপোর্ট সাইজ ছবির ৩ কপি (৩ টি ছবি এক পেজে নিয়ে পিডিএফ করে পাঠানো যেতে পারে)
→ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সহ সম্পূর্ণ ভাবে পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম
→ পাসপোর্ট
→ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার লেটার
→ স্নাতক সহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ ব্লক্ড অ্যাকাউন্টের প্রমাণপত্র
→ ৬ মাসের ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স
→ মোটিভেশন লেটার
→ সম্মতির ঘোষণাপত্র
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
সবগুলো স্ক্যান করা ফাইলকে একসাথে করে একটি ১০ মেগাবাইটের পিডিএফ ফাইল বানিয়ে মেইল করতে হবে। ভাগ্য ভালো থাকলে কাগজপত্র ইমেইলের সাথে সাথেই ঐ দিনই ইমেইল অথবা ফোন করে ইন্টারভিউয়ের ডেট জানিয়ে দিতে পারে।
অতঃপর ভিসা ইনটারভিউয়ের ডেট পাওয়ার পর ইমেইল করা প্রতিটি কাগজপত্রের মুল কপি সঙ্গে নিয়ে এম্ব্যাসিতে যেতে হবে। অনলাইন সফ্ট কপিগুলোর ২ সেট সাদাকালো ভাল মানের অফসেট কাগজে প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে হবে।
সাধারণত ইন্টারভিউয়ের দিন থেকে ২৫ কর্মদিবসের মধ্যেই ভিসা দিয়ে দেয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কমবেশি হতে পারে। পাসপোর্ট সংগ্রহের ইমেইল পাওয়ার পর ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের সময়ে যে কাগজ দিয়েছিলো, সেটা নিয়ে এম্ব্যাসিতে গেলেই ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।
শেষাংশ
ব্যবহারিক জ্ঞান ও গবেষণাধর্মী কাজে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যেই জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার এই উদ্যোগ। অন্যান্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ন্যায় বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি গত কয়েক বছর ধরে সফলতার সঙ্গে পড়াশোনা করছেন জার্মানিতে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে গুরুত্ব পাচ্ছে জার্মান ভাষা শিক্ষার। এরই ধারাবাহিকতায় ইংরেজির মত জার্মান ভাষারও শিক্ষা ও চর্চার জন্য সৃষ্টি হয়েছে অনেক সুযোগ। তবে ভিন্ন সংস্কৃতির এই দেশটিতে পড়তে যাওয়ার জন্য যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দরকার সেটি হচ্ছে ধৈর্য্য। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা সহজলভ্য হলেও পদে পদে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। বিশেষ করে জার্মানির পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য আবেদনের মুহুর্ত থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, পড়শোনার কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ এবং ক্যারিয়ারের সুব্যবস্থা থাকার কারণে বিদেশে পড়তে চাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রিয় পছন্দ নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ে। স্কলারশিপের কোটা প্রকল্প বর্তমানে না থাকলেও, বিদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে স্নাতকোত্তরের সুবিধা রেখেছে নরওয়েজিয়ান সরকার। অন্যান্য বহিরাগতদের ন্যায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও নিজেদের যোগ্যতায় অধ্যয়ন করছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) এই সদস্য দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। শুধুমাত্র নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে নিজেদের পছন্দমত ইংরেজি ভাষার মাস্টার্স কোর্সগুলো করতে পারছে। এবার নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য আবেদনের প্রতিটি পর্যায় জেনে নেয়া যাক।
নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর করার জন্য পর্যায়ক্রমিক আবেদন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা
যে কোনো কাজের জন্যই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়টি হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি, যাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে সেই বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানার্জন বা তথ্য সংগ্রহ। সেখানে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি দেশে যখন পড়তে যাওয়া হচ্ছে, তখন অভিবাসনের যাবতীয় খুঁটিনাটি ভালো করে জেনে নেয়া আবশ্যক।
সবার প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে সেই দেশটিতে যাওয়ার পেছনে শিক্ষার্থীর আসল উদ্দেশ্য সম্পাদনের ব্যাপারে। তাই এই পর্যায়ে শিক্ষার্থী যে বিষয়ে মাস্টার্স করতে ইচ্ছুক সে বিষয়টি সেই দেশের নামকড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অফার করছে কিনা তা ভালোভাবে জানতে হবে। নরওয়ের বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বের সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ বিষয়গুলোতে দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স করার সুযোগ আছে। এর জন্য নরওয়ের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
আরও যে বিষয়টি এই পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে- এই পুরো পদ্ধতিটিতে কত টাকা খরচ হবে তা সুষ্পষ্টভাবে জেনে এখন থেকেই তা যোগাড়ের ব্যবস্থা শুরু করা। গুটি কয়েক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাদে নরওয়ের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা একদম ফ্রি। প্রতি সেমিস্টারের শুরুতে যে রেজিস্ট্রেশন ফিটা দেয়া লাগে তা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন থেকে সাত হাজারের মত।
তবে সমস্যা হলো- অন্যান্য দেশগুলোর মত এখানে শুধু ব্যাংক সল্ভেন্সি দেখালেই হয় না। ভিসা হওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাবার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে প্রায় ১২ লাখ টাকা পাঠাতে হয়। নরওয়েতে এক বছরের শিক্ষার্থীর থাকার খরচ বাবদ অগ্রিম এই টাকাটা নেয়া হয়। এটা আসলে কোনো ব্যাংক সলভেন্সি দেখানো না বা কোনো ব্লক্ড একাউন্ট না।
জার্মানির ক্ষেত্রে যেটা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়র একাউন্টে টাকা পাঠানোর পর সেই টাকা ১২ মাসে ভেঙে ভেঙে ফেরত দেয়া হয়। আর নরওয়েজিয়ান ইউনির্ভাসিটিগুলো টাকাটা একবারেই দিয়ে দেয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নরওয়েতে যাওয়ার পর নিজের একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সেই ১২ লাখ টাকা শিক্ষার্থীর ব্যাংক একাউন্টে ফেরত দিয়ে দেয়। এই বিষয়গুলো পরিকল্পনার সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
দ্বিতীয় ধাপ: আইইএলটিএস দেয়া
নরওয়েতে আন্ডারগ্রাজুয়েশন করার জন্য সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসা দেয়া হয় না। এর পেছনে কারণ হলো ওদের অধিকাংশ আন্ডারগ্রাজুয়েশন কোর্স নরওয়েজিয়ান ভাষায় পড়ানো হয়। তবে স্নাতকোত্তর সব কোর্সই ইংরেজি ভাষায় করার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইংরেজি হওয়াতে আইইএলটিএস ছাড়া নরওয়েতে পড়তে যাওয়া সম্ভব নয়। নূন্যতম স্কোর ছয় পয়েন্ট পাঁচ হতে হয় তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ছয় স্কোরও গ্রহণ করে। সুতরাং পরিকল্পনার পর নরওয়েতে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয় হিসেবে প্রথম কাজ হলো আইইএলটিএস দেয়া।
নরওয়েতে পরিবার নিয়েও আসা যায়। আবেদনকারী যদি স্বামী হন তাহলে তার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন নেই। আবার স্ত্রীর ক্ষেত্রে স্বামী ও সন্তানের আইইএলটিএস স্কোর লাগবে না। তারা শুধুমাত্র অতিথি হিসেবে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে নরওয়ে আসতে পারবেন।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
তৃতীয় ধাপ: আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড়
→ এসএসসি, এইচএসসির ও নূন্যতম তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রির সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট
(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। স্টাডি গ্যাপ সর্বোচ্চ চার বছর গ্রহণযোগ্য)
→ পাসপোর্ট
→ আইইএলটিএস সনদ
→ স্টাডি প্ল্যানসহ মোটিভেশন লেটার
→ দুটি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে নরওয়েতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের ওপর অধ্যাপকের কাছ থেকে একটি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)
→ ব্যাংক সলভেন্সি পেপার
এগুলো ছাড়াও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আরও কিছু নথি চাইতে পারে। এর জন্য সর্বোত্তম কাজ হলো- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালোভাবে অধ্যয়ন করে নেয়া।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
চতুর্থ ধাপ: আবেদন
প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যোগাড় হয়ে গেলে এবার চূড়ান্ত আবেদনের পালা। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্টাডি ইন নরওয়ে ওয়েবসাইটে যেয়ে খুব সহজেই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন। এই সাইটের মাধ্যমে আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়তে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর আবেদনের ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির পাশে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়র নামের ওপর ক্লিক করে বিশ্ববিদ্যালয়তে আবেদনের পেইজে প্রবেশ করা যাবে।
অতঃপর এই অনলাইন আবেদনে যা যা নথি চাওয়া হবে সেগুলো সব আপলোড করে সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে। তাই আগে থেকেই কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি প্রস্তুত করে রাখতে হবে। আর এই সামগ্রিক প্রক্রিয়াতে কোথাও কোনো ধরনের ফি প্রয়োজন হবে না।
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে আবেদনের জন্য দরকারি কাগজপত্র সংগ্রহ করা এবং চূড়ান্ত আবেদনের ক্ষেত্রে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। নরওয়েতে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য মূলত একটাই সেশন। প্রতি বছরের আগস্টে সেশন শুরু হয়। আর এই সেশন ধরার জন্য আবেদন করতে হয় ঠিক তার এক বছর আগে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। তার মানে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের সেশন ধরতে হলে আবেদনের সময় শুরু হবে ২০২২ এর আগস্ট থেকে।
আরও পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামে আবেদন করে দরকারি সব কাগজপত্রের সফট কপি জমা দিয়ে ফেলতে হবে। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদনকারীকে একটা কনফারমেশন মেইল দেয়া হবে। এ সময় অতিরিক্ত কোনো কাগজ লাগলে সেটা মেইল করে জানানো হবে।
পঞ্চম ধাপ: ভিসার জন্য আবেদন
আবেদন প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ফলাফল আসবে পরের বছরের মার্চের শেষ নাগাদ কিংবা এপ্রিলের শুরুর দিকে। ঠিক এই সময়েই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। অফার লেটার পাওয়ার পর আবেদনের সময় জমা দেয়া কাগজপত্রগুলো এবার অ্যাটাস্টেড করে গুলশানের ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিস) গ্লোবালে যেয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়র দেয়া একাউন্টে ১২ লাখ টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। এই টাকা পাঠানোর কনফারমেশন পেপারও সেই ভিএফএস গ্লোবালে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়।
এখানে দরকারি কাগজপত্রগুলোর সঙ্গে পূর্ণ পূরনকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, শেঞ্জেন ফরমেটের (৩৫ মিলিমিটার বাই ৪৫ মিলিমিটার) ছবি, স্টেটমেন্ট অব পার্পাস, কভার লেটার, অ্যাম্বেসির মনোনীত প্রতিষ্ঠান থেকে হেলথ ইনসুরেন্স সনদ এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ভিসার যাবতীয় প্রক্রিয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৬২ হাজার টাকার মত খরচ হবে। সবকিছু পাওয়ার পর ভিএফএসের পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা ইন্টারভিউ নেয়া হবে। ইন্টারভিউয়ের ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস পর কাঙ্ক্ষিত সেই নরওয়ে যাবার ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
নরওয়ের নাগরিকত্ব নিয়ে কিছু কথা
নরওয়ের পিআর (পার্মানেন্ট রেসিডেন্স) ব্যবস্থা বেশ সহজ। দুবছর অধ্যয়নের পর যে বিষয়ে মাস্টার্স করা হয়েছে সে বিষয়ের ওপর কোনো চাকরি যোগাড় করতে পারলেই পিআর নিশ্চিত। তিন বছর মেয়াদী পিএইচডি করা অবস্থাতেও এই পিআর পাওয়া যায়। কারণ নরওয়েতে পিএইচডি কে চাকরি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তার মানে পিআর-এ কোনো অনিশ্চয়তা নেই।
শেষাংশ
সবশেষে বলা যায় যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিচ্ছে। শুধু একটি সম্মানজনক ক্যারিয়ারই নয়; উচ্চশিক্ষার এই সুযোগটি কাঙ্ক্ষিত ও উন্নত জীবন ধারণের একটি কারুকার্যমণ্ডিত সোপান। নিজেদের জীবনকে সুন্দর করার পাশাপাশি এই তরুণরা বাংলাদেশের জন্য বিপুল সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে সমৃদ্ধশালী জীবনের লক্ষ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও রেখে যাচ্ছে অনুসরণীয় পদচিহ্ন।
‘সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ পেলেন বিশ্বজয়ী নাজমুন নাহার
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের ১৫৫ দেশে লাল সবুজের পতাকা বহনের কৃতিত্ব স্বরূপ ‘সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ পেয়েছেন নাজমুন নাহার। বুধবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে তাকে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।
'স্ট্রাগল টু সাকসেস' শিরোনামে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাকসেস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. মো. মোশারফ হোসেন নাজমুন নাহারকে এই বিশেষ সম্মাননা ও সার্টিফিকেট তুলে দেন। এসময় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এভারেস্ট বিজয়ী মুহিতসহ অন্যান্য সফল ব্যক্তিত্বরা এই সম্মাননাটি পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ড. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘নাজমুন নাহারের অবদান বাংলাদেশের জন্য সত্যিই গর্বের। তিনি স্ট্রাগল করে সাকসেস হয়েছেন। আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। আমরা তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিদ্যাপীঠে সাকসেস ফাউন্ডেশন আয়োজিত সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২২ প্রাপ্তির সম্মাননা ও গৌরবে ভূষিত করলাম।’
পড়ুন: ১৫৫ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়লেন নাজমুন নাহার
গ্রীন কফি: উপকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বানানোর নিয়ম
সুস্থ জীবনধারণ বজায় রাখা ব্যক্তিদের অনেকেরই খাদ্যাভাসে আজকাল শোভা পাচ্ছে গ্রীন কফি। গ্রীন কফি আসে মূলত গ্রীন কফির বীজ থেকে। সাধারণ কফির ন্যায় এটি কোন রকম প্রক্রিয়াজাত করা বা ভাজা হয় না; একদম কাঁচা থাকে। গ্রীন কফি বীজের নির্যাস সুইস ওয়াটার প্রক্রিয়ায় কফিকে ডিক্যাফিনেটিং করতে ব্যবহার করা হয়। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এই প্রক্রিয়াটি ১৯৮০-এর দশক থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামের এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর মাত্রায় ধারণ করে। আর এই বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেকেই গ্রীন কফিকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি পানীয় হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। চলুন, জেনে নেয়া যাক গ্রীন কফির উপকারিতা সহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং কিভাবে গ্রীন কফি বানাতে হয়।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গ্রীন কফির উপকারিতা
ব্লাড সুগার এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
গ্রীন কফি বা এর নির্যাস পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা এবং সামগ্রিক লিপিড প্রোফাইল উন্নতি করতে পারে। এই প্রত্যেকটি বিষয় টাইপ-২ ডায়াবেটিসের বিকাশ বা অগ্রগতির সাথে যুক্ত। গ্রীন কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে। এছাড়া বিপাকীয় সিনড্রোমের চিকিৎসা করতে পারে, যেটি মূলত প্রিডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ।
উচ্চ রক্তচাপ কমানো
উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ কমাতে গ্রীন কফি বীজ অথবা এর নির্যাসে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের ক্ষমতা অভাবনীয়। এর পাশাপাশি রক্তনালীর কার্যকারিতাও উন্নত করার প্রমাণ বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে।
পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
উচ্চ কোলেস্টেরল কমানো
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গ্রীন কফি বীজের নির্যাসের প্রভাব দুর্দান্ত। গ্রীন কফি নির্যাস সাপ্লিমেন্টেশন ব্যবহার করে রোগীদের মধ্যে হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) বা ভাল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা খারাপ কোলেস্টেরলের হ্রাস হতে দেখা গেছে।
শরীরের ওজন কমানো
কফি পান করা একটি সাধারণ উপায় যা অনেকেই ওজন কমানোর জন্য বেছে নেয়। কফিতে থাকা ক্যাফেইন থার্মোজেনেসিসকে উদ্দীপিত করে যারা নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন তাদের শক্ত অনুশীলগুলো করতে সাহায্য করে। অনেক সময় ধরে পাকস্থলি পূর্ণতার পাশাপাশি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা সাময়িকভাবে হ্রাসের মাধ্যমে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। শরীরের বিপাক বৃদ্ধি জন্য দায়ী হরমোন অ্যাডিপোনেক্টিন গ্রীন কফি বীজের নির্যাস গ্রহণে বৃদ্ধি পায়।
ত্বকের উন্নতি
গ্রীন কফি বীজ নির্যাস ত্বককে হাইড্রেটেড রেখে তার গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড শুধুমাত্র ত্বকের আর্দ্রতা বাষ্পীভবন থেকেই রক্ষা করে না, বরং ত্বকে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে সহায়তা করে। ফলশ্রুতিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলো ত্বকে পৌছতে পারে এবং ত্বককে সুগঠিত এবং মসৃণ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করতে পারে। গ্রীন কফি বীজের নির্যাস সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বকের নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতাও বাড়ায়।
পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
তারুণ্য বজায় রাখা
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো শরীরকে বার্ধক্য প্রক্রিয়ার জন্য দায়ী ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো দূর করতে সহায়তা করে। ফ্রি-র্যাডিকেলগুলো ডিএনএ ভেঙ্গে ফেলে সময়ের সাথে সাথে শরীরের তারুণ্য ভাবকে ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
শক্তি বর্ধক পানীয়
গ্রীন কফি বীজের নির্যাসে থাকা ক্যাফেইন একটি দারুণ দিনের সূচনা করতে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তিতে মাঝারি পরিমাণের জ্বালানি সরবরাহ করে। সাধারণ কফিতে ব্যবহৃত ভাজা বীজগুলোর তুলনায় কাঁচা সবুজ কফি বীজগুলোতে কম ক্যাফেইন থাকে। গ্রীন কফি বীজের বর্ধিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়ায় যার ফলে দৈনন্দিন কাজের প্রতি মনযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সেগুলো সর্বোত্তমভাবে সম্পাদন করা যায়। অনেকেই দিনের বেলা কাজ করতে গিয়ে শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাদের জন্য গ্রীন কফি সঠিক বাছাই হতে পারে।
ভালো লাগার অনুভূতি বজায় রাখা
গ্রীন কফি বীজের ক্যাফিন সামগ্রী শরীরের যাবতীয় ব্যবস্থায় বৃহত্তর পরিমাণে ডোপামিন উপস্থিত থাকতে দেয়। ডোপামিন মুলত মস্তিষ্কে উৎপাদিত একটি নিউরোট্রান্সমিটার, যা শরীর ও মনে ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টি করে। গ্রীন কফির নির্যাস গ্রহণে ক্যাফেইন শরীরে হরমোনের পুনঃশোষণে বাধা দেয়। এর ফলে মস্তিষ্ক সর্বাঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়।
পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
গ্রীন কফির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
গ্লুকোমা
গ্রীন কফিতে থাকা ক্যাফেইন খেলে চোখের ভিতরে চাপ বাড়তে পারে। এই চাপের বৃদ্ধি ৩০ মিনিটের মধ্যে শুরু হয় এবং কমপক্ষে ৯০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস)
এই কফির ক্যাফিন সেবনে বিশেষ করে যখন প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তখন ডায়রিয়ার অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে এবং আইবিএসের লক্ষণগুলোর আরও অবনতি ঘটাতে পারে।
হাড় পাতলা হয়ে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিস
সবুজ কফি এবং অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া ক্যাফিন প্রস্রাবে বের হয়ে যাওয়া ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। অস্টিওপোরোসিস জটিলতার ক্ষেত্রে ক্যাফেইন গ্রহণকে প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রামের নিচে নামিয়ে আনতে পরামর্শ দেয়া হয় যা প্রায় ২ থেকে ৩ কাপ সাধারণ কফির সমান। এতে ক্যালসিয়ামের পরিপূরক ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট গ্রহণেও কাজ হয় না। পোস্টমেনোপজাল অথবা যেসব মহিলাদের উত্তরাধিকারসূত্রে ভিটামিন ডি প্রক্রিয়াজাতকরণ হয় না, তাদের ক্যাফিন ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত।
পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
সবুজ কফিতে থাকা ক্যাফিন ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করার উপায় পরিবর্তন করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন সেবন রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাসের কারণও হতে পারে। এটি এখনো গবেষণাধীন রয়েছে, তাই সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের গ্রীন কফি পান থেকে বিরত থাকা।
হোমোসিস্টাইনের অস্বাভাবিক উচ্চ মাত্রা
অল্প সময়ের জন্য ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা গ্রহণের ফলে প্লাজমা হোমোসিস্টাইনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা হৃদরোগের মতো জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যান্য ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া
নির্দিষ্ট কোন রোগের জন্য নিয়মিত কোনো ওষুধ চললে গ্রীন কফির সম্পূরক ব্যবহার শুরু করার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেয়া উচিত। গ্রীন কফি অনেক ওষুধের উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে সেগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে আছে রক্ত পাতলা, হার্টের সমস্যা, দুর্বল হাড়, ফুসফুসের রোগ, মেনোপজ, বিষণ্নতা এবং সিজোফ্রেনিয়ার ওষুধ। ভেষজ উদ্দীপক বা ক্যাফিনের অন্যান্য পরিপূরকগুলোর সাথে গ্রীন কফি গ্রহণ করা উচিত নয়।
পড়ুন: বাংলাদেশের বাহারি আম এবং তাদের উৎপাদনকারী অঞ্চল
গ্রীন কফি বানানোর নিয়ম
প্রথমে রাতের বেলা গ্রীন বীজগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতি কাপ পানিতে প্রায় এক টেবিল চামচ বীজ ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ যোগ করার সাথে সাথে অবিলম্বে পানি সবুজ হতে শুরু করবে। এভাবে কাপে ঢাকনা দিয়ে পানিতে ভেজা বীজগুলো ঢেকে রাখতে হবে।
এবার কফি বানানোর সময় বীজ ডোবানো পানি একটি পাত্রে ঢেলে নিতে হবে। অতঃপর তা চুলায় বসিয়ে দিতে হবে এবং অল্প তাপে সিদ্ধ করতে হবে। এভাবে স্বল্প আঁচে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চুলায় রেখে দিতে হবে। পানি ধীরে ধীরে আরো সবুজ হয়ে যাবে এবং তা থেকে সুগন্ধি বের হওয়া শুরু হবে। এবার চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিতে হবে।
সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে গ্রীন কফি একটি ছাঁকনির মাধ্যমে একটি মগ বা কাপে ঢেলে নিতে হবে। অবশেষে এবার গ্রীন কফি পান করার জন্য প্রস্তুত হলো। ঘন গ্রীন কফি সরাসরি পান করা যেতে পারে। আবার আরেকটু পানি যোগ করে কিছুটা পাতলাও করে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া স্বাদ ভালো করতে প্রয়োজন মত মধু বা চিনি যোগ করে নেয়া যেতে পারে।
পড়ুন: রন্ধন পাঠশালা: ঢাকায় কোথায় রান্না শেখার কোর্স করতে পারবেন?
এই প্রক্রিয়াটি খুব ঘনীভূত গ্রীন কফি তৈরি করবে। কিছু পান করে বাকি কফি রেফ্রিজারেটরে একটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
পরিশিষ্ট
টমেটো এবং বেগুনের মতো অনেক খাবারেই ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড থাকলেও গ্রীন কফিতে এর মাত্রা থাকে সবচেয়ে বেশি। কফির বীজ যখন ভাজা হয়, তখন এই ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের মাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। সেই সাথে ক্যাফেইনের পরিমাণও কমে যায়। গ্রীন কফির স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে বেশ বিতর্ক থাকলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর ব্যাপার সন্দেহের অবকাশ নেই। তাই অতিরিক্ত গ্রীন কফি গ্রহণ থেকে বিরত থাকাই উত্তম। স্বাভাবিক সুস্থ ব্যক্তির খাদ্যাভাসে দিনে ২-৩ কাপ গ্রীন কফি রাখাটা তেমন জটিলতা সৃষ্টি করে না। এছাড়া অসুস্থতা বা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা; এমনকি জীবনধারণে পরিবর্তন আনতে গ্রীন কফি গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথমেই পেশাদারের নিকট থেকে নিশ্চিত হয়ে নেয়া উচিত।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
তরুণ প্রজন্মের পথচলায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ
বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের তরুণদের জন্য একজন মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি তাঁর ৫৫ বছরের জীবনে ১২ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন কারাগারে। বাঙালি জাতির মুক্তি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বিসর্জন দিয়েছেন তাঁর সমস্ত সুখ, শান্তি এবং পারিবারিক কল্যাণ। দেশের জন্য শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন দিয়ে দুঃসাহসিক আন্দোলনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। মুলত একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে সেই দেশটির তরুণ সমাজ। বঙ্গবন্ধু তাঁর গোটা তারুণ্যকেই উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে। এখন এই অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষার দায়িত্ব বর্তমান তরুণ প্রজন্মের। এই দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে তরুণদের শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে এই ফিচার।
বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে তরুণদের জন্য শিক্ষা
নেতৃত্ব
বঙ্গবন্ধু ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ সংগঠক, সমন্বয়কারি এবং সর্বপরি একজন যুগান্তকারি নেতা। তিনি তরুণ সমাজের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তরুণরা খুব দ্রুত তাঁর চিন্তা ও আদর্শ নিজেদের মাঝে লালণ করতে পারতো। বঙ্গবন্ধুর জাদুকরী নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দেশের তরুণদের মধ্যে অভূতপূর্ব সংহতি আনতে সক্ষম হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে তিনি সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু যেখানেই যেতেন, হাজার হাজার তরুণ তাকে ঘিরে জড়ো হতো। ১৯৬৬ সালে তার ঘোষিত ছয় দফা কর্মসূচিতে দেশের লাখ লাখ তরুণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এটিকে বলা হয় বাঙালির মুক্তির সনদ। তরুণ ছাত্র-জনতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আন্দোলনে যোগ দিয়ে পাকিস্তানি শাসকদের ক্ষমতার ঘাঁটি নাড়িয়ে দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর নির্দেশে এদেশের তরুণরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি ছিলেন তরুণদের অগাধ বিশ্বাস ও আস্থার উৎস। এই জনপ্রিয় নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন বর্তমানের প্রতিটি তরুণের জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সৌভাগ্যবান যে তিনি বঙ্গমাতাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়েছিলেন: প্রধানমন্ত্রী
আত্মবিশ্বাস
লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বাসে অটল হওয়াটা ছিলো হিমালয়ের মতো। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের নির্যাতন, কারাবরণ ও অপমান সত্ত্বেও তিনি দেশপ্রেমের আদর্শ থেকে তিল পরিমাণ বিচ্যুত হননি। নিজের আদর্শ, বিঃশ্বাসের প্রতি অগাধ আস্থাই বঙ্গবন্ধুকে একজন সফল রাজনীতিবিদের পরিণত করেছিলো। ঠিক এমনি একটি ব্যক্তিত্ব দরকার আজকের তরুণ সমাজের জন্য। বহুকষ্টে অর্জিত সোনার বাংলার স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে তরুণদের এমনি বৈশিষ্ট্যের অধিকারি হওয়া দরকার, যেখানে সে নিজের জায়গায় অটল থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে সমূহ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
অকুতোভয়
তরুণ মুজিব ছাত্রজীবন থেকেই এদেশের মানুষের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে লড়াই করেছেন। মৃত্যুভয় তার ছিল না। বঙ্গবন্ধুর জীবনের এক দীর্ঘ সময় কেটেছে কারাগারে। ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ ভাষণে তিনি বলেছিলেন, “যদি আমি পরে আদেশ দিতে না পারি”। তার মানে তিনি অনুমান করেছিলেন যে, তাকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া বা এমনকি হত্যা করা হতে পারে। এ কারণে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তাঁর অনুপস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে বলেছেন। অর্থাৎ প্রাণের হুমকি আছে জেনেও তিনি পিছপা হননি। তাঁর স্বাধীনতা ঘোষণাটি শুরু হয়েছিলো এই শব্দগুলো দিয়ে- “এটি সম্ভবত আমার শেষ ভাষণ। কিন্তু আপনাদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।” এ থেকে বোঝা যায় যে, তিনি চূড়ান্ত আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিলেন। একজন আত্মত্যাগী মানুষের লক্ষ্য অর্জনে কোন কিছু বাধা হয়ে দাড়াতে পারে না। আর এই আগুন-ই দরকার আজ প্রতিটি তরুণের বুকে।
পড়ুন: বঙ্গমাতার ত্যাগ ও অকুণ্ঠ সমর্থনেই শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবতাবাদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিঃস্বার্থ ভাবে দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন সোনার বাংলা গড়ার। বাঙালির প্রতি তাঁর পরম মমতা ও ভালোবাসা তাঁকে বাঙালি জাতির হৃদয়ে চির উজ্জ্বল করে রেখেছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে বিবিসির ডেভিড ফ্রস্টকে বলেছিলেন, “আমার সবচেয়ে বড় শক্তি হল জনগণের প্রতি আমার ভালবাসা। আর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল- আমি তাদের খুব বেশি ভালবাসি।” তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি আছে, সেটি হলো- “মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিতা মেয়েদের বাবার নামের জায়গায় আমার নাম লিখে দাও। তাদের বাসার ঠিকানা হবে ধানমন্ডি-৩২।” এমন কথা যিনি বলতে পারেন তিনি নিঃসন্দেহে মহামানব। আজ প্রতিটি প্রাণেরই দাবি, দেশের মানুষের প্রতি এমন নিঃস্বার্থ ভালবাসার।
নিষ্ঠা
বাংলাদেশে স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সফল রাজনৈতিক জীবন তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইরত বাঙালিদের ওপর অত্যাচার সত্ত্বেও পাকিস্তানি শাসকদের প্রতি তাঁর কঠোর আপোষহীন মনোভাব গোটা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। তাঁর জীবন যুবসমাজকে নৈতিকভাবে নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে নিপীড়ন ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করে। জাতিকে বিকশিত করতে তিনি প্রতিটি নাগরিককে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন। তার সৎ সাহসের মুল চালিকা শক্তি ছিলো তার ন্যায়পরায়ণতা। আর এই সত্য বলার সাহস এবং সঠিক বস্তুকে আদায় করার দাবী আজও বাঙালীকে শেখায় ঘুরে দাড়াতে।
পড়ুন: 'ব্রেভহার্ট': বঙ্গবন্ধুকে গ্যালারি কসমসের শৈল্পিক শ্রদ্ধা নিবেদন
সৃজনশীলতা
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও তাঁর দর্শন সম্পর্কে জানতে হলে তাঁর লেখা তিনটি বই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়া এবং গভীরভাবে উপলব্ধি করা উচিত। তিনি অত্যন্ত সপ্রতিভ ভাবে তাঁর ‘অসমাপ্ত স্মৃতিকথা’, ‘দ্যা প্রিজন ডায়েরিস’ এবং ‘আমার দেখা নয়া চায়না’ বইগুলোতে তাঁর ভেতরকার সত্ত্বাকে ব্যক্ত করেছেন। তাঁর 'অসমাপ্ত স্মৃতিকথা' ও 'কারাগারের ডায়েরি' বই দুটিতে বিস্ময়কর ভাবে চিত্রায়ন ঘটেছে বাঙালি জাতির উত্থান ও স্বাধীনতা অর্জনের একটি অবিচ্ছেদ্য ও পূর্ণাঙ্গ চিত্র।
চিত্তাকর্ষক বক্তৃতা
রেসকোর্স ময়দানে ৭ই মার্চের তাঁর সেই কালজয়ী ভাষণ আজও বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এই ভাষণ যুগে যুগে তরুণ প্রজন্মকে আলোকিত করেছে। এই ভাষণ সমগ্র জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিল এবং স্বাধীনতার জন্য তাদেরকে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ভাষণের প্রতিটি শব্দে তাঁর অভাবনীয় বাগ্মীতা প্রকাশ পায়। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বের শক্তিশালী সব দেশগুলোর সামনে তিনি ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান নিয়ে কথা বলেন। এমনকি কর্মসংস্থানের অভাব এবং পণ্য আমদানির উচ্চ মূল্যে বাংলাদেশের মতো একটি দেশের সংগ্রামের কথাও বলেছিলেন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মুখপাত্র। বর্তমানেও সমাজ সংস্কারের জন্য এমনি স্পষ্টবাদী এবং প্রভাবশালী বক্তার প্রয়োজন।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
দেশপ্রেম
বাঙালী জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক। তিনি শিখিয়েছেন প্রকৃত দেশপ্রেমের অর্থ। এদেশের মানুষের জন্য তাঁর পরম আত্মত্যাগ কখনোই ম্লান হবে না। তিনি সব সময় ছিলেন জনগণের জন্য এবং জনগণের নেতা। আর এটি কোনো সময়ের সীমাবদ্ধতা দিয়ে আবদ্ধ করা যাবে না। তাঁর এই অনুসরণীয় আদর্শ এখনও পূর্ণাঙ্গ দেশপ্রেমিক তৈরি করতে সক্ষম। পাক হানাদার বাহিনীর অমানুষিক নির্যাতন ও অপমান তাঁর দেশপ্রেমকে টলাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে এখনকার তরুণদের মননে, চিন্তায়, মেধায় ও চেতনাতে দেশপ্রেমকে লালণ করতে হবে।
সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি
বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালে মন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে তাঁর সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য এবং বাংলাদেশের সব প্রান্তে সংগঠনের শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করেছিলেন। ধীরে ধীরে সংগঠনটি বহুলাংশে সমর্থনের মঞ্চ পেলে তিনি শুরু করেন ৬ দফা আন্দোলন। তিনি জানতেন যে, একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক মেরুদন্ড ছাড়া তিনি একটি স্বাধীন জাতির বৃহৎ লক্ষ্য ও স্বপ্ন অর্জন করতে পারবেন না। এভাবে সাময়িক সফলতার চেয়ে বৃহৎ অর্জনের চিত্র অবলোকন করা একজন নিখুঁত নেতার গুণাবলি। আর এই বৈশিষ্ট্যটি এখন খুবই প্রয়োজন।
আদর্শ নাগরিক
“বিশৃঙ্খলা ও অশান্তির মাঝে স্বাধীনতার অর্থ নিহিত নয়। স্বাধীনতা মানে মাথা উচু করে সম্মানজনক ভাবে জীবন যাপন করা। নৈতিকতার সাথে আত্মসমালোচনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সর্বপরি আত্মশুদ্ধি ছাড়া একজন আদর্শ নাগরিক হওয়া যায় না।” বঙ্গবন্ধুর এই কথাটি ছিলো সে সময়ের তরুণদেরকে উদ্দেশ্য করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কথাটির শব্দগুলো কোন সময়ের গন্ডিতে বাধা নয়। এটি এখনো প্রতিটি তরুণের জন্য প্রযোজ্য। একটি মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করে এমন কোন ভাষা, সংস্কৃতি অথবা নিয়ম-কানুন চাপিয়ে দেয়া হলে প্রতিটি নাগরিকের উচিত তার প্রতিবাদ করা।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে রুল
শেষাংশ
বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে তরুণদের শিখতে প্রস্তুত হতে হবে এবং তাদের ভবিষ্যত জীবনের পথের পথপ্রদর্শক হিসাবে লালন করতে হবে। তরুণদের চিন্তাধারায় আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত হতে হবে; তাদের অবশ্যই শিক্ষিত ও দক্ষ এবং সর্বোপরি দেশপ্রেমিক হতে হবে। মাদক, জঙ্গিবাদ এবং অন্যান্য সামাজিক পাপাচারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান কঠোর এবং চির আপসহীন হতে হবে। তরুণদেরও তাদের নিজস্ব সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে হবে এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে তাদের আদর্শ ও দর্শন অনুসরণ করতে হবে।
ভাঙ্গায় তারেক মাসুদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার পৌরসদরের নুরপুর গ্রামে তারেক মাসুদ ও বাংলাদেশ ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে গুণী এই নির্মাতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধায় জানায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
এর আগে তারেক মাসুদের সমাধিতে তার মা নুরুন্নাহার মাসুদ, স্ত্রী ক্যাথিরিন মাসুদসহ ঢাকা চলচ্চিত্র সভা, এশীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সভা, বাংলাদেশ শর্ট ফ্লিম ফোরাম, ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে এ উপলক্ষে আয়োজিক এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রখ্যাত নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দিন বাচ্চু, জহিরুল ইসলাম কচি, রাশেদ চৌধুরী, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন প্রমুখ।
প্রয়াত এ নির্মাতা সস্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন তারেক মাসুদের ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের শিল্প নির্দেশক ঢালী আল মামুন, তারেকের সহধর্মিণী ক্যাথিরিন মাসুদ, শর্ট ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান, লেখক মফিজ ইমাম মিলন।
কবি চঞ্চল আশরাফের সঞ্চালনায় এ সময় তারেক মাসুদ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সাবেক অধ্যক্ষ মোসায়েদ হোসেন ঢালী,বাবুল আশরাফ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুধীন সরকার মঙ্গল, সাইদ মাসুদ প্রমুখ আরও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে তারেক মাসুদ এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীর মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জুকা নামক স্থানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
পড়ুন: তাজউদ্দীন আহমদ দেশের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন: সিআরআই
নিউইয়র্কে প্রথম ইংরেজি মঞ্চ নাটকে তাসনুভা আনান