তবে তাদের কত তাড়াতাড়ি এবং কিভাবে অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরিয়ে আনা হবে তা স্পষ্ট নয়। কেননা এ দুই ব্যাটসম্যানের অনুপস্থিতিতে নতুন করে দল গঠন করেছে অস্ট্রেলিয়া।
নতুন গঠিত দলের সাম্প্রতিক সফলতাও ভালোই বলা চলে। ঘরের মাঠে ভারতের কাছে সিরিজ হারলেও ভারতের মাটিতে ঠিকই সিরিজ জয় করেছে অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া সম্প্রতি পাকিস্তানের বিপক্ষেও ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে টিম অস্ট্রেলিয়া।
আগামী মে মাস থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হবে ক্রিকেটের বড় আয়োজন বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সাবেক অধিনায়ক স্মিথ ও সহ অধিনায়ক ওয়ার্নারকে রাখা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
তাদের ডাকা হলে অবশ্যম্ভাবীভাবে তাদের অনুপস্থিতিতে খেলতে থাকা খেলোয়াড়দের বাদ দিতে হবে। এছাড়াও ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া তরুণ ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফট অনুপস্থিত রয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দুবাইয়ে স্মিথ এবং ওয়ার্নার অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সাথে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ করেন।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কেভিন রবার্টস ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ হিসেবে মিটিংটি আয়োজন করেন। তবে তিনি বলেন, ‘দুবাইয়ে মিটিং করার মানে এটাই নয় যে সব ঠিক হয়ে গেছে।’
রবার্টস মেলবোর্ন প্রেস ক্লাবে বলেন, ‘ডেভ, স্টিভ এবং ক্যামেরনসহ অন্যান্য খেলোয়াড় এবং স্টাফদের জন্য সব কিছু করার দিকে আমরা নজর দিচ্ছি। তাদের মধ্যে অনৈক্য তৈরির চেয়ে ঐক্য তৈরির চেষ্টা করছি। বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক, যে কোনো কার্যক্ষেত্রে আপনি যাদের সাথে কাজ করেন তাদের সবাই আপনার সেরা সঙ্গী হবে না।’
শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের খবরে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজের সময় বল টেম্পারিং স্ক্যান্ডাল নিয়ে ওয়ার্নারের সাথে তার সহযোদ্ধাদের মধ্যে যে ভাঙন তৈরি হয়েছে তা প্রকাশ পায়।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ড বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টের আগে বোলার মিচেল স্টার্ক, জোশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়ন বলেন, ওয়ার্নারকে খেলানো হলে তারা ওই টেস্টে অংশ নেবেন না।
বল টেম্পারিংয়ের ওই ঘটনা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ভক্ত ও সাবেক ক্রিকেটাররা বোঝার চেষ্টা করেন যে, উচ্চ নৈতিকতা ধারণ করা একটি দল কীভাবে এমন কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়লো।
টেস্ট ক্রিকেটে র্যাংকিংয়ে শীর্ষে থাকা স্মিথ এবং ওয়ার্নার বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় তাদের ১২ মাসের শাস্তি মেনে নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে ওপেনিং ব্যাটসম্যান ব্যানক্রফটকে বলের আকার বিকৃতি করতে দেখা যায়। তিনি ইতিমধ্যেই ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ করেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরে তিন ক্রিকেটারই অশ্রুসিক্ত সংবাদ সম্মেলন করেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা জাতীয় ও প্রাদেশিক দলে খেলতে পারেননি। তবে বিদেশি লিগগুলোতে অংশ নেন তারা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তারা জনগণের দৃষ্টির বাইরে চলে যান।
নিষেধাজ্ঞার কারণে স্মিথ এবং ওয়ার্নারের মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার উপার্জন বন্ধ হয়ে যায় তবে উভয়ই বলেছেন অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করার প্রত্যাশার চেয়ে এটা খুবই কম গুরুত্বপূর্ণ।
কেলেংকারির কারণে প্রশাসনেও ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘদিনের প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন, পারফরম্যান্স ম্যানেজারকে বরখাস্ত করা হয় এবং স্ক্যান্ডেলের সাথে জড়িত না থেকেও পদতাগ করেন কোচ ড্যারেন লেম্যান।
সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মার্ক টেইলর সম্প্রতি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, বল টেম্পারিং কীভাবে ঘটলো এবং ক্রিকেটাররা কীভাবে তাতে সম্পৃক্ত হলো তা উল্লেখ করা নেই।
বৃহস্পতিবার রবার্টস বলেছেন, ‘তদন্ত সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
আপাতত দৃষ্টিতে সবকিছুই স্মিথ ও ওয়ার্নারের ক্রিকেটে ফেরার পক্ষেই মনে হচ্ছে। তবে তাদের সহযোদ্ধারা বিষয়টি ক্ষমা করেছেন কিনা তা জানা যায়নি।