বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে করণীয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ নিয়ে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের স্বার্থে সার, সেচ ও ইক্ষু চাষসহ কৃষিখাতে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে বোরো ধান কাটার শ্রমিক সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হাওর অঞ্চলের ধান কাটার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নতুন ১৮০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ১৩৭টি রিপার সরবরাহের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া হাওরে গমনেচ্ছুক শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সাবান, স্যানিটাইজার, মাস্ক প্রভৃতি উপকরণ প্রদান, নিরাপদ যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ি, নির্বিঘ্ন গমনাগমন, ধান কাটার স্থলে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রাখার ব্যবস্থা ইত্যাদি কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি।
বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষি শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাওরে যাওয়া শুরু করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, হাওরে ধান কাটায় কোনো সমস্যা হবে না।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কৃষিখাতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্রদান করেছেন। যার সুদ ৪ শতাংশ হলেও কৃষিখাতে ৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকিসহ অন্যান্য প্রণোদনা বিবেচনায় নিলে এটি অত্যন্ত ভালো। ‘এ প্রণোদনার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে কৃষির সব খাতে (মৎস্য ও প্রাণি খাতসহ) সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাষযোগ্য প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
আউশ উৎপাদনের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত প্রতিবছর ৩০ লাখ মেট্রিক টন আউশ ধান উৎপাদিত হয়। আসন্ন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা হলো ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। সে জন্য আসন্ন আউশ মৌসুমে বিএডিসির সেচের রেট ৫০ শতাংশ হ্রাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন হাইব্রিড ও উফশি জাতের বীজ ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।’
করোনাকালীন সাধারণ ছুটির সময় কৃষি কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের নিয়মিতভাবে মাঠে গিয়ে এ দুর্যোগময় অবস্থায় কৃষকের সাথে, কৃষকের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। যারা কর্মস্থলে থাকবেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এবং বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।