বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র ও শাপলা নীড় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’-কে দ্রুত আইনে পরিণত করার দাবি জানিয়েছে। যাতে ১২ বছরের নিচে কোনো শিশুকে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া না যায় এবং ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শুধুমাত্র ঝুঁকিহীন হাল্কা কাজে নিয়োগ দেয়া যায়।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সাংবাদিক রীতা ভৌমিক আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ২০১৩ সালের এক জরিপের বরাত দিয়ে জানান, বাংলাদেশে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী মোট সাড়ে ৩৪ লাখ শিশু শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত আছে, যাদের মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র ও শাপলা নীড় যৌথভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি, ২০১৫’র আলোকে শিশু গৃহকর্মীর সুরক্ষা ও কল্যাণে করণীয় শীর্ষক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক শিশু শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন এবং মানুষের মাঝে আইন মেনে চলার মানসিকতা তৈরির প্রতি জোর দেন।
বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম এবং ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশু শ্রম বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রতিশ্রুতি মাথায় রেখে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে লক্ষ্য পূরণে একটি বৃহৎ প্রকল্প নিতে যাচ্ছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী রীতা ভৌমিক বলেন, ২০১৭ সালে মোট ৩২ জন শিশু গৃহকর্মী শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে। তিনি আরো জানান, শিশু অধিকার ফোরামের ২০১৪-১৫ সালের জরিপ অনুযায়ী শিশু গৃহকর্মীরা দৈনিক ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা কাজ করে।
আয়োজক সংগঠন দুটি শিশু গৃহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য নীতিমালা অনুযায়ী আইন প্রণয়ন, তাদের সঠিক সংখ্যা জানার জন্য জাতীয় পর্যায়ে জরিপ চালানো ও বিশেষ হেল্পলাইন চালুসহ ১৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরে।
সভার আলোচকরা গৃহকর্মী নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সমাজ ও গণমাধ্যমকে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা ও শাপলা নীগের এডভোকেসি কর্মকর্তা নীনা শামসুন্নাহার।