এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যারা দীর্ঘসময় কাজ করছেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকছে। ফ্রান্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০ দিন যদি ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা হয় তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দীর্ঘসময় কাজ করলেও শারীরিক ব্যায়াম এবং ভালো খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে।
ফ্রান্সের গবেষকরা ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তাদের বয়স, ধূমপানের ইতিহাস এবং কর্মঘণ্টা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের কিছু কম দীর্ঘসময় ধরে কাজ করেছেন। এছাড়া ১০ শতাংশ মানুষ ১০ বছর যাবৎ দীর্ঘসময় কাজ করেছেন। সব মিলিয়ে ১ হাজার ২২৪ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত লেখায় গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, যেসব মানুষ দীর্সময় ধরে কাজ করে তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ২৯ শতাংশ বেশি।
যারা ১০ বছরের বেশি সময় যাবৎ দীর্ঘসময় কাজ করছেন তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ বেশি। আর যারা খণ্ডকালীন কাজ করেন কিংবা যারা দীর্ঘসময় ধরে কাজ করার আগেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের এই গবেষণা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
গবেষণা দলের প্রধান ড. অ্যালেক্সিস বলেন, ‘যাদের বয়স ৫০ বছরের কম তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ১০ বছর যাবৎ দীর্ঘসময় কাজ করা এবং স্ট্রোকের ঝুঁকির সম্পর্ক তাদের ক্ষেত্রে বেশি জোরালো। এটা অপ্রত্যাশিত। এই ফলাফল বের করার জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে।’
এই গবেষণায় স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যার ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। স্ট্রোকের কারণের দিকে নজর দেয়া হয়নি।
অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেন, সিইও এবং ম্যানেজাররা দীর্ঘসময় ধরে কাজ করলেও তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি কম।
কিন্তু যারা অনিয়মিত শিফটে কাজ করেন, রাত্রিকালীন কাজ করেন কিংবা কাজের চাপ বেশি থাকে, তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা দলের প্রধান ড. রিচার্ড ফ্রান্সিস বলেন, ‘স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম স্বাস্থ্যের ওপর বড় প্রভাব রাখতে পারে।’
এ বিষয়গুলো মেনে চললে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আসতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।