স্বাস্থ্য
বাইপোলার ডিসঅর্ডার: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
একটি সুস্থ মানসিক অবস্থা একটি উন্নত জীবনযাত্রার রূপকল্প। অন্যদিকে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ক্রমশ বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে নিত্য দিনের জীবনধারাকে। শুধু তাই নয়, গুরুতর রোগের মতোই তা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে মানবদেহের ওপর। বাইপোলার ডিসঅর্ডার মনস্তত্ত্বের ঠিক তেমনি একটি অবস্থা, যেখানে মেজাজের স্বাভাবিক কার্যকলাপে দেখা দেয় অসংলগ্নতা। চলুন, মানসিক এই সমস্যাটির কারণ ও লক্ষণ জানার পাশাপাশি এ থেকে উত্তরণের উপায় সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি
মেজাজের ভারসাম্যহীনতার মাধ্যমে যে মানসিক সমস্যার প্রকাশ ঘটে সেটি বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধি নামে পরিচিত। ‘বাইপোলার’ শব্দটির মাধ্যমে মেজাজের দুই বিপরীত মেরুকে বোঝানো হয়, যার একটি উন্মাদনা, এবং অন্যটি বিষণ্নতা। উন্মাদনার মাধ্যমে ব্যক্তির মাঝে উচ্ছ্বাসের অপ্রতিরোধ্য অনুভূতি বিরাজ করে। অন্যদিকে, বিষণ্নতা মুহূর্তগুলোতে ব্যক্তি গভীর দুঃখ ও হতাশার ভেতর দিয়ে সময় কাটান।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের কারণ
বাইপোলার ডিসঅর্ডার মূলত কতগুলো দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সমষ্টি, যা ধীরে ধীরে ব্যক্তিকে অসামঞ্জস্য আচরণের দিকে ধাবিত করে। প্রধানত তিনটি কারণে এমন অবস্থার অবতারণা ঘটে। এগুলো হলো-
জিনগত কারণ
বাবা-মা এবং ভাইবোনদের মধ্যে একজনের এ সমস্যা থাকলে পরবর্তীতে অন্যজনের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ওয়েবএমডি অনুসারে, বাবা বা মা যে কোনো একজনের এই ব্যাধি থাকলে তাদের সন্তানদের এই ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ। আর দুজনেরই থাকলে এই সম্ভাবনা ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়। যমজ ভাইবোনের মধ্যে একজনের এই ব্যাধি থাকলে অন্যজনের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ।
আরো পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
জীবনের কোনো স্পর্শকাতর ঘটনা
যাদের পরিবারের পূর্বে কারো দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনাগুলো ট্রিগার হিসেবে কাজ করতে পারে। তাছাড়া জিনগত বৈশিষ্ট্য না থাকলেও ট্রমাজনিত অভিজ্ঞতাগুলো এই ব্যাধির দিকে ধাবিত করতে পারে। যেমন শৈশবের কোনো অপ্রিয় ঘটনা, প্রিয়জনের মৃত্যু, জীবনের বড় পরিবর্তন, চাকরি, সম্পর্ক বা আর্থিক চাপ উন্মাদনা বা বিষণ্নতার দশাগুলোর সূচনা ঘটাতে পারে।
মাদকাসক্তি
উত্তেজক রাসায়নিক, ওষুধ বা অ্যালকোহল নেওয়া মেজাজের ভারসাম্যতাকে বিনষ্ট করে। শুধু মাদকের নেশাই নয়, প্রয়োজনীয় ওষুধ ঘন ঘন সেবনের ফলেও মেজাজের অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও অনেক বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেদের অবস্থার উন্নতির জন্য নিজে থেকে ঔষধ সেবনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এতে তাদের ব্যাধির উপসর্গগুলো উল্টো বেড়ে গিয়ে মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগে কারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়
জিনগত কারণগুলো থেকে এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ। শৈশবের কোনো অপ্রিয় ঘটনা এবং প্রিয়জনের ক্ষতি থেকে সৃষ্ট ট্রমা সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করে। মাদক সেবন থেকে এই মানসিক স্বাস্থ্য জটিলতার ক্ষেত্রে সর্বাধিক বিপদের মধ্যে রয়েছে তরুণরা।
আরো পড়ুন: রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের লক্ষণ
মেজাজ ও কার্যকলাপের মাত্রার নাটকীয় পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হতে শুরু করে উন্মাদনা ও বিষণ্নতা এই দুই ভিন্ন পর্যায়ে।
উন্মাদনাকেন্দ্রিক উপসর্গ
এই উপসর্গগুলোর মাধ্যমে মূলত ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতা ও কার্যকলাপের মাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর হয়।
· উচ্ছ্বাস বা বিরক্তি: কোনো কোনো সময় ব্যক্তি অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস অনুভব করেন বা নিজেকে সর্বাধিক সুখী মনে করেন। এই অনুভূতির আরেক নাম ইউফোরিয়া। কিছু সময় (অনির্দিষ্ট) পরেই তিনি আকস্মিকভাবে প্রচণ্ড ক্রোধ অনুভব করেন। বিশেষ করে যখন কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করেন তখন তিনি রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় অবস্থান নেন।
· চিন্তা ও কথাবার্তায় দ্রুততা: এ ধরনের ব্যক্তিরা একাধিক বিষয়ের চিন্তায় নিমজ্জিত থাকে। অথচ নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। তার বহিঃপ্রকাশ তাদের কথাবার্তায়ও দেখা যায়। প্রতিটি বাক্য খুব দ্রুতগতিতে বলার কারণে প্রায় পুরোটা সময় শ্রোতাদের কাছে তা দুর্বোধ্য মনে হয়।
· আবেগপ্রবণতা এবং যে কোনো কিছু ভুলভাবে বিচার করা: এ সমস্যার ভূক্তভোগীরা আর্থিক সিদ্ধান্ত, সম্পদের অপব্যয় বা বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের মতো বিষয়গুলোতে আবেগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া জীবনের নানা লেনদেন বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সময় সবকিছুকে ভুল ব্যাখা দাঁড় করান।
· অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুম: এ সমস্যায় জর্জরিত ব্যক্তিদের কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে কম ঘুমের দরকার হয়। আবার কখনো দেখা যায় যে, দীর্ঘক্ষণ যাবত ঘুমের পরেও জেগে থাকতে (বিশেষ করে দিনের বেলা) সমস্যা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
বিষণ্নতার উপসর্গ
মানসিক অবস্থার এই পর্যায়ে মেজাজ এবং আচরণের অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়।
· ক্রমাগত দুঃখ বা হতাশা: এক্ষেত্রে ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে হতাশার মাঝে নিমজ্জিত থাকেন এবং সর্বদা দুঃখী অনুভব করেন।
· আগ্রহ বা আনন্দ কমে যাওয়া: এক সময় যে বিষয়গুলো অত্যন্ত উপভোগ্য ছিল, সেগুলোর প্রতি আর ভালো লাগা কাজ করে না।
· ক্লান্তি: প্রতিদিনের সাধারণ এবং সহজ কাজগুলোতে অত্যধিক ক্লান্তি অনুভূত হয়। সেই সঙ্গে স্পৃহা না থাকায় সব মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে কর্মদক্ষতা লোপ পায়।
· মনোযোগ নিবদ্ধ করতে অসুবিধা: সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মনোযোগে অপারগতা দেখা দেয়। এর ফলে ব্যক্তি যথেষ্ট প্রচেষ্টার পরেও যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হন।
মিশ্র উপসর্গ
অধিকাংশের মধ্যে এই বিষণ্নতা এবং উন্মাদনা একই সঙ্গে শুরু হয়। এতে করে এমন এক মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যেখানে ভুক্তভোগী অযাচিত কোনো ভুল করে বসেন বা বড় কোনো ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন। মনের এই মিশ্র অবস্থা সবথেকে গুরুতর, কেননা চরম পর্যায়ে এটি ওই ব্যক্তিকে আত্মহত্যার দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
আরো পড়ুন: এমপক্সের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
জিনগত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বাইপোলার ডিসঅর্ডার এড়ানোটা জটিল। তবে সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা না গেলেও এর ক্ষতির মাত্রা কমানো যেতে পারে। যে পদক্ষেপগুলো এখানে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলো হলো-
· নিয়মিত সঠিক ব্যায়াম, ইয়োগা ও ধ্যান করার অভ্যাস করা
· প্রতিদিনই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো
· যে কোনো মূল্যে মাদক থেকে বিরত থাকা
· মেজাজে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন ওষুধ এড়িয়ে চলা
· নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি বজায় রাখা
· সুষম খাদ্যাভ্যাস চালু রাখা
· সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত হওয়া
· ইতিবাচক সম্পর্ক লালন করা
আরো পড়ুন: অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগ প্রতিকারের উপায়
শারীরিক ব্যাধির মতো এই মানসিক অবস্থার আসলে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই। তবে জীবনযাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনসহ কিছু থেরাপিতে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার উন্নতি করা যায়। এই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে-
ওষুধ
এ ক্ষেত্রে সাধারণত যে ওষুধগুলো গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয় সেগুলো হলো- মুড স্টেবিলাইজার, অ্যান্টিসাইকোটিক্স ও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট্স। এখানে লিথিয়ামের মতো মুড স্টেবিলাইজারগুলো মিশ্র উপসর্গগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, অ্যান্টিসাইকোটিকগুলো উন্মাদনাকে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে, ওষুধগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ডোজ সেবনে উল্টো উন্মাদনাকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তাই এগুলো ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া অত্যাবশ্যক।
সাইকোথেরাপি
জ্ঞানগত-আচরণগত থেরাপি (সিবিটি) ব্যক্তির চিন্তাভাবনা এবং আচরণগত অসামঞ্জস্যতাগুলোর চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। ইন্টার্পাসনাল ও সোশ্যাল রিদম থেরাপি দৈনন্দিন রুটিন বজায় এবং সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এই কৌশলগুলো ব্যক্তির ঘুম, খাবার ও অন্যান্য কার্যকলাপের সময়সূচি স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: এসির বাতাসে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন যেভাবে
জীবনধারার পরিবর্তন
এই ডিসঅর্ডার থেকে আরোগ্য লাভের সবচেয়ে মোক্ষম উপায় হলো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা। তবে এটি বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। নিয়মিত ব্যায়াম দীর্ঘ মেয়াদে মেজাজকে স্বাভাবিক ও আবেগকে স্থিতিশীল রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার সর্বাঙ্গীনভাবে মানসিক সুস্থতাকে বিকশিত করে।
মানসিক সমর্থন
জীবনধারাকে পরিবর্তিত করতে যে বিষয়টি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে তা হলো পরিবার, বন্ধু ও থেরাপিস্টের মানসিক সমর্থন। দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধির মূল চিকিৎসাটিই হচ্ছে এই সমর্থন নিশ্চিত করা। এগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যক্তির মনস্তত্ত্বে অনেকটা সাপ্লিমেন্টের মতো কাজ করে।
শেষাংশ
বাইপোলার ডিসঅর্ডার সনাক্ত করার জন্য এর কারণ ও লক্ষণগুলো গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা প্রয়োজন। মানসিক সমস্যাটির নেপথ্যে রয়েছে জিনগত বৈশিষ্ট্য, মানসিক আঘাত ও মাদকাসক্তি। লিঙ্গ বা বয়স নির্বিশেষে প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলোকে সূচনালগ্নেই খেয়াল করা উচিত। এর ফলে প্রাথমিক অবস্থাতেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
অপরদিকে, এরইমধ্যে এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওষুধ ও থেরাপির পাশাপাশি দরকার মানসিক সমর্থন। উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা বজায় রাখার সার্বিক প্রচেষ্টাকে সফল করে তুলতে পারে।
আরো পড়ুন: ভিমরুলের কামড় কতটা ভয়ংকর? সাবধানতা ও করণীয়
১ মাস আগে
অফিসে কাজের ফাঁকে হালকা ক্ষুধা মেটাতে পুষ্টিকর শুকনো খাবার
খুব সকালে নাস্তার পর দীর্ঘক্ষণ না খাওয়া অবস্থায় থাকলে দুপুরের খাবারের আগেই মস্তিষ্ক পাকস্থলি থেকে ক্ষুধার সংকেত পেতে থাকে। একই ব্যাপার মধ্যাহ্ন ভোজ আর রাতের খাবারের মাঝের সময়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এই উপোসের সময়টা যখন মানসিক বা শারীরিক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই খাদ্য গ্রহণের তাড়না একটু বেড়ে যায়। কর্মক্ষেত্রে একটানা দীর্ঘক্ষণ কাজ করার কারণে প্রত্যেকেই হালকা ক্ষুধার পাশাপাশি কর্মস্পন্দন ফিরে পাওয়ার তাগিদ অনুভব করেন। তাই এই হালকা ভোজে এমন কিছু থাকা প্রয়োজন যা শুধু ক্ষুধাই মেটাবে না, সেই সঙ্গে নতুন উদ্যমে কাজে যোগ দেওয়ার শক্তিও যোগাবে। তাই চলুন, অফিসে কাজের ফাঁকে ক্ষুধা নিবারণের জন্য কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
অফিসে ব্যস্ততার ফাঁকে হালকা ক্ষুধা নিবারণের জন্য ১০টি স্বাস্থ্যকর খাবার
শুকনো ফল
প্রোটিন, ভিটামিন ই, রাইবোফ্ল্যাভিন, ট্রেস খনিজ ও স্বাস্থ্যকর চর্বিতে ভরপুর বাদাম সবচেয়ে জনপ্রিয় শুকনো ফলগুলোর একটি। নিয়মিত বাদাম খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং সারাদিন ধরে শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই উপযোগিতার নেপথ্যে রয়েছে ফাইবার, প্রোটিন এবং চর্বিগুলো। ক্যালরি কম হওয়ায় বেশি খাওয়াতেও স্থূলতার আশঙ্কা নেই।
সর্বাধিক প্রচলিত চীনাবাদাম অপেক্ষা কাজু, পেস্তা, আখরোট ও কাঠবাদামের গুণাগুণ আরও বেশি। এগুলোর রয়েছে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ক্ষমতা, যা হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। কেক, বিস্কুট, ফল বা অন্যান্য মিষ্টিজাত খাবারে স্বাদের আলাদা মাত্রা যোগ করতে ব্যবহৃত হয় বাদাম।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
ভারী খাবারের বিকল্প হিসেবে সুপরিচিত শুকনো ফলটি হচ্ছে খেজুর। এতে আছে কার্বোহাইড্রেট, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি-৬, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং কপার। শরীরকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সতেজ রাখতে আকারের বিবেচনায় খেজুরের কোনো জুড়ি নেই। এই ছোট্ট ফলটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, হাড়ের স্বাস্থ্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
বীজ
স্বাদের বিচারে খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও পুষ্টিগুণের দিক থেকে এটি একটি সর্বোৎকৃষ্ট খাবার। চিয়া, শন, তিল, সূর্যমুখী ও কুমড়ার বীজ শরীর গঠনের জন্য সাধারণ খাদ্যাভ্যাসে রাখা হয়। এগুলো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট, উদ্ভিদজাত প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং সহজে হজমযোগ্য ফাইবার সমৃদ্ধ। এই পুষ্টিগুলো যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে কর্মোদ্দীপনা ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট। অল্প পরিমাণে বেশি ক্যালরি থাকাতে স্বল্প আহারেই কয়েক ঘণ্টা ভরপেট অনুভূতি পাওয়া যায়।
অন্যান্য সুস্বাদু খাবার বা সালাদের সঙ্গে মেশানো হলে আরও মুখরোচক হয়ে ওঠে। তবে সেক্ষেত্রে ক্যালরির পরিমাণে সতর্ক থাকা দরকার।
আরো পড়ুন: স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
আপেল
কোলেস্টেরল কমানো নিয়ে যারা চিন্তায় থাকেন, তাদের ডেস্কে সর্বদা আপেল রাখা উচিত। এর বহিরাবরণে থাকে ফেনোলিক নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ, যা দেহের কোষগুলোর কার্যক্ষমতা ও রক্ত প্রবাহকে সমুন্নত করতে সহায়তা করে। স্বাদ আরও বাড়াতে আপেলের সঙ্গে মাখন বা দই মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
গাজর
কাজ ও খাওয়া একসঙ্গে করতে চাইলে গাজর হতে পারে স্বাস্থ্যসম্মত পছন্দ। এই সবজি বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, ভিটামিন কে-১, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, চোখ, হৃদপিণ্ড, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্য বাড়ানোতে গাজরের ভূমিকা অপরিসীম। প্রতিদিন কাজের পাশাপাশি গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়লে কোলেস্টেরলের মাত্রা, রক্তচাপ এবং ওজন নিয়ে আর ভয় থাকবে না।
ছোলা-মুড়ি
বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে খুব কমই এমন রয়েছে, যেখানে একটির নাম বললে সঙ্গে সঙ্গেই অপরটির নাম চলে আসে। কেবল সহজলভ্যই নয়, স্বতন্ত্রভাবে দুটি খাবারেই রয়েছে যথেষ্ট পুষ্টি।
ছোলাতে আছে ফলেট, খাদ্য আঁশ, আমিষ, ট্রিপ্ট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রন। এতে থাকা ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুরেটেড, যা রক্তের চর্বি কমাতে অংশ নেয়। এর পটাসিয়াম, ভিটামিন 'সি' এবং ভিটামিন বি-৬ পুষ্টি উপাদান হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। এছাড়াও ছোলার রয়েছে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, কোষ্ঠকাঠিন্য সারানোর ক্ষমতা। এছাড়া ছোলা বয়ঃসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। ছোলায় থাকা ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমিয়ে দেয়। এতে থাকা পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করে।
আরো পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
অন্যদিকে, মুড়ির পুষ্টিগুলো হলো নিয়াসিন, ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, থিয়ামিন ও রাইবোফ্ল্যাভিন। এতে সোডিয়াম ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম থাকায় রক্তচাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে না। তবে এই উপকার শতভাগ পেতে হলে মুড়িতে তেল ও লবণ মেশানো যাবে না। তবে ছোলা-মুড়ির সঙ্গে বাদাম ও শসা যোগ করা যেতে পারে। অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারের মতো এটিও শরীরে দ্রুত শক্তি জোগাতে পারে।
ওটমিল বিস্কুট
ময়দা, চিনি, ডিম, তেল, চর্বি ও মাখনের সমন্বয়ে তৈরি এই বিস্কুটের প্রধান উপাদান ওটস। তবে কিশমিশ, চকলেট বা বাদামের সন্নিবেশে স্বাদ ও পরিবেশনে দারুণ মাত্রা যোগ হয়। কোনো কোনো ব্র্যান্ড কলা, বাদাম, মাখন ও ওমেগা -৩ সমৃদ্ধ শন ও চিয়া বীজের মতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েও তৈরি করে থাকে।
ওটমিল কুকির ওট্স যেহেতু একটি সম্পূর্ণ শস্য, তাই এর মাধ্যমে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। ফাইবারে গুণাগুণের মধ্যে রয়েছে হজমের উন্নতি ও ওজন কমানো।
কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে, ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে কোনো কাজে সক্রিয় থাকা যায়।
আরো পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
অধিকাংশ বিস্কুটের মত এটিও প্রোটিন সরবরাহের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর পেশি গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানে ভরপুর।
পপ কর্ন
শুধুমাত্র অফিসেই নয়, কাজের যে কোনো বিনোদনের মূহূর্তে সেরা নাস্তা পপ কর্ন বা খৈ ভাজা। প্রধান কাঁচামাল ভূট্টা হওয়ায় ভূট্টার সব পুষ্টিই পাওয়া যায় এতে। অর্থাৎ এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও জিঙ্কে পরিপূর্ণ।
পপ কর্ন রক্ত সঞ্চালন ও হজম উন্নত করতে এবং হৃদরোগ, স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেট
এই মিষ্টান্ন খাবারটি মূলত শুকনো ফলের ভান্ডার। তবে বেশি পরিমাণে থাকে বিভিন্ন ধরনের বাদাম। অধিকাংশ ডার্ক চকলেটের প্রতি দেড় আউন্সে থাকে ১৯০ ক্যালরি, ১২ গ্রাম ফ্যাট, ২৪ গ্রাম কার্ব, ৩ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন, ৭ গ্রাম ক্যালসিয়াম, এবং ২০৩ গ্রাম পটাসিয়াম। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রদাহ, ডায়াবেটিস এবং জীবাণু প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী।
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
তবে কেনার সময় ডার্ক চকলেটের মোড়কে লিপিবদ্ধ উপাদানগুলো ভালোভাবে দেখে নেওয়া উচিত। অনেক সময় এগুলোতে কৃত্রিম রাসায়নিক অ্যাল্কালি প্রসেসিং থাকে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টকে সরিয়ে দেয়।
সিদ্ধ ডিম
স্বল্প পরিমাণে হলেও মানবদেহের প্রয়োজনীয় সবগুলো পুষ্টি একসঙ্গে পেতে হলে খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে সিদ্ধ ডিম। ৫০ গ্রামের একটি বড় ডিমে ৬ গ্রামেরও বেশি প্রোটিন থাকে। চর্বিহীন এই প্রোটিন অনেক বেশি ক্যালোরি না দিয়েও দীর্ঘক্ষণ যাবৎ পাকস্থলি পরিপূর্ণ রাখবে, যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক। অন্যান্য পুষ্টিগুণগুলো হলো লোহা, ক্যালসিয়াম, কোলিন, ভিটামিন এ, বি-৬, বি-১২ এবং ডি।
এতে থাকা লুটেইন এবং জেক্সান্থিনে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য, যা চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সক্ষম।
চিড়া
স্বল্প আহারে অধিক স্বাস্থ্যগুণের অধিকারী হওয়ার জন্য অন্যতম সুষম খাদ্য চিড়া। প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ এই খাবার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, কেননা পাকস্থলি নিঃসৃত অ্যাঞ্জাইম ফাইবার শোষণ করতে ও ভেঙে ফেলতে পারে না।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
একদিকে ক্যালোরি, চর্বি ও চিনির পরিমাণ যথেষ্ট কম, অন্যদিকে খনিজ ও ভিটামিনের মাত্রা বেশি। এই কারণে চিড়া শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে ওজন কমানোর প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
শেষাংশ
অফিসের নিত্যদিনের কর্মব্যস্ততার ফাঁকে এই শুকনো খাবারগুলো শুধু ক্ষুধাই মেটাবে না, পাশাপাশি পূরণ করবে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা। তন্মধ্যে ডেস্কে হাতের কাছেই রাখা যেতে পারে ওটমিল বিস্কুট, ডার্ক চকলেট, বাদাম, পপকর্ন ও কিছু ফলমূল। জনপ্রিয় সান্ধ্যকালীন খাবার ছোলা-মুড়িকে কর্মদিবসের কোনো কোনো দিনে সিদ্ধ ডিমের সঙ্গে বদলে নেওয়া যায়। উপরন্তু, সুষম খাবার হিসেবে উৎকৃষ্ট সংযোজন হতে পারে গাজর, বীজ, বা চিড়া। সর্বোপরি, ফলমূল, গাজর, বাদাম, চিড়া, ছোলা বা বীজের মধ্যে থেকে পছন্দ মতো যেকোনো সন্নিবেশে সালাদ বানিয়েও তৈরি করা যায় মুখরোচক খাবার।
আরো পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
২ মাস আগে
স্বাস্থ্য খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে
ধুঁকতে থাকা স্বাস্থ্য খাতের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সামান্য বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণের অগ্রগতি বজায় রাখতে ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা ছিল বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা
নতুন বরাদ্দে মোট বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ পেয়েছে স্বাস্থ্য খাত এবং তা জিডিপির শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের অন্যতম মূলনীতি। আমরা এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। বিশেষ করে, আমরা জনসাধারণকে সাশ্রয়ী মূল্যের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবারকল্যাণ পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে একটি সুস্থ, শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত জনসংখ্যা গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবারকল্যাণ খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে সরকার।
‘সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এর মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জন এবং স্মার্ট স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।’
গত দেড় দশকে স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৭ সালে লাখপ্রতি মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৩৫১ জন, যা বর্তমানে ১৩৬ জনে নেমে এসেছে।’
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ৬০ জন, যা বর্তমানে ৩৩ জনে নেমে এসেছে। ওই বছর নবজাতক মৃত্যুর হার ছিল প্রতি হাজারে ২৯টি, যা বর্তমানে কমে ২০-এ দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৬ দশমিক ৬ বছর, যা এখন ৭২ দশমিক ৩ বছরে উন্নীত হয়েছে।
তিনি জানান, বিভিন্ন গুরুতর ছোঁয়াচে রোগ থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) অব্যাহত রেখেছে সরকার।
এছাড়া স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল থেকে শুরু করে কমিউনিটি ক্লিনিক ও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মীদের ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। সব নাগরিককে অভিন্ন স্বাস্থ্য পরিচয়পত্রসহ স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়ার মাধ্যমে একটি ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা
স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত স্বাস্থ্য শিক্ষা অপরিহার্য উল্লেখ করে মাহমুদ আলী বলেন, ‘মেডিকেল ও নার্সিং শিক্ষা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো উন্নত ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’
‘মেডিকেলের সমস্ত স্নাতকোত্তর ডিগ্রিকে এক প্ল্যাটফর্মের অধীনে আনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা পদ্ধতির আধুনিকীকরণ করা এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো পরিকল্পনাগুলো উল্লেখযোগ্য।’
গত ১৫ বছরে মেডিকেল ইনস্টিটিউটের সংখ্যা এবং আসন উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র ৫৯টি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, যা এখন বেড়ে ১১১টি হয়েছে। এছাড়া ১৩টি ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিট থেকে বেড়ে ৩৫টি হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, “ওষুধের মৌলিক ও ফলিত গবেষণার অবকাঠামো তৈরি, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, স্বাস্থ্য খাতে উদ্ভাবনের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদির জন্য ‘সমন্বিত স্বাস্থ্যবিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিলে’ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বাজেটে আমি এই খাতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষায়িত ও দক্ষ জনশক্তি (মেডিকেল টেকনিশিয়ান, বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি) তৈরির লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়েছে, যারা বিশেষ প্রযুক্তি বা ডিভাইস, অপারেশন ও অন্যান্য দরকারি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিযুক্ত থাকবেন।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে
৫ মাস আগে
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করবে আরটিএসএল, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রিজলভ টু সেভ লাইভসের (আরটিএসএল) সঙ্গে একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আগামী দিনের ‘শোকেস’ মন্ত্রণালয়ে পরিণত হতে যাচ্ছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হাইপারটেশনসহ পরিবেশ দূষণসংক্রান্ত অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এছাড়া সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যর্থতায় মানুষের যেন স্বাস্থ্যহানি না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
এ সময় আলোচনা হয় হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করবে।
এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রিজলভ টু সেভ লাইভস বাংলাদেশে কীভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয় ধারণাপত্র জমা দিলে বাংলাদেশ সরকার সেটা বিবেচনা করবে।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা
৮ মাস আগে
ফখরুলের স্বাস্থ্যের অবনতিতে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের
দুর্বল শরীর ও অসুস্থতার নানা উপসর্গ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে (বিএসএইচ) চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেছেন।
শনিবার(১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আরেফিন তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে দিয়েছেন এবং তার গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপি মহাসচিব অসুস্থ ছিলেন। তার প্রায় ৬ কেজি ওজন কমেছে এবং তার শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিয়েছে।’
ডা. জাহিদ বলেন, মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে গেলে অধ্যাপক শামসুল আরেফিন তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং বাসায় থেকেই তার চিকিৎসা চলছে। ফলোআপ চিকিৎসার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার তাকে আবার হাসপাতালে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবে: জেল থেকে বেরিয়ে ফখরুল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে বন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পান ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এর আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় বুধবার(১৪ ফেব্রুয়ারি) মির্জা ফখরুল ও খসরুকে জামিন দেন ঢাকার একটি আদালত।
গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল, খসরুসহ বিএনপির ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি ও খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল ও ৩ নভেম্বর গুলশানের বাসা থেকে খসরুকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: দখলদারিত্বের নতুন নজির স্থাপন করেছে আ.লীগ সরকার: বিএনপি
৯ মাস আগে
তীব্র শীতে পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
তীব্র শীত গৃহপালিত পশুপাখির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এমনকি রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পশুপাখিরাও পড়তে পারে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। যারা পশুপাখি পালনে আগ্রহী তাদের শীতকালে নিজের পাশাপাশি তাদের পোষা প্রাণীটির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। চলুন, জেনে নেই, কীভাবে শীতকালীন অসুস্থতা থেকে পোষা প্রাণীদের মুক্ত রাখবেন।
পোষা প্রাণীর শীতকালীন সুরক্ষার উপায়
পোষা প্রাণীকে ঘরের ভেতরে রাখা
ঠান্ডা থেকে পোষা প্রাণীদের নিরাপদ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হল দিনের বেশির ভাগ সময় এবং সারারাত ঘরের ভেতরে রাখা। কুকুর বা বিড়ালের রাতে বাইরে বের হবার প্রবণতা থাকে। তারা প্রায় সময়ই রাস্তার বেওয়ারিশ পশুগুলোর সংস্পর্শে যেয়ে নানা ধরনের জীবাণুবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে খুব বেশি সংবেদনশীল বিড়াল এবং কুকুরের ক্ষেত্রে হাইপোথার্মিয়ার ভয় থাকে।
তাই পোষা পশুপাখিদের রাতের পুরোটা সময় ঘরের ভেতরে রেখে দিনের কিছুটা সময় সঙ্গে নিয়ে বের হওয়া যেতে পারে শারীরিক অনুশীলনের জন্য। কেননা শীতের সময় দৌড়ঝাপ, খেলাধুলা, বা কিছু সময় হেঁটে বেড়ানো এদের শরীর গরম রাখতে পারে।
আরো পড়ুন: শীতে কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন
থাকার জায়গাগুলোকে উষ্ণ রাখা
ঘরে উপযুক্ত উষ্ণতা না পেলে পোষা প্রাণীরা স্বাভাবিকভাবেই ঘরের ভেতর থাকতে চাইবে না। এছাড়া অনেক গৃহপালিত পশুপাখি আছে যারা বাড়ির বাইরেই রাখতে হয়। এদের থাকার জায়গাটিকে শুষ্ক রাখতে হবে এবং এমনভাবে মজবুত ঘেরযুক্ত করে দিতে হবে যাতে এরা ভালোভাবে বসতে এবং শুতে পারে।
তাদের শরীরের তাপ ধরে রাখার জন্য ঘরটি যথেষ্ট ছোট হতে হবে। ঘরে মেঝে মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি উঁচু হবে এবং ছাদ খড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ঘরটি এমন স্থানে হতে হবে যেখানে বাতাসের ঝাপটা কম এবং সহজেই খাবার ও পানীয় পেতে পারে।
বাড়ির ঠান্ডা মেঝে থেকে পোষা প্রাণীদের বাঁচানোর জন্য গরম মাদুর বিছিয়ে দেওয়া ভালো উপায়। আর ঘুমানোর জায়গাটিতে দেওয়া যেতে পারে ছোট গরম বিছানা ও পশুদের জন্য নির্ধারিত কম্বল।
তবে খুব অল্প বয়স্ক অথবা অধিক বয়স্ক পশুগুলোর অতিরিক্ত গরম অনুভূত হতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হবে। এদের জন্য হিটিং প্যাড বেশ কাজে দিতে পারে। এগুলো মূলত প্রাণীদের জয়েন্টের ব্যথা হওয়া থেকে দূরে রাখে।
আরো পড়ুন: মাঙ্কিপক্স: পোষা প্রাণী থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান
পোষা প্রাণীর শীতের পরিধেয়
পশুপাখিদের অধিকাংশেরই প্রকৃতি প্রদত্ত লোমের আবরণ থাকলেও এটি কখনই মনে করা ঠিক নয় যে, তাদের ঠান্ডাতে কোনো সমস্যাই হবে না। পাতলা লোমযুক্ত পূর্ণ বয়স্ক পশু এমনকি অধিক লোমশ পশুগুলোর মধ্যে যারা বেশি সংবেদনশীল, তারা সঠিক সুরক্ষা ছাড়া বেশিক্ষণ বাইরে থাকলে হাইপোথার্মিয়াতে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরের বেশিরভাগ অংশকে ঢেকে রাখা সুন্দর একটি সোয়েটার দিতে পারে এই সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে লোমশ ছোট আকৃতির পশুগুলোর বেলায় এই পরিধেয়ের দরকার পড়ে না।
ঠান্ডার মধ্যে শীত থেকে আপনার আদরের পোষ্যটির পা বাঁচাতে এক জোড়া বুটি হতে পারে দারুণ একটি উপায়। বুটিগুলো পশুর থাবাগুলোতে ময়লা জমা হওয়া থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
শরীরের উন্মুক্ত জায়গাগুলো পরিষ্কার রাখা
বাইরে থেকে ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে নিজে পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি পোষ্য প্রাণীটিকেও পরিষ্কার করা জরুরি।
ঠান্ডার সময় বাইরে ধূলো-ময়লা পায়ের আঙুলগুলোর মাঝে ঢুকে জ্বালা করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো জিহ্বা দিয়ে চাটতে দেখা যায়। এখানে ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক উপাদান থাকলে তা তাদের মুখে জ্বালা হওয়ার কারণ হতে পারে। তাই ঘরে ঢুকেই প্রথমে একটি আর্দ্র তোয়ালে দিয়ে পোষা প্রাণীটির পা মুছতে হবে। এছাড়া কুয়াশায় পশম ভিজে দীর্ঘক্ষণ স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় রেখে দিলে শুষ্ক ত্বকসহ পোষা প্রাণীটির অন্যান্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মৃদু শুকিয়ে পোষ্যটির শরীর মুছে দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া উচিত।
সবচেয়ে ভালো বিকল্প হচ্ছে বুটি আর সোয়েটার থাকলে ব্যবহার করা। তাহলে পোষা প্রাণীদের কান, নাক, পা ও লেজ কুয়াশায় ভিজে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আরো পড়ুন: কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
শীতে পোষা প্রাণীর ত্বকের যত্ন
ঠান্ডার তীব্রতা থেকে পোষা প্রাণীদের ত্বক বাঁচাতে ঘন ঘন গোসল করানো যাবে না। অতিরিক্ত আর্দ্রতা প্রদানের জন্য উপযুক্ত হচ্ছে খাদ্যে নারিকেল তেল ব্যবহার করা। শুধুমাত্র পোষ্য পশু-পাখিদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কিছু নিরাময় মলম আছে, সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো প্রয়োগ করতে হয় নাক ও পায়ের আঙুলের আশেপাশে লাল দাগযুক্ত জায়গাতে।
ত্বকের যত্নে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শীতের সময় পশুগুলোর পশম বাড়তে দেওয়া। এটি প্রাকৃতিকভাবেই তাদের শরীরে উষ্ণতার একটি অতিরিক্ত স্তরের সংযোজন করে। তবে নষ্ট বা মরা পশম ঝরাতে প্রাণীদের শরীরে নিয়মিত ব্রাশ করতে হবে।
আরো পড়ুন: ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা: জেনে নিন সঠিক তথ্য
৯ মাস আগে
কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
শুধুমাত্র ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা নয়, রান্নার কাজে এবং খাদ্য ও পানীয়র পাত্র হিসেবে কাঁসা, পিতল ও তামার বাসন ব্যবহার সুস্থ জীবন ধারণের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
ধাতব বস্তুগুলোর প্রাচীন মান ও নান্দনিকতার বাইরেও সেগুলোর বিশেষ গুণ হচ্ছে সেগুলোর কাঙ্ক্ষিত তাপ পরিবাহিতা ও দীর্ঘস্থায়ীত্ব। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এমন টেকসই গড়নের নিচে লুকিয়ে থাকা কিছু বৈশিষ্ট্য, যেগুলো প্রাকৃতিকভাবেই আঞ্জাম দিতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস।
এই বৈশিষ্ট্যগুলোর বৈজ্ঞানিক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়েই আজকের নিবন্ধ। চলুন জেনে নেয়া যাক, দৈনন্দিন রান্নার কাজে ও খাবার/পানি পরিবেশনে কাঁসা, পিতল ও তামার পাত্র ব্যবহার কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত।
কাঁসার পাত্র ব্যবহারের উপকারিতা
হজম ও বিপাকে কার্যকারিতা
কাঁসার ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য খাদ্যের অম্লতাকে প্রশমিত করে। ফলে পানি বা খাদ্যে থাকা পানির পিএইচের (পটেনশিয়াল অফ হাইড্রোজেন) স্তর উন্নত হয়। এই পিএইচ মূলত পানির দ্রবণে অম্ল বা ক্ষারের উপস্থিতি নির্ণয়ের মাপকাঠি। এভাবে রান্না করা খাবারটি বিশুদ্ধ হয়ে হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি কী, কেন খাবেন
চর্বি কমানো
কাঁসা এমন একটি সংকর ধাতু যাতে যথেষ্ট পরিমাণে তামা থাকে, যেটি চর্বি ভেঙে ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এটি রান্নায় অতিরিক্ত চর্বি ও তেলের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে খাবারের সর্বত্রে সমানভাবে তাপ বিতরণ করে।
ব্যথানাশক ক্ষমতা
কাঁসার ভেতরে থাকা তামা শরীরের সবখানে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। ফলে কালশিটে পড়া পেশি, ব্যথা হওয়া জয়েন্টগুলো এবং এমনকি আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রেও ভালো বোধ হয়।
শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
সারারাত ধরে কাঁসার পাত্রে পানি সংরক্ষণ করা হলে পানিতে একাধিক পুষ্টি যোগ হয়। এই পানি পানের মাধ্যমে শরীরে শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়ক পুষ্টিগুলোর চাহিদা পূরণ হয়।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে বুফে খেতে যেসব রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন
কাঁসার পাত্র ব্যবহারে সতর্কতা
পুরনো কাঁসার পাত্রে সীসা বা আর্সেনিক থাকতে পারে, যা রান্নার সময় খাবারে প্রবেশ করতে পারে।
অক্সিডেশন এড়াতে কাঁসা পাত্রগুলো ব্যবহারের পরে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেওয়া উচিৎ। এর জন্য কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে। অতঃপর তাতে অল্প ডিটারজেন্ট দিয়ে আলতোভাবে পাত্রটি পরিষ্কার করতে হবে।
পিতলের পাত্র ব্যবহারের উপকারিতা
দ্রুত ক্ষত নিরাময় ও কোষের বৃদ্ধি
পিতল এমন একটি সংকর ধাতু যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে দস্তার উপস্থিতি বিদ্যমান। দস্তা প্রদাহ কমাতে, দ্রুত ক্ষত নিরাময়, কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি নিরবচ্ছিন্ন বিপাকের ক্ষেত্রেও সহায়ক। তাই শরীরে দস্তার ঘাটতি থাকলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পাশাপাশি পিতলের তৈজসপত্রে রান্না করা বা খাবার খাওয়া শুরু করা যেতে পারে।
সংক্রমণ প্রতিরোধী
ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবের বিরুদ্ধে পিতল বেশ কার্যকর। অন্যান্য পাত্রের তুলনায় পিতলের পাত্রগুলো খাবারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য উষ্ণ রাখে। ফলে রান্না করা খাদ্য যে কোনো সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
হজমের জন্য ভালো
অম্লত্ব হ্রাস করার মাধ্যমে গ্যাসট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিভিন্ন ধরনের হজমের সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করে। ফলে পাকস্থলি পরিষ্কার হয়ে পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বাড়ে এবং অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।
পিতলের পাত্র ব্যবহারে সতর্কতা
নিয়মিত খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অবশ্যই পাত্রটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। নতুবা উল্টো সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাপ ধরে রাখা এবং বিশুদ্ধ রাখতে রান্না করা খাবার ঠিকভাবে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
হালকা তাপে রান্না বা ফুটানো যে কোনো রান্নার জন্যই পিতল একটি আদর্শ ধাতু। তবে অতিরিক্ত ভাজার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা তেল গরম হওয়ার জন্য অধিক তাপের প্রয়োজন হয়, যা টিনের আস্তরণকে প্রভাবিত করতে পারে। পরবর্তীতে এতে সংরক্ষণকৃত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বাটার মিল্ক, লাচ্ছি, জ্যাম, সস, আচার, দুধ, পনির ও দই জাতীয় খাবার এবং জ্যুস তামা বা পিতলের পাত্রে সংরক্ষণ করা উচিৎ নয়।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
তামার পাত্র ব্যবহারের উপকারিতা
ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী
খাবার পানি সরবরাহের পাইপ এবং গৃহস্থালির কলগুলো সাধারণত তামা দিয়ে তৈরি করা হয়। কারণ তামায় রয়েছে জীবাণু প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য। তামার পাত্রে জমা পানি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ই. কোলাই নির্মূল করতে পারে। এছাড়া সালমোনেলা, টাইফাস, শিগেলা এসপিপি, কলেরা, এন্টেরোভাইরাস এবং হেপাটাইটিস এ-এর মতো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও এটি বেশ কার্যকর।
থাইরয়েডের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে
থাইরয়েড গ্রন্থির সঠিক কার্যকারিতা নির্ভর করে শরীরে থাকা তামার পরিমাণের ওপর। তামার ঘাটতি থাকলে থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে। তামার পাত্রে পানি খাওয়া বা সংরক্ষণ করা এই ঝুঁকি দূর করতে পারে।
আর্থ্রাইটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করে
কাঁসার মতো তামারও রয়েছে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য, যা আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য জয়েন্টের ব্যথা উপশমের জন্য সহায়ক। বিশেষত এর প্লেকটিং বৈশিষ্ট্যটি শরীরের জয়েন্টের ব্যথা এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিস সৃষ্ট প্রদাহ দ্রুত সারাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০ কফি
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধকারী
রক্তাল্পতা প্রতিরোধে তামার ওষুধি ক্ষমতা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। তামার পাত্রে সংরক্ষিত পানি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হার্টে রক্ত প্রবাহ বাড়ানোর জন্য রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করার পাশাপাশি নালীর প্রাচীরে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে।
ক্ষত নিরাময়কারী
তামার পেপটাইড সেরা নিরাময় এজেন্টদের মধ্যে একটি। ক্ষত এবং ত্বকের ক্ষতির চিকিৎসার জন্য এমন অনেক চিকিৎসা পণ্য আছে যেগুলোর মূল উপাদান এই তামা পেপটাইড। এটি সাধারণত কোলাজ উৎপাদনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। কোলাজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যত বেশি সক্রিয় হবে, শরীরের যে কোনো ক্ষত তত দ্রুত সেরে উঠবে।
ক্যান্সার কোষ ধ্বংস
এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর আরও বড় একটি গুণ হচ্ছে- এগুলো যাবতীয় ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই ফ্রি র্যাডিক্যালগুলো মূলত মানবদেহে ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
আরও পড়ুন: কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা
ত্বক ও চোখের যত্ন
মেলানিন তৈরিতে তামার গুরুত্ব অপরিসীম। এই মেলানিন মানবদেহের ত্বক এবং চোখের উজ্জ্বল রঙ ধরে রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটি সূর্যের ক্ষতিকারক অতি-বেগুনি (ইউভি) রশ্মি থেকেও রক্ষা করে ত্বক ও চোখকে।
গর্ভবতী মায়ের জন্য সহায়ক
আরবিসি (রেড ব্লাড সেল বা লোহিত রক্ত কণিকা) উৎপাদনের জন্য যথোপযুক্ত কাঁচামালের যোগান দেয় তামা। এটি আরবিসির উৎপাদন বাড়িয়ে টিস্যুর মেরামত এবং শর্করা হজম করতে সাহায্য করে। এই সুবিধাগুলোর প্রতিটিই প্রয়োজন গর্ভবতী মায়েদের জন্য। তামা সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় গর্ভের সন্তানের হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী, কঙ্কাল এবং স্নায়ুতন্ত্র গঠনে।
তামার পাত্র ব্যবহারে সতর্কতা
তামার অ্যালার্জি থাকা খুব একটা দেখা যায় না। এরপরেও তামাতে যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের এই ধাতু থেকে দূরে থাকতে হবে। এই ধরনের তৈজসপত্র ব্যবহার বা তা থেকে পানি পান করলে ফুসকুড়ি বা চুলকানি হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাজেটের মধ্যে ঢাকার সেরা ১০টি বুফে রেস্টুরেন্ট
সাধারণত এই ধাতুর পাত্র থেকে বারবার পানি পান করলে তামার বিষাক্ততা ছড়াতে পারে। ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঝুঁকি থাকে বমি বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়ার। শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণে তামার চাহিদা পূরনের জন্য দিনে দুইবার (সকাল এবং সন্ধ্যা) তামার বোতলে জমা পানি পান করাই যথেষ্ট।
পিতল ও কাঁসার মতো তামার ক্ষেত্রেও ব্যবহারের পর নিয়মিত পাত্র পরিষ্কার করে নেওয়া জরুরি। থালা সাবান বা লেবু এবং লবণ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী উপায়েই তৈজসপত্র পরিষ্কার করা যেতে পারে।
সংগ্রহ বা ক্রয়ের সময় কাঁসা, পিতল ও তামা প্রতিটির ক্ষেত্রেই ধাতুটি খাঁটি কিনা তা যাচাই করে নিতে হবে। পানি বোতলে ভরে সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজে রাখা যাবে না।
শেষাংশ
বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ এই তত্ত্ব-উপাত্তগুলো উপযুক্তভাবে ন্যায্যাতা দান করে কাঁসা, পিতল ও তামার পাত্রের ব্যবহারকে। বর্তমান সময়ে রান্নার কাজে ব্যবহার্য সামগ্রীর যে কোনোটির তুলনায় এগুলো অধিক স্বাস্থ্যকর। নিদেনপক্ষে এখন যেখানে জীবাণুবাহী রোগগুলোর দৌরাত্ম্য দিনকে দিন বেড়েই চলেছে, সেখানে আধুনিক তৈজসপত্রগুলোর ওপর এই জীবাণু বিরোধী ধাতুগুলোর প্রাধান্য থাকবে।
তবে রান্নার কাজে ও খাবার/পানি পরিবেশনের জন্য কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ক্রয়ের পূর্বে ধাতুগুলোর বিশুদ্ধতা যাচাই করে নেওয়া অত্যাবশ্যক। অতঃপর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা হলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকিগুলো এড়ানো সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
৯ মাস আগে
হাজারীবাগে ২০৩ জনকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবাদান
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টর পরিচালিত আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প-২য়, ডিএসসিসি, পিএ-৩ এর নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে দিনব্যাপী বিভিন্ন বয়সী মোট ২০৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ওষুধ বিতরণ, রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেবে মানুষ: তথ্যমন্ত্রী
আহছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার (র.) ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের মাসব্যাপী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
নগর মাতৃসদনের শিশু-বিশেষজ্ঞ মোস্তাকিম আহমেদের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল শনিবার হাজারীবাগের নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়।
এর আগে স্বাস্থ্য ক্যাম্পটি উদ্বোধন করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহসভাপতি প্রফেসর ড. কাজী শরীফুল আলম।
তিনি বলেন, ‘হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) মূলত বৈষম্যহীন সমাজেরই স্বপ্ন দেখতেন, তিনি সবসময় দরিদ্র-নিপীড়িত মানুষকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে স্রষ্টার নৈকট্য লাভের সাধনা করেছেন।’
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহফিদা দীনা রূবাইয়া ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেক্টরের সহকারী পরিচালক ডা. নায়লা পারভীন।
ক্যাম্পটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন ক্লিনিক ম্যানেজার ডা. ইশরাত শারমিন।
আরও পড়ুন: ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় রাতারাতি পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০০ টাকা ছাড়াল
১১ মাস আগে
স্বাস্থ্য খাতের যন্ত্রপাতিও জলবায়ুবান্ধব হওয়া উচিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য খাতের যন্ত্রপাতিও জলবায়ুবান্ধব হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে আমরা নানা রকম যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি, এসব যন্ত্রপাতিও জলবায়ুবান্ধব হওয়া উচিত। তা না হলে চিকিৎসা সেবায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) এটিএসিএইচ’র আয়োজিত ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ: সাপ্লাই চেইন’- বিষয়ক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিগত দশকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন ও জলবায়ুবান্ধব যন্ত্রপাতি কেনা, সাপ্লাই এবং ব্যবহারের কথা বলে জলবায়ুবান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে বিজ্ঞানসম্মত এবং যেসব যন্ত্রপাতি জলবায়ুর ক্ষতি করে না সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেন।
আরও পড়ুন: মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় আসা যাবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ডব্লিউএইচও ও এটিএসিএইচকে জলবায়ুবান্ধব যন্ত্রপাতি সাপ্লাই এবং হাসপাতাল বিনির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
পরে বিকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত ‘স্যালিনিটি কিউসড বাই ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ইটস ইম্পেক্ট অন এনসিডিএস অ্যান্ড এসআরএইচআর ’-শীর্ষক সাইড ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির।
তিনি তার উপস্থাপনায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা এবং এর প্রভাবে এসব এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করেন।
এছাড়া, এর প্রভাবে গর্ভবতী মায়েদের নানা রকম সমস্যা হয়, যার কারণে কোস্টাল এলাকায় মাতৃমৃত্যু বেড়ে যায় বলে জানান।
এ অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পরিবর্তন, বিশেষ করে লবণাক্ত বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
এর ফলে নানা ধরনের রোগ বৃদ্ধি হওয়ার কথাও বর্ণনা করেন তিনি।
বিশেষ করে অসংক্রামক রোগ এবং মহিলা ও নারীদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে তার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ এবং পরবর্তী পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
এক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
উন্নয়ন সহযোগীদের জলবায়ুবান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিনির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম তার বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জসমূহ স্মরণ করিয়ে দিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
উপকূলীয় এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে এবং এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশের সুইডেন অ্যাম্বাসির ফার্স্ট সেক্রেটারি ডেনিয়েল নোভাক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে ছিলেন মিস খুশবু পাওডেল, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর, আইপাস, নেপাল, এবং ডা. হুসাইন রশিদ, আঞ্চলিক উপদেষ্টা, ওয়াশ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সচিব স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মামুনুর রশিদ প্রমুখ।
প্রতি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলোর প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতে আরও সহযোগিতা এবং বিনিয়োগের আশ্বাস প্রদান করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মামুনুর রশিদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত দুবাইয়ে জলবায়ু সম্মেলন ২০২৩ (কপ-২৮) অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এডিস মশা থাকলে ডেঙ্গু রোগীও থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জনবল সংকটকে চিকিৎসা খাতে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
১১ মাস আগে
দেশে চিকিৎসা সেবার ইতিহাসে নতুন মাইলফলক টেস্টটিউব বেবি: বিএসএমএমইউর উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর ২০২৩ ) সকাল সাড়ে ৯টায় সি-ব্লকে মা ও প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
অস্ত্রোপচারের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অনুপ্রেরণা দেন এবং টেস্টটিউব নবজাতকের মাকে অভয় দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর তত্ত্বাবধানে সফল সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আরও ১১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১৯১৭
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটিই প্রথম টেস্টটিউব বেবির জন্ম। বরিশালের বাসিন্দা এই দম্পতি দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছিলেন। ৮ বছর আগে দম্পতির রোগটি ডায়াগোনোসিস হয়। এ দম্পতি বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ্যাত্ব সমস্যা নিরসনে চিকিৎসা নিলেও কোনো সফলতা বা তারা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) সুপরামর্শও পাননি। এরপর ২০২২ সালে এই দম্পতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগে চিকিৎসা শুরু করেন। পরিপূর্ণ ইভাউলিউশন শেষে এই বিভাগ তাকে আইভিএফ উইথ আইসিএসআই এর পরামর্শ দেওয়া হয়। স্টেম সেল থেরাপি গ্রহণের মাধ্যমে তারা এ চিকিৎসা শুরু করেন। যথাযথ চিকিৎসা শেষে গত ফেব্রুয়ারি এই নবজাতকের মা গর্ভধারণ করেন এবং নিয়মিত চেকআপে থাকেন। ৩৮ সপ্তাহের পর সুদীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সফলতার নিদর্শন স্বরূপ ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম হয়।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ টেস্টটিউব নবজাতকের জন্ম গ্রহণের মাধ্যমে আরেকটি সফলতার পালক যুক্ত হলো। নিঃসন্তান দম্পতিদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর জন্য সব সময় কাজ করছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফার্টিলিটি বিভাগ। টেস্টটিউব নবজাতক ও তার মা সুস্থ আছেন। তাদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দেশবাসীর দোয়া প্রার্থনাও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত আরও ৪ জন, মৃত্যু নেই
শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাডাভেরিক, কিডনি, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, কর্নিয়া ট্রান্সপ্লান্ট করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। আমি আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে দেশে একটি স্মার্ট হেলথ সিস্টেম চালু করতে সমর্থ হব।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম টেস্টটিউব নবজাতকের সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের সময় অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের শিক্ষক নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেব্রবত বণিক, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, নিউন্যাটোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা দীবা, সহযোগী অধ্যাপক (অনারারী) ডা. শাহীন আরাসহ ১৭ জন চিকিৎসক, ৫ জন নার্স অংশ নেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের প্রধান জানান, সাধারণত বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় শতকরা ৫-১০ শতাংশ রোগীদের আইভিএফ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। ২০০৩ সালের ডিসেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফার্টিলিটি বিভাগ চালু হয়। তবে ২০১৯ সাল থেকে অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর তত্ত্বাবধানে টেস্টটিউব বেবির আইভিএফ পদ্ধতি পুরোদমে চালু হয়। করোনার সময় এই সেবা কিছুটা স্থগিত থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ দায়িত্বগ্রহণের পরপর ২০২২ সালে পুনরায় আইভিএফ পদ্ধতি চালুর জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানুর নেতৃত্বে বন্ধ্যাত্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা স্টেম সেল থেরাপি, পিআরপি থেরাপি, রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি, এআরটি, আইইউআই, আইভিএফ সেবা দিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা: জেনে নিন সঠিক তথ্য
১ বছর আগে