বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, পাঁচ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় সারাদেশে সাত হাজার ৮৫৫ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে এবং আহত হয়েছেন ১৩ হাজার ৩৩০ জন।
একই সময় রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত, ৭০৬ জন আহত হয়েছেন এবং নৌপথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত, ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হন।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
সংগঠনটি দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো এই প্রতিবেদন তৈরি করে।
এতে দেখা গেছে, বিদায়ী বছরে সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ ২০১৮ সালের সমপরিমাণ হলেও প্রাণহানি বেড়েছে ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ২০১৮ সালের তুলনায় বিগত বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক, নসিমন-মাহিন্দ্রা-লেগুনা, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-লরি, বাসে দুর্ঘটনার হার বৃদ্ধি পেলেও মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার হার কমেছে।
হেলমেট বাধ্যতামূলক, তিন আরোহী পরিবহন নিষিদ্ধ, মোটরসাইকেল চলাচলে কঠোর নজরদারির কারণে দুর্ঘটনার হার ৪.২৬ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও বিগত বছরের চেয়ে কার-জিপ-মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে ২.৭১ শতাংশ, সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুর্ঘটনা ০.২৬ শতাংশ কমেছে, বলে জানান তিনি।
পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়া, বেপরোয়া গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ও ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও দেশের সড়ক-মহাসড়কের উন্নয়ন, ব্লাকস্পট নিরসন, রোড ডিভাইডার স্থাপন, সড়ক নিরাপত্তামূলক প্রচারণার কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ১১.৩৬ শতাংশ কমেছে।
২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৫ জুন। ওইদিনে ৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ১২১ জন আহত হন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ছোট যানবাহন বৃদ্ধিই এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।