শরিফ তার জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার জন্য ১২ জনের একটি সভা হয়। ওই সভায় নুসরাতকে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়া হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল গণমাধ্যমকে শরীফের স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কামরাঙ্গীর চর এলাকা থেকে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আবদুর রহিম স্বীকারোক্তিতে বলেন, মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে ও পরামর্শে নুসরাতকে হত্যার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগানো হয়। এজন্য তারা ২৮ ও ৩০ মার্চ দুই দফা কারাগারে থাকা মাদরাসার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেন। ৪ এপ্রিল সকালে অধ্যক্ষ ‘মুক্তি পরিষদের’ সভা করা হয়।
রাতে ১২ জনের এক সভায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত ও দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। শরিফ জবানবন্দিতে জানায়, তার দায়িত্ব পড়ে মাদরাসার গেটে। সেখানে নুর উদ্দিন, আবদুল কাদেরও ছিলেন। মাদরাসার ছাদে বোরকা পরে ছিলেন শাহাদাত, জোবায়ের ও জাবের। এছাড়া ছাদে ছিলেন কামরুন নাহার মণি ও উম্মে সুলতানা পপি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো.শাহ আলম বলেন, আবদুর রহিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, মামলার দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম এবং মো.আবদুর রহিম ওরফে শরিফসহ তিনজন স্বীকারোক্তিতে একই ধরনের কথা বলেছেন। তাদের স্বীকারোক্তি থেকেও মণির নাম উঠে আসে।
নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় মুখোশ পরা ৪/৫জন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।