জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন,  বঙ্গবন্ধু শুধু দেশ স্বাধীনই করেননি, দেশ কীভাবে চললে উন্নত ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার পরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।

বৃহস্পতিবার সাভারে বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) 'বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল ক্যারিশম্যাটিক নেতাই ছিলেন না, তিনি প্রশাসক এবং কূটনীতিক হিসেবেও অনন্য ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের মিত্রবাহিনীর সদস্যরা এখনও বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু মাত্র তিন মাসের মধ্যে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যদের নিজ দেশে ফেরত পাঠান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন করেন। পৃথিবীর অন্যতম সেরা সংবিধান প্রণয়ন করেন। এমনকি একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গবেষণা, এমনকি প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের জন্যেও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত হতো।

পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের প্রতি বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরে মোজাম্মেল হক বলেন, পাকিস্তান আমলে একজন বাঙালিকেও কেন্দ্রীয় সরকারের সচিব বা রাষ্ট্রদূত করা হয়নি। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সব বৈষম্যে হতে জাতিকে মুক্ত করার জন্যই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়। বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য ধাপে ধাপে প্রস্তুত করেছেন। পাকিস্তানের অত্যাচারের বিরুদ্ধে অনেক নেতা কথা বললেও, প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করার জন্য ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হতে বিচ্যুত হয়ে পাকিস্তানি ভাবধারায় রাষ্ট্রপরিচালনা সেটাই প্রমাণ করে।

বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মেম্বার ডাইরেক্টিং স্টাফ (এমডিএস) অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা এবং বুনিয়াদি প্রশিক্ষণরত বিসিএস কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, ভার্চ্যুয়ালভাবে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন,  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়য়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, বিসিএস প্রশাসন একাডেমি, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, জাতীয় পরিকল্পনা উন্নয়ন একাডেমি, বিয়াম ফাউন্ডেশনসহ সরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে  প্রশিক্ষণরত প্রশিক্ষণার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।