তিনি জানান, বাংলাদেশ যাতে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে সে জন্য তার সরকার প্রয়োজনীয় সব পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং সে অনুযায়ী কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সকালে নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো তৃণমূলসহ দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবনমান উন্নয়ন করা এবং তাদের একটি সুন্দর জীবন উপহার দেয়া।’
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার জন্য ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের জেলা ও উপজেলা সদরে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বাজেটের ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পারছে। দেশ খাদ্যে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেনি, খাদ্যে-উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি খাতে উন্নয়ন হচ্ছে।’
দেশের মানুষের জীবনমানে গত ১০ বছরে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে দলীয় ইশতেহারে দিন বদলের সনদ ঘোষণা করেছিল।
আওয়ামী লীগ শাসিত ‘১৯৯৬-২০০১’ সময়কে বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণযুগ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে গভীর চক্রান্তের কারণে তার দল বেশি ভোট পেয়েও ক্ষমতায় যেতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসে তার সরকার স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, শুধু বর্তমান সময়ের জন্যই নয়, সেই সাথে নতুন ও আগামী প্রজন্ম যাতে উন্নত জীবন পায় সে জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২১ শতাংশ করেছে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে।
শিক্ষা খাত নিয়ে তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কিছু বিষয়ে শিক্ষার্থীরা এখনো পিছিয়ে আছে। এ জন্য এবারের উন্নয়ন মেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য তিন বিষয়- বাংলা, গণিত ও ইংলিশে অনলাইন ডিজিটাল পাঠ শিক্ষা চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার ইতিমধ্যে একটি অনলাইন ভাষা অ্যাপ তৈরি করেছে, যেখান থেকে মানুষ বিশেষ করে বিদেশে চাকরিপ্রার্থীরা ১০টি ভাষা শিখতে পারবেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলাবাসীর সাথে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী উত্তরাঞ্চলে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেন।
রাজধানীতে আগারগাঁও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠে উন্নয়ন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
দেশব্যাপী মেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জন করা উন্নয়নের চিত্র উপস্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সাফল্য, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১- এর মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, তথ্যপ্রযুক্তি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প এবং দেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, গণমাধ্যমসহ দেশের উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং বর্তমান সরকারের সময়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ও সাফল্যের বিষয়ে মেলায় জনগণকে অবহিত করা হবে।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক আয়োজনে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর/সংস্থা ব্যাংক, বীমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণ করবে।