রবিবার রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জাতীয় শিল্পমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ঋণে সুদের হার কিভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে আমরা আবারও আলোচনায় বসবো।’
ব্যাংক ঋণে সুদের হার এখন দেশের শিল্পায়নের সবচেয়ে বড় বাধা বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দেশে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথম জাতীয় শিল্পমেলা-২০১৯ আয়োজন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
এর আগে ব্যাংক ঋণে সুদের হার কামানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল এবং ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন সুযোগসুবিধাও দেয়া হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কিছু কিছু ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। কিন্তু সবাই তা করেনি। পরবর্তীতে আবারও তা (সুদের হার) ১৪-১৬ শতাংশ করা হয়।
সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও ব্যাংকগুলো কেন সুদের হার কমায়নি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের মালিকরাই কল-কারখানা করছে এবং তারাই ব্যবসা করছে।
আগে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হয়নি, কিন্তু এখন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা ব্যাংক, ব্যবসা দুটোই করছে কিন্তু সুদের হার কমাচ্ছে না। তাদের যে ব্যবসা আছে তারা ঠিকমতো কর ও ভ্যাট দেয় কি না…।
ব্যাংকের কার্যক্রম বজায় রাখতে ঋণ নেয়ার পর যথাসময়ে তা পরিশোধ করতে উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা করা হলে সুদের হার কমাতে অসুবিধা হওয়ার কথা না।
দেশের অর্থনীতি প্রধানত কৃষির ওপর দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বৃহৎ পরিসরে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর জোর দিয়েছেন। যাতে করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে পণ্যসামগ্রি প্রাতিবেশী দেশগুলোতে রপ্তানি করা যায়।
তিনি বলেন, আবাদী জমি ধ্বংস করে আমরা যত্রতত্র শিল্প-কারখানা তৈরি করতে চাই না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের প্রয়োজন মেটাতে হবে। কৃষিপণ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে আমরা বৃহঃ পরিসরে রপ্তানি করতে পারি। পাশাপাশি আমাদের দেশেরও যে বড় বাজার আছে তা মিটিয়ে পাশের দেশগুলোতে রপ্তানি করতে পারি।
পাশাপাশি কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষির যান্ত্রিকীকরণের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এবং রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশের শিল্পায়ন জরুরি।
দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিল্পের বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্পকে বহুমুখী করতে হবে। শিল্পোক্তাদের নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে দেশে এবং বিদেশে বাজার সৃষ্টি করতে হবে।’
সেই সাথে পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।