ঢাকা, ০৯ জুলাই (ইউএনবি)- রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত ও অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় নিতে পরিকল্পিভাবে বিভিন্ন প্রমাণ জড়ো করতে বলেছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বব রে।
সোমবার রাজধানীতে ইউএনবি প্রতিবেদকসহ সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘…এখনে অনেক পদক্ষেপ নেয়ার রয়েছে। আমাদেরকে প্রমা্ণগুলো জড়ো করতে হবে। এই প্রমাণগুলো হতে হবে পরিকিল্পত (সিস্টেমেটিক)।’
রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করাসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের শাস্তি হবে কী না এমন প্রশ্নে বব এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে বব ইউএনবিকে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশকে বোঝানো যে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের একা ভাবার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, এত বড় একটি বোঝা মোকাবেলা করা কোনো একক দেশের পক্ষে অনেক কঠিন। এটা অনেক বড় একটি সমস্যা। আমাদেরকে সহায়তা করা প্রয়োজন।
কানাডা তার সহায়তা বৃদ্ধি করেছে জানিয়ে এই দূত বলেন, এভাবে অন্যান্য দেশকেও এগিয়ে আসতে হবে। এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে।
মিয়ানমারের উপর বৃহত্তর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বব বলেন, অর্থনৈতিক প্রশ্ন আসলে এর সাথে অন্যান্য দেশও চলে আসবে যেমন চীন ও রাশিয়া। এছাড়া আরো অনেক প্রতিবেশী রয়েছে, যারা এটা হতে দেবে না।
তবে তিনি বলেন, কিছু দেশ দ্বারা পরিচালিত নিষেধাজ্ঞাগুলি সত্যিই অত্যন্ত সফল।
বব বলেন, আমাদের আইনি উপায়গুলি খুঁজে বের করার জন্য 'কঠোর পরিশ্রম' করতে হবে যাতে অপরাধীদের জবাবদিহির মধ্যে রাখা যায়। এটা সহজ নয়, কিন্তু আমি আশাবাদী।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বব বলেন, ‘যদি আপনি অনেকগুলি যুবককে নিষ্ক্রিয় করে রাখেন এবং কোনো জায়গায় যেতে না দেন - যারা জানেন যে তারা সেলফোনে কী দেখছে এবং তারা কী পেয়েছে ... হ্যাঁ, অবশ্যই এটি মৌলবাদের স্থান হতে পারে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিদেল ব্লেকেন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো মৌলবাদের বড় স্থান হতে পারে, যদিও তেমন কিছু সেখানে এখনো দেখিনি। মৌলবাদ ও মানব পাচার এই এলাকায় ঝুকিঁপূর্ণ তাই সব সময় নজরদারিতে রাখতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাতে কী হয় তার বেশি জানা যায় না। এখানে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের চেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ভালো কাজ করতে পারবেন।
এসব স্বীকার করে বব বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা, জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও কাজের সুযোগ দেয়া বাংলাদেশের একার পক্ষে সত্যিই কঠিন।
তিনি বলেন, এটি বহু দশক ধরে চলা একটি জটিল সমস্যা, নতুন সংকট নয়। সঙ্কটের ধারাবাহিকতার ফল এটি। এটা এমন একটি সমস্যা যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সমাধান হওয়া উচিত ছিল।