বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে প্রিয় গায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানান নানা শ্রেণি পেশার মানুষজন।
শহীদ মিনারে এসে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গণপূর্তমন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও নাসির উদ্দিন ইউসুফ।
এছাড়া প্রয়াত সংগীত শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস, গায়ক রথীন্দ্রনাথ রায়, খুরশীদ আলম, তিমির নন্দী, ফকির আলমগীর, কুমার বিশ্বজিৎ, অ্যান্ড্রু কিশোর, রবি চৌধুরী, শুভ্রদেব, নকিব খান, ফুয়াদ নাসের বাবু, বাদশা বুলবুল, এসডি রুবেলসহ আরও অনেকে।
পরে দুপুর পৌনে ১টার দিকে সুবীর নন্দীর মরদেহ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া চ্যানেল আই এর কার্যালয় ও রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে তার মরদেহ নেয়ার কথা রয়েছে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকালে সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালী মন্দিরের শ্মশানে সুবীর নন্দীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
প্রসঙ্গত, নন্দিত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর মরদেহ বুধবার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে ঢাকায় এসে পৌঁছে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তার মরদেহ গ্রিন রোডে নিজ বাসায় নেয়া হয়।
মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়েছিল। এর আগে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়ায় (হার্ট অ্যাটাক) আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দুই সপ্তাহ ভর্তি ছিলেন এই সংগীতশিল্পী।
সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালে সিলেটে জন্ম নেন। তার শৈশব কাটে ঢাকা ও কলকাতায়। তার বাবা ছিলেন একজন চিকিৎসক ও তেলিপাড়া চা স্টেটের মেডিকেল অফিসার।
তিনি ১৯৭২ সালে তার প্রথম গান রেকর্ড করেন। গানটি লেখেন মোহাম্মদ মুজাককার আর এটি কম্পোজ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।
তার গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘তুমি এমনি জাল পেতেছ সংসারে’, ‘আমার এই দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘এক যে ছিল সোনার কন্যা’ এবং ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’ উল্লেখযোগ্য।
চার দশকের ক্যারিয়ারে তিনি প্রায় দুই হাজার ছবিতে গান করেন। সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের পর তিনিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছবিতে গান গাওয়ার রেকর্ড করেন। এছাড়া ১৯৯৪ সালে সুবীর নন্দী হাউজ অব কমন্সে গান গেয়েছিলেন।
সুবীর নন্দী পাঁচবার প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার পুরস্কার পাওয়া ছবিগুলো হলো- মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ও মহুয়া সুন্দরী (২০১৫)।
২০১৯ সালে সুবীর নন্দী বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন।