মৃত্যু
তালা দিয়ে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন: দগ্ধ দুই মেয়ে বার্ন ইনস্টিটিউটে
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের ঘরের বাইরে থেকে তালা মেরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তার দগ্ধ দুই মেয়ে বিথী আক্তার (১৩) ও স্মৃতি আক্তারকে (১৮) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বেলাল হোসেনের সাত বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা আক্তার ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যায়।
শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতারগোপ্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বেলাল হোসেন একই ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সুতারগোপ্তা বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী।
আজ (রবিবার) সকালে ওই মেয়ে দুটির ভর্তি হওয়ার কথা নিশ্চিত করেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক ডা. শাওন বিন রহমান।
তিনি জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে গতকাল (শনিবার) বিথী আক্তারের শরীরে ২ শতাংশ দগ্ধ এবং স্মৃতি আক্তারের শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় এখানে আনা হয়। তাদের মধ্যে স্মৃতি আক্তারের দগ্ধের পরিমাণ বেশি হওয়ায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। অন্যদিকে বীথির শরীরে দগ্ধের পরিমাণ কম থাকায় তাকে জরুরি বিভাগের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, রাতে নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বেলাল হোসেন। গভীর রাতে তার ঘরের দরজায় অজ্ঞাত কেউ তালা মেরে চারদিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহুর্তেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘরে থাকা তার ৩ মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে ঘটনাস্থলেই আয়েশা নিহত হয়।
২ ঘণ্টা আগে
উত্তরে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ১১ মাসে সড়কে ঝরেছে ২৪৩ প্রাণ
চলতি বছর উত্তরের ৮ জেলায় আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছে আরও শত শত মানুষ।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ১১ মাসে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আশঙ্কাজনকভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এই সময়ে ৪১০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৩ জন নিহত এবং ৪৮৭ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনাজনিত এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৯৪টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক আইন অমান্য করায় বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ১৪ হাজার ৭৫৮টি মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ, যা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জিত হয়েছে।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিজিয়নের আওতায় তেঁতুলিয়া, বোদা, সাতমাইল, তারাগঞ্জ, বড়দরগা, গোবিন্দগঞ্জ ও হাতীবান্ধা এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের থানা রয়েছে। এসব থানার আওতায় রয়েছে ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক এবং ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক। প্রতিদিন এসব সড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নপ্রান্তে যাত্রীপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের চাপ, সড়কের কিছু অংশের নাজুক অবস্থা এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোসহ অসতর্কতা-অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।
দুই মাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিকার হন নাট্যকার ও ভাওয়াইয়া গবেষক আশরাফুজ্জামান বাবু। তিনি রংপুরের বদরগঞ্জ থেকে শহরের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। তার মুখে ও ঠোঁটে বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা যুবক রাশেদ এখন হুইলচেয়ারে বন্দি। একসময় যে মানুষটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল, আজ সে বোঝা হয়ে গেছে নিজের কাছেই।
রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার আব্দুর রহিম অনিক গত ২৪ সেপ্টেম্বর বদরগঞ্জ রোডে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও সন্তানসহ গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। পারিবারিকভাবে অসচ্ছল অনিকের পরিবার ধারদেনা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন একদিকে ঋণ পরিশোধের চিন্তা অন্যদিকে চিকিৎসার ব্যয়।
বাবু-রাশেদ-অনিকের মতো এমন অনেকই আছেন আড়ালে, যাদের দুর্ঘটনার খবর থাকে অজানা। অথচ ভোরের আলো ফোটার আগেই রংপুরের মহাসড়কগুলো জেগে ওঠে। কেউ যায় জীবিকার খোঁজে, কেউ ফেরে আপন নীড়ে। কিন্তু এই পথই অনেকের জন্য হয়ে উঠছে শেষ গন্তব্য। প্রতিদিনের যাত্রার আড়ালে লুকিয়ে থাকে অনিশ্চিত মৃত্যু, অশ্রু আর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার গল্প।
এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ও দুর্ঘটনা রোধে সড়কগুলোতে নিয়মিত টহল, যানবাহন তল্লাশি ও আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে হাইওয়ে পুলিশ। পাশাপাশি চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তারা। সেই সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সড়ক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ।
সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, সড়কে নিয়মিত নজরদারি থাকলেও চালকদের একাংশ আইন মানতে অনীহা দেখাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দক্ষ চালকের অভাব, বিশ্রাম ছাড়া দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানো এবং যান্ত্রিক ত্রুটিও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠছে।
তারা মনে করেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি চালকদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, চালকদের মানবিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করাও জরুরি। বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ চালক দিয়ে যানবাহন পরিচালনা এবং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানোর প্রবণতা বন্ধ না হলে এই মৃত্যু মিছিল থামবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গতি, বেপরোয়া ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং অদক্ষ চালকই অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ। রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন ৩৭৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ও ১৩৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কে নিয়মিত টহল এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ভবিষ্যতে নজরদারি আরও জোরদার করা হবে। দুর্ঘটনা কমাতে গতি নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনাও পরিকল্পনাও রয়েছে।
এদিকে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, গত নভেম্বর মাসে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন। আগের মাস অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৪ দশমিক ২২ জন। নভেম্বর মাসে নিহত হয়েছেন ১৬ দশমিক ১ জন। সেই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৭১টি শহরের সড়কে এবং ৫টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১২২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্ম ঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজিকে।
নিরাপদ সড়ক চাই রংপুরের সহ-সভাপতি চঞ্চল মাহমুদ বলেন, অদক্ষ চালক আর অপ্রশস্ত সড়কের কারণেই প্রতিনিয়তই বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা । এ ব্যাপারে রাষ্ট্রযন্ত্রের সব কাঠামো কে আরো সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে হবে।
৫ ঘণ্টা আগে
মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপতি এ কে খন্দকার মারা গেছেন
মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ, সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার বীর উত্তম মারা গেছেন।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বার্ধক্যজনিত কারণে সকালে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই উপ-অধিনায়ক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর—আইএসপিআর।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, এ কে খন্দকার ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় সৈনিক। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সাহসিকতা, দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণের পরিচয় দিয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে তার কৌশলগত সিদ্ধান্ত, সাংগঠনিক দক্ষতা ও অটল দেশপ্রেম স্বাধীনতার সংগ্রামকে আরও সুসংহত করেছিল।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতার পর এ কে খন্দকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং দেশের প্রথম বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে এই বাহিনীকে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করাতে অসামান্য অবদান রাখেন।
তিনি বলেন, এ কে খন্দকার রণাঙ্গনের একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে গ্রন্থ রচনা করে পতিত ফ্যাসিবাদী শাসনামনে ব্যপক রোষানলে পড়েন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরাই ছিলো পতিত শাসনের দৃষ্টিতে তার অপরাধ। এ কে খন্দকার ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা মুক্তিযোদ্ধা, সৎ ও সাহসী এবং আদর্শনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক। তার কর্ম, চিন্তা ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে দেশ একজন বীর সন্তানকে হারাল উল্লেখ করে শোকবার্তায় তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, সহযোদ্ধা ও গুণগ্রাহীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ কে খন্দকারের (আবদুল করিম খন্দকার) জন্ম ১৯৩০ সালে তার বাবার কর্মস্থল রংপুরে। আদি নিবাস পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা গ্রামে। তার বাবা খন্দকার আব্দুল লতিফ ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং মাতা আরেফা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে এ কে খন্দকার ছিলেন তৃতীয়।বাবার চাকুরির সুবাদে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় বগুড়া শহরে। তিনি বগুড়া করোনেশন স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। তারপর বাবার বদলির কারণে তাদেরকে নওগাঁ চলে যেতে হয়। নওগাঁ করোনেশন স্কুল (নওগাঁ জিলা স্কুল) থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এবং মালদা জেলা স্কুলে। ভারত বিভাগের সময় এ. কে. খন্দকার ১৯৪৭ সালে মালদা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। এর পর ১৯৪৯ সালে আইএ পাস করেন।
১৯৫২ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলে এর প্রতিবাদে তিনি বিমানবাহিনীর প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
১৯৯৮ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ এবং ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখার জন্য এ কে খন্দকার ১৯৭৩ সালে বীর উত্তম খেতাব এবং ২০১১ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।
১ দিন আগে
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগ, শিশুকন্যা নিহত, দ্বগ্ধ আরও ৩
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলালের ঘরে বাইরে থেকে তালা মেরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই তার ৭ বছর বয়সী মেয়ে নিহত হয়। একই সঙ্গে বেলালসহ আহত হন তার আরও ২ মেয়ে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতারগোপ্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বেলাল একই ইউনিয়নের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সুতারগোপ্তা বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী।
আগুনে পুড়ে নিহত হওয়া শিশুটির নাম আয়েশা আক্তার। আর দগ্ধরা হলেন— বেলাল হোসেন (৫০) ও তার দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৩) ও স্মৃতি আক্তার (১৮)।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, রাতে নিজের ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন বেলাল হোসেন। গভীর রাতে তার ঘরের দরজায় অজ্ঞাত কেউ তালা মেরে চারদিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহুর্তেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ঘরে থাকা তার ৩ মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে আয়েশা নিহত হয়।
স্থানীয়রা জানান, আহতদের উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে বেলাল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে বাকি ২ মেয়েকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বড় মেয়ে স্মৃতির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তারা জানান।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা রঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, গভীর রাতে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদ পারভেজ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলেই ১ শিশু নিহত হয়েছে এবং আরও ৩ জন দগ্ধ হয়েছেন। পরিকল্পিতভাবে ওই ঘরে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
১ দিন আগে
হাদির মৃত্যু দেশের অপূরণীয় ক্ষতি: রিজওয়ানা হাসান
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির অকুতোভয় যোদ্ধা ও ‘ইনকিলাব মঞ্চ’-এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অকালপ্রয়াণ দেশ ও জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় উপদেষ্টা বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর ও সাহসী সংগঠক। অন্যায়, অবিচার ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে তার আপসহীন অবস্থান গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রেরণার উৎস ছিল।
তিনি যে দৃঢ়তা, স্পষ্টতা ও দায়বদ্ধতার সঙ্গে আন্দোলনের ভাষা জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন, তা এ সময়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তরুণদের জাগ্রত করা, মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে জনমত গড়ে তোলায় তার অবদান অনস্বীকার্য বলে মন্তব্য করেছেন এই উপদেষ্টা।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, তার সংগ্রামী জীবন, আদর্শ ও সাহস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত করবে।
হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহযোদ্ধা, শুভানুধ্যায়ীদের ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এই উপদেষ্টা।
গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদির মৃত্যু হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের তথ্য মতে, তার মরদেহ আজ (শুক্রবার) সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে আনা হবে। আজ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ০৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছাবে।
হাদির নামাজে জানাজা শনিবার জোহরের নামাজের পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হবে।
১ দিন আগে
নভেম্বরে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.২২ শতাংশ, প্রতিদিন গড়ে ১৬.১ মৃত্যু
গত নভেম্বর মাসে দেশে মোট ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩১৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ জন, যা মোট নিহতের ১৩.২৫ শতাংশ এবং ৭১টি শিশু রয়েছে, যা ১৪.৬৯ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪০.১৬ শতাংশ। এ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ছিল ৪২.৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ২১.৯৪ শতাংশ। এ ছাড়া যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন, যা ১১.৮০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একই সময়ে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পাশাপাশি ৪৭টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী নিহত হয়েছেন ১৯৪ জন (৪০.১৬ শতাংশ), বাসের যাত্রী ২৪ জন (৪.৯৬ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-মিকচার মেশিন গাড়ির আরোহী ২২ জন (৪.৫৫ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসের আরোহী ১৪ জন (২.৮৯ শতাংশ), থ্রি-হুইলারের যাত্রী ৮৩ জন (১৭.১৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ৩১ জন (৬.৪১ শতাংশ) এবং রিকশা-বাইসাইকেলের আরোহী ৯ জন (১.৮৬ শতাংশ)।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাতীয় মহাসড়কে ঘটেছে ১৩১টি দুর্ঘটনা (২৪.৫৩ শতাংশ), আঞ্চলিক সড়কে ২৪৫টি (৪৫.৮৮ শতাংশ), গ্রামীণ সড়কে ৮২টি (১৫.৩৫ শতাংশ), শহরের সড়কে ৭১টি (১৩.২৯ শতাংশ) এবং ৫টি দুর্ঘটনা অন্যান্য স্থানে (০.৯৩ শতাংশ) ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ধরন অনুযায়ী, ১২২টি (২২.৮৪ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষে, ২৩৭টি (৪৪.৩৮ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি (২০.৪১ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে, ৫৯টি (১১.০৪ শতাংশ) পেছন থেকে আঘাতের কারণে এবং ৭টি (১.৩১ শতাংশ) অন্যান্য কারণে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক-মিকচার মেশিন গাড়ি ২৫.৯১ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১২.৮৪ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৪.৫৮ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৭.৬৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার ১৭.৫৪ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪.৮১ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২.৯৮ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩.৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মোট ৮৭২টি যানবাহন সম্পৃক্ত ছিল। এর মধ্যে বাস ১১২টি, ট্রাক ১২৭টি, কাভার্ডভ্যান ২৩টি, পিকআপ ২৯টি, ট্রাক্টর ৯টি, ট্রলি ১৭টি, ড্রাম ট্রাক ২০টি, মিকচার মেশিন গাড়ি ১টি, মাইক্রোবাস ১৪টি, প্রাইভেটকার ২১টি, অ্যাম্বুলেন্স ২টি, জীপ ৩টি, মোটরসাইকেল ২৪১টি, থ্রি-হুইলার ১৫৩টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৪২টি, বাইসাইকেল-রিকশা ২৬টি এবং অজ্ঞাত যানবাহন ৩২টি।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোরে ৪.৮৬ শতাংশ, সকালে ২০.৯৭ শতাংশ, দুপুরে ১৯.১০ শতাংশ, বিকালে ১৭.৭৯ শতাংশ, সন্ধ্যায় ১৯.৮৫ শতাংশ এবং রাতে ১৭.৪১ শতাংশ।
বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৬.৪০ শতাংশ ও প্রাণহানি ২৪.৬৩ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.১০ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৪.০৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০.৯৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ২২.৯৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.১৭ শতাংশ ও প্রাণহানি ১৪.৪৯ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৩৬ শতাংশ ও প্রাণহানি ৬.২১ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৬১ শতাংশ ও প্রাণহানি ৪.৯৬ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.১১ শতাংশ ও প্রাণহানি ৭.২৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.২৪ শতাংশ ও প্রাণহানি ৫.৩৮ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩০টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম শেরপুর ও পঞ্চগড় জেলায়, জেলাদুটিতে ৯টি করে দুর্ঘটনায় ২ জন করে নিহত হয়েছেন।
নিহতদের পেশাগত পরিচয় অনুযায়ী, শিক্ষার্থী ৫৭ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ২৩ জন, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ১৭ জন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ১৪ জন, শিক্ষক ১৩ জন, বিভিন্ন ব্যাংক–বীমা কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৯ জন, এনজিও কর্মী ৭ জন, পোশাক শ্রমিক ৬ জন, চিকিৎসক ৫ জন, পুলিশ সদস্য ৪ জন, নির্মাণ শ্রমিক ৪ জন, সাংবাদিক ৩ জন, প্রতিবন্ধী ৩ জন, আইনজীবী ২ জন, র্যাব সদস্য ১ জন, সেনা সদস্য ১ জন এবং স্বর্ণকার ১ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা ও অদক্ষতা, নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকেই দায়ী করা হয়েছে।
সুপারিশে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে সার্ভিস রোড নির্মাণ, পর্যায়ক্রমে রোড ডিভাইডার স্থাপন, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৪.২২ জন নিহত হলেও নভেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন ১৬.১ জন। এই হিসেবে নভেম্বর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩.২২ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলেছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটছে। গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। পাশাপাশি যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এজন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অধিকাংশ চালকের নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকায় তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালাচ্ছেন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
৩ দিন আগে
সিলেটে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
সিলেটের গোলাপগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের তেরমাইল নামক স্থানে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজন এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর অন্যজন মারা যান। এ ছাড়াও আরও দুইজন মোটরসাইকেলআরোহী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতরা হলেন— গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ (৪২) এবং রানাপিং ছত্রিশ গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে সাব্বির আহমদ (২১)।
আহতরা হলেন— উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাজিল পুর গ্রামের মৃত আব্দুল আলিমের ছেলে আরিফুল হক জয় (৩৫) এবং জুড়ি উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের বাছিরপুর গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে জাকির আহমদ (২০)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মোটরসাইকেল দুটি একই দিক থেকে যাচ্ছিল। উপজেলার গোয়াসপুর এলাকায় পৌঁছানোমাত্র পেছন থেকে আসা মোটরসাইকেলটি সামনের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে দুইটি মোটরসাইকেলের চালকসহ চারজন আরোহীই ছিটকে পড়লে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম।
৩ দিন আগে
হংকংয়ে ভবনের অগ্নিকাণ্ডে নিহত বেড়ে ১২৮, গ্রেপ্তার আরও ৮
হংকংয়ের বহুতল ভবন কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতটি ভবন পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় শুক্রবার বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়ে আরও বেশ কয়েকটি মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এর ফলে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৮ জনে।
এ ঘটনায় আরও ৭৯ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ২০০ জন। পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভবন সংস্কারকাজে যুক্ত আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এই আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এক দিনেরও বেশি সময় লাগে এবং পুরোপুরি নেভাতে সময় প্রায় ৪০ ঘণ্টা লেগে যায়। অগ্নিকাণ্ড শুরুর দুই দিন পরেও দগ্ধ ভবনগুলো থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।
হংকং ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক অ্যান্ডি ইয়ুং বলেন, কমপ্লেক্সের কিছু অগ্নি-সতর্কীকরণ অ্যালার্ম পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলো অকেজো ছিল। তবে ঠিক কতগুলো অ্যালার্ম অকেজো ছিল বা বাকিগুলোও কার্যকর ছিল কিনা, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
ইয়ুং বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা এক ভবন থেকে আরেকটিতে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত স্টাইরোফোমের প্যানেল ও জালে ঢাকা বাঁশের মাচায় (স্ক্যাফোল্ডিং) আগুন লেগে তা দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, শুক্রবার ৪০ থেকে ৬৩ বছরের মধ্যে সাত জন পুরুষ ও এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হংকংয়ের দুর্নীতি দমন সংস্থা-ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন (আইসিএসি)। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন স্ক্যাফোল্ডিংয়ের সাব-কন্ট্রাক্টর, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এবং সংস্কার কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকল্প ব্যবস্থাপকেরা।
২২ দিন আগে
দ্বিতীয় দিনও জ্বলছে হংকংয়ের বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, নিহত বেড়ে ৫৫
আগুন লাগার এক দিন পরও হংকংয়ের তাই পো এলাকার বহুতল ওয়াং ফুক কোর্ট ভবন কমপ্লেক্স থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এই আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিকাণ্ডে ইতোমধ্যে ৫৫ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীও আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭০ জন।
হতাহতের ব্যাপারে আজ (বৃহস্পতিবার) কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমপ্লেক্সের আটটি বহুতল ভবনের মধ্যে সাতটিতে আগুন লেগেছিল। ইতোমধ্যে চারটি ভবনের আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। বাকি তিনটি ভবনের আগুনও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সন্ধ্যার মধ্যে অভিযান শেষ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এ ঘটনায় একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শদাতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট আইলিন চুং বলেছেন, ‘আমরা ধারণা করছি, নির্মাণ কোম্পানিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গুরুতর অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
ভবন কমপ্লেক্সের সংস্কার কাজের দায়িত্বে থাকা প্রেস্টিজ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কার্যালয়ও আজ (বৃহস্পতিবার) তল্লাশি করেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে থেকে নথিপত্রভর্তি বাক্স জব্দ করা হয়েছে। তবে প্রেস্টিজের অফিসে ফোন করা হলেও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সেই ফোনকলে কেউ সাড়া দেয়নি।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, বহুতল ভবনগুলোর বাইরের দেওয়ালে এমন কিছু নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল, যেগুলোর অগ্নিরোধী মান ছিল না। এ কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের পরও অক্ষত থাকা পাশের একটি ভবনের প্রতিটি তলার লিফট লবির জানালার পাশে স্টাইরোফোম পেয়েছে পুলিশের তদন্ত দল, যা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ। ধারণা করা হচ্ছে, নির্মাণ কোম্পানিই এগুলো লাগিয়েছিল, কিন্তু এসব স্টাইরোফোম ব্যবহারের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। এগুলো নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব ক্রিস ট্যাং।
২৪ দিন আগে
রাজধানীর বংশালে বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে যুবকের মৃত্যু
রাজধানীর বংশালে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মো. আমিন (৩০) নামে এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বংশালের নাজিরা বাজার চৌরাস্তা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সকাল পৌঁনে ১০টার দিকে পথচারীরা আমিনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত আমিন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার টেলি সানি গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি বিডিআর ১ নং গেট এলাকায় থাকতেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যুতায়িত হয়ে মা-মেয়ে নিহত
আমিনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথচারী জিসান জানান, পুরান ঢাকায় অল্প বৃষ্টি হলেই নাজিরা বাজার এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গতকাল সারারাত বৃষ্টিতে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমিন নামের ওই ব্যক্তি সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে আমরা একটি বাঁশ দিয়ে তাকে টেনে দূর থেকে কাছে এনে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক জানান, ওই যুবকের বেঁচে নেই।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি বংশাল থানা পুলিশকে অবহিত হয়েছে।
৯০ দিন আগে