রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলব, জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাশ হতে হলো আবরারকে। চুক্তি বাতিল করে প্রমাণ দিন যে আপনি আবরারের পক্ষে, ভারতের আবদারের পক্ষে নন।’
শেরে-বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে অমিত সাহার উপস্থিতিতে আবরারকে নির্যাতন করে হত্যা করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এজাহারে তার নাম নেই, তাকে বহিষ্কারও করেনি ছাত্রলীগ। অমিত সাহাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন ও বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ‘আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবির সাথে আমরাও অবিলম্বে অমিত সাহাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
‘একই সাথে ছাত্রদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি,’ বলেন রিজভী।
আবরারের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পেছনে কারণই ছিল দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা ও সত্য ইতিহাস তুলে ধরা- উল্লেখ করে বিএনপি এ নেতা বলেন, ‘আর দেশবিরোধী চুক্তিটি করেছে বর্তমান মিডনাইট ভোটের সরকার জনগণের সাথে দিনে দুপুরে প্রতারণা করে। সুতরাং আবরার খুনের দায় সরকারও এড়াতে পারে না।’
দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ছাড়া আবরারের আত্মা শান্তি পাবে না, বলেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, সরকার আবরার হত্যার মূল কারণ থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে।
‘একদিকে চলছে গুম খুন অপহরণ আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অপরদিকে সারা দেশে রয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের টর্চার সেল,’ দাবি করে তিনি বলেন, গোটা দেশকে এখন একটি টর্চার সেলে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো এখন কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্প। ছাত্র-যুবক-আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই এখন লীগের টর্চার সেলের নির্মম শিকার।
‘যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের পর সেখানে পাওয়া গেছে আধুনিক টর্চার সেল। যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের অফিসে পাওয়া গেছে টর্চার সেল। বুয়েট ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহার ২০১১ নাম্বার কক্ষ যেখানে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে নৃশংস কায়দায় হত্যা করা হয়, সেই কক্ষটিও একটি টর্চার সেল,’ বলেন তিনি।
দুর্নীতির অবসান ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধারে সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এ নেতা।