মঙ্গলবার খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
পাশাপাশি প্রত্যেককে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
সাজা প্রাপ্তরা হলেন- যশোর শহরের ষষ্ঠিতলাপাড়ার তরিকুল ইসলাম, চাঁচড়া রায়পাড়ার প্রিন্স ওরফে বিহারি প্রিন্স, গাড়িখানা রোডের জাহিদুল ইসলাম ওরফে কালা মানিক, ঘোপ বৌ বাজার এলাকার রবিউল শেখ, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের সজল, টুটুল গাজী, বেজপাড়ার টিবি ক্লিনিক এলাকার ফয়সাল গাজী, রেলগেট পশ্চিমপাড়ার শহিদুল ইসলাম খান ওরফে সাইদুল এবং বাঘারপাড়া উপজেলার বহরমপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শহিদুল ইসলাম।
এদের মধ্যে প্রিন্স, কালা মানিক, রবিউল শেখ, সাইদুল এবং শহিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়া কবরস্থান রোডের রাজ্জাক ফকির ও চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে আল মাসুদ রানা ওরফে মাসুদ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের ঈদগাহ মোড়ে চায়ের দোকানে বন্ধুদের সাথে বসে ছিলেন কবির হোসেন পলাশ। এসময় দুটি মোটরসাইকেলযোগে সন্ত্রাসীরা এসে পলাশকে গুলি করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বোন ফারহানা ইয়াসমিন ১৩ ডিসেম্বর অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
২০১৪ গত ৯ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই আবুল খায়ের মোল্লা দশজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
তবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসা হত্যার পরিকল্পনাকারী ব্যবসায়ী মাসুদ ও সন্দেহভাজন হিসেবে আটক শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
হত্যা পরিকল্পনাকারীকে অব্যাহতির সুপারিশ করায় মামলার বাদী ফারহানা ইয়াসমিন রুমা দাখিলকৃত দুটি চার্জশিটের বিরুদ্ধে ১৩ জুলাই আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারক মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোরকে নির্দেশ দেয়।
পরে তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই যশোরের ওসি একেএম ফারুক হোসেন হত্যা পরিকল্পনাকারী মাসুদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরণের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল মামলার নথির বরাতে বলেন, চলতি বছরের ১৬ মে খুলনায় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণে নয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত এই রায় দিয়েছে।