আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এরকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন নিহতের বিদেশ ফেরত স্বামী সিংগাইর উপজেলার বলধরা ইউনিয়নের খৈয়ামুড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী চার ভাড়াটিয়া খুনির মধ্যে আলমগীর নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সিংগাইর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হন সিংগাইর উপজেলার বলধরা ইউনিয়নের খৈয়ামুড়ি গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৫০)। তার গলা কাটা লাশ শনিবার ভোরে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই দিনই নিহত হাসিনা বেগমের ছোট ভাই মেছের আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার নিহত হাসিনা বেগমের স্বামী আব্দুর রহমানকে আটক করেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন।
রবিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম সারোয়ারের আদালতে বিদেশ ফেরত আব্দুর রহমান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে আব্দুর রহমান জানান, প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে বিরোধপূর্ণ ৩০ শতাংশ জমি হাসিল করার উদ্দেশ্যে সে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি তার এলাকার আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে আরও ৩ জনকে এই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত করেন। ৫ শতাংশ জমি লিখে দেয়ার শর্তে ওই চারজন ভাড়াটিয়া খুনি এই হত্যাকাণ্ডে রাজি হন। স্ত্রীকে হত্যার আগে খুনিরা আব্দুর রহমানকে তার ছেলের ঘরের ৮ বছরের নাতি শাওনকে হত্যার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাদের এই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। নাতি তার বংশের প্রদীপ, তাই রহমান স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটিয়া খুনি আলমগীর বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করেন। তখন হাসিনা বেগমকে রহমান আলমগীরের সাথে দেখা করতে বলেন। স্বামীর কথা অনুযায়ী হাসিনা বেগম বাড়ি বাইরে যান। আলমগীর হাসিনা বেগমের সাথে কথা বলতে বলতে বাড়ি থেকে দূরে নিয়ে যান। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী ধারাল অস্ত্র দিয়ে হাসিনা বেগমকে জবাই করে হত্যা করে লাশ ধান খেতে ফেলে রাখেন তারা।