লকডাউন
করোনা হাসপাতাল: খুলনায় আরও ২০টি আইসিইউ বেড সংযোজন হচ্ছে
নতুন লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টের জন্য অপেক্ষা না করে আগের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন থেকে বিকল্প পথেই পাইপ লাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করে আরও ২০টি আইসিইউ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে। ঈদুল ফিতরের পরই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ও পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড কাম আইসিইউ বিভাগের জন্য লিন্ডে অক্সিজেন কোম্পানির স্থাপন করা সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টকে পাঁচ ইউনিট থেকে ১০ ইউনিটে উন্নীত করেই করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করা হলো। এর ফলে এ হাসপাতালে আগে থেকে থাকা ১০টি আইসিইউ বেডের পাশাপাশি আরও ২০টি বেড সংযোজন হবে। সেই সাথে নিচতলা ও দোতলা মিলিয়ে এখন থেকে এটি হবে পূর্ণাঙ্গ ১০০ বেডের করোনা হাসপাতাল।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, খুমেক হাসপাতালের জন্য পৃথক আইসিইউ ভবন নির্মাণ করে চালুর আগেই করোনার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় প্রথমে এখানে ফ্লু কর্নার স্থাপন করে করোনার সন্দেহের রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গত বছর যখন খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে করোনা হাসপাতাল স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল তখন খুমেক হাসপাতালের আইসিইউ ভবনটি ফ্লু কর্নার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেখানে করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর পরীক্ষা করা হয়। এরপর করোনার প্রভাব কমলে এ বছরের শুরু থেকে ডায়াবেটিক হাসপাতাল ছেড়ে দিয়ে এখানেই করোনার রোগীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। একই সাথে দুটি জোন করে ইয়োলো জোনে করোনার সন্দেহের রোগীদের এবং রেড জোনে করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীদের ভর্তি করা হয়। রেড জোনে ১০টি আইসিইউ বেডও স্থাপন করা হয়। অন্যান্য সাধারণ বেডেও হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করার পাশাপাশি মুমূর্ষ রোগীদের জন্য হাইফ্লো ন্যাজল ক্যানোলার সাপোর্টও দেয়া হয়। সেই সাথে সিলিন্ডার অক্সিজেন সরবরাহও স্বাভাবিক রাখা হয়। কিন্তু ওই ভবনের দোতলায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন না থাকায় গত কয়েকদিন ধরে লাইন স্থাপন করা হয়।
বৃহস্পতিবার অক্সিজেন লাইনের কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বৈদ্যুতিক কাজসহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম এবং জনবলের রোস্টার করে ঈদের পরই এর কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, ১০০ বেডের করোনা হাসপাতালে এখন থেকে রেড জোনে ৭০টি এবং ইয়োলো জোনে ৩০টি বেড থাকবে। রেড জোনের ৭০ বেডের মধ্যে আবার ২০টি থাকবে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্চাকেন্দ্র), ১০টি এইচডিইউ (উচ্চমাত্রিক নির্ভরকেন্দ্র) এবং ৪০টি সাধারণ (করোনার রোগীদের জন্য উপযুক্ত) বেড।
আরও পড়ুন: করোনা উপেক্ষা করে খুলনায় জমজমাট ঈদ কেনাকাটা
সরেজমিনে করোনা হাসপাতালের দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, আইসিইউ জোন-২, কোভিড জোন, ইয়োলো জোন, নমুনা সংগ্রহ কক্ষ, ডাক্তার, নার্স সকলের জন্য পৃথক জোন করা হয়েছে। কোভিড জোনের জন্য বেডগুলোও প্রস্তুত। প্রতিটি বেডের সাথে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য লাইনও টানা হয়েছে। সব মিলিয়ে অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কাজ শেষ করে এখন ওই অংশের কার্যক্রম শুরু করতে আর সপ্তাহখানেক লাগতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। এজন্য আগামী ১৬ মে দিন নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ এগিয়ে যাচ্ছেন বলে খুমেক হাসপাতালের আরএমও জানিয়েছেন।
খুমেক হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়কারী ও খুমেক’র উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার অস্থায়ী গ্রিড হাসপাতালে সরকারি অর্থায়নে সরবরাহকৃত মালামাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের অংশ হিসেবে খুলনায়ও একটি লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য ট্যাংকসহ আনুসঙ্গিক মালামাল দেয়া হয়। স্পেক্ট্রা অক্সিজেন কোম্পানির ওই প্লান্টটি বসানোর দায়িত্ব নিয়েছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বা এইচইডি। কিন্তু সেটি স্থাপন সংক্রান্ত জটিলতায় প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হতে চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেজন্য বসে থাকেনি। বিকল্প পথে অক্সিজেন সরবাহ করে করোনা রোগীদের সেবার জন্য করোনা ইউনিটটি আরও বৃহৎ পরিসরে প্রস্তুত করা হয়েছে।
খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ বলেন, আইসিইউ ভবনটি আপাতত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ভবিষ্যতে যখন এটি আইসিইউ হিসেবেই ব্যবহৃত হবে তখন যাতে খুব বেশি একটা কাজের প্রয়োজন না হয় সেভাবেই এটিকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। অর্থাৎ করোনার প্রভাব কমলে অথবা পৃথক করোনা হাসপাতাল করা হলে এ ভবনটি আইসিইউ ভবন হিসেবেই পরিচিতি পাবে। তাছাড়া এখন বিকল্প লাইনে অক্সিজেন সরবরাহ করা হলেও স্পেক্ট্রা অক্সিজেন কোম্পানির লিকুইড প্লান্ট বসানোর পর এখানে স্বতন্ত্র অক্সিজেন প্লান্টের মাধ্যমেই অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
করোনায় সড়কে গণপরিবহনের যাত্রা শুরু
করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারের অনুমতিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সড়কগুলোতে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃজেলা ব্যতীত সকল বাস সেবা চালু হয়েছে।
ঈদ ও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আন্তঃজেলার বাস, ট্রেন এবং লঞ্চ সেবা বন্ধ রেখেছে সরকার।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল যেমন, মিরপুর রোড, রোকেয়া স্মরণী, উত্তরা, বনানী এবং মহাখালী থেকে বাসগুলো ছেড়ে যেতে দেখা যায়।
সড়কে গণপরিবহনের উপস্থিতির কারণে অন্যদিনের মতো রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ি এবং পিকআপ ভ্যানের সংখ্যা কম চোখে পড়ে। গণপরিবহনগুলোতে যাত্রীদের মাস্ক পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ে।
রাজধানীর একজন ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু সকাল থেকেই রাস্তায় গণপরিবহন চলা শুরু করেছে, তাই আমরাও সকল বাসগুলোতে চেক করে স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়গুলো নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’
ইউএনবির কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকেই জেলার শাসনগাছা, জঙ্গলিয়া, চকবাজার বাস টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। একটু পরপরই ছেড়ে যাচ্ছে বাস।
কোনো যাত্রীকেই বাসে মাস্ক ছাড়া ভ্রমণ করতে দেয়া হচ্ছে না। মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পরিবহন শ্রমিকদের বেশ সচেতন হতে দেখা গেছে।
গত ৫ এপ্রিল লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ করা হলেও, দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৭ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চালু করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪ এপ্রিলে লকডাউনের সময় থেকে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সকল প্রকার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সরকার।
বাস ভাড়া বৃদ্ধি
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ৩০ মার্চ জানান, সরকার গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা ৩১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়।
এর আগেও গত বছরে ৩১ মে সরকার আন্তঃজেলা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরসহ আশপাশের এলাকার বাস ভাড়া বৃদ্ধি করে। গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ কম যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে, ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার।
বর্ধিত লকডাউন
করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মেয়াদ ৫ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে এবং ছয় দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বুধবার (৫ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করে।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সকল সরকারি আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে ঈদের ছুটিতে নিজস্ব কর্মস্থলে (অধিক্ষেত্রে) অবস্থান করতে হবে। এছাড়া দোকানপাট-বিপণীবিতান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে না মানা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে দোকানপাট-বিপণীবিতান বন্ধ করে দেয়া হবে।
আন্তঃজেলার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ৬ মে থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার অভ্যন্তরে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে। কিন্ত, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে।
সরকাল প্রথমে গত ৫ এপ্রিল দেশে সীমিত লকডাউন ঘোষণা করে। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মেয়াদ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে ২৫ এপ্রিল থেকে দোকন ও বিপণীবিতান মালিক সমিতির দাবি মেনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের শর্তে দোকান ও বিপণীবিতান খোলার অনুমতি দেয় সরকার।
লকডাউন নিয়ে রিট: ইউনুছ আলী আকন্দকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
জরুরি অবস্থা ঘোষণা ছাড়া করোনা মহামারিকালে চলমান লকডাউন দেয়ার চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করার পর শুনানিতে অংশ না নেয়ায় অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। একইসাথে লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন।
বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেন, রিট করে তিনি (অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ) মিডিয়ায় প্রচার করেন। কিন্তু মামলা তালিকায় আসার পর তিনি আর কোর্টে থাকেন না। এ কারেণই এই জরিমানা।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া লকডাউন দেয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে এ রিট আবেদন করেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিট আবেদনে চলমান লকডাউনের ওপর স্থগিতাদেশ এবং আর যাতে লকডাউন দেয়া না হয়, সেজন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: টিকা-অক্সিজেন নিয়ে রিট করে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না: হাইকোর্ট
আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটিকে বিবাদী করা হয়।
ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া জনগণের চলাফেরার অধিকার, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার সরকার স্থগিত রাখতে পারে না। এটা সংবিধানপরিপন্থী। কিন্তু সরকার জরুরি অবস্থা জারি ছাড়াই লকডাউন দিয়েছে, যা সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৫ ও ৩৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
আলোচিত বিষয় নিয়ে ‘জনস্বার্থের’ নামে রিটকারী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত বছরের ১২ অক্টোবর ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেন। এতে গুরুতর আদালত অবমাননা হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে দোষী সাব্যস্ত করেন আপিল বিভাগ। এ ঘটনায় তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসাথে তাকে তিন মাসের জন্য আইনপেশা থেকে বরখাস্ত করেন আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার আশায় নিরাশা এনে দিয়েছে লকডাউন!
গত মার্চের মাঝামাঝি থেকেই দেশে করোনা পরিস্থিতি বৃদ্ধি পেতে থাকায় সরকার সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিলে এবং ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। যদিও এখনও দেশে শিথিলভাবে লকডাউন চলছে।
কিন্তু এই লকডাউনের ফলে, বিদেশে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী হাজার হাজার শিক্ষার্থী, যারা ইতিমধ্যেই ভর্তি এবং স্কলারশিপের সুযোগ পেয়েছিল, তারা শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের এই সমস্যায় বেশি পড়তে হচ্ছে।
৫ এপ্রিল থেকে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস পূর্বের সকল ভিসা ইন্টারভিউ বাতিল করে এবং নতুন ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া বন্ধ করে দেয়। করোনা লকডাউন এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা যতদিন চলবে, ততদিন এমন অচলাবস্থাই চলবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। এতে অনেক শিক্ষার্থীই তাদের ফান্ডিং এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সকল আশঙ্কা করছে।
দেশে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি এবং ভারতে করোনার অস্বাভাবিকতার কারণে দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দিন-দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্বে উচ্চশিক্ষায় সেরা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং এই দেশের শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ, ফেলোশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই নিজেদের আমেরিকার পড়ার জন্য প্রমাণ করেছে এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় মনোনিবেশ করতে আগ্রহী। কিন্তু ২০২০ সালের মতোই একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভিসা প্রত্যাশীদের।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী সম্মানজনক স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকাতে গবেষণার মাধ্যমে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য যায়। সারাবিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই বিদেশে পড়বার সুযোগ করে নেয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। এতে করে দেশেরও সুনাম বৃদ্ধি পায়।
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত তিনটি সেশনে ভর্তি হতে পারে, যেমন স্প্রিং (জানুয়ারি), সামার (মে) এবং ফল (জুলাই-আগস্ট)। সাধারণত অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ফল সেমিস্টারে ভর্তি হতে পছন্দ করেন। কিন্তু ২০২০ সালের ফল সেমিস্টারে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা করোনার প্রকোপের কারণে এখনও সেশন শুরু করতে পারেনি।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, কোনও শিক্ষার্থী যদি ভর্তি হবার পর সঠিক সময়ে ক্লাস শুরু হবার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে তার ভর্তি এবং স্কলারশিপ বাতিল হয়। কিন্তু কিছু করোনার কারণে কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভর্তির মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত বাড়াতে পেরেছে। তাই ২০২১ সালের সামার এবং ফল সেশনে ভিসার চাহিদা অন্যসময়ের তুলনায় বেশি।
আরও পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
কিন্তু ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনের কারণে আমেরিকান দূতাবাস সকল প্রকার ভিসা ইন্টার্ভিউ বাতিল করে দেয়। তবে সামার সেশনের জন্য আগামী ১১ মে জরুরি ভিসাস ইন্টার্ভিউ এর ব্যবস্থা করেছে দূতাবাস। যদিও ফল সেমিস্টারের ভর্তিচ্ছুদেরও এখন ভিসা পাওয়া প্রয়োজন।
লকডাউনের মধ্যেই সরকার জরুরি সেবা, শিল্প-কারখানা, বিপণীবিতন এবং আন্তঃশহর পরিবহন সেবা চালু করলেও, মার্কিন দূতাবাস নতুন করে কোনও ভিসা আবেদন গ্রহণ করছে না। দূতাবাস বলছে, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরায় কার্যক্রম শুরু হবে সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা পাবার পর। যদিও প্রতিবেশী দেশ চিন এবং শ্রীলঙ্কা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে, কিন্তু মার্কিন দূতাবাস এব্যাপারে তেমন কোনও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
যেহেতু ভর্তি পেছানোর আর তেমন সুযোগ নেই এবং পরপর দুই বছর একই সমস্যার সম্মখীন হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের, তাই স্কলারশিপের সুযোগ অনেকটা হাতছড়া হবার অবস্থাই হয়েছে। অনেক আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় এখন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ অফার করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না।
কেস স্টাডি:
চুয়েট থেকে পাস করা যুক্তরাষ্ট্রে পিএইডি ডিগ্রি করার সুযোগ পাওয়া জ্যোতিরময়ী সাহা বলেন, “আমি ফান্ডিং এর মাধ্যমে ফল ২০২০ সেশনে ভর্তির সযোগ পাই। কিন্তু দুইবার আমাকে ভর্তি প্রক্রিয়া পেছাতে হয়েছে। ফান্ড ছাড়া আমার পক্ষে এই ডিগ্রি নেয়া সম্ভব না। যদি এবারও না হয়, তবে আমার পক্ষে আর ভর্তি হওয়া সম্ভব হবে না।”
আরও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ফাতিমা মুক্তি জানান, তিনি সাউথ ক্যারোলিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলোশিপসহ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন। তার ভর্তি হবার কথা ছিল ফল ২০২০ সেশনে। কিন্তু পুরো গবেষক দলের মধ্যে একমাত্র তিনিই এখনও কাজে যোগ দিতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেতে একজন শিক্ষার্থীর বিভিন্ন কোর্স করাসহ আবেদনের জন্য প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান চলমান এই পরিস্থিতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার এই খরচ বহনের অবস্থাতেও নেই।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনা প্রকোপ রোধে লকডাউন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সরকার যদি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া লকডাউনের আওতার বাইরে না রাখে, তাহলে হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
এই অচলাবস্থা দূর করার জন্য শিক্ষার্থীদের একটি অংশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে। তাদেরকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হলেও, এখনও অবস্থার তেমন কোনও উন্নতি দেয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, সরকার ও মার্কিন দূতাবাসের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
চালুর দিনই পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে: রেলপথমন্ত্রী
আগামী বছর যেদিন থেকে পদ্মা সেতু চালু হবে সেদিনেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মাওয়া প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।
মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ভায়াডাক্ট-২ এর মাওয়া প্রান্ত ও পদ্মা সেতুর মধ্যকার সংযোগ স্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন কালে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুসহ চার মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন আগামী বছরের জুনের মধ্যে: মন্ত্রী
রেলপথমন্ত্রী বলেন, মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশের অনেক বড় অর্জন। এটি দেশের একটি বৃহৎ সামর্থ্য। পদ্মা সেতুতে সড়ক ও রেলপথ যুক্ত আছে। রেল অংশটি ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ।
তিনি বলেন, ‘যদিও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত ধরা হয়েছিলো তবে আগামী বছর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে মাওয়া প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী দ্রুত কাজ চলছে।’
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতু ঘিরে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, করোনা এবং লকডাউনের মধ্যেও প্রকল্পের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কার্যক্রম চলমান আছে। মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ ভায়াডাক্ট২সংযোগ স্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত মাওয়া থেকে ভাঙ্গা সেকশনের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৬ শতাংশ এবং সম্পূর্ণ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৪১.৫৯ শতাংশ।
রেলপথমন্ত্রী মাওয়া প্রান্ত পরিদর্শন করে পরে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যান এবং সেখান থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলমান রেললাইন নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারীরা আশাহত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
এ সময় সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কাজের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লকডাউনে পেশা পরিবর্তন করছে ফেনীর বাস শ্রমিকরা
ফেনী থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সোনাপুর, বারইয়ারহাট, ফেনী-লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী –পরশুরাম, সোনাগাজী রুটে বাস ও মিনিবাস চলাচল করে এসব পরিবহনে ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। গত ৫ এপ্রিল থেকে চলমান লকডাউনের গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর থেকে অনেকে জীবিকার তাগিদে পেশা পরিবর্তন করেছে। অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
আবারও লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল
করোনার বিস্তাররোধে সরকার আবারও চলমান লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। আগামী ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময় বাড়ানোর পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার (৬ মে) থেকে জেলার ভেতরে গণপরিবহন সেবা চালু করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সাপ্তাহিক মন্ত্রিপরিষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন।
সভাশেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলো এবং সেই সাথে শুধুমাত্র জেলার ভিতরে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলো। অর্থাৎ দূরপাল্লার বাস চলবে না।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
এসময় তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকার স্থানীয় প্রশাসন বিপণিবিতানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করবে। যদি কোথাও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হতে দেখা যায়, তাহলে সেসকল বিপণিবিতান ও দোকান তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল ছয়দিনের নতুন লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ২৮ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
এর আগে ১৪ এপ্রিল প্রথম দফায় এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পরে সেই লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়।
লকডাউনে জামিন-অন্তর্বর্তী আদেশের মেয়াদ বাড়ল আরও ৪ সপ্তাহ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনের মধ্যে বিভিন্ন মামলায় আসামিদের জামিনের মেয়াদ ও আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের কার্যকারিতা আরও চার সপ্তাহ বাড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
রবিবার (২ মে) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, যেসব মামলায় আসামিকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জামিন প্রদান করা হয়েছে বা যেসব মামলায় উচ্চ আদালত হতে অধস্তন আদালতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণের শর্তে জামিন প্রদান করা হয়েছে বা যেসব মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রদান করা হয়েছে- সেসব মামলার জামিন ও সকল প্রকার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসমূহের কার্যকারিতা আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তিতে সব আসামিদের নির্দিষ্ট মোদে দেয়া অন্তবর্তীকালীন জামিন ও আদেশের মেয়াদ দুই সপ্তাহ করে বৃদ্ধি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। করোনাকালে আদালতের কার্যক্রম সীমিত করায় এ ধরণের আদেশ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: সব মামলায় জামিনের মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহ বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট
গত ১১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বলা হয়, মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ব্যাপক বিস্তার রোধকল্পে ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে জামিন ও অতীব জরুরি ফৌজদারি দরখাস্তসমূহ নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে আদালত ও ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বাণিজ্যিক বিমান পরিসেবা চালু করেছে সরকার
বাংলাদেশের সাথে ৩৮টি দেশের বাণিজ্যিক বিমানে যাত্রী পরিবহন সেবা পুনরায় চালু করেছে সরকার।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাতে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এক বিবৃতিতে জানায়, শনিবার (১ মে) থেকে বিভিন্ন রুটে বিমান চলাচল শুরু হবে। তবে অতিরিক্ত করোনা ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো সাথে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে।
বেবিচকের বিবৃতিতে বলা হয়, ৩৮টি দেশের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে আগত যাত্রীদের সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ খরছে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
তবে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘কে-নাইন’: ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় অন্যন্য এক বাহিনী
কিন্তু অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় থাকা কাতার, বাহরাইন এবং কুয়েত থেকে আসা যাত্রীদের জন্য তিনদিন প্রাতিষ্ঠানিক এবং ১১দিন হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম করা হয়েছে।
এদিকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত ভারতের সাথে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে বেবিচকের বিবৃতিতে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ১৪ এপ্রিল সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণার পাশাপাশি সকল বৈদেশিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে ফিরলেন আরও ১০৫ জন
ভারত থেকে শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০৫ বাংলাদেশি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছেন।
ইমিগ্রেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বেনাপোলের একটি আবাসিক হোটেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা তাদের নিজ খরচে সেখানে অবস্থান করবেন।
কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ হাইকমিশন থেকে অনাপত্তিপত্র নিয়ে দেশে ফেরেন তারা। এদিকে, শুক্রবার বাংলাদেশ থেকে ২১ জন ভারতীয় নাগরিক ভারতে ফিরে যান।
আরও পড়ুন: সীমান্তে আটক ১৫ জন বাংলাদেশি বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরেছেন
বাংলাদেশ সরকার ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দেয়ার আগে অনেক রোগী ও শিক্ষার্থী দেশে ফেরার জন্য রওনা হয়েছিলেন।
ভারত থেকে আসা সামাদ নামে এক যাত্রী জানান, অন্তত একদিন আগে বর্ডার বন্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত ছিল। তাহলে বর্ডারে এসে আমাদের এই ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। ওপারে আটকে থাকা যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই রোগী এবং শিক্ষার্থী।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনাপত্র হাতে পেয়ে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা রয়েছে। হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে আসা যাত্রীদের ছাড় দেয়া হচ্ছে। গত ৪ দিনে বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ৮১০ জন যাত্রী দেশে ফিরেছেন।