খুলনা
খুলনায় চলছে ২৪ ঘণ্টার ট্যাংকলরি ধর্মঘট, তেল উত্তোলন-বিপণন বন্ধ
কমিশন বৃদ্ধি ও ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি (ধর্মঘট) পালন করছেন জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। রবিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৮ টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি, খুলনা বিভাগ কোন ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন না করে ২৪ ঘণ্টার এ ঘর্মঘট পালন করছেন।
ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিকরা পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে খুলনাসহ ১৫ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ থাকলেও এ সময়ে ফিলিং স্টেশন (পাম্প) থেকে তেল (নিজ নিজ পাম্পে মজুদকৃত) সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ধর্মঘটের ফলে অতিরিক্ত ট্রাক-লরির চাপে ফিলিং স্টেশন ও ট্রাক-লরি স্ট্যান্ডে জায়গা না হওয়ায় ট্রাক-লরিগুলোকে সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের মূল্যের (পূর্ব মূল্য) ২.৭১ টাকা কমিশন দেয়া হয়। অতীতে তারা (ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি) কমিশন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে (বিপিসি, জ্বালানি মন্ত্রণালয়) একাধিকবার আবেদন করেও কোন ফলাফল পায়নি।
জ্বালানি তেলের মূল্য বর্তমানে অনেক গুনে বৃদ্ধি পেলেও কমিশনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি তাদের কমিশন প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের বর্তমান মূল্যের ৭.৫ শতাংশ হারে প্রদানের দাবিতে আগামী ২৪ ঘণ্টা খুলনা বিভাগের কোন ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন করছে না। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আরও কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান জ্বালানি ব্যবসায়ীরা।
পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: রাজধানীতে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর শনিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অধিকাংশ বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের বাস স্টপেজে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে এবং যারা বাসে চড়তে পেরেছে তাদের কাছ থেকে বাসের কর্মীরা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খুলনায় দীর্ঘ রুটের অধিকাংশ যাত্রীকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ফিরতে দেখা গেছে। বাসের কর্মীরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়ার পরিমাণ আসল ভাড়া থেকে অনেক বেশি।
জেলার পরিবহন মালিকরা জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে সীমিত বাস চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ বাসস্ট্যান্ডের কয়েকজন যাত্রীর।
সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষারত রিপা বেগম বলেন, সরকারের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি তার জানা নেই। একজন বাসচালক ঝিনাইদহ-খুলনা রুটে বিদ্যমান ১৮০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা আদায় করায় তিনি অবাক হয়ে যান।
সুন্দরবন পরিবহনের লাইনম্যান সুজিত জানান, সরকারের ঘোষণার পর গতকাল রাত থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন তারা।
টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের মহাব্যবস্থাপক গোলাম সামদানী সাকিব জানান, তারা এসি ও নন-এসি বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন।
কিছু যাত্রীর অভিযোগ, এই করোনা মহামারিতে সরকারের জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অনৈতিক।
দিনাজপুরে শনিবার সিএনজিচালিত কোচের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে বাসের ভাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগের দামে গাড়ির জ্বালানি পেতে শুক্রবার রাত ১২টার আগে জেলার পেট্রোল পাম্পগুলোতে মানুষ ভিড় করেছে। কিন্তু নবাবগঞ্জ ও চিরিরবন্দর উপজেলার কয়েকটি জ্বালানি কেন্দ্র পুরনো দামে পেট্রোল ও অকটেন বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে, মোটরসাইকেল চালকরা রাস্তা ব্যারিকেড করায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে তারা পুরানো দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
দিনাজপুর সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী জানান, বিআরটিএ ও জেলা পরিবহন কমিটির সিদ্ধান্তের পর তারা বাস ভাড়া বাড়াবেন।
রাঙ্গামাটিতে সরকারের জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ সব রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম বাস মালিক সমিতি।
এদিকে, জেলায় কয়েকটি সিএনজিচালিত গণপরিবহন চলাচল করছে এবং যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। বহু মানুষ ও শিক্ষার্থী পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
রাঙামাটি জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, পরিবহন ভাড়ার বিষয়ে সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দূর-দূরান্তের সব বাস চলাচল করবে না।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: রাজধানীতে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ
বাগেরহাটে শুক্রবার রাত থেকেই জ্বালানি স্টেশনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন মানুষ।
জ্বালানির ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সরকারি ঘোষণার পর অতিরিক্ত জ্বালানি বিক্রি করা হয়েছে। ফলে জ্বালানি স্টেশনগুলোতে সাময়িক জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে।
শুক্রবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেশি বাড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিজেলের দাম প্রতি লিটার ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকা হয়েছে।
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ থেকে ৮০ টাকা বাড়িয়ে দেয় সরকার। ফলস্বরূপ, বাসের ভাড়া অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রায় ২৭ শতাংশ এবং লঞ্চের ভাড়া ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: বাড়ছে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া
খুলনায় সন্ত্রাসীদের মারধরে আহত তরুণের মৃত্যু
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানা এলাকায় সন্ত্রাসীদের মারধরে আহত তরুণের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাত পৌণে ৮টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় শুক্রবার ১২ জনের নাম উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে।
মৃত লিওন শেখ (১৮) নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন মীরেরডাঙ্গা টিবি হাসপাতাল রোড এলাকার মৃত আব্দুস সোবহান শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: পাওনা টাকার জন্য নির্যাতনে আহত যুবকের মৃত্যু, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
মামলার আসামিরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার সেনপাড়া আনসার সোলার মিল রোড এলাকার রাশেদের ছেলে সালাউদ্দিন, সেলিম পাটোয়ারির ছেলে আলাউদ্দিন পাটোয়ারি, শহিদের ছেলে মানিক, শহিদুলের ছেলে মামুন, আব্দুল মান্নানের ছেলে লিটন, আক্কাসের ছেলে সাব্বির, আফজালের ছেলে শাহিন, মতির ছেলে পঙ্কজ, আকবারের ছেলে আকাশ, বাবুলের ছেলে স্বাধীন, ইসহাকের ছেলে লিমন ও মোস্তফার ছেলে রনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লুৎফুল হায়দার জানান, লিওন শেখ গত ২ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে সেনপাড়া আনসার সোলার মিল রোড বৌবাজার এলাকায় পৌঁছানো মাত্র আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার গতিরোধ করে। এসময় তারা তাকে বেধড়ক মারধর করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আহত যুবকের মৃত্যু
লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ মামলা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
খুলনায় গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবির সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলী আকবর শেখ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।
বুধবার খুলনা দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনার (মহানগর) সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মো. আলী আকবর শেখ খুলনা মহানগরীর পশ্চিম টুটপাড়া, মেইন রোডের আঞ্জুমান মঞ্জিলের বাসিন্দা
বিজন কুমার রায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মো. আলী আকবর শেখ (সাময়িক বরখাস্ত) ও তার স্ত্রী নাজমা আকবরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২১ লাখ ৮২ হাজার ৯৪৩ টাকার অবৈধ সম্পদ গোপন করা এবং মিথ্যা তথ্য প্রদানসহ ৮৮ লাখ ২২ হাজার ৯৭২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগ রয়েছে। এই অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) এবং ২৬(২) ধারা তৎসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পড়ুন: গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে দুদকের তদন্ত শুরু
হাজী সেলিমের জামিন আবেদন নথিভুক্ত, আপিলের শুনানি ২৩ অক্টোবর
খুলনায় আ.লীগ নেতা হত্যায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় বহুল আলোচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক খান ইবনে জামান হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন - শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ও মো. সোহাগ শেখ। অপরদিকে এ মামলার অন্য আসামি আশুতোষ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট কে এম ইকবাল হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে নগরীর খালিশপুরে নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে আওয়ামী লীগ নেতা খান ইবনে জামানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার দুই পা দড়ি দিয়ে এবং এক হাত লুঙ্গি দিয়ে বাধা ছিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. শাহাব উদ্দিন খান বাদি হয়ে ১৪ অক্টোবর অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: খুলনার খাদ্য পরিদর্শক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর র্যাব সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ওরফে অপু ও মো. সোহাগ নামে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে। তারা জামানকে হত্যা করে বলে ওই দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ইন্সপেক্টর নিখিল চন্দ্র মন্ডল ওই তিনজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে বলা হয়, খান ইবনে জামান চিরকুমার এবং সমকামী ছিলেন। তিনি জোরপূর্বক সমকামিতা করতে গেলে আসামিরা তাকে হত্যা করে।
২০০৯ সালের ৩ জুন মামলার বাদি মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। ওই বছরের ২৭ আগস্ট মুখ্য মহানগর হাকিম মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই আবদুল গফুর চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা ছিলেন শেখ তৈয়েবুর রহমান ওরফে ইরান, অপূর্ব কুমার বিশ্বাস ওরফে অপু, মো. সোহাগ ও আশুতোষ ব্যাপারী।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধের দায়ে খুলনার ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার খাদ্য পরিদর্শক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে খুলনার তেরকোহাদা উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার দুদকের সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
নড়াইলের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ তে মামলাটি দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় সস্ত্রীক সাবেক সাংসদ আউয়ালের জামিনের মেয়াদ বাড়ল
মামলার এজাহারে বলা হয়, খাদ্য পরিদর্শক মো. আশরাফুজ্জামান ও তার স্ত্রী রোকেয়া সুলতানা ১ কোটি ১৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন।
আশরাফুজ্জামানের আয়ের উৎসের বাইরেও এক কোটি ৯ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে।
আশরাফুজ্জামান ২০১০ সালের ২৭ জুলাই খাদ্য পরিদর্শক পদে যোগদান করেন। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়।
তবে, ২০১৮-২০ সাল পর্যন্ত যশোর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার প্রমাণ পায় দুদক।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সাবেক কাউন্সিলরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৪ মামলা
এই দম্পতি ৫৩ লাখ ১৩ হাজার ২১১ টাকার সম্পদ হিসাব দেখিয়ে দুদকে একটি বিবৃতি জমা দেন। কিন্তু এক কোটি ১৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায় দুদক।
আড়াই বছর পর খুলনায় নগর পরিবহন চালু
দীর্ঘ অপেক্ষার পর চাকা ঘুরল খুলনায় নগর পরিবহনের (টাউন সার্ভিস)। প্রায় আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর সোমবার সকাল ৮টায় ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত খুলনায় নগর পরিবহন চালু করা হয়েছে।
খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির উদ্যোগে নগর পরিবহন চালু হওয়ায় রূপসা-ফুলতলা রুটের যাত্রীদের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। বাস চালু হওয়ায় আয়ের পথ খুলে গেল চালকসহ পরিবহন শ্রমিকদের।
জানা গেছে, বর্তমানে খুলনার ফুলতলা থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত মাহেন্দ্র ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া জনপ্রতি ৬০-৭০ টাকা, যা নগর পরিবহনে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। এসব ভোগান্তি ও ভাড়া বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যাত্রীরা। দীর্ঘ আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর নগর পরিবহন চালু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা।
এ রুটের যাতায়াতকারী এক যাত্রী বলেন, স্বল্প সময় আর স্বল্প খরচেই আমরা যাতায়াত করতে পারব।
তিনি বলেন, রূপসা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রুটে নগর পরিবহন চলাচলের জন্য ফুলতলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন নগর-পরিবহন বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষেরা। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র ও সিএনজি অটোরিকশায় যথেচ্ছা ভাড়া আদায়, বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা, চালকদের অসদাচরণ, যানজটসহ নানা রকমের দুর্ভোগ সহ্য করে আসছিল নগরবাসী।
আরও পড়ুন: আরও ৩ রুটে 'ঢাকা নগর পরিবহন' চালু হবে
অবশেষে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু
খুলনায় ‘অপরিকল্পিত’ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মরে যাচ্ছে শত শত গাছ
অপরিকল্পিতভাবে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শিবসার চরে বনায়ন প্রকল্পের শতাধিক গাছ মরে যাচ্ছে।
পাইকগাছা উপজেলার শিবসার নিম্নাঞ্চলে লবণ পানির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু এই বেড়িবাঁধের উদ্বোধন করেন।
বেড়িবাঁধের কারণে মাত্র তিন মাসের মধ্যে বাঁধের ভেতরে পানি জমে এলাকার গাছপালা মারা যাচ্ছে। ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় পৌরসভাকে বাঁধ অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন পাইকগাছার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
আরও পড়ুন: গণপরিবহন বন্ধ, খুলনাবাসী নগর পরিবহন ফেরার অপেক্ষায়
শিবসা উপজেলায় নদীর তীরে অবস্থিত পাইকগাছা পৌরসভা ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এপ্রিল মাসে নির্মিত একটি বাঁধ ছাড়া গত ২৪ বছরে এই এলাকায় কোনো বাঁধ নির্মিত হয়নি। পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সময় নদীর পানি ফুলে উঠে এবং পুরো এলাকার ঘরবাড়ি, দোকান-পাট এবং রাস্তা-ঘাট প্লাবিত হয়।
এছাড়া গত কয়েক বছর থেকে খুলনা সদর থেকে হাড়িয়া নদী পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা ভরাট করছে দখলকারীরা। এই সময় দখল ঠেকাতে ভরা অংশের বিভিন্ন এলাকায় বনায়ন গড়ে তুলে উপজেলা প্রশাসন। এতে একদিকে যেমন বন্ধ হয় দখল প্রক্রিয়া অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
শিবসা নদীতে শহর রক্ষা বাঁধের ফলে জোয়ার-ভাটার পানি প্রবেশ করতে না পারলেও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বাঁধ এলাকা।
আরও পড়ুন: গণপরিবহন বন্ধ, খুলনাবাসী নগর পরিবহন ফেরার অপেক্ষায়
পাইকগাছা উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় জানান, শিবসা নদীর চর ভরাটি জায়গায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সুন্দরবনাঞ্চলীয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপনের মাধ্যমে বনায়ন করা হয়েছে। যার মধ্যে বাইন, কেওড়া, ওঁড়া, সুন্দরী ও গোলপাতাগাছ রয়েছে।
তিনি বলেন, এ গাছগুলো জোয়ার-ভাটার সঙ্গে সম্পর্কিত। যদি বাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়, তা হলে জলাবদ্ধতার কারণে সেখানকার সব গাছ মরে যাবে। ইতোমধ্যে গাছ মরা শুরু হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব এ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে ক্রমশ সব গাছের মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর বলেন, নদীর মাঝখানে না করে লোকালয়ের পাশে বাঁধ তৈরি করলে গাছগুলো বেঁচে থাকত।
পাইকগাছা উপজেলা নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি প্রশান্ত কুমার মন্ডল বলেন, নদী দখলের জন্য বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাঁধের কারণে শিবসা নদী তার গভীরতা হারাচ্ছে। এছাড়া নদীটি সংকুচিত হয়ে উপচে পড়া পানিতে পৌর এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
পাইকগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু নদীর মাঝখানে বাঁধ নির্মাণে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: খুলনার পর্যটন শিল্পের দুয়ার উন্মোচন
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, ‘নদীর জায়গা দখল করে শহর রক্ষা বাঁধ দেয়া যাবে না। মানুষের প্রয়োজনে শহর রক্ষা বাঁধটি হতে হবে শহরের পাশ দিয়ে। বনায়ন ও নদীর ক্ষতি করে এমনভাবে বাঁধ দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বাঁধ অপসারণে পৌরসভাকে সাত দিনের সময় দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাঁধ অপসারণ না করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তা অপসারণ করা হবে।
খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত
খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে নগরীর হরিণটানা থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল জলিল সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা।
হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক জানান, সকাল পৌনে ১০ টার দিকে আব্দুল জলিল সাইকেল চালিয়ে কৈয়া বাজার থেকে জিরো পয়েন্টের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তার সাইকেলে ধাক্কা দিলে জলিল ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
ওসি জানান, হরিণটানা থানার পুলিশ ঘটনস্থলে এসে লাশের সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
খুলনায় স্ত্রীর করা মামলায় স্বামীর ৭ বছর কারাদণ্ড
খুলনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে স্ত্রীর করা মামলায় স্বামীর সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে খুলনার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক কণিকা বিশ্বাস এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আমিনুর রহমান (৬০) নগরীর ৪ পুরাতন টিবি হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বিশেষ পিপি এম এম সাজ্জাদ আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে দুর্নীতির মামলায় বিদ্যুৎ বিভাগের ২ প্রকৌশলীর কারাদণ্ড
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৫ সালের মে মাসে পারিবারিকভাবে নিরালা আবাসিক এলাকার এক নারীর সঙ্গে আমিনুর রহমানের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। কিন্তু আমিনুর রহমান স্ত্রী-সন্তানদের না জানিয়ে ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে আবারও বিয়ে করেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। তারপর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন স্ত্রী।
২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আমিনুর রহমান ফেসবুকে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ পোস্ট দেন। এ ঘটনায় আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেন স্ত্রী।
২০১৬ সালের ৩১ জুলাই আমিনুরকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সৈয়দ মোশাররফ হোসেন।