ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে নতুন করোনা শনাক্ত ১৪৮ জন
ঠাকুরগাঁওয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন এবং একজন চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪,২৬৫ জনে এবং মারা গেছেন ১০৫ জন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়াতে একদিনে করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৫০ জনের। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। নতুন শনাক্ত রোগীর মধ্যে সদরেই রয়েছে ৮৫ জন। এছাড়া বালিয়াডাঙ্গীর ১৩ জন, পীরগঞ্জে ২৬, রাণীশংকৈলে ১৪ ও হরিপুরে ১০ জন রয়েছেন।
এ পর্যন্ত মোট ২৬৬৫ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
এদিকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনায় প্রাণ হারালেন আরও ১৭ জন
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৩ টি মামলায় বিভিন্ন জনকে মোট ১২ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় ২ শিশুর মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় সোমবার বিকালে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতরা হলো, উপজেলার বাঁচোর ইউনিয়নের আমজুয়ান গ্রামের মাজাহারুল ইসলামের মেয়ে জিসা আক্তার (১০), সে আমজুয়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। একই উপজেলার উত্তর সন্ধ্যারই গ্রামের সুমন আলীর দুই বছরের ছেলে সাব্বির হোসেন।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলতে গিয়ে সিরাজগঞ্জে শিশুর মৃত্যু
ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জানান, সোমবার বিকালে আমজুয়ান গ্রামে মাজাহারুল ইসলামের মেয়ে জিসা আক্তার বাড়ির পাশে একটি ছোট কাঁঠাল গাছে উঠে কিন্তু হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে, রাণীশংকৈলে সোমবার বিকালে ডোবার পানিতে পড়ে সাব্বির হোসেন নামে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাব্বীর সবার অগোচরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রায় ৫০ গজ দূরের ডোবার কাছে যায় এবং এক পর্যায়ে পানিতে পড়ে যায়। এ সময় শিশুটির চাচী দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে লোকজন এসে শিশুটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিক তাকে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: পাবনায় খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফিরোজ আলম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটি মারা গেছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় আরও ৭ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৩২
ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রতিদিন মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েই চলেছে। শনিবার সকাল ৮ টা থেকে রবিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত সাত জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া নতুন করে ১৩২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮৬ জনের। শনাক্তের হার ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়াতে করোনায় সর্বোচ্চ ২১ মৃত্যুর রেকর্ড
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, নতুন ১৩২ জন আক্রান্তদের মধ্যে সদরে ৪৭ জন, বালিয়াডাঙ্গীর ১৫, পীরগঞ্জের ২১, রাণীশংকৈলের ৪০ ও হরিপুরের ০৯ জন রয়েছেন। তাছাড়া সদরে চার জন, রাণীশংকৈলে, পীরগঞ্জ ও হরিপুরের একজন করে মোট সাতজন রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তিনি জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বমোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা এখন ৩,৭৩৫ জন, এর মধ্যে ২,২৬১ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় করোনায় একদিনে আরও ১১ মৃত্যু
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, শনিবার ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩২টি মামলায় বিভিন্ন জনকে ২৮ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
লকডাউনে বিয়ে : বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
মহা ধুমধামের সাথে বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন। বিশাল প্যান্ডেল বানানো হয়েছে, সেই সাথে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত করাও শেষ। সকাল থেকে চলছে রান্না বান্না। কিন্তু বাদ সাধলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। করোনাকালীন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় বিয়ের অনুষ্ঠান ভেঙে দিলেন তিনি। পাশাপাশি বর ও কনে পক্ষকে জরিমানাও করলেন।
শুক্রবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইউএনও মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বর ও কনের বাবাকে ৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বিয়ে করে জরিমানা গুনলেন বর
জানা গেছে, উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বটিনা বানিয়াপাড়া গ্রামের ভাগীরথ বর্মনের ছেলের সাথে শ্রী ইলেকশনের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার রাতে বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা মেয়ে পক্ষের। বরের বাড়িতে মহা ধুমধামের সাথে বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়।
এ ব্যাপারে ইউএনও জানান, সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বর ও কনের বাড়িতে ছুটে যান তিনি এবং বিধিনিষেধ অমান্য করে বিয়ের আয়োজন করায় প্যান্ডেল ভেঙে দেন। সেই সাথে করোনাকালীন বিধিনিষেধ অমান্য করে বিয়ের আয়োজন করায় ছেলের বাবা ভগীরথকে ৫ হাজার টাকা ও কনের বাবা শ্রী ইলেকশনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ম্যাজিক জালে অবাধে মা মাছ নিধন!
ঠাকুরগাঁও জেলায় চায়না ম্যাজিক কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে নির্বিচারে ছোট-বড় ডিমওয়ালা মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। ফলে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মৎস্য সম্পদ উজাড় হয়ে যাচ্ছে।
এ জালের ব্যবহার বন্ধ না হলে স্থানীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চায়নার ম্যাজিক জাল এক ধরনের বিশেষ ফাঁদ। এটি ছোট ছোট কক্ষ বিশিষ্ট খোপের মতো। এ জাল খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ে বাঁশের খুঁটির সাথে জালের দু’মাথা বেঁধে রাখা হয়। ছোট-বড় সব ধরনের ডিমওয়ালা মাছ এ জালে আটকা পড়ে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গন নদীতে নির্বিচারে চলছে ‘মা’ মাছ নিধন
বর্ষার পানি পুরোপুরি আসার আগেই জেলার বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল ও মাঠ-ঘাট চায়না জালে (রিং জাল) ছেয়ে গেছে। আর এসব জাল দিয়ে প্রাকৃতিক উৎসে ডিম দিতে আসা মা ও পোনা মাছ নিধন করছেন স্থানীয়রা। জেলার সর্বত্র বিশেষ করে বালিয়াডাঙ্গীতে এই জালের ব্যবহার হচ্ছে।
জালের মালিকরা বলছেন, এমন কোনো মাছ নেই যা এই জালে ধরা পড়ে না।
মৎস্য অধিদপ্তরের বলছে, এই জাল সর্বনাশা। এটা বন্ধ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সরেজমিনে দেখো যায়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল, ধনতলা, পাড়িয়া, বড়বাড়ী, বড়পলাশবাড়ী, ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন উত্তর বঠিনা, চুয়ামনি, আসাননগর, টাঙ্গন ব্যারেজ, বড়দেশ্বরী, সেনুয়া গ্রাম ঘুরে অসংখ্য চায়না জাল দেখতে পাওয়া যায়।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় যেখানেই একটু পানি জমেছে সেখানেই এই জাল পাতা হচ্ছে। আর অবাধে ডিমওয়ালা দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস মাছের প্রজননকাল। চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে নতুন পানিতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারছে না। যার ফলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। এভাবে অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা মাছ ধরলে দেশি মাছের অভাব দেখা দিবে।
উত্তর বঠিনা গ্রামের আব্বাস বলেন, এই জালের দাম একটু বেশি হলেও পোষায়। এত মাছ অন্য কোনো জালে ধরা পড়ে না।
স্থানীয়রা বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষ কর্মহীন হওয়ায় এসব মাছ ধরা আরো বেড়েছে। আগে যেসব লোক অন্য কাজকর্ম করে ব্যস্ত সময় পার করতেন, এখন তারা এসব মাছ ধরছেন।
আসাননগর গ্রামের গনি মিয়া দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে মাছের ব্যবসা করেন। গনি মিয়াকে চায়না জাল সম্পর্কে জিজ্ঞেসা করলে তিনি বলেন, যারা প্রকৃতপক্ষে মাছের কারবার করেন কিংবা মাছ ধরা যাদের বংশগত পেশা, তারা কখনো এই জাল দিয়ে মাছ ধরবেন না। শুধু মৌসুমি শিকারিরাই এমন কাজ করতে পারেন।
চায়না জালের বড় ব্যবসায়ী ফারুক জানান, বর্তমানে চায়না জালের খুব চাহিদা। প্রতি ফুট জাল ষাট টাকা দরে বিক্রি হয়। একজন ক্রেতা কমপক্ষে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ফুট জাল ক্রয় করেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৭০ লাখ টাকার মাছ নিধন
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘চায়না কারেন্ট জালসহ যে জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরা হয় সে সব জাল আমাদের দেশে নিষিদ্ধ।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই জাল বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় আরও ৪ মৃত্যু, শনাক্ত ৯৪
ঠাকুরগাঁওয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে ৯৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন মৃত্যু এবং শনাক্তের নতুন তথ্য জানা যায়। এসময়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৩০ জনের। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অক্সিমিটার কিনতে রাস্তায় করোনা রোগী
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, নতুন ৯৪ জন শনাক্তের মধ্যে সদরের ৭০ জন, বালিয়াডাঙ্গীর সাত, পীরগঞ্জে তিন, রাণীশংকৈলে ছয় ও হরিপুরে আট জন রয়েছেন। এ ছাড়া মৃতদের মধ্যে সদর ও রাণীশংকৈলে একজন করে ও হরিপুরে দুই জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তিনি জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বমোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৩,৬০৩ জন। এর মধ্যে ২,১৩৩ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৮৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনায় দাফন: কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীরা
এদিকে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, শুক্রবার ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৪১ মামলায় বিভিন্ন জনকে ৫২ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে মানুষের ধাওয়ায় বিরল নীলগাইয়ের মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় মানুষের ধাওয়া খেয়ে বিরল প্রজাতির প্রাণী একটি নীলগাই মারা গেছে।শুক্রাবার (২ জুলাই) উপজেলার ধর্মগড় মুক্তারবস্তিতে ওই ঘটনা ঘটে। এদিন দুপুরে ওই স্থানে একটি নীলগাই দেখে স্থানীয়রা ধরার চেষ্টায় ধাওয়া করে। নীলগাইটি তখন ছুটাছুটি করতে থাকে। একপর্যায়ে নীলগাইটি একটি ঘরের খোলা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে মারা যায় ।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির চিতা বিড়াল
স্থানীয়রা জানান, নীলগাইটিকে কয়েক দিন ধরেই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। শুক্রবার দুপুরবেলা মুক্তারবস্তির আশপাশে গাইটিকে দেখে ধরার চেষ্টা করে লোজকন। নীলগাইটি ছুটতে ছুটতে গ্রামের হামিদুর নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে গিয়েই অচেতন হয়ে পড়ে। স্থানীয় পশু চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও সেটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রীতম সাহা ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি জানান, নীলগাইটি সম্ভবত ধাওয়া খেয়ে আতঙ্কে স্ট্রোক করেছে। আমরা উপজেলা প্রাণীসম্পদ ও বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজন হলে ময়নাতদন্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মার পাড় থেকে বিরল প্রজাতির নীলগাই উদ্ধার
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে একটি নীলগাই উদ্ধার করে বিজিবি। ফসলের জমিতে ছুটাছুটি করতে দেখে গ্রামবাসী প্রাণীটিকে ধরে ফেলে এবং মাংস খাওয়ার জন্য জবাই করার প্রস্তুতি নেয়। বিজিবি সদস্যরা আহত অবস্থায় ঐ প্রাণীটিকে উদ্ধার করে কান্তিভিটা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন গিয়ে সেটির চিকিৎসা দেয়।এ ছাড়া ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার যদুয়ার গ্রামের পাশ থেকে একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তে বয়ে যাওয়া কুলিক নদীর ধারে নীলগাইটি দেখতে পান স্থানীয় জেলেরা। পরে গ্রামবাসী সেটিকে আটক করে। স্থানীয় প্রশাসন বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নীলগাইটিকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যায়।
চার ঘণ্টার ব্যবধানে পিতা-পুত্রের মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী (৫০) এবং তার পিতা ইয়াকুব আলী (৭০) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় ইয়াকুব আলী এবং রাত সাড়ে ১২ টায় তার পুত্র আজগর আলী মারা যান।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
হরিপুর উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজগর আলী শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে হরিপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৩০ জুন করোনা পজিটিভ আসায় সেদিন রাতেই দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আজগর আলীর পিতা ইয়াকুব আলীও শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে সেখানে ভর্তি হন। সেখানে তারও করোনা পজিটিভ আসে।
কিছুটা সুস্থ বোধ করলে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি ফেরেন পিতা ইয়াকুব আলী (৭০)। কিন্তু ওই সময় ছেলে আজগর আলীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে নেয়া হয় আইসিইউতে। বাড়ি ফিরেই মারা যান ইয়াকুব আলী। এর চার ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে দিনাজপুরে চিকিৎসাধীন ছেলে আজগর আলীও মারা যান।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭৬ জনকে অর্থদণ্ড
পিতা-পুত্রের মৃত্যুতে উপজেলা বিএনপি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, হরিপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বরাত দিয়ে পিতা-পুত্রের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় মৃত্যু ৫, শনাক্তের হার ৪৫ শতাংশ
ঠাকুরগাঁও জেলায় শনিবার একদিনে পাঁচ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১২০ জন। শনাক্তের হার ৪৫ শতাংশেরও বেশি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, শনিবার সন্ধ্যায় প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় নতুন ১২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৬ জন, রানীশংকৈলে ১৭, বালিয়াডাঙ্গীয় ২৪, পীরগঞ্জে ০৯ ও হরিপুরে ১৪ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় ৯ মৃত্যু
মোট ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
এছাড়া এদিন করোনা সংক্রমিত ঠাকুরগাঁও সদরে ৮০ বছর বয়সের একজন পুরুষ, রাণীশংকৈলে ৬৬ বছর ও ৭০ বছর বয়সের দুজন পুরুষ, পীরগঞ্জে ৪৮ বছর বয়সের একজন পুরুষ এবং বালিয়াডাঙ্গীতে ৩৫ বছর বয়সের একজন পুরুষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সিভিল সার্জন জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ২,৯৬৯ জন, এর মধ্যে ১,৭২২ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহ সদরে করোনা রোগীর ভিড়, অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা
এদিকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রায় প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, শনিবার ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৪ টি মামলায় বিভিন্ন জনকে ২৩ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৩২ শতাংশ
ঠাকুরগাঁওয়ে কঠোর বিধিনিষেধ তেমনভাবে কেউ মানছেন না। কমছেও না করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০১ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় নতুন ১০১ জন করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৭ জন, রানীশংকৈলে ১১ জন, বালিয়াডাঙ্গীর ১২ জন, পীরগঞ্জের ১৪ জন ও হরিপুরের ৭ জন রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে করোনায় আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১২৫
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার করোনা সংক্রমিত পীরগঞ্জে ৭৫ বছর বয়সের একজন পুরুষ ও রাণীশংকৈলে ৪৫ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আরও পড়ুন:রামেকে করোনায় একদিনের রেকর্ড মৃত্যু ১৮
সিভিল সার্জন বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বমোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৮২১ জন, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৭১২ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৫ জন।
আরও পড়ুনঃ খুলনায় করোনাভাইরাসে পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু
জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধিনিষেধ না মানায় বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৩ টি মামলায় বিভিন্ন জনকে ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।