কক্সবাজার
ঘূর্ণিঝড় মোখা: এখনো শান্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোখায় রূপ নিয়েছে। এটি আরও শক্তিশালী হতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এর প্রভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সহ কক্সবাজারের এলাকাগুলোকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কোনো প্রভাব পড়েনি।
সমুদ্র শান্ত আছে এখনও। পাড়ে আছড়ে পড়ছেনা বড় বড় ঢেউ, কিংবা এখনও পানির উচ্চতাও বাড়েনি। সকালে থেকেই কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সমুদ্রে নেমে গোসল করতে দেখা গেছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তার কাজ করা সি সেইফ লাইফ কর্মী মোহাম্মদ ইউনুস জানিয়েছেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বর্তমানে গোসলের জন্য নিরাপদ। জেলা প্রশাসন বা সি সেইফ থেকে কোনো নির্দেশনা আসলে সে অনুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
এদিকে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের ৫৭৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখ হয়েছে যেখানে ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জন মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে।
এছাড়া সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য জেলার রিজার্ভে ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ৪৯০ মেট্রিক টন চাল, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন মজুদ রয়েছে।
সেইসঙ্গে নতুন করে কক্সবাজার জেলার জন্যে ১০ লাখ নগদ টাকা, ৫০ মেট্রিক টন চাল, ৭ মেট্রিক টন শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার আগেই সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক নির্ধারণ, খুব ঝুঁকিপূর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ-কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনা খাবার মজুদ রাখা, ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা, গবাদী পশু সংরক্ষণ ইত্যাদি দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং ইস্যু।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সকল কর্মকর্তা/ কর্মচারী যাতে দুর্যোগ মুহুর্তে সরকারি ছুটির দিনে কর্মস্থল ত্যাগ না করেন, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকায় আতঙ্ক, ৪৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
ঘূর্ণিঝড় মোখা: সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত
কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দস্যুদের গুলিতে ৪ বনকর্মী আহত
কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দস্যুদের গুলিতে চার বনকর্মী আহত হয়েছেন।
শনিবার (৬ মে) রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ডুমখালী রির্জাভ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- গোলাম জিলানী মিয়াজী, সূর্য কুমার সিংহ, শাহিদুল মোস্তফা, রহিম উদ্দিন। আহতরা সবাই মালুমঘাট বন বিভাগের গার্ড সদস্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে র্যাবের বিশেষ অভিযান
তিনি জানান, একদল সশস্ত্র দস্যু মালুমঘাট বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কাঠ ও ঘর নির্মান করছিল। সংবাদ পেয়ে মালুমঘাট বনবিটের একদল বনকর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় সশস্ত্র দস্যুরা বনকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কর্মীদের এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। বনকর্মীরাও পাল্টা গুলি চালায়। বনদস্যুদের গুলিতে চারজন বনকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে বনবিভাগ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: হাতিয়ায় দুই দস্যু গ্রুপের গোলাগুলি, অস্ত্রসহ আটক ৫
উখিয়ায় ১২০ কোটি টাকা মূল্যের ‘আইস’ জব্দ, আটক ৪: র্যাব
কক্সবাজারের উখিয়া পালংখালী সীমান্ত থেকে ২৪ কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) এর একটি চালান জব্দের দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়।
র্যাবের দাবি, এটি দেশে জব্দ হওয়া মাদকটির সর্বোচ্চ চালান।
শনিবার (৬ মে) রাত ৯টার দিকে উখিয়া পালংখালী সীমান্তে অভিযান চালিয়ে আইসের চালানটি জব্দ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ক্রিস্টাল মেথসহ বাসচালক-হেলপার আটক
তিনি বলেন, র্যাবের অভিযানে কক্সবাজারের পালংখালী সীমান্ত থেকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৪ কেজি ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্ধার হাওয়া আইসের মূল গডফাদারকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রবিবার (৭ মে) কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কার্যলয়ে বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্রিস্টাল মেথের চালান জব্দ: বিজিবি
টেকনাফে পাহাড় থেকে অপহরণকারী ও ডাকাতদলের প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৬
কক্সবাজারের টেকনাফের দুর্গম পাহাড় থেকে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষকে অপহরণ ও ডাকাতির অন্যতম হোতা ছালেহ বাহিনীর প্রধানসহ ছয়জনকে আটক করেছে র্যাব -১৫।
শনিবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার র্যাব ১৫ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি টেকনাফে অপহরণের প্রবণতা বেড়েছে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে এটি জানতে পেরে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করি। আমাদের কাছে খবর আসে সালেহ বাহিনী অপহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গৃহহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচলনা করি। এসময় সালেহ বাহিনীর প্রধানসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, দেশীয় তৈরি ৩টি একনলা বড় বন্দুক, ২টি একনলা মাঝারি বন্দুক, ৬টি একনলা ছোট বন্দুকসহ মোট ১১টি দেশীয় তৈরি বন্দুক, ১৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ৪ রাউন্ড খালি কার্তুজ, ২টি ছুরি ও ৬টি দেশীয় দা উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
আরও পড়ুন: দুইদিনের ব্যবধানে টেকনাফে ৭ জন অপহরণ
গ্রেপ্তারেরা হলেন-ছালেহ বাহিনীর প্রধান হাফিজুর রহমান ওরফে ছলেহ ডাকাত, নুরুল আলম নূরু, আক্তার কামাল সোহেল, নুরুল আলম লালু, হারুনুর রশিদ ও এরিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন যে টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে হাফিজুর রহমান ওরফে ছলেহ ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে এই চক্রটি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসাসহ অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাব এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: টেকনাফে ৫ রোহিঙ্গা শিশু ‘অপহরণ’, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যুবককে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ
দুইদিনের ব্যবধানে টেকনাফে ৭ জন অপহরণ
কক্সবাজারের টেকনাফে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা আরও দুইজনকে অপহরণ করেছে। এর দুইদিন আগে আরও পাঁচজনকে অপহরণ করে অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীরা। এই নিয়ে টেকনাফে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রবিবার (৩০এপ্রিল) সকালে টেকনাফের বাহাছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহৃতরা হলেন- উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা মো. রহিম (৩২) ও মো. রেদোয়ান (২০)। আহতরা হলেন, আবদুল আমিন ও আব্দুল্লাহ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের নয়াপাড়ার রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের সি ব্লকের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বেলাল, মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে নূর কামাল, উবায়দুল্লাহর ছেলে নূর আরাফাত, বি ব্লকের মো. রফিকের ছেলে ওসমান এবং ডি ব্লকের মাহাত আমিনের ছেলে নুর কামাল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম।
তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল সকালে দুইজন কৃষক অপহরণের কথা শুনেছি। পরে পুলিশের একটি টিম এলাকায় যায়। এরপর পাহাড়ে অভিযান শুরু করে।
এর আগে পাঁচ রোহিঙ্গা অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাদের উদ্ধার তৎপরতার কারণে পাঁচজন উদ্ধার হয়েছে। তবে এসব ঘটনার পিছনে কারা আছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে ৫ রোহিঙ্গা শিশু ‘অপহরণ’, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, 'সকালে পাঁচজন কৃষক পাহাড়ের কাছাকাছি পানের বরজে কাজ করতে গেলে ডাকাতের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় তিনজন পালিয়ে আসলেও দুজনকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পালিয়ে আসার সময় ২ জনকে কুপিয়ে জখম করে।'
তিনি জানান, 'এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি অস্ত্রধারী ডাকাত দল অপহরণ-মুক্তিপণ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে এখানকার বাসিন্দারা ভয়ভীতির মধ্য রয়েছে।'
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, গত ৬ মাসে ক্যাম্পসহ টেকনাফের পাহাড়ে ৭২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪০ জন রোহিঙ্গা নাগরিক ও ৩২ জন স্থানীয় বাসিন্দা।
সবশেষ গত ২৬ এপ্রিল নয়াপাড়া ক্যাম্পের তিন শিশু অপহরণের শিকার হন। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন। এছাড়া গত ৩ মার্চ দুইশিশুকে অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় অহরণকারীরা।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় খেত পাহারারত ৪ কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেন।
এছাড়া গেল ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ের ভেতর খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন আট ব্যক্তি। পরে তারাও ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: টেকনাফে ৪ কৃষক অপহরণের অভিযোগ
টেকনাফে ফের কলেজছাত্রসহ ৭ জন অপহরণ
কক্সবাজারে ৯৯৯-এ কল দিয়ে উদ্ধার হলো ১৯ জেলে
কক্সবাজারে গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ১৯জন জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। শনিবার সকালে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে ২২.৫ নটিকাল মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে থেকে একটি ফিশিং বোট থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
গত ২৩ এপ্রিল এফডি ‘সজীব-১’ নামক একটি ফিশিং ট্রলার ভোলা জেলার মনপুরা এলাকা থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে যায়। একপর্যায়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রনহীনভাবে গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকে। বিকল হয়ে যাওয়া মাছ ধরার ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসলে জেলেরা উদ্ধার সহায়তা চেয়ে ৯৯৯ নাম্বারে কল দেয়।
বিকালে শহরের নুনিয়াছড়া এলাকায় কোস্টগার্ড পূর্ব জোন বিসিজি স্টেশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ।
তিনি বলেন, ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রনহীনভাবে গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকে। বিকল হয়ে যাওয়া মাছ ধরার ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসে জেলেরা উদ্ধার সহায়তা চেয়ে অবগত করে। এসময় গভীর সমুদ্রে নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেনি জেলেরা।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে কোস্টগার্ড তৎক্ষণাৎ সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ১৯ জন জেলেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।
উখিয়ায় অস্ত্রসহ ৪ ‘আরসা’ সদস্য আটক
কক্সবাজারের উখিয়ায় শুক্রবার সকালে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) চার সদস্যকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
আটককৃতরা হলেন-মো. জোবায়ের (২০), নুর মোহাম্মদ (২৫), জামিলা বেগম (৪৮) ও বিবি (১৬)। তারা সকলেই উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দা।
১৪-এপিবিএন কমান্ডার সৈয়দ হারুনুর রশিদ সাক্ষরিত এপিবিএন মিডিয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী ছামিউদ্দিনসহ ১০ থেকে ১৫ জন আরসা সদস্য সেখানে অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাটালিয়নটি ক্যাম্পের ৭ নম্বর ব্লকের জি ব্লকে অভিযান চালায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা এপিবিএন সদস্যদের ওপর গুলি চালায় বলে বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, এসময় তারা (এবিপিএন সদস্যরা) নিজেদের জীবন রক্ষার স্বার্থে পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়; এ ঘটনায় একজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে।
আরও জানানো হয়, বন্দুকযুদ্ধের পরে এপিবিএন সদস্যরা ক্যাম্প নং সি ব্লকে আরেকটি অভিযান চালায়, কারণ তারা জানতে পারে যে ছামিউদ্দিনসহ আরসা কর্মীরা সেখানে অবস্থান করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ছামিউদ্দীনসহ সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গুলিবিদ্ধ একজনসহ চারজনকে অস্ত্রসহ আটক করে এবিপিএন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই বাড়ি থেকে দেশীয় তৈরি চারটি ওয়ান শুটারগান, চাইনিজ রাইফেলের ৩০ রাউন্ড গুলি, ২৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, শটগানের পাঁচটি কার্তুজ, তিনটি ফাঁকা ম্যাগাজিন, চারটি ওয়াকিটকি, পাঁচটি মোবাইল ফোন সেট ও একটি ছুরি জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
কক্সবাজারে ট্রলারে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে ভাসমান ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ১০ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারেরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ১০ জনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
নিহতেরা হলেন- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গণি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।
গ্রেপ্তারেরা হলেন-বাইট্টা কামাল ও করিম সিকদার।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকেয়া আক্তার বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাইট্টা কামালকে প্রধান ও করিম সিকদারকে চার নম্বর আসামি করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মাহফুজুল ইসলাম আরও জানান, মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও আশপাশের এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০ জনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাইবে পুলিশ। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা পুলিশের।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধার
নিহত ১০ জন জলদস্যু ছিলেন কি না-এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে নিহত সামশুল আলমের বিরুদ্ধে মাদক ও নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা রয়েছে। সব কিছু মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
স্বজনদের দাবি, ভাসমান ট্রলারটির মালিক মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকার মোহাম্মদ রফিকের ছেলে সামশুল আলম। গত ৭ এপ্রিল মাঝিমাল্লা নিয়ে তিনি সাগরে মাছ ধরতে রওনা দেন। কিন্তু এরপর থেকেই ট্রলারসহ নিখোঁজ ছিলেন তারা।
ট্রলারটি গত ২২ এপ্রিল বিকালে কক্সবাজারের নাজিরারটেক পয়েন্টের কাছাকাছি টেনে নিয়ে আসে আরেকটি মাছ ধরার ট্রলার। এরপর ২৩ এপ্রিল সেখান থেকে ১০টি লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। ট্রলারে লাশগুলো বরফ ও মাছ রাখার স্টোরে হাত-পা বেঁধে ঢুকিয়ে দরজা পেরেক ঠুকে আটকে দেওয়া হয়।
পুলিশের ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
জানা যায়, নিহত ১০ জনের মধ্যে ছয়জনেরই বাড়ি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর মিঠাছড়ি এলাকায়। স্থানীয় মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবিরের মাধ্যমে ওই এলাকার পাঁচজন কিশোর সাগরে যায়। কিন্তু নুরুল কবির ছাড়া বাকি কিশোররা পেশায় জেলে ছিল না। হঠাৎ তারা কেন সাগরে মাছ ধরতে গেছে সেটিও কেউ বুঝে উঠতে পারছে না।
পুলিশের ভাষ্য, উদ্ধার লাশগুলোর শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ গলে গেছে। এর ফলে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তারপরও স্বজনদের মাধ্যমে শনাক্ত করে ছয়জনের লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চার লাশ এখনো মর্গেই রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চট্টগ্রামে স্বামী আটক
কক্সবাজারে সমুদ্রে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু
টেকনাফে ৫ রোহিঙ্গা শিশু ‘অপহরণ’, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
কক্সবাজারের টেকনাফের জাদিমুড়া এলাকা থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা পাঁচ শিশুর পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় নয়াপাড়ার রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. একরাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে জাদিমুড়ার ন্যাচার পার্ক থেকে মুখোশধারী ৭ থেকে ৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী পাঁচ শিশুকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে গেছে। এরপর অপহৃতদের পরিবারের কাছে ফোনে মুক্তিপণ দাবি করেছে। অপহৃত পাঁচ শিশুর মধ্যে তার বাড়ির কাছে একই ব্লকের তিনজন রয়েছে।
অপহৃতরা হলো- টেকনাফের নয়াপাড়ার রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের সি ব্লকের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বেলাল (১৩), মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে নূর কামাল (১২), উবায়দুল্লাহর ছেলে নূর আরাফাত (১২), বি ব্লকের মো. রফিকের ছেলে ওসমান (১৪) এবং ডি ব্লকের মাহাত আমিনের ছেলে নূর কামাল (১৫)।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যুবককে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা বলেন, ওই শিশুরা ঈদ উপলক্ষে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে ছিল। এ সময় ন্যাচার পার্ক এলাকা থেকে তারা অপহৃত হয়। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, তবে মুক্তিপণের বিষয়ে তাদের এখনও পরিবারগুলো কিছুই জানায়নি। তবে, তাদের উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হালিম জানান, অপহরণের কথা তিনি শুনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কারও কাছ থেকে কোন ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এরপরও পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিড়ালের ছানা দেয়ার কথা বলে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ
টেকনাফে ফের কলেজছাত্রসহ ৭ জন অপহরণ
টেকনাফে মাদক জব্দ, আটক ৪
কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়ার দ্বীপে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা মিয়ানমারের চার নাগরিককে আটক করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি, ১ দশমিক ০৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ, ৩৫ বোতল বিদেশি মদ ও ৪৩০ ক্যান বিয়ার জব্দ করার দাবি করেছে বিজিবি।
সোমবার রাতে বিজিবি এ অভিযান চালায়।
আটককৃতরা হলেন- শফিউর রহমানের ছেলে ওয়াজ করিম (২২), আমির হাকিমের ছেলে মাহবুবুর রহমান (১৯), আনিস আহমেদের ছেলে মো. ফয়সাল (২০) এবং মিয়ানমারের হোসেন আহমেদের ছেলে জসিম উদ্দিন।
এদের মধ্যে ফয়সাল ও জসিম কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বালুখালী ক্যাম্পের বাসিন্দা।
বিজিবি-২-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, খবর পেয়ে বিজিবি-২ এর একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায় এবং রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে সীমান্তবর্তী এলাকার জিরো লাইন অতিক্রম করার সময় একটি নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করে।
পরে নৌকার ভেতর থেকে বিয়ার ও মদসহ চারজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
তাদের টেকনাফ থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে সাড়ে ১১ কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথ ও ইয়াবা জব্দ: বিজিবি
টেকনাফে ১২ কোটি টাকা মূল্যের মাদক জব্দ
টেকনাফে মাদক জব্দ, যুবক আটক