শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী দেশে পৌঁছেছেন
মালদ্বীপে ছয়দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসে পৌঁছেছেন। সোমবার বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মালদ্বীপের রাজধানী মালের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশি সময় ২টা ২০ মিনিটে) বাংলাদেশ বিমানের ভিভিআইপি ওই ফ্লাইটে করে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এর আমন্ত্রণে ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দেশটিতে যান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশের উদ্দেশে মালদ্বীপ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
সফরকালে শেখ হাসিনা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, জাতীয় সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ ও প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
দ্বৈত কর পরিহারে চুক্তি এবং স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও উপকরণ হস্তান্তর নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। এছাড়া বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দেয় বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ পিপলস মজলিসে ভাষণ দেন এবং দ্বীপ দেশটিতে বসবাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া কমিউনিটি সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপ থেকে সোমবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী
৬ দিনের সরকারি সফরে মালদ্বীপ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের উদ্দেশে মালদ্বীপ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
ছয়দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উদ্দেশে মালদ্বীপ ত্যাগ করেছেন। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০মিনিটে (বাংলাদেশি সময় ২টা ২০মিনিটে) দেশটির রাজধানী মালের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে করে তিনি দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি বাংলাদেশের সময় সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে দেশটিতে যান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপ থেকে সোমবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী
সফরকালে শেখ হাসিনা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, জাতীয় সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ ও প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
দ্বৈত কর পরিহারে চুক্তি এবং স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও উপকরণ হস্তান্তর নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। এছাড়া বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দেয় বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ পিপলস মজলিসে ভাষণ দেন এবং দ্বীপ দেশটিতে বসবাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া কমিউনিটি সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপ প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
স্মরণকালের ভয়াবহ লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডে নিহত অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৩ জনের লাশ শনিবার বেলা ১২ টায় বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী সরকারি গণকবরে দাফন করা হয়েছে। গণকবরে নেয়ার পরে সাতজনের লাশ শনাক্ত করে তাদের স্বজনরা। এসময় ২১ কবরে ২৩ জনকে সমাহিত করা হয়, দুটি কবরে মা ও সন্তানসহ চারজনকে দাফন করা হয়।
এর আগে এদিন বেলা ১১টায় স্থানীয় সার্কিট হাউস মাঠে ৩০টি লাশের একত্রে জানাজা হয়।
প্রসঙ্গত, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৩৫ জন ঘটনাস্থলে এবং তিন জন হাসপাতালে মারা যান।এরপর ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ একজন মারা যান।
আরও পড়ুন: লঞ্চের আগুনে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক: সামন্ত লাল
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন বরগুনা জেলা প্রশাসনের দলের কাছে ৩৭টি লাশ হস্তান্তর করে। অন্যদিকে, বরগুনা জেলা প্রশাসন ঝালকাঠি ও বরিশালে চার জনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। অবশিষ্ট ৩৩ লাশ শুক্রবার মধ্যরাতে বরগুনা নিয়ে আসা হয়।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে লাশগুলো শনাক্ত করার জন্য রাখা হয়। এখানে তিনটি লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ৩০টি লাশের গোসল, কাপড় পরানো এবং কফিনে লাশ ভরাসহ স্বজনদের লাশ দেখানোর দায়িত্ব পালন করেন রেড ক্রিসেন্ট ও স্কাউট সদস্যরা। এ সব লাশ সমাহিত করার জন্য শহরতলীর পোটকা খালি সরকারি গণকবরস্থানে ৩০টি কবর তৈরির ব্যবস্থা করেন ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আজিজুল হক স্বপন। দাফনকাজ শুরুর আগে আরও সাত লাশ শনাক্ত করে তাদের পরিবারের সদস্যরা। এসময় এখানে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায়। ২৩ লাশ শনাক্ত না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে তাদেরকে গণকবরে দাফন করা হয়েছে।
যে সকল লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে তাদের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির নলছিটির সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ১৬ জনকে, আহত হয়েছে শতাধিক।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শুক্রবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আলমকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, লঞ্চ দুর্ঘটনার পর পরই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা লাশ গ্রহণ, স্বজনদের কাছে হস্তান্তর ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। অজ্ঞাত লাশের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। নিখোঁজদের তালিকা তৈরি করার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩৩ মরদেহ বরগুনায় পৌঁছেছে
লঞ্চের আগুনে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক: সামন্ত লাল
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন শনিবার হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
শুক্রবার প্রায় ২১ জনকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ৩০ জনের জানাযা সম্পন্ন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তামিম হাসানের (৮) শরীরের ৩০ শতাংশ, বাচ্চু মিয়ার (৫১) চার শতাংশ, ইসরাত জাহান সাদিয়ার (২২) ২০ শতাংশ, শাহিনুর খাতুনের (৪৫) ২৫ শতাংশ, মারুফার (৪৮) ১৫ শতাংশ, সেলিম রেজার (৪৫)১৮ শতাংশ, লামিয়ার (১৩) ১০ শতাংশ, মমতাজের (৭০) ৮ শতাংশ, মোহাম্মদ রাসেলের (৩৮) ১৮ শতাংশ, বঙ্কিম মজুমদারের (৬০) ১২ শতাংশ, মনিকা রাণীর (৪০) ৩০ শতাংশ, গোলাম রাব্বানীর (২০) ৯ শতাংশ, বিকাশ মজুমদার (১৬), খাতিজার (২৭) ১৫ শতাংশ এবং বশিরের (৩৫) শরীরের ৬ শতাংশ পুড়ে গেছে। শুক্রবার রাতে আহত হাবিব খান (৪৫) মারা যান।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এসএম আইয়ুব হোসেন জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাবিব শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য শুক্রবার ভোরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার উপকূলে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে ৩৯ যাত্রী দগ্ধ ও ৭২ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে মালদ্বীপের উদ্যোক্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশের আগামী ৫০ বছরের উন্নয়ন যাত্রায় অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন,‘আমি মালদ্বীপের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতকে পারস্পরিক সুবিধার জন্য আগামী ৫০ বছরে উন্নয়ন যাত্রায় আমাদের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানাই।’
বৃহস্পতিবার মালদ্বীপের পিপলস মজলিসে (মালদ্বীপের সংসদ) স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদের সভাপতিত্বে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্ভাবনা ও সুযোগে সমৃদ্ধ হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে। আমরা বিশ্বাস করি বিশ্বের কোনো দেশ বিচ্ছিন্নভাবে উন্নতি করতে পারে না।’
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা মহামারি শিখিয়েছে যে সবাই পরস্পর নির্ভরশীল এবং একটি উন্নত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বিশ্বের স্বার্থে সকলের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে নীতিগত অবস্থানকে পুনর্ব্যক্ত করছি, যেমনটি আমাদের জাতির পিতা চেয়েছিলেন। আমরা বিশেষ করে আপনাদের উন্নয়ন যাত্রা, একটি মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ প্রত্যক্ষ করে উৎসাহিত হয়েছি।’
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত করব।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের জীবনে অর্থবহ পরিবর্তনসহ আগামী ৫০ বছরের যাত্রা আরও ফলপ্রসূ হবে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-মালদ্বীপের ৩টি চুক্তি স্বাক্ষর
বাংলাদেশ-মালদ্বীপ বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
ছয় দিনের দ্বিপাক্ষিক সফরের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা এখনও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি।’
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ক্ষমতার ফলে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মালদ্বীপে অনেক মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।
শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে একটি অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এবং বিনিয়োগের পারস্পরিক সুবিধার্থে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগ উন্নয়নের বিষয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সলিহ’র সঙ্গে তার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ২০২১ সালকে বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যুগান্তকারী বছর হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই বছরের মার্চ মাসে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সলিহ’র উপস্থিতিতে উদযাপন শুরু করতে পারা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সফর করেন, এসময় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে আমরা ঢাকায় আপনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছি।
তিনি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এটিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা বলে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন: ৬ দিনের সরকারি সফরে মালদ্বীপ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
৬ দিনের সরকারি সফরে মালদ্বীপ পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার বিকাল ৩টায় দেশটির রাজধানী মালে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গী নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট দুপুর ১২টা ১১ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বিমানবন্দরে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: ৬ দিনের সফরে মালের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সফরে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য,শিক্ষা,বন্দী বিনিময় এবং দ্বৈত কর এড়ানোর বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সহ চারটি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈত কর পরিহার এবং আয়ের ওপর করের ক্ষেত্রে আর্থিক ফাঁকি প্রতিরোধের চুক্তি, যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, যোগ্যদের নিয়োগের বিষয়ে এমওইউ। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পেশাদার এবং সমঝোতা স্মারক (নবায়ন)।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,সফরে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ১৩টি সামরিক যান মালদ্বীপকে উপহার দেবে বাংলাদেশ।
২৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ তার প্রাসাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: দরিদ্রদের প্রথমে সহায়তা করে মহামারি থেকে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
এসময় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।
দুই দেশ একটি যৌথ বিবৃতি দেবে এবং পরে দু’দেশের নেতা গণমাধ্যমের সামনে আসবেন।
এদিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ পিপলস মজলিসে ভাষণ দেবেন।
একই দিন সন্ধ্যায় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির আয়োজনে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় শেখ হাসিনার যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
২৪-২৬ ডিসেম্বর মালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া কমিউনিটি সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
সফরকালে মালের হোটেল জিনে মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, দেশটির জাতীয় সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ এবং প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনান বাংলাদেশ সরকার প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনকে অবিচল থাকতে হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন,‘সকলের প্রত্যাশা উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী মানবাধিকার পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করে যাবে। দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানবাধিকার রক্ষার বিষয় নিয়ে কমিশনের ভিন্নমত থাকতে পারে,দ্বন্দ্ব হতে পারে, সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে। কিন্তু কমিশনকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অবিচল থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে লক্ষ্যে স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন গঠন করে দিয়েছেন, সেই লক্ষ্য সমুন্নত রাখতে হবে।’রাজধানীর গুলশানে একটি বেসরকারি হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্য যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত আমরা মানবাধিকারকে ভূলুন্ঠিত করতে দেখেছি। সেই দুঃখজনক অভিজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন প্রণয়ন করে মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন করেন। আমাদের দেশে মূলত মানবাধিকার রক্ষার চর্চা শুরু হয় সেই থেকে। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় এই কমিশনের অগ্রযাত্রা ঘটতে থাকে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে দেশ অনেকটা অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু আরও অনেক দূর আমাদের যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য ‘আইনি উপায়’ খোঁজা হচ্ছে: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ওই সময়ে মানবাধিকার ভুলুন্ঠিত করার যে মানসিকতা তৈরি করা হয়েছিল সেই মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হলে মানবাধিকার কমিশনকে আরও সুসংগঠিত ও সোচ্চার হতে হবে।২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত এই ১৩ বছরের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছি। তাই আমাদের গুরু দ্বায়িত্ব এই উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানবাধিকারের বিকাশ ঘটানো।’
দরিদ্রদের প্রথমে সহায়তা করে মহামারি থেকে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও ব্যবসা রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় করোনা মহামারি অন্য দেশের মতো বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর শিকার হতে পারতো। কিন্তু আমরা আমাদের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও ব্যবসা রক্ষায় দ্রুত কাজ করেছি। এর ফলে, অন্য দেশের মতো বাংলাদেশে মহামারি আঘাত হানতে পারেনি। এক দশক আগে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক পুনরুত্থান অব্যাহত রাখতে আমরা মহামারি থেকে একটি ভালো অবস্থানে উঠে এসেছি।’
সোমবার নিউইয়র্ক ভিত্তিক মার্কিন বহুজাতিক ব্যবসায়িক সাময়িকী ‘ফরচুন’ এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মানুষের প্রয়োজন এবং যেখানে তারা কর্মরত সেই ব্যবসাকে গুরুত্ব দিয়ে জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয় সাধন করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পদক্ষেপ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, গত বছর মহামারির শুরুর দিকে সরকার হতদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, অভিবাসী, সুবিধা বঞ্চিত নারীদের ত্রাণ প্রদান করেছে।
আরও পড়ুন: বুধবার মালদ্বীপ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমরা চার কোটি—মোট জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ-- মানুষকে দ্রুত নগদ অর্থ ও অন্যান্য সহযোগিতা করেছি। ২২ দশমিক ১ মার্কিন ডলার ব্যয়ে এ গুলো ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। আর এটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৬ দশমিক ২ শতাংশ। আমরা টিকা ও অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থার জন্য আরও শত কোটি টাকা ব্যয় করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করেছি তার কেন্দ্রে সব সময় জনগণ থেকেছেন। ‘কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না’ সরকার এই নীতি প্রণয়ন করে যার মাধ্যমে এক কোটি ৬৮ লাখ মানুষকে চাল, শিশু খাদ্য ও নগদ অর্থ দেয়া হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বয়স্ক, প্রতিবন্ধী,বিধবা ও নিঃস্ব মহিলাদের জন্য অর্থ প্রদানের লক্ষ্য রেখেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করতে মহামারির আগে উদ্বোধন করা একটি কর্মসূচি সম্প্রসারিত করেছি। আর এই কর্মসূচি আমাদের করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যাপক অবদান রেখেছে।’
তিনি বলেন, সরকার ছোট ব্যবসা ও তাদের কর্মচারীদের সহায়তা করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিশেষ করে নারী ও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছে সরকার। সুবিধাজনক শর্তে সরকারি ঋণ পর্যটন শিল্পে শ্রমিকদের অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৃহত্তর ব্যবসাগুলোকেও সহায়তা করা হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পসহ রপ্তানিমুখী শিল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের জন্য শত কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বড় নির্মাতা ও তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানিসহ দ্রুত বর্ধনশীল পরিষেবা সচল রাখতে একটি কার্যকরী-মূলধন ঋণ সুবিধা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সব বাণিজ্যিক ঋণের সুদের অর্থ প্রদান গত বছর দুই মাস স্থগিত করা হয়। পরে নিয়োগকারীদের ওপর আর্থিক বোঝা কমানোর জন্য তা আরও ১২ মাস ছাড় দেয়া হয়।’
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সামাজিক দূরত্ব প্রবর্তন করেছে, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে এবং গত বছরের মার্চের শেষ থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত ৬৬ দিনের সরকারি ছুটি দিয়েছে।
তিনি বলেন, শিল্প উৎপাদন কমে গেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী লকডাউন চাহিদা হ্রাস করেছে এবং আমাদের সমগ্র অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে আমরা কখনই নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারাইনি এবং আমাদের জনগণের জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। আমরা (করোনা) পরীক্ষার সুবিধা স্থাপন করেছি। আমরা কন্টাক্ট ট্রেসিং করেছি। আমরা সারা দেশের হাসপাতালে আইসোলেশন সুবিধা স্থাপন করেছি। এছাড়া আমরা ছয় হাজার ২০০ চিকিৎসক, ১০ হাজার নার্স ও তিন হাজার অন্যান্য প্রধান চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ করেছি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে বছরের পর বছর বিনিয়োগের জন্য অনেক চাপ সত্ত্বেও আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহনশীল ছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন উদ্যোগ ও অতীত বিনিয়োগের সমন্বয় অগণিত জীবন বাঁচিয়েছে এবং আমাদের অর্থনীতিকে ঝড় মোকাবিলা করতে দিয়েছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মোটামুটি দুই শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির মধ্যে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত এক দশকে আমাদের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়ে ২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার হয়েছে যা প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। মহামারি আমাদের অগ্রগতিতে বাধা দিতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষভাবে গর্বিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশকে সপ্তম স্থানে রেখেছে। আমাদের শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৩ দশমিক ৬৭ এ হ্রাস পেয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ১৭৩-এ নেমে এসেছে। বাংলাদেশিদের গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে।’
আরও পড়ুন: নৌবাহিনীতে আরও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ সংযোজন করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল অভিযোজন ও দক্ষতার ক্ষেত্রেও বিশ্বনেতা হয়ে উঠেছে। আমাদের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উদ্যোগ অর্থনীতিতে রূপান্তর ও বৈচিত্র্য এনেছে। এটি কোভিড-১৯ এর সঙ্গে লড়াই করা সহজ করে তুলেছে। বাংলাদেশিরা এখন তাদের স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীল। ফলে,মহামারি সম্পর্কে তারা প্রতিনিয়ত অবহিত থাকছেন।’
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দরিদ্রতম দেশ থেকে এ বছর নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ। ‘আমরা ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছি। একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক মহামারি সত্ত্বেও এই সব এখনও সম্ভব। জনগণে বিনিয়োগ এই পার্থক্য এনেছে।’
সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে তার সরকার সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। তিনি বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।’
সোমবার কূটনৈতিক দক্ষতার জন্য বঙ্গবন্ধু পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নতুন প্রবর্তন করা বঙ্গবন্ধু পদক দুজন বিজয়ীর হাতে তুলে দেন।
পদক বিজয়ীরা হলেন-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশিদ আলম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোহাম্মদ আল মুহারি।
আরও পড়ুন: দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালদ্বীপ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন পুরস্কারটি বাংলাদেশি কূটনীতিকদের তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সেরা পারফরমার হতে উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া বাংলাদেশ ও নিজ নিজ দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের কূটনীতিকদেরও উৎসাহিত করবে।’
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে তাদের বঙ্গবন্ধু পদক-২০২০ প্রদান করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খুরশিদ আলম প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সৈয়দ মোহাম্মদ আল মুহারী সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন: ফ্রান্স সফর খুবই সফল ছিল: প্রধানমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘শেখ হাসিনা: বিমুগ্ধ বিশ্ব’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও মতিয়া চৌধুরী বক্তব্য দেন। এছড়া এ সময় ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী