শেখ হাসিনা
ভয়াল ২১ আগস্ট আজ
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তনয়া এবং দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগের র্যালিতে নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী আজ।
শনিবার ওই হামলার স্মরণে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো দিনটিকে ‘গ্রেনেড হামলা দিবস’ হিসেবে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করবে।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জিয়া ও ২১ আগস্টের হামলায় খালেদা জড়িত: শেখ হাসিনা
হামলায় দলের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে ফিরলেও, তার শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ হামলায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
এই হামলার প্রায় ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে গ্রেনেড হামলার মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালাত।
এছাড়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্টের হামলা ‘আ’লীগের মাস্টারপ্ল্যান’: বিএনপি
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বার্তা প্রদান করবেন।
দেশের ইতিহাসের ওই ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার স্মরণে রাজধানীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিন ব্যাপী ‘আগস্ট রিপিটেড অ্যাটেম্পটস্’ শিরোনামে শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার বিকাল ৫টায় এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হবে।
সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি করলে কঠোর শাস্তি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে সরকারি কর্মচারীদের কঠোর শাস্তির পেতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু আমরা বিভিন্ন সুযোগ -সুবিধা দিচ্ছি, আমরা কোনো দুর্নীতি সহ্য করব না।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-এনইসির সম্মেলন কক্ষে সচিবদের সঙ্গে এক সভায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার একটি দক্ষ, সেবা-ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে চায়, যা দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। এটা অনেক বেশি কার্যকর হবে। কারণ আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন: সচিবদের প্রধানমন্ত্রী
দুর্নীতিকে একটি রোগ হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার ওপর জোর দেন। তিনি সচিবদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, যখনই আপনারা কাউকে দুর্নীতিতে লিপ্ত হতে দেখবেন, তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিবেন। যে কোনো ভালো কাজের জন্য অবশ্যই পুরস্কার আছে। কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
করোনা ভাইরাসের টিকা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশে টিকা উৎপাদনের পদক্ষেপ নিয়েছে। তাছাড়া, আমরা যতটুকু টিকা প্রয়োজন তা সংগ্রহ করব। এ ব্যাপারেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়াই মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী
শ্রদ্ধাভরে পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সঙ্গে শ্রদ্ধাভরে দিবসটি পালন করছে দেশবাসী।
জাতির জনকের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে (পুরাতন) বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরবর্তীতে জাতির জনকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল জাতির পিতাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। পাশাপাশি বেজে ওঠে করুণ সুর।
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াকে জড়ানো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা: ফখরুল
এরপর ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের জন্য শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে চলে যান। সেখানে শায়িত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তার তিন ভাই- ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এবং দশ বছর বয়সী শেখ রাসেল ও পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্যদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলে পাপড়ি ছড়িয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান।
১৯৭৫ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা- বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং পেশাজীবী সংগঠন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার জড়িত থাকার প্রমাণ জনসম্মুখে আনা হবে: আইনমন্ত্রী
দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেসরকারি টিভি ও রেডিও স্টেশনগুলো বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র।
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হবে।
বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোও ব্যাপক কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার জড়িত থাকার প্রমাণ জনসম্মুখে আনা হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এটা দিনের আলোর মত সত্য যে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার জড়িত থাকার সাক্ষ্য-প্রমাণ কমিশনের মাধ্যমে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যখন এ মামলার তদন্ত হয় তখন জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়নি। কারণ তখন তিনি মৃত। মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার সুযোগ নাই। বাংলাদেশের আইনে মরণোত্তর সাজা দেয়ার কোনো বিধান নাই। আইনের বাইরে গিয়ে শুধু তামাশা করার জন্য একজনকে সাজা দেয়া যায় না। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে যে জিয়াউর রহমান জড়িত সেটার সাক্ষ্য প্রমাণ, ইনশাআল্লাহ এই কমিশনের (বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশিলবদের খুঁজতে কমিশন গঠিত হবে) মাধ্যমে জন সম্মুখে প্রকাশ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধ পরিকর বলে আইনমন্ত্রী জানান।
আরও পড়ুন: খালেদাকে অপরাধ স্বীকার করে, ক্ষমা চেয়ে বিদেশে যেতে হবে: আইনমন্ত্রী
আনিসুল হক বলেন, শুধু তার সরকার নয় আওয়ামী লীগ যতদিন বাংলাদেশে থাকবে, বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের একজন বেঁচে থাকলেও হত্যাকারীদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করা হবে। খুনিদেরকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ চলমান প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিশদ কিছু বলতে গেলে এ প্রক্রিয়ার কিছু ব্যাঘাত হবে। তবে এই ব্যাপারে সরকারের কোন শিথিলতা নেই। খুনিদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা সরকার চালিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও আলাপ আলোচনায় এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন শুধু তারাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়। এর পিছনে একটা ষড়যন্ত্র আছে এবং সেই ষড়যন্ত্রকারী কারা তাদেরকে অন্ততপক্ষে চিহ্নিত করে দেশের মানুষের কাছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে: আইনমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া কি হবে তা নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে আলাপ আলোচনা করে একটি কমিশন গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বিগত ৮ মার্চ, ২০২০ থেকে করোনার মহামারি শুরু হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই কমিশনের রূপরেখা কি হবে, কমিশনের কার্যাবলী কি হবে, কমিশন কাদের দ্বারা গঠিত হবে তা দেশবাসী জানতে পাবেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পলাতক খুনি মুসলেম উদ্দিন ভারতে পলাতক রয়েছেন এমন প্রশ্নের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা তা যাচাই বাচাই করে দেখেছি। এখন পর্যন্ত তার কোন সত্যতা আমরা পাইনি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন: আইনমন্ত্রী
৫৬ বছর পর চালু হলো চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ
দীর্ঘ প্রায় ৫৬ বছর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ দিয়ে নিয়মিত মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রবিবার ভারতীয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ডামডিম স্টেশন থেকে পাথর বোঝাই প্রথম মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশে প্রেরণ করে।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত সাতটি রেল সংযোগ চালু ছিল। বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চারটি রেল সংযোগ চালু রয়েছে। এগুলো হলো- বেনাপোল (বাংলাদেশ) - পেট্রাপোল (ভারত), দর্শনা (বাংলাদেশ)-গেদে (ভারত), রহনপুর (বাংলাদেশ)-সিংহাবাদ (ভারত), বিরল (বাংলাদেশ)-রাধিকাপুর (ভারত)। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগ এমনই একটি রুট যা ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
আরও পড়ুন: চিলাহাটি থেকে পরীক্ষামূলক বাংলাদেশের রেল ইঞ্জিন ভারতে ট্রায়াল
ভারত ও বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রীই উভয় দেশের মধ্যে ১৯৬৫ সাল পূর্ববর্তী সমস্ত রেল সংযোগ পুনরায় কার্যকর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এরই ফলস্বরূপ রেল সংযোগটিকে পুনঃস্থাপিত করার কাজ হাতে নেয় উভয় দেশের সরকার।
পুনঃস্থাপনের পর, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের ভার্চুয়াল দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে চিলাহাটি (বাংলাদেশ) এবং হলদিবাড়ি (ভারত) রেল সংযোগটি উদ্বোধন করেন।
এই রেল সংযোগটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার পঞ্চম রেল সংযোগ হিসেবে পুনরায় চালু হলো।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পৌঁছেছে ভারতের ২০০ এমটির ‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস’
এই রেলপথ দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাথর ও বোল্ডার, খাদ্যশস্য, তাজা ফল, রাসায়নিক সার, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, ফ্লাই অ্যাশ, ক্লে, চুনাপাথর, কাঠ ও টিম্বার ইত্যাদি। বাংলাদেশ থেকে ভারতে সকল রপ্তানিযোগ্য পণ্যই অনুমোদিত।
চালু হওয়া এই রেল সংযোগ বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ এবং দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্যকে শক্তিশালী করবে।
আগস্ট: বাঙালির শোকের মাস শুরু
আজ পহেলা আগস্ট। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অকালেই হারানোর মাস আগস্ট। তাই আগাস্ট বাঙালি-বাংলাদেশিদের জন্য শোকের।
স্বাধীনতার মাত্র কয়েক বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা জাতির পিতাকে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সাথে হত্যা করে।
ওই বর্বরোচিত হামলার সময় বর্তামন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এবং ছোট মেয়ে শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র প্রমাণ করে ১৫ আগস্ট ও জেল হত্যা: প্রধানমন্ত্রী
প্রতিবছর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো ১৫ আগস্ট উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করে থাকে। তবে করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর কর্মসূচির ধরন আলাদা হবে।
এ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করবে জাতি। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে তার কীর্তি এবং এদেশের মানুষের জন্য তার আজীবন ত্যাগের কথা।
শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডই নয় এই আগস্টেই আওয়ামী লীগের সমাবেশে ছোঁড়া হয় গ্রেনেড হামলা। এছাড়াও ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনাও ঘটে এই মাসেই।
আরও পড়ুন: ৫ আগস্টের পরও বিধিনিষেধ বহালের সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
তৎকালীন বিএনপির শাসনামলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের এই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং অন্তত ৫০০ নেতাকর্মী আহত হয়।
এছাড়াও ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আধা ঘণ্টার ব্যবধানে সারা দেশের ৬৩ জেলার ৩০০টি স্থনে ৫০০টির ও বেশি সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
করোনা পরীক্ষায় অনিহা দেখাবেন না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামাঞ্চলের মানুষের প্রতি করোনা পরীক্ষার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘এই ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক বলে করোনা পরীক্ষা ও যথাযথ চিকিৎসায় অনীহা দেখাবেন না।’
মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের (বিএএসএল) ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে এখনো একটি সমস্যা আছে। আমি গ্রামাঞ্চল থেকে খবর পেয়েছি, সেখানকার মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে চায় না। তারা ভাবে, পরীক্ষায় করোনা সনাক্ত হলে তারা অচ্ছুত হয়ে যাবে। কেউ তাদের সঙ্গে মিশবে না। কিন্তু এটি তো ঠিক না।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংস্থা বিএএসএল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি করোনা পরীক্ষা করে তবে এই ভাইরাসে অন্যকে সংক্রামিত না করার পাশাপাশি তিনি নিজেও চিকিৎসা নিতে পারবেন। এভাবেই তিনি অন্যের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবেন। এই মনোভাব মানুষের মধ্যে থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: সবাই টিকা পাবে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে করোনা পরীক্ষার বিষয়ে অনীহা দূর করতে সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার দীর্ঘদিন ধরে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে করোনা টিকার আওতায় আনার ব্যবস্থা করছে। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে পল্লী টিকা কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেই টিকা দিতে পারবে।
সরকার দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিএএসএল নেতাকর্মীদের প্রতি টিকা গ্রহণে জনসাধারণকে সহায়তা ও অনুপ্রেরণা জোগানোর আহবান জানান।
আরও পড়ুন: জাপান থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার আড়াই লাখ টিকা দেশে পৌঁছেছে
বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার সুযোগ দিচ্ছে সরকার
জয়ের জন্মদিনে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড অবমুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী গণভবনে একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ১০ টাকা মূল্যের স্মারক ডাকটিকেট, একই মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম এবং পাঁচ টাকা মূল্যের ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন।
এই উপলক্ষে একটি বিশিষ সিলমোহর ব্যবহার করা হয়েছে।
অবমুক্ত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আফজাল হোসেন এবং বাংলাদেশ ডাকঘরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার থেকে ঢাকা জিপিও-র ফিলাটেলিক ব্যুরো থেকে ডাকটিকেট, প্রথম দিনের খাম ও সিলমোহর বিক্রি হবে এবং পরে তা দেশের অন্যান্য জিপিও এবং প্রধান পোস্ট অফিসে পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: অনিয়ম করলে কঠোর শাস্তি: প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা শেষ হয় যখন কেউ মিথ্যা ছড়ায়, অন্যকে আঘাত করে: জয়
সবাই টিকা পাবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, যেকোনও মূল্যেই দেশের মানুষের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করা হবে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বলেন, ‘যত টিকার প্রয়োজন হোক, যত টাকাই ব্যয় হোক, আমরা প্রয়োজনীয় টিকা ক্রয় করবো।’
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাজধানী ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস ২০১৮ এবং জনপ্রশাসন পদক ২০১৮ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: অনিয়ম করলে কঠোর শাস্তি: প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের যাতে আর কোনও ভাবেই সমস্যার সম্মখীন হতে না হয় সেই লক্ষ্যে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ টিকা উৎপাদন শুরু করবে।
শেখ হাসিনা জানান, সরকার ইতোমধ্যেই ব্যাপকভাবে টিকা সংগ্রহ ও গণহারে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি বলেন, ‘সকলের নিরাপত্তার জন্যই সকলকে টিকার আওতায় আনতে হবে। ইনশাল্লাহ, খুব দ্রুতই আমর করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতি, শিক্ষা এবং সামাজিক ক্ষেত্রসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনেকে সাধরণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে আহবান জানান।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ২৪৭ মৃত্যু, শনাক্তেও রেকর্ড
শেখ হাসিনা জানান, দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৮৭ লাখ মানুষকে করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে। দেশের সকলকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকার দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।এর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০২০ ও ২০২১ সালের জনপ্রশাসন পদক বিতরণ করেন। নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ৩৫ জন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠান এই পদক পেয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সকলের মধ্যে পদক হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম উপহার শেখ হাসিনার
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও জনপ্রশাসন সচিব কে.এম. আলী আজম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দেউবার নতুন নেতৃত্ব দুই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে।
শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার এক অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, ‘পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে আসা এবং ১৮ জুলাই নেপালের পার্লামেন্ট যে অপ্রতিরোধ্য সমর্থন দিয়েছে তা আপনার নেতৃত্বের ওপর দেশটির জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিশ্বাস ও আস্থারই সাক্ষ্য দেয়।’
আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা জিতব: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ ও নেপাল অভিন্ন স্বার্থ এবং অশীদারিত্বের ভিত্তিতে দুর্দান্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উপভোগ করছে।’
দেউবার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাব্য সুযোগগুলো অন্বেষণের মাধ্যমে আরও গভীরতর হবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক সফরের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী-এই দুটি যুগান্তকারী অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়ে আমাদের উদযাপনকে আরও মূল্যবান করে তুলেছেন।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতাহীনদের ক্ষমতাবান করতে পারে সাংবাদিকরা: তথ্যমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল অর্থনীতি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত অর্থনীতির ‘সোনার বাংলা’ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার পথে রয়েছে। এসময় তিনি বলেন, নেপাল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে লাভবান হতে পারে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগামী বছরগুলোতে আরও প্রসারিত ও গভীরতর হবে। তিনি দেউবাকে তাঁর সুবিধা মতো সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: কাল থেকে শুরু কঠোর বিধিনিষেধ, বন্ধ থাকছে পোশাক কারখানা