শেখ হাসিনা
আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
আজ ২৩ জুন, উপমহাদেশের ইতিহাসে স্বাক্ষী এবং স্বাক্ষর রাখা ঐতিহাসিক এবং অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।মঙ্গলবার ৭২ বছর পেরিয়ে আসা দলটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে ওতপ্রোতভাবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দলের মাধ্যমেই দেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা, পরিচালনা এবং বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়ার মাধ্যমেই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির যাত্রা শুরু হয় এই ভূখণ্ডে।দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক। কারাগারে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থাতেই ওই কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু।
আরও পড়ুন: দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তীতে দলে ভাঙন, বিভিন্ন ঐতিহাসিক আন্দোলন এবং মুক্তিসংগ্রামের পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করে নিলে কিছুটা নিভৃতেই চলে যায় আওয়ামী লীগ।
তবে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু তনয়া এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর আওয়ামী লীগের হাল ধরলে, দীর্ঘ-লড়াই সংগ্রামের পর সুদীর্ঘ ২০ বছর পর দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসেন।
১৯৯৬ সালের ঠিক এই দিনেই (২৩ জুন) দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর ছয় পরামর্শ
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো অন্যান্য বছর উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করলেও, এবছর করোনা মহামরির কারণে আয়োজন বেশ সীমিত।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ, বিএনপি মানুষকে হতাশ করেছে: জিএম কাদের
আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
শেখ হাসিনাকে মোদির চিঠি: মানবজাতি শিগগিরই মহামারি কাটিয়ে উঠবে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, মানবজাতি খুব শিগগিরই এই মহামারি কাটিয়ে উঠবে। যোগের একটি সহজাত শক্তি রয়েছে মানুষকে যুক্ত করার। যোগব্যায়াম সম্প্রদায়, রোগ প্রতিরোধ এবং ঐক্য এই তিনের জন্যই উপকারী।
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া এক চিঠিতে আশাবাদ ব্যক্ত করে মোদি এসব কথা লিখেছেন।
এবারের আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের প্রতিপাদ্য “সুস্থতার জন্য যোগ”- যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের মোদিবিরোধী আন্দোলন: আন্দোলনকারীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি বিশিষ্টজনদের
মোদী তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, এই অবিস্মরণীয় প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের কোভিড-১৯ যোদ্ধারা উল্লেখযোগ্যভাবে এই মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। মহামারির হুমকির মধ্যে গত আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের পর থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ও ভাইরাস বিষয়ক বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি জনগণকে রক্ষার জন্য এখন একাধিক টিকাও রয়েছে আমাদের কাছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে টিকাদান কর্মসূচি চলছে। আমি এখনো আশাবাদী যে, মানবজাতি খুব শিগগিরই করোনা মহামারি পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
চিঠিতে তিনি জানান, যোগব্যায়ামের সর্বজনীন আবেদনের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ২০১৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। তখন থেকেই বিশ্বব্যাপী সাড়ম্বরে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিগত বছরের মতো এবছরও কোভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপের মধ্যেই আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হবে।
মোদি লিখেছেন, শরীরের পাশাপাশি যোগব্যায়াম মনের জন্যও বেশ উপকারী। সকল ধরণের সাবধানতা সত্ত্বেও একজন মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একে মোকাবিলার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। যোগব্যায়াম আমাদের সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সাহায্য করে, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। সারা বিশ্বেই কোটি কোটি মানুষ মাসের পর মাস ঘরে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। এর ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও বেশ প্রভাব পড়েছে। নিয়মিত যোগাভ্যাস তাদের এই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদির ধন্যবাদ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও লিখেছেন, আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য সারা বিশ্বের মানুষের সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি উদ্বেগকেই প্রতিফলিত করে। এটি এমন একটি উদ্যোগ যা মানুষের শারিরীক সক্ষমতার পাশাপাশি সুস্থতার প্রতিও গুরুত্ব দেয়।
বাংলাদেশে সফলভাবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনে সকলের সহযোগিতার জন্য প্রত্যেককে মোদী আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে নিহত ৫
গত কয়েক বছরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যোগ দিবস পালনের জন্য বাংলাদেশি ভাই ও বোনেদের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখে অত্যন্ত আপ্লুত হয়েছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে মোদী লিখেছেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সামনের বছরগুলিতেও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনে আপনার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
চিঠির শেষে মোদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও দেশের জনগণের সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্যের কামনা করেছেন।
কুড়িগ্রামে ঘর পেল ১ হাজার ৭০ পরিবার
মুজিববর্ষ উপলক্ষে কুড়িগ্রামে দ্বিতীয় দফায় নির্মিত সেমি পাকা ঘর পেল ১ হাজার ৭০ জন গৃহহীন পরিবার।
রবিবার সকাল ১১ টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই শতক জমিসহ ঘর বিতরণের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর নওয়াবশ গ্রামে ৯০ টি ঘর নিয়ে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প মাঠে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনা প্রথমবার কুড়িগ্রাম জেলার সাথে সংযুক্ত হন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলো শেরপুরে ১৬৭ গৃহহীন পরিবার
এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন ও উপকারভোগী রিক্সাচালক আক্কুল মিয়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলেন।
নিজের বক্তব্যে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জেলার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি কুড়িগ্রাম জেলায় ১০৭০টি ঘর প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১৫৭২ পরিবারের
অনুষ্ঠানে উপকারভোগী রিক্সাচালক আক্কুল মিয়া জানান, ‘আমি রেলের জায়গায় থাকি। একদিন রিক্সা চালায়ে বাড়িত আসি শুনি ঘরের জন্য আমার নাম নিয়া গেইছে। কথাটা শুনি বুকটা আমার বুকটা ঠান্ডা হয়া গেল। আমি বাড়ি নয় যেন ভবিষ্যৎ একটা ঠিকানা পাইলাম। এখানে দুই শতক জমি, দুইটা থাকার ঘর, রান্নাঘর, লেট্রিন, বিদ্যুৎ ও নলকুপ পাইছি। আমরা এখানে যতদিন থাকবো ততদিন আপনার জন্য, আপনার বাবার জন্য, আপনার মায়ের জন্য দোয়া করবো।’
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের জন্য ঘর
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি, কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এমএ মতিন, কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি মো. জাফর আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, উপকারভোগী ও সাংবাদিকরা।
জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, সীমিত সম্পদ দিয়েই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ থেকে শুরু করে সকলের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা করছে সরকার।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৫৩,৩৪০টি আধা-পাকা বাড়ি ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দারিদ্র্য হার কমাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চায় সরকার
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সাধারণ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে। এটাই আমাদের লক্ষ্য’
আরও পড়ুন: দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগে ১২,৪৩৬ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০,৫৪৭টি, ঢাকা বিভাগে ৭,৬৩০ টি, রাজশাহী বিভাগে ৭,১৭২টি, বরিশাল বিভাগে ৭,১৫৩ টি, খুলনা বিভাগে ৯১১ টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২,৫১২ টি এবং সিলেট বিভাগে ১,৯৭৯ টি আধা-পাকা ঘর জমির মালিকানাসহ হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ শ্রদ্ধায় নারী কর্মকর্তায় আপত্তি, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আহ্বান
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সমাজের অতি দরিদ্র শেণির মানুষদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে এবং বর্তমানে এর ফলাফল চোখে পড়ছে। ‘অতি দরিদ্ররা এখন স্বনির্ভর হতে শিখছে...তারা সমাজের সামনের দিকে এগিয়ে আসছে...আমরা এমনটা ই চাই,’ বলেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ: ডেভিড ব্রুস্টার
দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে শিক্ষা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলাই সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘গ্রামকে উন্নত করাই আওয়ামী লীগের নীতি, আর এটাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদে শিখিয়েছেন।’
রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ব্যক্তিগত উদ্যোগে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে উল্লেখ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন তাৎক্ষণিক ভাবে জাতিসংঘের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে মিয়ানমারে জনসম্মুখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, আরেকদিকে বিভিন্ন দেশ তাদের সাথে অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করছে। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক ব্যাপার।’বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিবের সাথে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
জোরপূর্বক ভাবে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মহানুভবতার কথা বিশ্ববাসী কখনোই ভুলবে না।’
আরও পড়ুন: আগামী ১০ বছরে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচার শেষ সুযোগ: জাতিসংঘ মহাসচিব
আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেয়া সুযোগ সুবিধা এবং সেখানে জাতিসংঘের কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিনকে বিশ্ববাসীর পণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল
বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের অত্যন্ত বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, সাম্প্রতিক জি-৭ সামিটে তিনি বাংলাদেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাংলাদেশের দারুণ ভূমিকার রাখার প্রশংসা করেন তিনি।
দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করতে সরকার আন্তর্জাতিক মানের একটি ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করতে যাচ্ছে। এই ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে অন্যান্য টিকার পাশাপাশি করোনার টিকাও তৈরি করা হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে টাঙ্গাইল-৬ আসনের সাংসদ আহসানুল ইসলামের এক প্রশের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।
আরও পড়ুন: শর্ত পূরণ করলে ‘বঙ্গভ্যাক্সের’ ট্রায়ালের অনুমতি: বিএমআরসি
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় সরকার দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পন্ন করবে। ইতোমধ্যে এই চুক্তির বিভিন্ন দিক বিবেচনা এবং মন্ত্রীসভায় এর অনুমোদনের কার্যক্রম চলছে।’
শেখ হাসিনা সংসদকে জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার বিদেশ থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর উৎপাদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেসকল দেশ ইতোমধ্যে করোনার টিকা তৈরি করেছে, সেসকল দেশের সরকারের সাথে তাদের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে উৎপাদনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: টিকার যৌথ উৎপাদন নিয়ে শিগগরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
টিকা উৎপাদনের সক্ষমতার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। অপরদিকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের টিকা এখনও ট্রায়াল পর্যায়ে আছে।’
আরও পড়ুন: সিনোফার্ম-ফাইজারের টিকা কার্যক্রম ১৯ জুন থেকে শুরু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সংসদে আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার ইতোমধ্যে জরুরি ব্যবহারের জন্য পাঁচটি টিকা অনুমোদন করেছে। এগুলো হলো- অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকা, সিনোফার্ম (চীন), স্পুটনিক-ভি (রাশিয়া), ফাইজার-বায়োটেক (ইউএস/জার্মানি) এবং করোনা ভ্যাক (চীন)।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্স থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত ৫ জুন পর্যন্ত দেশের ৫৮ লাখ ২২ হাজার ১৭৭ জন নাগরিক করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। অপরদিকে এই সময় পর্যন্ত ৪২ লাখ ৯ হাজার ৫১০ মানুষ করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ 'বিস্ময়ের বিস্ময়’: অর্থমন্ত্রী
করোনা মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসাধারণ পদক্ষেপ পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বিশ্বনেতারা দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়ের বিস্ময়'।
‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে বাজেট বক্তব্য সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের উদ্ধৃতি দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক ধারা অনুযায়ী উন্নতি চলমান থাকলে ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে।’
তিনি বলেন, ‘এক সময় বিশ্বের ১০টি দরিদ্রতম দেশের মধ্যে থেকেও বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।।
আরও পড়ুন: বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ উন্নতিতে বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের অংশীদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছরে বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে এবং ১৭ বছরের শেখ হাসিনার নেতৃত্বকালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ২৭১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের জাতীয় মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ৩০০ গুণ।
তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু অর্থনীতিক স্বাধীনতার জন্য যে রূপরেখা দিয়েছিলেন তার জন্মশতবর্ষে সে পদাংক অনুসরণ করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।'
পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলন: সবুজ ভবিষ্যত গড়তে ঐক্যের আহ্বান শেখ হাসিনার
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আরও সবুজ ভবিষ্যত বিনির্মাণে গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড গ্লোবাল গোলস ২০৩০ (পিফোরজি) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের ঐক্য বাড়িয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার বিকালে পিফোরজির সিউল সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় এ বিষয়ে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ পিফোরজির সিউল সম্মেলনে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, পিফোরজির মনোযোগের পাঁচটি ক্ষেত্রে (খাদ্য, পানি, জ্বালানি, নগর, চক্রাকার অর্থনীতি) বিনিয়োগকারী, নীতি নির্ধারক ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা এবং এসব ক্ষেত্রে সর্বোত্তম অনুশীলন বিনিময় করে কর্মমুখী আবেদনের ভিত্তিতে আরও প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এই দশককে আরও উন্নত ও সবুজতর গড়ার লক্ষ্যে 'ইনক্লুসিভ গ্রিন রিকভারি টুওয়ার্ডস কার্বন নিউট্রালিটি' প্রতিপাদ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিফোরজির দু দিনব্যাপী এ সম্মেলন।
প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে সবুজ প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্বের লক্ষ্য ২০৩০ অর্জনের পাশাপাশি পুরো-সমাজ-পদ্ধতির আবেদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের তথা আমাদের, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সবুজ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করা দরকার।’
বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের সম্পদ দিয়ে জয়বায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। বাংলাদেশ পিফোরজি এর সদস্য হিসেবে কম কার্বন নিঃসরণের পথ অনুসরণ করে।
পিফোরজি এর কাজের ক্ষেত্রে পানি বাংলাদেশের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ নামে একটি ১০০ বছরের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি যা পানির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণের উপর জোর দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তরুণদের মাছ চাষের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রতি বছর আমরা জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করি, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সোলার এনার্জি অ্যাকশন প্ল্যান ২০২১-২০৪১-এর আওতায় ৪০ গিগা ওয়াট পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্বেও সবুজ পুনরুদ্ধার এবং সবুজ বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের আরও ভালো করে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০১৭ সালে পিফোরজি নামে এই বৈশ্বিক উদ্যোগ শুরু হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খছিয়াং, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডেন, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শওকত মির্জা ওয়েব এবং চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ানসহ বিশ্বের অন্যান্য নেতারা সম্মেলনের ভার্চুয়াল লিডারস অধিবেশনে বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: দণ্ডিত ৭ আসামির জামিন স্থগিতই থাকছে
সাতক্ষীরায় প্রায় দেড় যুগ আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত সাত আসামিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ তিন সপ্তাহ বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সাথে এ সময়ের মধ্যে তাদের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। একই সাথে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ২০ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে। ফলে এ সময় পর্যন্ত তাদের জামিন স্থগিতই থাকছে।
যে সাত দণ্ডিত ব্যক্তির জামিন স্থগিতই থাকছে তারা হলেন-আবদুস সাত্তার, গোলাম রসুল, আবদুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম। এ মামলায় ২৫ মে হাইকোর্ট সাত দণ্ডিত ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা ২৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি ৩০ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি ও আদেশ হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন।
জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সদর হাসপাতালে যান। তিনি মাগুরায় ফেরার পথে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ পাওয়া যায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
হামলায় শেখ হাসিনাসহ তার গাড়ি বহরে থাকা লোকজন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংবাদিকসহ অন্তত এক ডজন লোক আহত হন। ওই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদল সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৭০-৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিভিন্ন আদালত ঘুরে হাইকোর্টের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উলেখ করে ৩০ জনকে সাক্ষী করে পেনাল কোর্ট, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক তিনটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ সফিকুর ইসলাম।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ৭ আসামির জামিন স্থগিত
সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচারাধীন পেনাল কোর্টের মামলাটি ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর এবং সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন অস্ত্র আইনে ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দুটির কার্যক্রম যথাক্রমে ২০১৭ সালের ৯ ও ২৩ আগস্ট আসামীপক্ষ হাইকোর্টে স্থগিত করেন। গতবছর ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিবুর। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এরপর আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন চেয়ে আবেদন জানান।
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ৭ আসামির জামিন স্থগিত
প্রায় দেড় যুগ আগে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ সাত আসামির জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। একইসাথে জামিন স্থগিতের আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রবিবার (৩০ মে) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত ৩০মে পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। আসামিপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আদালাতের আদেশের বিষয়টি এস এম মুনীর নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: সাজাপ্রাপ্ত ৭ আসামির জামিন
এর আগে মঙ্গলবার সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ সাত জনকে চার মাসের জামিন দিয়েছিল হাইকোর্ট। একই সাথে এই সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছিল।