হিলি
ভারতে নির্বাচন, হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন। এ উপলক্ষে সকাল থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি- রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে চেকপোস্ট দিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্ট- ভিসায় যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে।
বাংলা হিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত, এদিন আমদানি-রপ্তানির পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। আগামীকাল রবিবার থেকে এই বন্দর দিয়ে পুনরায় পুরোদমে দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য শুরু হবে। ভারতের হিলি এক্সপোর্টার অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি দিলিপ সরকার এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে ৬ দিন পর পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু
তিনি আরও জানান, নির্বাচনের কারণে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও সকাল থেকে বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের অভ্যন্তরে (পানামা ওয়্যারহাউজ) অবস্থান করা আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম চলছে। এছাড়া ওই সকল পণ্য বাংলাদেশি ট্রাকে বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, আমাদের অফিসে সকল কাজকর্ম স্বাভাবিক আছে। আমরা আমদানিকৃত পণ্যের ট্যাক্স নিয়ে খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন করছি। শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে।
এদিকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আশরাফুল জানান, ভারতে নির্বাচনের কারণে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চালু থাকে। ফলে বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে যাত্রীরা হিলি চেকপোস্ট দিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে চলাচল করছেন।
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় ঈদ সম্প্রীতির বন্ধনে বিজিবি-বিএসএফ
হিলি স্থলবন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আধাবেলা পর আমদানি-রপ্তানি শুরু
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে অবস্থান করা ভারতীয় ট্রাক চালকদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন চালক আহত হয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আধাবেলা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে দুই দেশের ব্যবসায়ী, ট্রাক পরিবহন চালক ও পুলিশের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সুরাহা হলে দুপুর ২টা থেকে ফের আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, ‘গতকাল বুধবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্যবাহী শতাধিক ভারতীয় ট্রাক পানামা পোর্টে প্রবেশ করে। এসময় কিছু পণ্যবাহী ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করা হলেও অন্য ট্রাকগুলো পণ্য খালাসের অপেক্ষায় পানামা পোর্টে অবস্থান করছিল। গতরাত ১১টার দিকে ভারতের হিলির ট্রাক চালকরা কোনো কারণ ছাড়াই উত্তর প্রদেশের ট্রাক চালকদের ওপর চড়াও হয়। এসময় উত্তর প্রদেশের চালকরা বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উত্তর প্রদেশের চালক খুরশিদের হাত এবং মাথা ফেটে যায় এবং আনাস অজ্ঞান হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পানামা পোর্টের নিরাপত্তা কর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।’
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বিকল, ৪ ঘণ্টা পর হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
তিনি আরও জানান, ‘পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আহত দুজন চালককে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সংঘর্ষের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে উত্তর প্রদেশের চালকরা সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরের গেটে অবস্থান নেয়। এতে করে সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে দুপুরে চেকপোস্টের জিরোপয়েন্টে দুই দেশের ব্যবসায়ী, পুলিশ, ট্রাক চালক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে উত্তর প্রদেশের ট্রাক চালকেরা ব্যারিকেড তুলে নেয়। এরপর দুপুর ২টা থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ট্রাক চালকদের আকস্মিক ধর্মঘটে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি বন্ধ
হিলিতে চালকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, পণ্য আমদানি শুরু
হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ ২ মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে আবারও দিনাজপুরের হাকিমপুরে হিলি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার (৫ জুন) হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ এবং সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ জানান, সরকারের অনুমতির সঙ্গে সঙ্গে দিনাজপুরের হাকিমপুরে স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, দীর্ঘ আড়াই মাস পর আজ সোমবার বিকাল পৌনে ৬ টার দিকে ৪০ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজবাহি ২টি ট্রাক হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা ল্যান্ডেপার্টে প্রবেশ করেছে।
তিনি আরও জানান, সোমবার দুপুরে ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র হাতে পার হিলির সততা বাণিজ্যালয়, রায়হান ট্রেডার্স, এন আলম ট্রেডার্স, সালাম ট্রেডার্স, সালেহা ট্রেডার্স, বিকে ট্রেডার্স ও বিএস ট্রেডিং নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ৭ জন আমদানিকারক।
এছাড়া দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করেছিল সরকার।
তিনি আরও জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়ি থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতিপত্র পেয়েছেন কয়েকজন আমদানিকারন প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা এলসি খুলেছেন৷ এলসির পেঁয়াজ বাজারে পৌঁছালে দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
এছাড়া দুই-একদিনের মধ্যে কয়েকশ’ পেঁয়াজবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করবেন বলে আশা করছেন তারা।
অপরদিকে, সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ জানান, দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকাল থেকে পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় ট্রাক বন্দর দিয়ে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত পেঁয়াজ ভর্তি ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে।
তিনি জানান, পেঁয়াজবাহী ৫৭ টি ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ শুরু করেছে। এতে মোট ১ হাজার ৯৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। আইপি অনুমোদন পাওয়া নথিপত্র পেলেই বন্দরে ট্রাক প্রেবেশের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, ২ মাস ২০ দিন বন্ধ ছিল পেঁয়াজ আমদানি। তবে আজ সোমবার বিকালের পর থেকে স্থল বন্দরে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে সর্বশেষ গত ১৫ মার্চ পেঁয়াজ এসেছিল সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে। এরপরই বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আমদানির অনুমতি না দেওয়ায় ফের পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
হিলিতে চালকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, পণ্য আমদানি শুরু
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে সমঝোতার ফলে ভারতীয় ট্রাক চালকদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণার পর সোমবার বিকাল ৫টা থেকে বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাকে মালামাল লোড-আনলোড ফের শুরু হয়েছে এবং পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশি হিলি বন্দরে প্রবেশ করেছে তারা।
এদিকে তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে কিছু কিছু দাবি সরকারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: দেড় বছর পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
এছাড়া আকস্মিক ধর্মঘট শুরু করায় রবিবার (৪ জুন) সারাদিন এবং সোমবার (৫ জুন) বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি ভারতীয় ট্রাক চালকরা।
জানা যায়, ধর্মঘট অবসানের লক্ষ্যে রবিবার বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের কাছে চিঠিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন ভারতীয় রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
এ ব্যাপারে সোমবার দুপুর দেড়টায় হিলি সীমান্তের শুন্যরেখায় আলোচনায় বসেন দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া বিকাল ৫ টায় সমঝোতায় উপনীত হন তারা।
বাংলাদেশের হিলির সিএনএফ অ্যাসোসিয়েনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, আলোচনায় ভারতীয় ট্রাক চালকদের কিছু যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়েছেন তারা। বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আসা চালকদের পণ্য খালাস শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বন্দরে অবস্থানকালীন সময়ে পানীয় জলের, থাকা খাওয়া বিশ্রামের সুব্যবস্হাসহ বন্দরের অভ্যন্তরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কেনাকাটার সুবিধার্থে দোকানের ব্যবস্হা রাখার দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও ২ ঘন্টার জন্য বন্দরের বাইরে লোকালয়ে অবাধে চলাচলের অনুমতি চাইছে ভারতীয় ট্রাক চালকরা।
এ বিষয়টি সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্টদের আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তীতে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
আলোচনায় বাংলাদেশের হিলির আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ এবং হিলির সিএনএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটনসহ অন্যান্যারা উপস্হিত ছিলেন।
অন্যদিকে ভারতীয় হিলির এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক জোয়ারদার, সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন মণ্ডল, ভারতীয় ট্রাকচালক সংগঠনের নেতাসহ সংশ্লিষ্টরাসহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।
সমঝোতার উপনীত হওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিক ভাবে সোয়া ৫ টার দিকে পণ্যবাহী একাধিক ট্রাক হিলির বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্টে প্রবেশ করেছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে যথারীতি পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক অবস্হায় ফিরবে বলে আশা করছেন দুই দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি শুরু
১০ মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু
ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বিকল, ৪ ঘণ্টা পর হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্টে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় একটি ট্রাক রাস্তার ওপর বিকল হয়ে পড়ায় প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পরে ট্রাকটিকে সচল করা হলে এই বন্দর দিয়ে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুপুর সোয়া ২টায় ভারত থেকে আমদানিকৃত গমের ভূষিবোঝাই একটি ট্রাক বাংলাদেশের দিকে রওনা দেয়।
আরও পড়ুন: বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
এসময় ভারতীয় ট্রাকটি হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্টের কাছাকাছি আসলে রাস্তার ওপর বিকল হয়ে পড়ে। ফলে স্থলবন্দরের রাস্তাটি একমুখী হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানিকৃত কোন পণ্যবাহী ট্রাক আসা-যাওয়া করতে না পারায় দুই অংশে বহু ট্রাক আটকা পড়ে।
এতে করে দুপুর সোয়া ২টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত এই পথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে ট্রাকটিকে সচল করা হলে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা পর পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়। এতে কিছুটা হলেও বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর ‘পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের’ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্যবাহী ৬৬টি ট্রাক পানামা পোর্টের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
তিনি বলেন, এরপর আর আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করেনি। স্থলবন্দরের গেট থেকে ৪/৫ গজ ভারত অংশে একটি গমের ভূষির ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, একারণে বন্ধ থাকার সাড়ে ৩টা ঘন্টা পর আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এতে বন্দর দিয়ে সাময়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এদিকে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ট্রাক হঠাৎ দুপুরের দিকে আসা বন্ধ হয়ে যায়। খবর নিয়ে জানতে পারি বন্দরের গেটের ভারত সাইডে একটি ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ট্রাকটি সচল হলে আবার কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ২ দিন পর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি শুরু
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র আগমন উপলক্ষে বেনাপোলে ২ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি। ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের শুন্যতায় হু-হু করে বাড়ছে দেশি পেঁয়াজের দাম।
ঈদের পর থেকে কয়েকদফা দাম বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের।
এছাড়া দাম বেড়ে কোথায় গিয়ে ঠেকবে এই দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
বন্দরের আমদানিকারকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৯ মে) বিদেশ সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এরপর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা
আবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকেও মিলেছে সুখবর।
এদিকে বন্দরের মোকামের গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় কোনো কোনো গুদামে তালা ঝুলছে, আবার কোনটা খুলে অলস সময় পার করছেন কেউ। এছাড়া ভাড়া করা গুদাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে।
সোমবার সকালে বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে খুচরা ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শনিবারও একই পেঁয়াজ ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি ছাড়া ভিনদেশি কোনো পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।
বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মঈনুল হোসেন জানান, এখানে দেশি পেঁয়াজের কোনো মোকাম নাই। আমরা দক্ষিণাঞ্চল থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনে আনি। বর্তমানে ভারতের পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঈদের আগে ৩০-৩৫ টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে। এখন কেজিতে অন্তত ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। আমরা ৫০-৫২ টাকা পাইকারী দরে কিনছি।
আরেক খুচরা ব্যবসায়ী শাকিল জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবর শুনলেই ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৮-১০ টাকা কমে দেয়। যখন দেখে আসছে না তখন আবার আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে। পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসলে দাম আরও বাড়বে।
ক্রেতা শফিকুল জানান, সকালে আসলে একদাম। বিকালে আসলে আরেক দাম। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মত মানুষদের এর থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। যে যার মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। পেঁয়াজের সঙ্গে অন্যান্য জিনিসপত্রেরও একই অবস্থা।
বন্দরের আমদানিকারক ও উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি দিয়েছিল।
এরপর ১৬ মার্চ থেকে দেশে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শুরু হয়। এ কারণে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
পেঁয়াজ আমদানিকারক ও হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী বিদেশ সফরে আছেন। মঙ্গলবার (৯ মে) তারা দেশে ফিরলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনিও এমন আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এই আশায় আমরা আমদানিকারকেরা গত সাত দিনে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়ীতে আবেদন করেছি।’
শহীদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আজ পেঁয়াজের দামে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হতো না। ভোক্তাদের বেশি দামে কিনতে হতো না। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলা মুশকিল।
পেঁয়াজের আরেক আমদানিকারক মো. মোবারক হোসেন বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রেখেছে। আসলে কি কৃষকেরা সঠিক মুল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারেন? লাভ তো করেন মজুদদাররা।
তিনি বলেন, দাম বাড়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে শুধু ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকার সুযোগে অসৎ ব্যবসায়ীরা এই সুবিধা নিচ্ছে। বর্তমানে ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজ আমদানি করে আনতে সবমিলে কেজিতে ২৪-২৫ টাকা পড়বে। তাই সব বিবেচনায় সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি দিবে এই দাবি করছি।
এদিকে, সোমবার দুপুরে ভারতের ব্যাঙ্গালুরের পেঁয়াজ রপ্তানিকারক কুতুব মিয়া ও দেভানসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ভারতের নাসিকসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭-১০ রুপিতে। এখানে পর্যাপ্ত পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। আমরা প্রস্তুত আছি বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে। শুনেছি বাংলাদেশে দাম বেড়েছে। এখানকার পেঁয়াজ ওদেশে (বাংলাদেশ) গেলে সেখানে দাম অনেক কমে যাবে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, শুনেছি আমদানিকারকেরা পেঁয়াজ আমদানি জন্য খামারবাড়ীতে অনলাইনে আবেদন করেছেন। সরকার হয়ত বিবেচনায় নিতে পারেন। কারণ বাজারে প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, দেশের কৃষকদের উদপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
মে দিবস উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
আজ ১লা মে দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্ত নেন।
তবে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টে যাত্রী পারাপার চালু আছে।
বাংলাহিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, আজ সারাবিশে^ আন্তর্জাতিক মে দিবস পালিত হচ্ছে। তাই পরিবহন-শ্রমিক নির্ভর আমদানি-রপ্তানি হওয়ায় এবং সরকারি ছুটি থাকায় আজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পুনরায় শুরু হবে বন্দরের সকল কার্যক্রম।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক মে দিবস আজ
বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের সহ-ব্যবস্থাপক এসএম হায়দার জানান, দিবসটির কারণে বন্দরের ওয়্যারহাউজে পণ্য উঠা-নামা সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে পানামা পোর্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শ্রমিকদের নিয়ে সকাল ১১টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দোয়া মাহফিল সহ শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আশরাফুল জানান, সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে। ফলে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সরকারি ছুটির আওতামুক্ত। তাই মে দিবসে স্থলবন্দরের কার্যক্রম সহ পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এই চেকপোস্ট ব্যবহার করে পাসপোর্ট যাত্রীরা ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ঈদের পর হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু
হিলি সীমান্তে মিষ্টি উপহার দিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
হিলি চেকপোস্টে আনসার সদস্যকে লাথি মারার অভিযোগ
দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্টে ভারতীয় অবৈধ মালামালের ব্যাগ আটক করা নিয়ে কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখার আনসার সদস্যকে লাথি মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
হিলি কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখায় কর্মরত আনসার সদস্য মাসুদ রানা জানান, ‘রবিবার দুপুর ২টার দিকে দিনার নামে এক ব্যক্তি বলেন যে ইন্ডিয়া থেকে আমার ব্যাগ আসবে তুমি আমার ব্যাগ আটক করবে না। এর কিছু পর তার ব্যাগ আসলে আমি কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখায় তল্লাশির জন্য নিতে বললে সে আমাকে অশ্লিলভাষায় গালাগালি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে যায়।’
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধভাবে কেন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া হলো এ কথা বললে দিনার একপর্যায়ে আমাকে লাথি মারলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে আমার সহকর্মীরা আমাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এব্যাপারে আমি থানায় মামলার করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
এদিকে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা সুকান্ত দাস জানান, বিজিবি কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই স্থানীয় লাগেজপার্টি দিনারসহ তার লোকজন দুপুর ২টার দিকে হিলি চেকপোস্টের জিরো পয়েন্ট থেকে ভারতীয় অবৈধ মালামালের ব্যাগ নিয়ে কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখার কাছে আসে। এসময় কর্তব্যরত আনসার সদস্য মাসুদ রানা তাদের ব্যাগটি পাসপোর্ট শাখায় নিতে বলে। তখন দিনার কাস্টমস শাখায় ব্যাগ না ঢুকিয়ে তল্লাশি ছাড়াই বাইরে দিয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ওই আনসার সদস্য অবৈধভাবে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দিনার তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সজোরে লাথি মারে। এর তিন মাস আগেও দিনার আমাকে সহ কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রাণনাশের হুমকি সহ হাত কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল।
ওই ঘটনায় দিনারের নামে দিনাজপুর আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই ব্যক্তি বারবার এই ধরনের অপরাধ করছে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বা আনসার সদস্যদের পক্ষে থানায় মামলা বা অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
তিনি আরও জানান, এর আগেও দিনারের নামে একই অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দিনারের নামে আদালতে প্রসিকিউশন মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
হিলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত: অবশেষে লাশ হস্তান্তর
হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত দুইদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজান মাস শুরু হলে আরও দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা।
সরকার কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে। ফলে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে বন্দরের মোকাম ও বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে,গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার যে পেঁয়াজ প্রকারভেদে ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল, শুক্রবার সেই পেঁয়াজ ২৬ থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে আসন্ন রমজানে আরও দাম বাড়তে পারে।
শুক্রবার সকালে বাংলাহিলি বাজারে কথা হয় ক্রেতা নুর ইসলামের সঙ্গে।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বাজারে আসলে মাথা ঠিক থাকে না। দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়না। যে যার মতো দাম বাড়িয়ে দেয়। আর আমাদের কিনতে কষ্ট হয়। রমজানে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কোন পর্যায়ে যাবে এখন থেকে বলা মুশকিল।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
আরেক ক্রেতা শামসুল আলম জানান, গত বুধবার পেঁয়াজ কিনেছি ২২ টাকায়। আজ সকালে এসে একই পেঁয়াজ ২৬ টাকায় কিনতে হলো। এখনই বাজারে মনিটরিং করা দরকার।
বাজারের খুচরা বিক্রেতা ময়নুল হোসেন জানান, হিলি বন্দর দিয়ে ভারতে থেকে পেঁয়াজ আসছে না। শুনেছি গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজানে আরও দাম বাড়বে এটাই এখন স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে গেছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রতি রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন। এবারও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সরকার গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর ১৬ মার্চ থেকে নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।
বন্দরের প্রসিদ্ধ পেঁয়াজ আমদানিকারক ও সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এবার রমজানকে সামনে রেখে আমরা আগে থেকেই পেঁয়াজের আমদানি শুরু করি, যাতে রমজানে দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে। বাজারে যেন কোনও অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু সরকার পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় দাম বাড়ছে। রমজানে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে,সেজন্য আমদানির অনুমতি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের ভারতে ৮-১০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজের এলসি করা আছে। এই পেঁয়াজ দেশে আমদানির অনুমতি দেয়া না হলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দেয়া বন্ধ রেখেছে। ১৫ মার্চ পর্যন্ত আইপি দেয়া ছিল। এখন দেশে পেঁয়াজের ভরামৌসুম। তাই নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
দিনাজপুরের হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণীর এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সাতকুড়ি রেলগেটের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওয়াজেদ ইসলাম ওয়াদুদ (১৪) রায়ভাগ গ্রামের রশিদুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় গোহাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ওয়াদুদের বাবা রশিদুল ইসলাম জানান, সকালে কিছু না খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ওয়াদুদ। সে স্কুলেও যায়নি। কি কারণে তার মন খারাপ ছিল জানি না। বেলা ১১টার দিকে লোকমুখে শুনতে পাই সে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে।
আরও পড়ুন: নগরকান্দায় ট্রেনের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
স্থানীয় পান দোকানদার আমেদ আলী জানান, সকাল থেকে ছেলেটি রেলগেট এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। ট্রেন আসার আগে সে রেলগেটের উত্তর পাশে রেললাইনের ওপর বসে মোবাইল টিপছিল। অনেকে তাকে রেললাইনের ওপর থেকে সরে যেতে বললেও কারও কথা শুনেনি। এসময় ট্রেনে কাটা পড়ে সে মারা যায়।
হিলি রেলস্টেশন মাস্টার তপন চক্রবর্তী জানান, সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা নীলফামারী গামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেলা ১১টার দিকে হিলি রেলস্টেশন অতিক্রম করে। এর কয়েক মিনিট পর খবর পাই হিলি রেলস্টেশনের অদূরে সাতকুড়ি এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক কিশোর মারা গেছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে রিকশাচালকের মৃত্যু
নেত্রকোণায় ট্রেনের ধাক্কায় সংবাদকর্মীর মৃত্যু