জাতীয় সংসদ
সংসদ ভবন এলাকায় অস্ত্র বহন ও সমাবেশ নিষিদ্ধ
একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনকে সামনে রেখে শনিবার মধ্যরাত থেকে সংসদ ভবন এলাকায় সব ধরনের অস্ত্র, বিস্ফোরক, অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ বহন এবং সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
রবিবার শুরু হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন।
শনিবার ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংসদ অধিবেশন নির্বিঘ্নে চলা নিশ্চিত করতে ডিএমপি এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন শুরু রবিবার
বিধিনিষেধের আওতায় থাকা সড়ক ও এলাকাগুলো হলো- ময়মনসিংহ রোডের মহাখালী ক্রসিং থেকে পুরাতন বিমানবন্দর হয়ে বাংলামোটর ক্রসিং, বাংলামোটর লিংক রোড থেকে হোটেল সোনারগাঁ রোড হয়ে সার্ক ফোয়ারা, পান্থপথের পূর্ব প্রান্ত থেকে ফার্মগেট হয়ে গ্রিন রোড সংযোগ সড়ক, শ্যামলী ক্রসিং থেকে ধানমন্ডি-১৮ (পুরাতন-২৭) রোডের মোড় পর্যন্ত, রোকেয়া সরণি লিংক রোড থেকে পুরাতন ৯ম ডিভিশন ক্রসিং থেকে বিজয় সরণি পর্যটন ক্রসিং পর্যন্ত, ইন্দিরা রোডের পূর্ব প্রান্ত থেকে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত, জাতীয় সংসদ ভবনের সংরক্ষিত এলাকা এবং সীমানার মধ্যে অবস্থিত সব রাস্তা ও গলিপথ।
জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: সংসদে সাধারণ আলোচনার জন্য ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
২৪ নভেম্বর সংসদে ভাষণ দিবেন রাষ্ট্রপতি
জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন শুরু রবিবার
একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন রবিবার বিকাল ৪টা থেকে শুরু হবে। এটি ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশন এবং শীতকালীন অধিবেশন নামেও পরিচিত।
সংবিধান অনুযায়ী, ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দেবেন।
রাষ্ট্রপ্রধান সংবিধানের ৭২ (১) ধারার ক্ষমতা বলে এই অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
আরও পড়ুন: শীতকালীন সংসদে গণমাধ্যমকর্মী আইন উত্থাপনের আশাবাদ তথ্যমন্ত্রীর
সংসদ সচিবালয় অনুযায়ী, অধিবেশনে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে।
এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশন শেষ হয়েছিল।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তিন বছর পূর্তি ও চতুর্থ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আগামীকাল (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
জনগণের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
স্বপ্নের পদ্মা সেতু পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ইসি নিয়ে সংলাপ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাসদ প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে চলমান সংলাপের দ্বিতীয় দিন বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
জাতীয় সংসদে অন্যতম বিরোধী দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে দলটির ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে জাসদ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান এবং আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ: বুধবার বৈঠকে বসবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল
জাসদ সভাপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনি কাঠামোর অনুপস্থিতিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশন গঠন তুলনামূলক ভালো উদ্যোগ এবং এ উদ্যোগকে তারা সমর্থন করেন। তিনি সার্চ কমিটিতে সাংবিধানিক সংস্থাসমূহ থেকে সদস্য নেয়া বাঞ্ছনীয় বলে মত দেন এবং বলেন, এমন লোককে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন যাদের মধ্যে সততা, নিষ্ঠাগুণ ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
জাসদ প্রতিনিধিদল বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গঠনই যথেষ্ঠ নয়, নির্বাহী বিভাগ যাতে নির্বাচন কমিশনের কাজে সার্বিক সহযোগিতা করে তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে স্থায়ী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে সরকারকে দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলের পরামর্শে গ্রহণযোগ্য ইসি গঠিত হবে: রাষ্ট্রপতি
জাসদ সভাপতি আশা প্রকাশ করে বলেন,অন্যান্য রাজনৈতিক দলও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন,নির্বাচন কমিশন গঠনে এখনও আইন না থাকায় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ এ কমিশন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন: জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু
কারা অর্থ পাচার করে জানি না, একটি তালিকা আমাকে দেন: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী এএইচএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, দেশ থেকে প্রকৃতপক্ষে কারা অর্থ পাচার করছেন তিনি জানেন না এবং বিরোধী দলীয় সাংসদদের অর্থ পাচারকারীদের তালিকা তাঁর কাছে দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি অর্থ পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও করেন না। আপনারা যদি একটি তালিকা না দেন তাহলে আমি কী করে জানব কারা অর্থ পাচার করছেন!’
শনিবার জাতীয় সংসদে ব্যাংকার’স বুক এভিডেন্স বিল-২০২১ এর ওপর আলোচনাকালে বিরোধী দলীয় সাংসদদের তোপের মুখে পড়ে এসব কথা বলেন তিনি।
পাবলিক আমাদের সরকারের ‘দালাল’ বলে: সংসদে জাপা মহাসচিব
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘সরকারের অতিরিক্ত প্রশংসা করায় পাবলিক এখন আমাদের আওয়ামী লীগের ‘দালাল’(সহযোগী) বলে। আমরা সেই তকমা মুছতে চাই।’
শনিবার সংসদে সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক ও পরিবহন খাতে সরকারের বিভিন্ন সাফল্য ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা না করায় বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করে বক্তব্য দিলে চুন্নু এই মন্তব্য করেন।
এর আগে মহাসড়ক বিল-২০২১ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন বিরোধী সাংসদ সাম্প্রতিক মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা, নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি এবং পরিবহন খাতে দুর্নীতির জন্য সেতুমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
সমালোচনার জবাবে ওবায়দুল কাদের বিরোধীদের শুধু বিরোধিতা নয়, সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করার আহ্বান জানান।
সেতুমন্ত্রীর এ আহ্বানের জবাবে চুন্নু বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতারা সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করেন না, এটা ঠিক নয়। সরকারের প্রশংসা করার জন্য এখন মানুষ আমাদেরকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দালাল বলে। সরকারের কত প্রশংসা করব? আমরা এখন সেই ‘দালাল’ তকমা থেকে মুক্তি পেতে চাই। তারপরও, যদি আপনারা খুশি না হন তবে কিছুই করার নেই।
শাস্তির বিধান রেখে মহাসড়ক বিল-২০২১ পাস
প্রস্তাবিত আইন লঙ্ঘনে জেল-জরিমানাসহ শাস্তির বিধান রেখে শনিবার জাতীয় সংসদে মহাসড়ক বিল-২০২১ পাস হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিল উত্থাপন করেন এবং কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
এর আগে ‘মহাসড়ক আইন-১৯২৫’ নামে একটি আইন ছিল যেখানে মাত্র পাঁচটি ধারা রয়েছে যা মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও নির্মাণের জন্য অপর্যাপ্ত।
প্রস্তাবিত আইন লঙ্ঘনে কমপক্ষে দুই বছরের জেল অথবা পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার কথা বলা হয়েছে।
বিলটি অনুসারে, সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কোন সড়ক বা মহাসড়কে কোন গাড়ি চলবে, কোনটি এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়ক ঘোষণা করা হবে। এগুলো কিভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন মহাসড়ক থেকে টোল নেয়া হবে।
সরকার বা সরকার মনোনীত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি মহাসড়কের উন্নয়ন, সংস্কার ও ব্যবস্থাপনা করবে এবং মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা, ড্রেন, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণ করবে।
এতে বলা হয়, সরকারকে শুল্ক প্রদানের পর আধা সরকারি ও বেসরকারি সেবা প্রদানকারীরা তাদের ইউটিলিটি সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
ফসল রাখা ও অন্য কোনো কিছু শুকানোর জন্য মহাসড়ক ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।
বিলে বলা হয়, পূর্বানুমতি ছাড়া মহাসড়কে কোনো বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, গেট বা এ ধরনের কোনো কিছু স্থাপন করা যাবে না। ধীরগতির যানবাহনকে বিশেষ লেন ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবন্ধী, শিশু ও বয়স্ক মানুষের জন্য নির্দিষ্ট ও নিরাপদ জায়গা নির্মাণ করতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বিলে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের ভাতা বাড়ানোর বিল পেশ
হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মূলধন ও সুযোগ বৃদ্ধিতে বিল পাস
সংসদের সামনে বিএনপির এমপিদের মানববন্ধন
রাষ্ট্রপতিকে তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। রবিবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান তারা।
বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, আমরা আজকে একটি অবৈধ সরকারের কাছে আবেদন করছি। কারণ কোন উপায় তো নেই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। যেখানে চিকিৎসক পরিবার এবং দলের আবেদনকে উপেক্ষা করছে সরকার। সরকার তাদের নিজের মতো চলছে। আইনমন্ত্রী পাগলের প্রলাপ বকছেন। ৪০১ ধারা নিয়ে তিনি পজিটিভ নেগেটিভ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জেলখানায় ঢুকে বেগম জিয়াকে আবার আবেদন করতে হবে।
খালেদা জিয়ার বাড়িকে সাবজেল ঘোষণা করে তাকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়া যেখানে আছেন সেখানেই সাবজেল ঘোষণা করা হোক। সেখান থেকেই তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশ নেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। সরকার চাইলে তাকে ২৫ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে পারে। আইনমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশ থেকে ডাক্তার আনার অনুমতি তিনি দিতে পারেন। পৃথিবীতে চিকিৎসাব্যবস্থা তো সহজ হয়ে গেছে। আমাদের ডাক্তাররা যা বলছে ইংল্যান্ডের ডাক্তাররাও তাই বলছে। সমস্যা তো হলো চিকিৎসা। দরকার লজিস্টিকস, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট। ম্যাডামের যে অবস্থা এদেশের ট্রিটমেন্ট নেই। তার যে সার্জারি লাগবে সেই সার্জারি ইকুইপমেন্ট কোথায়? আইনমন্ত্রীকে বলতে চাই, এর মধ্যে একটা কাজ করেন আপনি জাহাজে করে একটি হাসপাতাল এ দেশে নিয়ে আসুন।
এই সাংসদ বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার বক্তব্য শুনে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি না নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে চাই আপনি আপনার নিজস্ব ক্ষমতাবলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। কারণ আপনাকে সেই সাংবিধানিক ক্ষমতা দেয়া আছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য ৫ দলের আবেদন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক
চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদদ হারুনুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি জায়গা উপনীত হয়েছে যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন, একেবারে অনুপস্থিত। সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন এর জন্য আজকে সত্যিকার অর্থেই আমার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই, প্রতিবাদ করার ভাষা নাই। একথা কি সুষ্ঠুভাবে প্রমাণ করে না প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া না পাওয়া।
তিনি বলেন, একজন আইনমন্ত্রী সিনিয়র ল ইয়ার। তিনি আইনের যে ব্যাখ্যা দেন সেটা এদেশের সাধারণ মানুষ প্রত্যাশা করে না। হঠাৎ করে তিনি বলছেন, বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার সুযোগ দিবেন। আমরা তো বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার জন্য দাবি জানাইনি।
হারুন বলেন, ১৯৯৬ এবং ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই সরকার এযাবতকালে ৩০ জনের অধিক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করেছে। বেআইনিভাবে আইনের বরখেলাপ করে খুনের আসামি, ইয়াবা সম্রাট, মানবপাচারকারী, টাকা পাচারকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়ভাবে সরকার জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন: চিকিৎসক
তিনি বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। এর ব্যতিক্রম আমরা অন্য কোন কিছুই মানবো না। আপনারা আমাদেরকে বাধ্য করবেন না সংসদ থেকে বেরিয়ে যেতে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ও বিএনপির বিরোধীদলীয় হুইপ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আপনারা জানেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার আবেদন করা হয়েছে। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি যখন কারাগারে জান তিনি পায়ে হেঁটে গেছেন। কিন্তু গত তিন বছরে তার কি হাল হয়েছে এটা দেশের মানুষ জানে। এর দায় এই সরকারকে নিতে হবে। কারণ গত তিন বছরে তিনি দল, পরিবার এবং নিজের হেফাজতে ছিলেন না। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের হেফাজতে।
তিনি বলেন, আমরা দেখি সামান্য একটু হাঁচি, কাশি, সর্দি চিকিৎসার এমনকি রুটিন চেকআপের জন্য রাষ্ট্রপতি জার্মানি, ইংল্যান্ডে যান। কিন্তু আমাদের সরকার দলীয় এমপিরা আমাদের শোনায় উনার বেস্ট চিকিৎসা নাকি বাংলাদেশে হচ্ছে। বাংলাদেশে যদি সেরা চিকিৎসাটা হতো তাহলে কেন আমরা দেখি অতি সাধারণ মানুষও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিকিৎসা জন্য ছুটে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি: ফখরুল
রুমিন বলেন, গত তিন বছরে বেগম জিয়ার উপর নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাকে কোন প্রকার ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়নি। যদি তিনি তার অসুখের চিকিৎসা করাতে পারতেন, সরকার যদি সেই সুযোগ দিতো তাহলে আজকে তার এই অবস্থা হয় না। বেগম জিয়ার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ৪০১ ধারায় সরকার যে কোন ব্যক্তিকে সাজাপ্রাপ্ত বা সাজাপ্রাপ্ত নয় তাদেরকে শর্তযুক্ত বা শর্তহীনভাবে দণ্ড মওকুফ করতে পারে কিংবা দন্ড স্থগিত করতে পারে। এ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সরকার দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে। কিন্তু এখন আইনমন্ত্রী বলছেন, ওনাকে কোন ভাবে তার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার সুযোগ নাই। এটা একেবারেই ডাহা মিথ্যা কথা এবং আইনের অপব্যাখ্যা। আইনের ভুল ব্যাখ্যা। আমি একজন আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, ৪০১ এর ক্ষমতাবলে সরকার যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি আইনের শাসন থাকতো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতো, দেশে সুশাসন থাকতো তাহলে কোর নির্বাহী আদেশের প্রয়োজন হতো না। বহু আগেই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হতেন। জামিনে মুক্ত হতে যে শর্তগুলো প্রয়োজন- সামাজিক অবস্থা, তার বয়স, তার শারীরিক অবস্থার যেকোনো একটি বিবেচনায় তিনি জামিন লাভের যোগ্য। আমরা যেটা দেখলাম এই ফ্যাসিস্ট সরকার তার জামিন দেয়া দূরের কথা একটার পর একটা মামলা বাড়িয়ে চলছে। আজকে আমি সরকারকে আহ্বান জানাব অবিলম্বে ৪০১ ধারায় বেগম জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। কারণ সরকার জানে তারা চাইলেই এ ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার, বগুড়া ৪ আসনের মোশাররফ হোসেন, চাপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোমবার বিএনপির সমাবেশ
হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কপোরেশনের মূলধন ও সুযোগ বৃদ্ধিতে বিল পাস
জাতীয় সংসদে ‘হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন বিল (সংশোধনী) ২০২১’ পাস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল এটি সংসদে উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়।
১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে মূল আইনটি জারি করা হয়।
সংশোধনীর পর বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) অনুমোদিত মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা। মূলধন বৃদ্ধির ফলে এখন থেকে বিএইচবিএফসি’র পরিষেবা আরও বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাবিত বিলে কর্পোরেশন থেকে ঋণ নেয়ার সময় মিথ্যা তথ্য প্রদানের শাস্তি আরও কঠোর করা হয়েছে।
কর্পোরেশন থেকে ঋণ নেয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য পাঁচ বছরের জেল বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা দুই বছরের জেল বা দুই হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পেশ
লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ বিজ্ঞাপন বা প্রসপেক্টাসে কর্পোরেশনের নাম ব্যবহার করলে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।এর আগে উক্ত অপরাধে বিদ্যমান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন আদেশ ১৯৭৩-এ শাস্তি ছিল ছয় মাসের জেল বা মাত্র একহাজার টাকা জরিমানা।
প্রস্তাবিত বিলে 'ঋণ খেলাপি','কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান','পরিচালক'সহ কিছু শব্দ যুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য আইনের তুলনায় এটিকে অগ্রাধিকার দিতে বিলে একটি ‘স্থগিতকরণ ধারা’ যুক্ত করা হয়েছে।
এটি পরিচালনায় তিন বছরের জন্য সাত সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। কমিটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত করবে সরকার ।
আরও পড়ুন: কঠোর শাস্তির বিধান রেখে সংসদে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল’
জাতীয় আর্কাইভে কোন রেকর্ড নষ্ট করা যাবে না, সংসদে বিল পাস
বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি পেতে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন সরকার বিবেচনা করবে যদি তিনি কারাগারে গিয়ে নতুন করে আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া আবেদন নিয়ে নতুন করে আর কোনো আদেশ দেয়া যাবে না। তিনি কারাগারে গিয়ে আবার আবেদন করলে আমরা বিবেচনা করব। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মতে, এই পরিস্থিতিতে কোনো নতুন আদেশ বিবেচনার সুযোগ নেই।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের আলোচনার সময় বিএনপির সাংসদ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আলোচনার সময় খালেদার জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি করেন রুমিন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মতে খালেদা জিয়াকে এ সুযোগ দেয়ার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ: মির্জা ফখরুল