শিল্প-ও-সংস্কৃতি
৩ দিনব্যাপী বৈসাবি উৎসব শুরু আজ
করোনার কারণে দুই বছরের মলীন উদযাপনের পর মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির পার্বত্য জেলায় বসবাসকারী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী নববর্ষ উৎসব ‘বৈসাবি’।
'বৈসাবি' শব্দটি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈশুক, মারমাদের সাংগ্রাই এবং চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু উৎসবের বাংলা সংক্ষিপ্ত রূপের সংমিশ্রণ।
দুই জেলার চাকমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সদস্যরা তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিজু উৎসবের প্রথম দিন 'ফুল বিজু'তে চাঙ্গি নদী ও বিভিন্ন খালে ফুল বিসর্জন করেন।
ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে যুবতী ও শিশুরা সকালে নদীতে ফুল ডুবিয়ে মা গঙ্গার কাছে আশীর্বাদ কামনা করেছে। এসময় করোনা এবং আগের বছরের সমস্ত হতাশা ও দুঃখের দ্রুত অবসানের জন্য প্রার্থনা করা হয়।
প্রতি বছর, রাঙামাটিতে বসবাসকারী ১৩টির মতো জাতিগত সম্প্রদায় বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু, জল উৎসব এবং বাংলা নববর্ষের মতো উৎসব উদযাপন করে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ৫ দিনব্যাপী বৈসাবি মেলা আয়োজন
উৎসবের আগে রাঙামাটিতে ৫ দিনব্যাপী মেলা শুরু হয় ৫ এপ্রিল থেকে, যেখানে বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৩ এপ্রিল, 'মুল বিজু', 'বৈশু' বা 'বিশু' নামে পরিচিত উৎসবের দ্বিতীয় দিন। উৎসবের মূল আকর্ষণ হল 'পাচন' নামে একটি দেশীয় খাবার যা প্রতিটি বাড়িতে রান্না করা হয়।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের দিন ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে মারমা সম্প্রদায়ের ‘জলকেলি’ নামে তিন দিনব্যাপী পানি নিক্ষেপ উৎসব।
জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নে এবারও আয়োজন করা হয়েছে জমকালো জলকেলি উৎসব।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার পেলেন ড. আতিউর রহমান
বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার পেলেন ড. আতিউর রহমান
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার ২০২১ পেয়েছেন।
রবিবার এ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক নুরুন্নাহার খানম।
আতিউর রহমান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির স্বাতন্ত্র্য ও আভিজাত্যের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছেন। বাঙালির নান্দনিক চর্চাকেও তিনি এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ ব্যক্তি
ড. আতিউর বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ শুধু একজন লেখকই নন, একজন মহান অর্থনীতিবিদও। তিনি কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের কথা অনবরত বলেছেন।
তিনি সমাজের বঞ্চিত মানুষকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আত্মনির্ভরশীলতার পথ খুঁজেছেন। তাই তার আর্থ-সামাজিক চিন্তাধারাকে আরও তুলে ধরতে হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলা ভাষাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার ও ফেলোশিপ প্রদান
বাংলা একাডেমির ‘গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার’ ঘোষণা
রাঙামাটিতে ৫ দিনব্যাপী বৈসাবি মেলা আয়োজন
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠির প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক-সাংগ্রাই-বিজু- বিষু (যা বৈসাবি নামেই বেশি পরিচিত) উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপি মেলা ও উৎসব শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তন প্রাঙ্গনে যৌথভাবে বৈসাবি মেলার উদ্বোধন করেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ব্রিগেড কমান্ডার ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড ব্রি, জে, মোহাম্মদ ইমতাজ উদ্দিন, এনডিসি, পিএসসি, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক রেমলিয়না পাংখোয়া।
আরও পড়ুন: বড়দিন: রাঙামাটির খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ
‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেড’ কনসার্টে বৃষ্টির বাগড়া
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেড’ কনসার্টে বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ২৪ এ কনসার্টটি সরাসরি দেখানো হচ্ছে।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে কনসার্ট বন্ধ রাখা হয়। সোয়া ৭টার দিকে এটি পুনরায় শুরু করা যায়নি।
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন কয়েক হাজার দর্শক। এই ইভেন্টের টিকিটের মূল্য ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গোল্ড এবং প্লাটিনাম টিকিটধারীরা মূল মঞ্চের সামনের মাটিতে জায়গা পেয়েছেন। গোল্ড ও প্লাটিনামের টিকিটধারীদের প্রায় সবাই বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শেরে-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ভারতীয় একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এ.আর.রহমানসহ মমতাজ বেগম এবং মিউজিক্যাল গ্রুপ মাইলস অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবেন।
পড়ুন: ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’: আজ থেকে টিকিট বিক্রি শুরু
‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’: আজ থেকে টিকিট বিক্রি শুরু
মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানটি পরিদর্শন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এ উপলক্ষে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব ‘সেলুলয়েডে বঙ্গবন্ধু’
অনুষ্ঠানে মমতাজ বেগম এবং মিউজিক্যাল গ্রুপ মাইলসসহ বাংলাদেশি তারকাদের সঙ্গে পারফর্ম করবেন ভারতীয় একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এ.আর.রহমান। তিনি ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
আগামী ২৯ মার্চ মঙ্গলবার শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই সংগীতানুষ্ঠান। আসন বিন্যাসের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠানের টিকিটের দাম পড়বে এক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
২৮ এবং ২৯ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সেলিং পয়েন্টে টিকিট পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: ৫০ ব্যান্ডের এক গান
৫০ ব্যান্ডের এক গান
প্রতীক্ষার শেষে প্রকাশ হলো বাংলাদেশের শীর্ষ ৫০ ব্যান্ডের অংশগ্রহণে দেশাত্মবোধক গান ‘প্রিয় বাংলাদেশ’। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) উদ্যোগে ৫০ ব্যান্ডের দুই শতাধিক সদস্যদের সম্মিলনে তৈরি হয় বহুল আলোচিত এই গান। যা ইউটিউবে উন্মুক্ত হয় ২৭ মার্চ (রবিবার)।
একসঙ্গে ৫০ ব্যান্ডের অংশগ্রহণে এমন উদ্যোগ বিশ্বে বিরল উদাহরণ।
এ বিষয়ে বামবা’র সভাপতি হামিন আহমেদ বলেন, ‘৫০ ব্যান্ডের অংশগ্রহেণ এক গানের ইতিহাস হয়তো বিশ্বের আর কোথাও নেই। এটি মাতৃভূমির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এমন উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে অবশ্যই আনন্দিত। এমন মুহূর্তে আমাদের অনেক অগ্রজকে মনে পড়ছে।’
‘প্রিয় বাংলাদেশ’ গানটি প্রকাশ হয়েছে টিএম রেকর্ডসের ব্যানারে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস জানান, এ গানটির মধ্য দিয়ে সূচিত হল ‘টিএম রেকর্ডস’-এর নতুন আরেকটি গন্তব্য ‘টিএম রকস’।
তিনি বলেন, ‘টিএম রকস’ দেশের ব্যান্ড সংগীতের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করতে চায়। আন্তর্জাতিক মানের নতুন গান প্রযোজনা করে দেশের ব্যান্ডসংগীতকে বিশ্বের কাছে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরতে চায় টিএম রকস।’
শাহান কবন্ধের কথায় ও নকীব খানের সুরে ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মানাম আহমেদ। নারায়ণগঞ্জের ওসমানী স্টেডিয়ামে গাজী শুভ্র এর পরিচালনায় গানটির ভিডিও চিত্রায়িত হয়।
পড়ুন: অস্কার ২০২২:সেরা অভিনেত্রী জেসিকা চ্যাস্টেইন
অস্কার ২০২২:সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম 'ড্রাইভ মাই কার'
৩ দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব ‘সেলুলয়েডে বঙ্গবন্ধু’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন নিয়ে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য, প্রামাণ্যচিত্র ও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে আগামী ২৭ মার্চ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে শুরু হচ্ছে সেলুলয়েডে বঙ্গবন্ধু শিরোনামে চলচ্চিত্র উৎসব।
তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজনে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম মুভমেন্ট। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সহযোগিতায় সেলুলয়েডে বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র উৎসবের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে এস এস কমিউনিকেশন।
শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম মুভমেন্টের সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক দিলদার হোসেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুরু
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্কুল -কলেজের শিক্ষার্থীরা উৎসবে বিনা টিকেটে শুধুমাত্র আইডি কার্ড দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর উপর নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো দেখার সুযোগ পাবেন। আর দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। যা দিয়ে একদিনে প্রদর্শিত সবগুলো চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ থাকছে।
২৭ মার্চ সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ দিলাম আর্কাইভ মিলনায়তনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ২৭ মার্চ উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রদর্শিত হবে চলচ্চিত্র টুঙ্গি পাড়ার মিয়া ভাই,চিরঞ্জীব মুজিব,বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ও তোমারই হোক জয়।
উৎসব চলবে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ১০০ যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির যাত্রা উৎসব
সিলেটে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুরু
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ১৫তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব (সিলেট বিভাগীয় পর্ব) শুরু হয়েছে। চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) পর্যন্ত দুই দিনব্যাপী এই চলচ্চিত্র উৎসব চলবে।
চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিদিন বেলা ১১টা, দুপুর ২টা, বিকাল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মোট ৪টি প্রদর্শনী হবে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখানো হচ্ছে। উৎসবের সব প্রদর্শনীতে অভিভাবক, শিশু-কিশোরসহ সবার জন্য বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার থাকছে।
‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’ স্লোগানে গত ৫ মার্চ এ উৎসব শুরু হয়েছে। ৫ থেকে ১১ মার্চ ঢাকা বিভাগের উৎসব চলে। খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উৎসব ইতোমধ্যে সফলভাবে আয়োজিত হয়েছে। বুধবার থেকে সিলেটের সাথে সাথে একই সময়ে ময়মনসিংহেও বিভাগীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সব শেষে হবে চট্টগ্রাম বিভাগের উৎসব।
‘চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি, বাংলাদেশ’ এবং সরকারের ইলেক্ট্রনিক স্বাক্ষর সার্টিফিকেট প্রদানকারী নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এ আয়োজন করেছে। স্থানীয় সংগঠক হিসেবে আয়োজনে সহায়তা করছে শাবিপ্রবির অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘চোখ ফিল্ম সোসাইটি'।
পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ৩১ মার্চ
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’ পেলেন রঞ্জনা বিশ্বাস
‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৮’-এ ভূষিত হলেন প্রাবন্ধিক-গবেষক রঞ্জনা বিশ্বাস। মঙ্গলবার বিকাল ৪.৩০মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক-প্রাবন্ধিক আকিমুন রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন অনন্যা-সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে রঞ্জনা বিশ্বাসের ওপর লেখক-নির্মাতা ও সাংবাদিক তাপস কুমার দত্ত নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের পরিবেশনা দিয়ে। আলোচক আকিমুন রহমান বলেন, বেদেরাও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের কাহিনির শেষ নেই। কিন্তু আমরা সেটা মানি না। রঞ্জনার গবেষণায় আমরা বেদেদের কথা জানতে পারি। মুক্তিযুদ্ধে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অবদান ও আত্মত্যাগের কথা জানতে পারি। বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকিবাহীদের জীবন ও অনালোচিত সেই ইতিহাসও আমাদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। তিনি লোকগীতি, লোকসঙ্গীতের কথাগুলোও তুলে ধরেছেন।তিনি আরও বলেন, রঞ্জনা শুধু গবেষক না, সৃজনশীল লেখকও। তিনি একাধারে কবি ও ঔপন্যাসিক। তার কবিতা ও উপন্যাস পড়ার সময় আমি অভিভূত হয়ে যাই। তিনি এক্ষেত্রে আলাদা করে পুরস্কৃত হওয়ার যোগ্য।সভাপ্রধানের ভাষণে তাসমিমা হোসেন জানান, রঞ্জনা বিশ্বাস নতুন প্রজন্মের লেখক। তার দেখার দৃষ্টিও অনন্য। তিনি বাংলাদেশের অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়ে দিচ্ছেন। একবিংশ শতকে এসে মানুষ হিসেবে সমাজের এই শ্রেণিভেদ ভেঙে দিতে চাই আমরা। রঞ্জনা লোকধর্ম ও লোকায়াত জীবন নিয়ে কাজ করে সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আমাদের কাছে। অনন্যা কখনো বয়স দিয়ে মানুষের যোগ্যতা বিচার করে না। রঞ্জনাকে তাই পুরস্কৃত করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছে অনন্যা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে দু’দিনব্যাপী শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব শুরু
সুনামগঞ্জে দু’দিনব্যাপী শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব শুরু
মানুষ যদি হতে চাও কর মানুষের ভজন, স্বাধীন বাংলা স্বাধীন হবে, সুখে রবে বাংলা মায়ের সন্তান, কোন মেস্তোরি নাও বানাইল কেমন দেখা যায়, কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি, জ্ঞানী-গুণী সবাই বলেন মুক্তি আসে মানবতায়-এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম।
হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের কালনী নদী ঘেষা উজান ধল গ্রামে বাউল সম্রাটের ১০৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী লোক উৎসব।
মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে বুধবার সারারাত পর্যন্ত চলবে এই লোক উৎসব। দেশ-বিদেশের বাউল প্রেমী শাহ আব্দুল করিমের ভক্তদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে উজান ধল গ্রামটি। গ্রামের মাঠের চতুর্দিকে শতাধিক দোকানী বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী নিয়ে বসেছে মেলা। শিশুদের বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে দোলনা ও হরেক রকমের পণ্যসামগ্রী। রাতে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাউল শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
মেলার নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শাহ আব্দুল করিম পরিষদ ও ধল গ্রামবাসীর উদ্যোগে দু’দিন ব্যাপী গ্রামের মাঠে প্রতিবছরের মতো এবারও লোক উৎসব উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শাহ আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি ও আব্দুল করিমের ছেলে শাহ নূর জালালের সভাপতিত্বে এবং আপেল মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় এই দু’দিনব্যাপী লোক উৎসবের উদ্বোধন করেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল আহমদ, দিরাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী,তাড়ল ইউপি চেয়ারম্যান মো.আলী আহমদ, কুলজ্ঞ ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন, বিশ্বনাথ উপজেলা আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি মো.আব্দুল হাই, বাউল শিল্পী আব্দুর রহমান, বাউল সিরাজ উদ্দিন প্রমুখ।
১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দিরাইয়ের উজান ধল গ্রামের এক গরীব বাবার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন করিম। তিনি তার জীবদ্দশায় দুই হাজারের মতো গান রচনা করেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও তিনি রাখাল রাজা হয়ে তার দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা আর মেধা দিয়ে তিনি অজোপাড়া গায়ের গোচারণ ভূমিতে বসে বসে অসংখ্য কালজয়ী গান রচনা করেছেন। ক্রমান্বয়ে তার গান বর্হিবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।পরবর্তীতে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন এই বাউল সম্রাট।
এ ব্যাপারে শাহ আব্দুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, অন্য বছরগুলোতে কোনো কোনো প্রতিস্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করলেও এবার কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে আমার বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে আমাদের গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সাধ্যমতো এবারো লোক উৎসব করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি পৃষ্টপোষকতা পেলে আমার বাবার গানগুলো বর্হিবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এখানে একটি সঙ্গীতালয় স্থাপন করা জরুরি। সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপন করা গেলে নতুন প্রজন্মের অনেক নতুন শিল্পী তৈরি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ ব্যাপারে তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলী আহমদ বলেন, এই হাওরপাড়ের মানুষ শাহ আব্দুল করিমের মাধ্যমেই আমাদের সুনামগঞ্জ তথা দিরাইবাসীকে লোকজন চিনেন। দেশের বিভিন্ন জায়গাতে গেলে দিরাই পরিচয় দিলেই বলেন ও তাহলে আপনারা তো করিমের এলাকার লোকজন। আব্দুল করিম আমাদের অনুপ্রেরণা। তাই করিমের গান সংরক্ষণ করা গেলে যেমন নতুন অনেক শিল্পী তৈরি হবে, তেমনি করিম আমাদের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন।
চেয়ারম্যান মো. আলী আহমদ ধলবাজার থেকে শাহ আব্দুল করিমের গ্রামের বাড়ি উজান ধল পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান সরকারের কাছে।
এ ব্যাপারে দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী জানান, সঙ্গীত বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদুর রহমান মামুন বলেন, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম একজন রাখাল রাজা ছিলেন। তিনি অসাম্প্রদায়িকতার চেতনাকে বুকে ধারণ করে বাউল গানে উৎসাহিত হন। বিশ্বমণ্ডলে একজন খ্যাতিমান গায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমেই তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।
আগামীতে শাহ আব্দুল করিমের এই জন্মবার্ষিকীতে সরকারের পৃষ্টপোষকতায় একটি সঙ্গীতালয় স্থাপনে সহযোগিতার দাবি তার ভক্তদের।