%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95
দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
বিদেশে বসে যারা দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে সেই দেশের আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার সকালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ২০ নম্বর ডিস্ট্রিক্টের হেলবেগটাসে অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের নিজস্ব কার্যালয় উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। এই এগিয়ে চলাকে থামিয়ে দিতে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এই ইউরোপ বসে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করছে।'
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি আরও বলেন, 'পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যখন বাংলাদেশের উন্নতিতে লজ্জা পাচ্ছেন তখনও বিএনপির নেতাদের চোখে উন্নয়ন ধরা পড়ে না। তারা বিদেশে পেইড এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।'
হাছান মাহমুদ বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে আরও সোচ্চার হতে হবে, বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী দেশবিরোধী তৎপরতাকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে এবং প্রয়োজনে সেসব দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।'
বাংলাদেশের সব সংগ্রাম, আন্দোলন ও সংকটে প্রবাসে নেতা-কর্মীরা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সব জায়গায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার সাধ্য কারো নেই।
রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখায় প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী এবং তাদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর নাসিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শ্যামলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম, অস্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রুহী দাস সাহা, রতন সাহা, বিল্লাল হোসেন, সাইফুল ইসলাম জসিম, সাংবাদিক সম্পাদক নয়ন হোসেন, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
'হিউম্যানিটি অ্যাট দ্য ক্রসরোডস: অটোনোমাস উইপনস সিস্টেমস অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব রেগুলেশন' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সরকারি সফরে রবিবার ভোরে ভিয়েনায় পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: দেশ থেকে অপরাজনীতি চিরতরে দূর হওয়ার প্রার্থনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মরিশাসের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
মরিশাসের তথ্য প্রযুক্তি, যোগাযোগ ও উদ্ভাবন মন্ত্রী দীপক বালগোবিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মরিশাসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে আগামীকাল খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়
বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্যের বিস্তৃতি মোকাবিলার কৌশল নিয়ে মরিশাসের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া মরিশাসের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে স্যাটেলাইট ব্যবহার নিয়ে বাংলাদেশ-মরিশাসের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বাংলাদেশে মরিশাসের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাসহ মরিশাসে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ডে সরকারি সফর চলাকালে শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্যাংককের স্থানীয় একটি হোটেলে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ব্যবসায়িক সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট থাই ব্যবসায়ীরা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল হাই, বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সব সূচকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) গ্রুপ থেকে বাংলাদেশের সফল স্নাতক হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে থাইল্যান্ডের তাৎপর্যও তুলে ধরেন। তিনি আগের দিন দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) শুরু করতে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) সইয়ের কথা উল্লেখ করেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য এবং বাণিজ্য ঘাটতি ভারসাম্যের জন্য এফটিএ দ্রুত শুরু করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে ৫ দলিল সই ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সালমান ফজলুর রহমান বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি থাই সরকারের কাছ থেকে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার উপকৃত হতে পারে বলে মত দেন এবং বাংলাদেশের পর্যটন খাতে থাই বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রতি প্রণীত অফশোর ব্যাংকিং অ্যাক্ট ২০২৪ উল্লেখ করে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বেসরকারি খাতকে সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধার আশ্বাস দেন।
বিশিষ্ট থাই গ্লোবাল সুগার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি সুটেক লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ফ্রেডেরিক বাংলাদেশ সরকারকে একটি বা দুটি বিদ্যমান চিনিকলকে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রতিনিধি বাংলাদেশে বিনিয়োগে কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি, লজিস্টিকস এবং লাইট ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের প্রণোদনার ওপর আলোকপাত করেন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা
মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে বাংলাদেশ দূতাবাসের বই অনুদান
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের একটি বহুমাত্রিক সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ সাহিত্য এবং গর্ব করার মতো ইতিহাস রয়েছে। যা দুই বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে ও সম্মিলিত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে মিয়ানমারের নতুন প্রজন্মকে জানানো দরকার।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নে পি’ত-তে অবস্থিত জাতীয় গ্রন্থাগারে বই অনুদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
এ সময় মিয়ানমারের ধর্ম ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপমন্ত্রী দাও নু মিয়া জান উপস্থিত ছিলেন।
বই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ইতিহাস, ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্যকর্ম, উৎসব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পর্যটন, গ্রামীণ উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রকাশিত শতাধিক বই লাইব্রেরিতে প্রদান করা হয়।
বইগুলো প্রদর্শনের জন্য দুটি বড় বুক শেল্ফও লাইব্রেরিতে দান করা হয়েছে যার নাম হবে ‘নো বাংলাদেশ’ কর্নার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনের উদ্যোগে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা দিবস পালিত
অনুদানের প্রতীক হিসেবে রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘দ্য আনফিনিশড মেমোরিজ’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দ্য কোয়েস্ট ফর ভিশন ২০২১’ হস্তান্তর করেন। এটি ছিল বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক নে পি ত’তে অবস্থিত মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রথম বই অনুদান।
রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি যার রয়েছে হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সংস্কৃতি। ড. হোসেন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করা আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রকৃত রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করুন: জাতিসংঘে মিয়ানমারকে বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার সঠিক পথে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হোসেন সব ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অগ্রগতির জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ‘সাংস্কৃতি বিনিময়কে’ দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেন।
দূতাবাসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারে বই অনুদানের উদ্দেশ্য সংস্কৃতি ও জ্ঞান বিনিমিয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করা, যা দীর্ঘমেয়াদে দু’দেশের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে সংস্কৃতিবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দূতাবাস শিগগিরই মিয়ানমারের জাতীয় গ্রন্থাগারের ইয়াঙ্গুন শাখায়ও কিছু বই অনুদান করবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: অটিজম সচেতনতায় দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগামী বাংলাদেশ: মিয়ানমারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত
জলবায়ু অভিযোজনে সহায়তা দ্বিগুণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু অভিযোজন কর্মকাণ্ডে সহায়তা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জার্মানির বার্লিনে চলমান পিটার্সবার্গ ক্লাইমেট ডায়লগের বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান, ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান, ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন। মন্ত্রী আগামী কপ ২৯-এ জলবায়ু অর্থায়ন সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মতামত স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনায় পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এর আগে যে সব অঙ্গীকার করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সকল কার্যক্রমে বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার: পরিবেশমন্ত্রী
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বৈশ্বিক তাপমাত্রার লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সকল দেশকে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলো এবং যাদের সামর্থ্য আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী পিটার্সবার্গ জলবায়ু সংলাপের সাইড লাইনে কপ-২৮ এবং কপ-২৯ এর প্রেসিডেন্ট, সৌদি আরবের প্রধান জলবায়ু আলোচক খালিদ এম. আলমেহেদ, স্টেট সেক্রেটারি এবং জার্মান ফেডারেল পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জেনিফার লি মর্গান, জার্মান ফেডারেল চ্যান্সেলারির স্টেট সেক্রেটারি ড. জর্গ কুকিস, মিসর, ডেনমার্কের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
তিনি কপ-২৯ এ প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার জন্য আজারবাইজানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধান আলোচক ইয়ালচিন রাফিয়েভের কাছ থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেন।
পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরীর বক্তব্য পিটার্সবার্গ ক্লাইমেট ডায়লগে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৪০টি দেশের মন্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং অনেকে মতামতকে সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে ৪০টি দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি ছাড়া আরও ছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শ্লোজ এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিযোজনে সফলতার জন্য বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি: পরিবেশমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর
যুক্তরাজ্যের হসপিটালিটি এবং ক্যাটারিং খাতে কাজ করতে চাওয়া বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ কর্মীদের জন্য ভিসার শর্ত সহজ করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) যুক্তরাজ্যের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) বাংলাদেশবিষয়ক হাই প্রোফাইল সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ পরিণত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশিদের চলমান মঙ্গল এবং কল্যাণ প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রগতিশীল পররাষ্ট্রনীতির ফলে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: বিদেশে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে মানবিক হতে হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করতে এখনো অনেক ক্ষেত্র অন্বেষণের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন নগরী ও শহরের বাংলাদেশি রেস্তোরাঁগুলো সুদক্ষ কর্মীদের অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। এ কারণে যুক্তরাজ্য ন্যূনতম বার্ষিক বেতন ৩৮০০ পাউন্ডে উন্নীত করেছে, যা অনেক রেস্তোরাঁর মালিকদের পক্ষে বহন করা কষ্টসাধ্য।
এ সময় হসপিটালিটি সেক্টরে কর্মরত ব্যক্তিদের ন্যূনতম বার্ষিক বেতনের শর্ত শিথিল করতে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দক্ষ নির্মাণ শ্রমিক এবং খামার শ্রমিক দিতে পারে- যারা যুক্তরাজ্যে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পারবে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য সরকার একযোগে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকদের জন্য রেস্তোরাঁ কর্মী, চিকিৎসক ও নার্সসহ আরও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্যে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য আরও কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য কাজ করছে।
আরও পড়ুন: প্রবাসী কর্মীদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দিতে হবে: প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে অনেক কেয়ারগিভার যুক্তরাজ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি খামার শ্রমিকদের নিয়োগও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রুশনারা আলী।
এপিপিজি অন বাংলাদেশ চেয়ার রুশনারা আলীর সভাপতিত্বে এ সংলাপে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, সংসদ সদস্য বব ব্ল্যাকম্যান এবং এপিপিজির ভাইস-চেয়ার লর্ড করণ বিলিমোরিয়া বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন যুক্তরাজ্যের উচ্চপদস্থ সংসদীয় কর্মকর্তা ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট সদস্যরা।
এর আগে ব্রিটিশ বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রতিমন্ত্রী।
একই দিনে মন্ত্রী শফিকুর পূর্ব লন্ডনে ইউকে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই) আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক সভায়ও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দিতে সবাইকে আরও আন্তরিক হতে হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী ব্রাজিল, জুলাইয়ে দ্বিপক্ষীয় সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায় দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ ব্রাজিল।
চলতি বছরের ২৮ জুলাই ব্রাজিল সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'ডিক্যাব টক'-এ কূটকনৈতিক প্রতিবেদকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস বলেন, ‘এটি একটি দ্বিপক্ষীয় সফর। প্রেসিডেন্ট লুলার সঙ্গে ক্ষুধার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি শুরু করতে পারেন তিনি এবং তারপরে তিনি পুরো অপেরা সফরের সমস্ত অনুষ্ঠানের জন্য ব্রাসিলিয়ায় যাবেন।’
তিনি বলেন, এটি ল্যাটিন আমেরিকার কোনো দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর হবে। দেশটিকে একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি এবং বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দেখা হয়।
তিনি বলেন, পারস্পরিক যোগাযোগ আরও সহজতর করতে বাংলাদেশে একটি ভিসা সেন্টার খোলার পরিকল্পনা করছে ব্রাজিল।
প্রতি মাসে তারা ২৫০ থেকে ৩০০ ভিসার অনুরোধ পাচ্ছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আমরা মনে করি, ঢাকায় আমাদের খুব সেবা তরান্বিত করা উচিত।’
তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং আমরা দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছি, কিন্তু তারা এখানে বাংলাদেশে এটা (টেন্ডার) করবে না। তৃতীয় কোনো দেশে তারা এটা করবে। কারণ যেসব কোম্পানি এ ধরনের সেবা দিচ্ছে তারা আন্তর্জাতিক কোম্পানি।’
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।
আমন্ত্রণপত্রের পর ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বৈত কর পরিহারে একটি চুক্তির প্রস্তাব ব্রাজিলের কাছে পাঠিয়েছে, যা সফরকালে সই হতে পারে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কারিগরি সহযোগিতায় মাঝেমধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের বেতনের উপর দ্বৈত কর পরিহারে একটি চুক্তির প্রস্তাব করা হয়।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার প্রথম ঢাকা সফর গত ৭ থেকে ৮ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে ব্রাজিল সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'মন্ত্রীর সফরের সময় আমরা কেবল একটি নথি সই করতে পেরেছিলাম, সেটি ছিল কারিগরি সহযোগিতার কাঠামোগত চুক্তি। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি কারণ আমাদের কাঠামোতে, এই ধরনের চুক্তি আপনাদের সবকিছু করতে দেয়। চুক্তি ব্যবহার করে আমরা অন্য এলাকায় বা প্রতিটি এলাকায় যেতে পারব। আমরা কৃষি, রাসায়নিক শিল্পে যেতে পারি, আমরা অন্য যা কিছুই চাই তা করতে পারি।’
তিনি বলেন, তারা প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিকল্পগুলোও খতিয়ে দেখছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে, কারণ চীন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে, এজন্য তারা অন্য জায়গা খুঁজছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই তারা চীনের আশপাশের দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে। তারা এখন ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় অবস্থান করছে। তারা বাংলাদেশে আছে। কিন্তু আমি যা বলছি, তা হলো তারা যখন এখানে আসে এবং তারা নিজেরাই বিষয়গুলো দেখে ব্রাজিলে ফিরে লোকদের কাছে বিষয়গুলো সম্পর্কে বলে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি মনে করি একটি ক্ষেত্রে আমরা খুব আকর্ষণীয় সহযোগিতা করতে পারি তা হলো- ইথানল।’
এটি জ্বালানি উৎপাদনেও ব্যবহার করা যাবে বলে জানান তিনি। এটি তেলের চেয়ে অনেক সস্তা। উদাহরণস্বরূপ, ব্রাজিলে, ইথানল আরও ভালো বিকল্প। সুতরাং ভারতের সঙ্গে ইথানল নিয়ে আমাদের আলোচনা রয়েছে, যা তারা তাদের নিজস্ব প্রোগ্রাম তৈরি করছে। তাই আমরা চিন্তা করেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে কেন এটা করা হবে না?
ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রাজিল থেকে জীবিত গরু পাওয়া সম্ভব, তবে প্রক্রিয়াটি 'জটিল'। তিনি বাংলাদেশে এই শিল্পের উন্নয়নে মাংস ও অন্যান্য সহায়তার প্রস্তাব দেন।
এর আগে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য ব্রাজিল সফর নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট লুলার আমন্ত্রণ এসেছে। আগামী জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাজিল সফর হতে পারে।’
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের একটি ব্যক্তিগত চিঠি নিয়ে আসেন, যা তিনি বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা
গত বছরের ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট লুলার মধ্যে বৈঠক হয়।
বৈঠকে দুই নেতা সমাজে মর্যাদা, টেকসই উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও শান্তি বিরাজমান রাখাল লক্ষ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুন্দর বিশ্ব গড়ে তোলার অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিন্ন লক্ষ্যের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ ও ব্রাজিল গ্লোবাল সাউথের অন্যতম শক্তি।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের সরকারের অভিন্ন লক্ষ্য হচ্ছে বৈষম্য হ্রাস, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং আমাদের সমাজের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।’
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সমানভাবে আশাব্যঞ্জক, যা ২০২৩ সালে প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বাণিজ্য বহুমুখীকরণের উপর জোর দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সোমবার অনুষ্ঠিতব্য এই ব্যবসায়িক বৈঠকটি তাদের উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগ এবং সুযোগের সন্ধানে উপযোগী হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া দুই দেশ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউজে প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।
‘এই বোঝার কারণে উভয় দেশই ভুগছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দুই নেতা এই সম্পর্ক গভীর, সম্প্রসারিত ও জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা যদি আগ্রহ প্রকাশ করে তবে বাংলাদেশ তাদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসামুক্ত প্রবেশ, জ্বালানি, পর্যটন ও কাস্টমস বিষয়ে সহযোগিতা এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি সই হয়েছে।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) সই হয়।
নথিগুলো হলো সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি; জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক; কাস্টমস সম্পর্কিত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র; পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র; এবং এলওআই এই বছরের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে 'নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার' হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: বিশেষজ্ঞ
যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ এ অঞ্চলে 'দায়িত্বশীলতার সঙ্গে' 'নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার' হয়ে উঠুক এবং বাংলাদেশ তার ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা দিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য ইস্যুতে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিতে সক্ষম হোক।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আইপিএস এক্সপার্ট ম্যাক্সওয়েল মার্টিন বলেন, ‘কয়েক বছরে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে এবং সেই প্রচেষ্টার অংশ হতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা আশা করব, বাংলাদেশ সরকার ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) কে বাংলাদেশের নিরাপত্তা উদ্বেগ সমাধানে সহায়তা করতে আমাদের এবং আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখবে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দূতাবাসে 'ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) এবং বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব' বিষয়ে সাংবাদিকদের জানানোর সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মার্কিন এই বিশেষজ্ঞ বলেন, একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা তাদের বিস্তৃত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি দিক মাত্র।
মার্টিন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক আমাদের দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দ্বারা চালিত। এটি ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল এবং সাধারণভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে দেখেন।
আইপিএস বিশেষজ্ঞ বলেন, 'আমরা অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে অন্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখি না। গণমাধ্যম ও কিছু লোকজনের মন্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে আমরা মাঝে মাঝে শুনি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেখে। আমি মনে করি এটি সত্য নয়।’
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে অভিন্ন স্বার্থ ও দ্বিপক্ষীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখেন।
মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বর্ধিত ও নবায়নযোগ্য সম্পৃক্ততা অবশ্যই ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ।
ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও উন্মুক্ত অঞ্চল নিশ্চিত করতে, সমৃদ্ধ করতে, সংযোগ তৈরি ও আগাম নির্ভরতা বাড়ানোসহ নিরাপত্তা জোরদার করতে চায়।
আরও পড়ুন: ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন
আইপিএস বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমরা এই সমস্ত বিষয় ঠিক করে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকব এবং পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অংশীদারিত্বের সুস্পষ্ট সুযোগ তৈরি করব।’
তিনি বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল একটি ‘ইতিবাচক ও প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি।এটি পাঁচটি সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং আন্তঃসংযুক্ত স্তম্ভ নিয়ে গঠিত।’
একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিকের প্রচারের জন্য নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত এবং বিশেষজ্ঞদের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা এই সমস্ত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখছেন।
মার্টিন বলেন, আইপিএস চীনকে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে নয়, এটি কেবল একটি দৃষ্টিভঙ্গি। সেই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে এই অঞ্চল কেমন হওয়া উচিত এবং অঞ্চলটি কীভাবে অবাধ এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, সংযুক্ত এবং সহনশীল হওয়া উচিত এবং কীভাবে এটি ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের জনগণ ও দেশগুলোকে উপকৃত করতে পারে তারা সেটি উপলদ্ধি করে।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের চীনবিষয়ক নীতি আছে। এটি ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি থেকে পৃথক এবং বিনিয়োগ, সারিবদ্ধকরণ ও প্রতিযোগিতার সঙ্গে সম্পর্কিত। চীন এই অঞ্চলে একটি প্রধান নেতৃত্বদানকারী দেশ।’
আইপিএস বিশেষজ্ঞ বলেন, তারা মানুষকে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল কী তা বুঝতে চান, কারণ কখনো কখনো এটি সম্পর্কে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততা বাড়াতে চাই। আমরা সব সময় বলে আসছি, বাংলাদেশ সরকার যত দ্রুত এগোচ্ছে আমরা তত দ্রুত অগ্রসর হতে প্রস্তুত এবং এই আলোচনা অব্যাহত রাখব।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে 'ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশের
ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক সেহেলী সাবরীন।
বৃহস্পতিবার তার নতুন দায়িত্ব সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
তার মিশনে যোগদানের তারিখ থেকে বদলির আদেশ কার্যকর হবে।
২০০৫ সালের ২ জুলাই ২৪তম বিসিএসের (পররাষ্ট্র) সদস্য হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন সেহেলী সাবরীন।
২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রথম সচিব এবং ২০১৪-২০১৭ সালে জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০২১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন সেহেলী সাবরীন।