বৈদেশিক-সম্পর্ক
‘হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে’ মার্কিন পদক্ষেপ দ. এশিয়ার জন্য ইতিবাচক নয়: ওয়াশিংটনকে দিল্লি
শেখ হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে তা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের এবং দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অজ্ঞাত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত খুশি নয় এবং এই বার্তা ওয়াশিংটনকেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের মতো ভারতও ঢাকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
আর তিন সপ্তাহ পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
তার আগে ভারতের এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে বলে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাউথ ব্লক (ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান) মনে করে, জামায়াতে ইসলামীকে 'রাজনৈতিক ছাড়' দেওয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে। উদার পরিবেশ যেটুকু রয়েছে, তা-ও আর থাকবে না।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার নিয়ে অত্যন্ত সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে হস্তান্তর করা: শাহরিয়ার
নয়াদিল্লি মনে করে বাংলাদেশে হাসিনার সরকার দুর্বল হলে তা ভারত বা আমেরিকার জন্য ভালো হবে না।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, নয়াদিল্লি একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তালেবান এখন আফগানিস্তানের ক্ষমতার শীর্ষে।
মনে করা হচ্ছে, আফগানিস্তানের নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের কথা বিবেচনা না করেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চুক্তি করেছিল এবং এখন যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে কাবুলের পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী সম্পর্কে আমেরিকার নীতিও নয়াদিল্লির জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘতম স্থল সীমান্ত রয়েছে। ফলে সে দেশের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতেও প্রভাব ফেলে।
সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে, জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হলে ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে এবং বাংলাদেশে চীনের প্রভাব অনেক বেড়ে যাবে; যা ওয়াশিংটনের কাম্য নয়।
মনে করা হচ্ছে, আমেরিকা জামায়াতকে বরাবর একটি রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামায়াতকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তুলনা করে আমেরিকা। কিন্তু বাস্তবে, জামায়াত যে উগ্র মৌলবাদী সংগঠন এবং পাকিস্তানের হাতে তামাক খায়, এ বিষয়ে নয়াদিল্লি নিঃসন্দেহ।
বাইডেন প্রশাসন শুধু বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। ওই সূত্রের উল্লেখ করে আনন্দবাজার জানায়, নয়াদিল্লি এটাকে মোটেও ন্যায়সঙ্গত মনে করে না।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের পরামর্শকে না বলেছে বাংলাদেশ: মোমেন
নতুন এই ভিসা নীতির ফলে যারা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করবে, তারা আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার পাবে না।
কূটনৈতিক শিবির মনে করে, আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে সে দেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি গ্রহণ প্রণয়ন করেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফর করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
সেখানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক বলেও বার্তা দিয়েছেন তারা।
প্রতিনিধিদলের নেতা কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে একটি ইতিবাচক বৈঠক করেছেন।
ওই বৈঠকের পরপরই তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে বলেছি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা উভয় রাষ্ট্রের জন্যই জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: ভারতের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত: জ্যেষ্ঠ এমইএ কর্মকর্তা
মাউই দাবানলে প্রাণহানিতে দুঃখ প্রকাশ করে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে ভয়াবহ দাবানলে প্রাণহানি ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান স্থানীয় সময় বুধবার(১৬ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর নিকট এই চিঠি হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘গোপন তথ্য’ কারা ফাঁস করেছে তা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি: মোমেন
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘আমি আপনার প্রতি, ও আপনার মাধ্যমে নিহত ও আহতদের পরিবার এবং এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমাদের গভীর শোক ও আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমরা আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
তিনি বলেন মাউয়ের এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা এবং এই ধরনের দুর্যোগের সময় দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাসের গুরুত্ব মনে করিয়ে দেয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ আপনার এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পাশে আছি। আপনাদের এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে সমর্থন ও সংহতি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: মোমেন
মানবাধিকার নিয়ে অত্যন্ত সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে হস্তান্তর করা: শাহরিয়ার
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টকে স্বাধীন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে হস্তান্তর করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) শাহরিয়ার আলম ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশের ৬৩ জেলায় জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ১৮তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার অন্যতম প্রধান অপরাধী রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কেন, কার নির্দেশে এবং কী উদ্দেশ্যে তারা (মার্কিন) তাকে ফেরত দিচ্ছে না তা আমরা জানি না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত সোচ্চার এবং বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু জাতির পিতার হত্যাকারীকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশিদের কষ্ট দেয় এবং হতাশ করে।
বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনি যারা এখনও পলাতক রয়েছেন তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহউদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: বিএনপির এক দফা দাবি সংবিধানের পরিপন্থী: শাহরিয়ার আলম
এদের মধ্যে নূর চৌধুরী ও রাশেদ চৌধুরীর সন্ধান পাওয়া গেছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে, অন্যায়ের অবসান ও আইনের শাসন পুনরুদ্ধার করতে হলে বিচারের রায় বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আমি আশা করি তারা অবশ্যই রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেবেন।
এর আগে বিভিন্ন অজুহাতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশে হস্তান্তর না করে তাদের আশ্রয় দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডিত খুনিদের ফেরত না দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা ওইসব দেশের জন্য লজ্জার, যদিও এটা আমাদের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থার পরিচালিত সাম্প্রতিক জরিপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ব্যাপক সমর্থন দেখা গেছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, হুমকি দেয় এমন কোনো সন্ত্রাসী দলকে তাতে স্থান দেওয়া হয়নি।
তিনি নিরাপত্তা জোরদারে সরকারি প্রচেষ্টা এবং রাজশাহী ও দেশের অন্যান্য অংশ থেকে কীভাবে জঙ্গিদের উৎখাত করা হয়েছিল তা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ার দায় সরকার নেবে না: শাহরিয়ার আলম
আগামী ৫ ও ৭ সেপ্টেম্বর হচ্ছে আসিয়ান ও পূর্ব-এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আসিয়ানের ৪৩তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৮তম পূর্ব-এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, চলতি বছরের আসিয়ান চেয়ার হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় এ সম্মেলনের আয়োজন করছে দেশটি। সম্মেলনে আসিয়ান ও ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর মধ্যে একটি সহযোগিতমূলক চুক্ত সই হবে। এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে দুই সংস্থার মহাসচিব উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন: প্রাক-নির্বাচন অপপ্রচার প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এ ছাড়া পাকিস্তানের মারিতে ৩ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত তৃতীয় ডি-৮ সম্মেলনে পর্যটনবিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ও চতুর্থ ডি-৮ সম্মেলনে পর্যটনবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-এর পরিচালক (আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ) বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। মন্ত্রী পর্যায়ের এ সভায় “ডি-৮ পর্যটন করপোরেশন ইসলামাবাদ ঘোষণা” গৃহীত হয়।
এ ছাড়াও, সভায় পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের যৌথ প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ডি-৮ ভুক্ত দেশের ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজতর করার উপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ছাড়াও, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সঙ্গে ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর পর্যটন সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অর্থায়নের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ডি-৮ সচিবালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রতি দুই বছর অন্তর ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সভা এবং নিয়মিত কর্মকর্তা পর্যায়ে বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে দেশে ফিরেছেন ৭২১ জন বাংলাদেশি: সেহেলী সাবরীন
আসিয়ান ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিতে সিঙ্গাপুরের সমর্থন চায় ঢাকা
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সুবিধার্থে সিঙ্গাপুর থেকে আরও সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে একটি সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সিঙ্গাপুরের সমর্থনও চেয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় স্থায়ী সচিব এবং সিঙ্গাপুরের আইন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব লুক গো-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি বিষয়টি উত্থাপন করেন।
তারা বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) শেষ করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
উভয় পক্ষই বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এফটিএ-এর দ্রুত সমাপ্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে তৃতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনে অংশগ্রহণকারী পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন লুক গোহ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের পরামর্শকে না বলেছে বাংলাদেশ: মোমেন
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এবং সিঙ্গাপুরের স্থায়ী সচিব লুক গোহ পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তারা দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন।
উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগের গুরুত্ব উপলদ্ধি করেন তারা। কীভাবে এই মিথস্ক্রিয়াগুলো শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখছে উভয় কর্মকর্তাই সেটির ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগের প্রশংসা করেন এবং আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করেন।
তিনি বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে উপলব্ধ সুযোগের কথা তুলে ধরেন এবং পারস্পরিক সুবিধার সম্ভাবনার ওপর জোর দেন।
মন্ত্রী বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা জোরদার করার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
স্থায়ী সচিব এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়েই এই বৃদ্ধিতে তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং আরও সম্প্রসারণের জন্য যথেষ্ট সুযোগ চিহ্নিত করেছেন।
তারা বাণিজ্য অগ্রগতি চালনা করার জন্য বেসরকারী খাতের সম্পৃক্ততা এবং উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুরকে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পারস্পরিক সুবিধার জন্য সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য (এফডিআই) প্রত্যাশা করেছেন।
বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সিঙ্গাপুরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আরএমজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া ও পাটজাত পণ্য, সিরামিক, প্লাস্টিক, বাইসাইকেল ইত্যাদি আমদানির জন্য একটি উৎস দেশ হিসেবে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানান। যা আরো ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলবে।
বুধবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে তৃতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেন এবং পাঁচ সদস্যের সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় স্থায়ী সচিব (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এবং স্থায়ী সচিব (আইন মন্ত্রণালয়) লুক গোহ।
উভয় পক্ষ প্রস্তাবিত দ্বিপক্ষীয় এফটিএ-এর পরিপ্রেক্ষিতে অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে তার কাঙ্ক্ষিত স্তরে উন্নীত করতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি শেষ করার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি সই হওয়া সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) এর অধীনে গঠিত বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের নিয়মিত কার্যক্রমের প্রশংসা করেন উভয় পক্ষ।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুর পারস্পরিক সুবিধার জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতার বর্তমান গতিতে আরও গতি যোগ করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করতে এবং বিদ্যমান পরিপূরকগুলোকে সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আট বছরেরও বেশি সময় বিরতির পরে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সংযোগ, সমুদ্র অর্থনীতি, হালাল বাণিজ্য, পর্যটন ও সংস্কৃতি, সক্ষমতা উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কৃষি, আইসিটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সহ পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিষয়গুলো ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করেছে এফওসি।
উভয় পক্ষ চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে আরও উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের গুরুত্ব উল্লেখ করেছে। উভয় পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে এফওসি সামনের দিনগুলোতে এটিকে আরও সহযোগিতামূলক, উল্লেখযোগ্য এবং অর্থবহ করার জন্য বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে আরও জোরালো ও গতি আনতে সাহায্য করবে।
উভয় পক্ষ এফওসি এবং অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়া চলাকালীন গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোতে পর্যাপ্ত ফলোআপের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে।
দুই পক্ষই কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষি গবেষণা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।
উভয় পক্ষই প্রশংসা করেছে যে বর্তমানে সিঙ্গাপুরে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরা উভয় দেশের অর্থনীতিতে প্রশংসনীয় অবদান রাখছে। সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির গতি বজায় রাখতে ওয়েল্ডার, মেডিকেল টেকনিশিয়ান, নিরাপত্তা কর্মী, উদ্যানপালক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কৃষিকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি খাতে কর্মী পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের পরামর্শকে না বলেছে বাংলাদেশ: মোমেন
প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান আদান-প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর থেকে বৃহত্তর সহযোগিতার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেন বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত প্রত্যাবাসন সম্ভব করার জন্য দ্বিপক্ষীয়ভাবে এবং আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য সিঙ্গাপুরকে অনুরোধ করেন।
তিনি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশকে দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানান।
এর আগে, বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত ডেরেক লো, সফররত সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি দলের পক্ষে, জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমারে প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়াও বনানীর কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্রিকস সম্প্রসারণ ও গ্রুপে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তটি সদস্য দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের উপর নির্ভর করে। এটা তাদের আলোচনার বিষয়। আমাদের উপর নির্ভর করে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আফ্রিকা একটি ‘উদীয়মান রাষ্ট্র’ এবং বাংলাদেশ ওই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ততটা শক্তিশালী নয়। আমরা সেখানে দুটি মিশন খুলেছি। প্রধানমন্ত্রী তাদের নির্দেশনা দেবেন (বৃহত্তর প্রচেষ্টা করার জন্য)।’
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
এর আগে, ভারত সরকোরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছিলেন, গত বছর সংশ্লিষ্ট নেতাদের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে ব্রিকস সদস্যরা অভ্যন্তরীণভাবে গ্রুপের সম্প্রসারণের পদ্ধতি, নির্দেশিকা নীতি, বৈশিষ্ট্য ও মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা ও পরামর্শ করেছে এবং সম্পূর্ণ একমত হয়েছে।
গত ৩ আগস্ট একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন উল্লেখ করেছেন, আমরা খোলা মন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। আমরা কিছু ভিত্তিহীন গুঞ্জন শুনেছি, আর তা হলো সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে ভারতের আপত্তি রয়েছে। এটি একেবারেই অসত্য।’
চীন বলেছে, ব্রিকসের সম্প্রসারণে গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে রাজনৈতিকভাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং ব্রিকসে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে মন্তব্য করে বলেছেন, ‘চীন ব্রিকস সম্প্রসারণকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ব্রিকসের বড় পরিবারে আরও সমমনা অংশীদার আনতে প্রস্তুত।’
১৯ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রুপ ব্রিকসে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের আমন্ত্রণ জানালে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলন ২০২৩: নতুন সদস্য হচ্ছে কোন কোন দেশ সেদিকেই সবার নজর
সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের আমন্ত্রণ জানালে আমরা অবশ্যই যোগ দেব। আমরা এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি (আমাদের যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে)। ব্রিকস নেতারা কিছু উদীয়মান অর্থনীতির দেশ নেওয়ার কথা ভাবছেন। এর মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ প্রায় আটটি নতুন দেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ থেকে ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় হতে যাওয়া ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কোভিড-১৯ মহামারির পর এটিই হবে সশরীরে আয়োজিত প্রথম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন।
আরও পড়ুন: ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ব্রিকস সম্মেলন-২০২৩: মডার্ন ডিপ্লোমেসি
রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের পরামর্শকে না বলেছে বাংলাদেশ: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দুই মার্কিন কংগ্রেসম্যান এড কেস ও রিচার্ড ম্যাককরমিক সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের দক্ষতা বাড়িয়ে এবং শিক্ষার ব্যবস্থা করে তাদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করতে বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা (তাদের) না বলেছিলাম। আমরা বলেছি বাংলাদেশ সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। আমাদের অন্য দেশের নাগরিকদের প্রয়োজন নেই।’
মোমেন বলেন, উন্নত জীবনের জন্য রোহিঙ্গাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে হবে। ‘আপনানা (মার্কিন) কিছু রোহিঙ্গাকে নিতে পারেন।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান মোমেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল তারা রোহিঙ্গাদের নেবে কিন্তু তারা নেয়নি।
মোমেন বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা হচ্ছে রোহিঙ্গারা যেহেতু এখানে বসবাস করছে বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন অগ্রাধিকার। আপনারা (মার্কিন) মিয়ানমারে তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য চেষ্টা করুন।’ মিয়ানমার বাংলাদেশের শত্রু নয়, তবে তাদের কিছু সমস্যা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করতে ওআইসির প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে ইচ্ছুক কিন্তু কিছু বিদেশি সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এই মুহূর্তে তাদের প্রত্যাবাসনে সমর্থন করছে না।
এর আগে ২ আগস্ট মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ তারা (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) মনে করে যে সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য ওআইসি-ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
মোমেন বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাজ করছে এমন সব স্টেকহোল্ডারের কাছ থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা মনে করেন।
মোমেন বলেন, ‘বিদেশি সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরামর্শ দেয়, আমরা যেন প্রত্যাবাসনের চেষ্টা না করি।‘
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ফিরতে ইচ্ছুক এবং মিয়ানমার সরকারও তাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন: মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে
নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশের নির্বাচনকে অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।
তিনি বলেন,‘আমাদের নীতি সবসময় একই থাকে। চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমি নির্বাচনকে বাংলাদেশের বিষয় বলে মনে করি, বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটাই আমাদের অবস্থান।’
বুধবার (১৬ আগস্ট) পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, তারা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রীকে সারাহ কুক
গত পাঁচ থেকে দশ বছরের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতায় বিশ্বাসী।
মান্নান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিবেচনা করে বাংলাদেশ চীনের উন্নয়নের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে পারে। বাংলাদেশেও এর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ভারতীয় হাইকমিশন
এর আগে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য তাদের প্রত্যাশা জানিয়েছে।
তবে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তারা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেশের জনগণ যেভাবে নির্ধারণ করবে, সেভাবেই নির্বাচন হবে।
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরো বিশ্ব এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে, তবে ভারত সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।’
ভারত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় তাদের একটি হাই কমিশন রয়েছে। এ মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আশা করি শান্তি বজায় থাকবে এবং কোনো সহিংসতা হবে না। নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: ভারতের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত: জ্যেষ্ঠ এমইএ কর্মকর্তা
বাঙালির সহস্র বছরের আকাঙ্ক্ষা ধারণ ও বাস্তবায়ন করেন বঙ্গবন্ধু: হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, বাঙালির সহস্র বছরের আকাঙ্ক্ষা ধারণ ও বাস্তবায়ন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বাংলাকে রাজনৈতিক সত্তা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: সিআইএসবি’র গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে কানাডার হাইকমিশনার
অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় উল্লেখ করে এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেছেন, ৪৮ বছর পর এ কলঙ্ক থেকে দায়মুক্তি পেতে হলে বাঙালি জাতিকে চিন্তার অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা এবং ব্যক্তিগত লোভ লালসা থেকে মুক্ত হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
হাইকমিশনার বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও চিন্তা চেতনার বিষয়ে গবেষণা ও ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং বাংলাদেশকে সারাবিশ্বে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও জাতীয়তাবাদ গঠনে সহস্র বছরে বঙ্গবন্ধু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি আরও বলেন, ত্যাগ, অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি, অভিজাত শ্রেণির ঊর্ধ্বে উঠে দেশের সব মানুষকে একত্রিত করে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা বঙ্গবন্ধুকে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। বঙ্গবন্ধুর অনন্য অবদানের জন্য বাঙালি জাতি চিরদিন তার কাছে ঋণী থাকবে।
ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদশিদের মধ্যে ড. আবেদ চৌধুরী, ড. কামাল উদ্দিন এবং ড. এজাজ মামুন বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকীসহ উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ও হাইকমিশনের সদস্যবৃন্দ।
এ ছাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এসময় জাতির পিতার স্মৃতির ওপর নির্মিত ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারত পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় ঠিকানা: ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
বাংলাদেশ ও ভারতের মুদ্রায় বাণিজ্য লেনদেন রিজার্ভের ওপর চাপ কমাবে: হাইকমিশনার