বৈদেশিক-সম্পর্ক
ইইসি’র সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ে বেলারুশের সহায়তা চায় বাংলাদেশ
ইউরেশিয়ান ইকোনমিক কমিশনের (ইইসি) সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ে বেলারুশের সমর্থন চেয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি বেলারুশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
রবিবার(১০ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও বেলারুশের মধ্যকার ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) পঞ্চম পর্বে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বেলারুশের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ইভগেনি শেস্তাকভ ফরেন অফিস কনসালটেশনে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনের জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হিসেবে বেলারুশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
উভয় প্রতিনিধিদল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে আগামী দিনগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার ও গভীর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বেলারুশের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি এবং আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বেলারুশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উভয় পক্ষই ঝুলে থাকা দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
কৃষি, শিক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং আইনি বিষয়ে সহযোগিতাসহ বাংলাদেশ ও বেলারুশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সকল গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সুইডেন ও রানার্স আপ ডেনমার্ক
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সুইডেন ও রানার্স আপ ডেনমার্ক
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে বিজয়ী দল সুইডেন ও রানার্স আপ হয়েছে ডেনমার্ক। বিজয়ী দলসহ প্রতিযোগীদের মেডেল ও পুরস্কার তুলে দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় টুর্নামেন্টের সমাপনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৩টি দেশ ও সংস্থা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ মোট ১৫টি দলের অংশগ্রহণে এই টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়। শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের পুরস্কারে ভূষিত হন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন।
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বিদেশে থেকে দেশের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে, অপপ্রচার ও উসকানি দিচ্ছে তাদের তালিকা তৈরি করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার(৯ মার্চ) রাতে আবুধাবির একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত ৮ থেকে ৯ মার্চ দুই দিনের সরকারি সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রত্যেক প্রবাসীই দেশের প্রতিনিধি এবং তাদের আচরণ দিয়ে দেশ চেনা যায়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাই আইনশৃঙ্খলাবিরোধী তৎপরতা থেকে বিরত থেকে বিদেশে দেশবিরোধী ও সরকারবিরোধী প্রচারণা বন্ধে জোরালো ভূমিকা রাখা প্রবাসীদের দায়িত্ব। বিদেশে থেকে যারা ষড়যন্ত্র করছে, অপপ্রচার করছে, দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করছে তাদের তালিকা তৈরি করুন। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
এ সময় প্রবাসীদের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী হাছান।
তিনি বলেন, সবাই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোতে মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে অসাধারণ উন্নয়ন অভিযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাংলাদেশের পুনঃনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন: সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার
বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আবুধাবি শাখার সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন তালুকদার, জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কামাল, আবুধাবিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.আবু জাফর এবং আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা বক্তব্য দেন।
এতে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন, আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম বদি, আবুধাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি শওকত আকবর, শেখ জায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খন্দকার হাবিবুল হক, ব্যবসায়ী মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীরা তাদের বক্তব্যে স্থানীয় বাংলাদেশি স্কুলগুলোতে প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা কোটা চালু, বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের পাসপোর্ট ও বিভিন্ন সেবা প্রদানের সুবিধার্থে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের স্বীকৃতি, রেমিট্যান্স প্রেরণে ভর্তুকি প্রদানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রবাসী মজুরি অনার্স বন্ড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনেরও দাবি করেন বক্তারা।
মন্ত্রী এসব বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা করুন: প্রবাসীদেরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা করুন: প্রবাসীদেরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিদেশে বসে দেশের বিরূদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার ও বিষোদগার করে তাদের তালিকা তৈরির জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) দুই দিনের সরকারি সফরের শেষদিন আবুধাবির একটি হোটেলে আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সম্বর্ধনায় মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক প্রবাসীই দেশের প্রতিনিধি এবং তাদের আচরণেই দেশ পরিচিত হয়। বিদেশে বসে দেশ ও সরকারবিরোধী প্রচারণা বন্ধে এবং প্রবাসে আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখা প্রবাসীদের দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশে বসে দেশের বিরূদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার ও বিষোদগার করে তাদের তালিকা তৈরি করুন। সরকার তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে গুরুত্বারোপ ইউএই'র পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এ সময় প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন মন্ত্রী। সবাই বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠালে দেশের অর্থনীতিতে সেটি বড় ভূমিকা রাখে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে বৈধ পথে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানান।
ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অভিযাত্রায় এগিয়ে চলেছে, মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকে গত বছরগুলোতে ভারত ও পাকিস্তানকে ছড়িয়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্ব বাংলাদেশের পুনরায় নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজের আগ্রহ পুণর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সহজীকরণের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আবুধাবি শাখা সভাপতি আলহাজ্ব ইফতেখার হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন তালুকদারের সঞ্চালনায় জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আবুধাবিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী সিরাজুল মোস্তফা বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
অন্যান্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাদা মহিউদ্দিন, আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম বদি, আবুধাবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি শওকাত আকবর, শেখ জায়েদ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক খন্দকার হাবিবুল হক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাওলানা ফজলুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ সভায় বক্তৃতা করেন।
ইউএই প্রবাসীরা তাদের বক্তব্যে স্থানীয় বাংলাদেশি স্কুলের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া, প্রবাসীদের সন্তানদের দেশে শিক্ষা কোটা চালু, প্রবাসীদের বাংলাদেশে পাসপোর্ট ইস্যু ও বিভিন্ন সেবা প্রদান সহজ করা, রেমিট্যান্স প্রেরকদের স্বীকৃতিদান, রেমিট্যান্স প্রেরণে ভর্তুকি প্রদান, প্রবাসী ওয়েজ আর্নরস বন্ড সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং মন্ত্রী সে দিকগুলোতে যত্নসহ নজর দেওয়ার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
গঙ্গা চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা চুক্তি সই করতে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির আহ্বান
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন এবং তিস্তা চুক্তি সই করার জন্য ঢাকা ও দিল্লির প্রতি গ্যারান্টি ও সালিশি ধারাসহ একটি চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি।
শনিবার(৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক যৌথ বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমেদ এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশগুলোর মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানি কেবল অববাহিকাভিত্তিক চুক্তির ভিত্তিতেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।
আরও পড়ুন: ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় নাটোরে পানি ক্রমশ বাড়ছে
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আইএফসির আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার, লেখক ও গবেষক সিরাজুদ্দীন সাথী, তমিজউদ্দীন আহমদ, আইএফসি বাংলাদেশের সহসভাপতি ড. নাজমা আহমদ এবং সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম আজাদ।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ নেপাল ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সই করা পানি চুক্তিতে নিশ্চয়তা ও আরবিট্রেশন ক্লজ রয়েছে।
ফলে সিন্ধু ও মহাকালী পানিচুক্তি পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সই করা গঙ্গার পানি চুক্তিতে শর্ত পূরণ করা হয়নি।
এই ত্রুটির কারণে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আশানুরূপ গড়ে ওঠেনি।আরও পড়ুন: বিহারে বন্যা সামাল দিতে ফারাক্কার সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত
১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মোট ৪১ দিন পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে পরামর্শ করে গঙ্গার ওপর ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে বাংলাদেশে একতরফা পানি প্রত্যাহার অব্যাহত থাকে এবং পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দেয়।
পরে ১৯৭৭ সালে ৮০ শতাংশ পানির প্রাপ্যতার গ্যারান্টি ক্লজ দিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি পানি চুক্তি সই হয়। কিন্তু এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা নবায়নের পরিবর্তে ১৯৮২ সালে গ্যারান্টি ক্লজ বাদ দিয়ে ৫ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এরপর ১৯৯৬ সালে গঙ্গার পানি বণ্টনের জন্য আবারও ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি সই হয়। ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। তাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার সাম্প্রতিক দিল্লি সফরে এসে এই চুক্তি নবায়ন এবং তিস্তার পানি চুক্তি সইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন।
এই গঙ্গা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি পায়নি। চুক্তিতে গ্যারান্টি ও আরবিট্রেশন ক্লজ না থাকায় এটি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। চুক্তির এই দুর্বলতা নবায়নের সময় দূর করতে হবে।
আরও পড়ুন: ফারাক্কার প্রভাবে ভাঙছে নবগঙ্গা-মধুমতি
২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তা নিয়ে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে তা আজও করা হয়নি।
শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর কোনো পানি বাংলাদেশে ছাড়া হয় না। পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে সামান্য পরিমাণ পানি বাংলাদেশে আসে।
অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার ফলে প্রতি বছর বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তীব্র বন্যা ও তীর ভাঙনের কারণে ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের কাছে এই নদীর উৎপত্তিস্থল। তাই নদীর প্রবাহের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন। এ পর্যন্ত তিস্তাসহ অন্যান্য অভিন্ন নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে একতরফা পানি প্রত্যাহার বেড়েছে।
এতে বলা হয়, স্বল্পমেয়াদি সুবিধার জন্য অদূরদর্শী বাঁধ দিয়ে তাদের গতিপথ পরিবর্তন করে এই প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলোকে ধ্বংস করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করুন, দুর্যোগ এড়ান: ফারাক্কা কমিটি
বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন: সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে।
ঢাকার বিজিবি সদর দপ্তরে ৫ মার্চ শুরু হওয়া সীমান্ত সম্মেলনটি জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন (জেআরডি) দলিল সইয়ের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার (৯ মার্চ) শেষ হয়েছে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতি পাঠ করা হয়।
এতে বলা হয়, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিবেচনায় রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী নীতিন আগরওয়ালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি মৌলিক উদ্বেগের পাশাপাশি চোরাচালান, মানবপাচার, অসাবধানতাবশত সীমান্ত অতিক্রম ও যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের পাশাপাশি নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, সীমান্ত হাট বৃদ্ধি, আটকে থাকা আইসিপি/এলসিপি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সমাপ্তকরণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের সময়াবদ্ধ সম্মতি প্রদানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত
গত ২২ জানুয়ারি সিপাহী মো. রইসউদ্দিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিএসএফ মহাপরিচালক আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিএসএফ ও বিজিবির সমন্বিত প্রচেষ্টায় সন্তোষ প্রকাশ করে উভয়েই সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উভয় পক্ষ যৌথ টহল, নজরদারি, জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার, যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ, আন্তর্জাতিক সীমান্তের (আইবি) পবিত্রতা সম্পর্কে সীমান্তের জনগণকে শিক্ষিত করা এবং অপরাধী বা বাসিন্দাদের আইবি অতিক্রম করা এবং সঠিক সময়ে তথ্য আদান-প্রদান করে নেওয়ার মাধ্যমে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বা আহত শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে।
উভয় পক্ষ আইবি লঙ্ঘন বা অবৈধ অতিক্রম বা অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, মানব পাচার, সীমান্ত স্তম্ভ উপড়ে ফেলা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত অপরাধ থেকে বিরত থাকার জন্য সীমান্তের জনগণকে সংবেদনশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে। সার্বিকভাবে সীমান্তের কাঙ্ক্ষিত পবিত্রতা রক্ষার আশ্বাস দিয়েছে দু'পক্ষই।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্যের লাশ হস্তান্তর
প্রতিনিধি দলের উভয় নেতা আন্তঃসীমান্ত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিষয়ে তাদের বিদ্যমান 'জিরো টলারেন্স' নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তাাৎক্ষণিক তথ্যের মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত চলাচল রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হন।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি যশোর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্য সিপাহী মো. রইসউদ্দিনের মৃত্যুতে বিএসএফ মহাপরিচালক গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তবে সিপাহী রইসউদ্দিনের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএসএফের ডিজি নীতিন আগরওয়াল সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।
সিপাহী রইসউদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, এটি মূলত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়। উভয়পক্ষের অস্পষ্টতা, কুয়াশা ও বিভ্রান্তির মধ্যে এটি ঘটেছে। ভবিষ্যতে উভয় পক্ষ থেকে ইউনিফর্ম বিজিবি ও বিএসএফ সদস্য বা বাংলাদেশ ও ভারত উভয় বেসামরিক নাগরিকের উপর যেকোনো হত্যা এড়াতে সমস্ত প্রচেষ্টা থাকবে।
বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী নিতিন আগরওয়াল বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিক।
আরও পড়ুন: স্বজন হারানোর দুঃখের গভীরতা আর কেউ অনুধাবন করতে পারবে না, যেমনটা আমি করি : বিজিবি সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী
কুয়ালালামপুরে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী ও জাতীয় দিবস উদযাপন
যথাযোগ্য মর্যাদা এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকী এবং জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শনিবার (৯ মার্চ) কুয়ালালামপুরের একটি পাঁচতারকা হোটেলে এ উপলক্ষে একটি কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কিয়ং।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এবং হাইকমিশনারের সহধর্মিণী, প্যান্ডোরা চৌধুরীর সঙ্গে কেক কাটেন এবং আনুষ্ঠানিক ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন মন্ত্রী স্টিভেন।
মালয়েশিয়ার মন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সাফল্য ও সমৃদ্ধির কামনা করেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার স্বাগত বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সকল শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ এবং 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।
তিনি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসাবে মালয়েশিয়া কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকে গভীর কৃতজ্ঞতার স্মরণ করেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক মালয়েশিয়া সফর স্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কূটনীতিক সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও ঐতিহাসিক বন্ধনের উপর ভিত্তি করে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জ্বালানি, পর্যটন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করেছে।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সহজীকরণের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে মালয়েশিয়ার জোরালো সমর্থনের গভীর প্রশংসা করেন হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও ছিল। নৃত্য পরিবেশনায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার মহাকাব্যিক সংগ্রাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়ন যাত্রা তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানস্থলে সুসজ্জিত বাংলাদেশ কর্নারে ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য ও হস্তশিল্প প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ক প্রকাশনা কর্নারে স্থান পায় যা অতিথিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্পের সচিত্র বর্ণনাসহ অডিটোরিয়ামটি সুসজ্জিত করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পর্যটন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, বিনিয়োগ এবং দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, কূটনীতিক, মালয়েশিয়ার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও চেম্বার নেতা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতাসহ সুশীল সমাজের সদস্য এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের প্রায় ৪০০ অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এ বছরের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের দিনটি রমজান মাসে পড়ায় স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ৮ মার্চ আয়োজন করে হাইকমিশন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে গুরুত্বারোপ ইউএই'র পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে গুরুত্বারোপ ইউএই'র পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে জোর দিয়েছেন।
রাজধানী আবুধাবির আল আইন শহরে মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ’র রাজকীয় প্রাসাদে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জন্য কম্প্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সই ও জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল (জেবিসি) সক্রিয় করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ গুরুত্বারোপ করেন।
সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকের শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্রটি ইউএই'র পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহকে হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সহজীকরণের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দুই জাতির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের প্রতিষ্ঠিত দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা স্মরণ করে গত ৫ দশকে ইউএই'র অভূতপূর্ব অগ্রগতির জন্য দেশটির নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য অর্জনগুলো তুলে ধরেন।
উভয় মন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পুরো বিষয় পর্যালোচনাকালে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ নতুন উদীয়মান ক্ষেত্র অন্বেষণের ওপর জোর দেন।
ড. হাছান দেশে ইউএই'র বিনিয়োগ বৃদ্ধিকল্পে মাতারবাড়ি এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন, বন্দর ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা, চট্টগ্রামে হাছান মাহমুদের নিজ এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় আধুনিক ইউএই'র প্রতিষ্ঠাতা শেখ জায়েদ ইবনে সুলতান আল নাহিয়ানকে উপহার দেওয়া জমির উন্নয়নে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সম্ভাব্য বিনিয়োগ প্রস্তাব তুলে ধরলে ইউএই'র পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর সমর্থনে চলমান বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
দুই নেতা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং চলমান গাজা যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগসহ নানা আঞ্চলিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ইউএইতে স্নাতক নার্স, কেয়ারগিভার, স্বাস্থ্যসেবা টেকনিশিয়ান, কৃষিবিদ, কৃষক ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সকল ট্রেডে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করা এবং এক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ওয়ার্ক পারমিট স্থানান্তর সহজীকরণের অনুরোধ জানালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ ইতিবাচক সাড়া দেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া শাখার মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজা সংঘাত অবসানে সম্ভাব্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সহজীকরণের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু, ভিসা পদ্ধতি সহজ এবং এক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ওয়ার্ক পারমিট স্থানান্তর সহজীকরণের প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন বিষয়ক মন্ত্রী ড. আব্দুল রহমান আল আওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে এ অনুরোধ জানান দেশটিতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার সকালে দুবাইয়ে মানবসম্পদমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের মধ্যে আমিরাতে বাংলাদেশি স্নাতক নার্স, কেয়ারগিভার, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক টেকনিশিয়ান, কৃষিবিদসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়োগের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
এ সময় বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানে কোনো বাধা নেই জানিয়ে আমিরাতের মানবসম্পদমন্ত্রী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার প্রযুক্তিচালিত চাকরির বাজারের চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষ কর্মী নিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছে।
তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মী নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া করার জন্য এআই এবং সম্পর্কিত সফ্টওয়্যার ব্যবহার সম্পর্কে জানান এবং চাকরি প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাই পদ্ধতি তুলে ধরেন।
এই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান আমিরাত-গামী কর্মীবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশি কর্মীদের প্রস্তুত করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাষা প্রশিক্ষক নিয়োগের কথাও জানান।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
বৈঠকে মন্ত্রী ড. হাছান কুয়েত সরকারের বাংলাদেশি নার্স নিয়োগের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ থেকে যোগ্য নার্স ও চিকিৎসা পেশাজীবী নিয়োগের জন্য আমিরাত পক্ষকে অনুরোধ করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকায় আসন্ন যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠকে কুয়েতি নিয়োগের মডেল পরীক্ষা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের কল্যাণমূলক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর, দুবাইয়ে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া শাখার মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে চাই: মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ দিন সন্ধ্যায় আবুধাবির আল আইন শহরের রয়্যাল প্যালেসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই দিনের সফরে মন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সেখানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে একটি কমিউনিটি মিটিংয়ে যোগ দেবেন এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মালয়েশিয়ায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করেছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
হাইকমিশনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।
পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান- মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামিম আহসান।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
ঐতিহাসিক দিনটির প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরে হাইকমিশনার তার বক্তৃতায় শুরুতে বঙ্গবন্ধু এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন। এই ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকেই স্বাধীনতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করেনি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষকে সর্বদা অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত ৭ই মার্চের ভাষণটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনুধাবন করেই ইউনেসকো ২০১৭ সালে এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’- এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর 'সোনার বাংলা' নির্মাণের স্বপ্নকে অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী একটি সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর। তার কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ একটি গতিশীল অর্থনীতি ও সম্ভাবনার দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রবাসীবান্ধব এই সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বহুমাত্রিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
আরও পড়ুন: লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা
হাইকমিশনার প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধমে রেমিট্যান্স পাঠানোর এবং সার্বজনীন পেনশন স্কীমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বৈধ পথে টাকা পাঠানো হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
আলোচনার শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধা