বৈদেশিক-সম্পর্ক
সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য সব সহিংস ঘটনা পর্যালোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র
ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বলেছেন, 'আমরা সব পক্ষকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য সব সহিংস ঘটনা পর্যালোচনা করব।
শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা এবং একটি হাসপাতাল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহায়তা করতে পেরে গর্বিত: ইউএনওপিএস’র নির্বাহী পরিচালক
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) এর নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেরা দা সিলভা শনিবার (২৮ অক্টোবর) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজিজেস অব দ্য চেস্ট অ্যান্ড হাসপাতাল (এনআইডিসিএইচ) পরিদর্শন করেছেন।
এটি বাংলাদেশের ২৯টি হাসপাতালের মধ্যে একটি, যেখানে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির (এনএমইপি) মতো অংশীদারদের সঙ্গে এবং গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য অক্সিজেন প্ল্যান্ট সুবিধা নির্মাণ করছে ইউএনওপিএস।
এনআইডিসিএইচসহ এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারা বাংলাদেশে কৌশলগতভাবে পার্টনার হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়েছিল। যাতে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করা যায়।
অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ইউএনওপিএস অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সরবরাহ সংগ্রহে সহায়তা করেছে এবং অক্সিজেন থেরাপি ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো উন্নত করেছে।
তাই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাগুলোকে কোভিড-১৯ মহামারির মতো জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে গুরুতর চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য শক্তিশালী করা হয়েছে।
এই কাজের অগ্রগতির বিষয়ে মোরেরা দা সিলভা বলেন, ‘সকলকে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য এনআইডিসিএইচ কর্মীদের আত্মোৎসর্গ অনুপ্রেরণাদায়ক। অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণসহ তার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ইউএনওপিএস বাংলাদেশকে সমর্থন করতে পেরে গর্বিত।’
এনআইডিসিএইচ-এর পরিচালক ডা. মো. খায়রুল আনাম বলেছেন, ‘আমাদের এবং সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালে অক্সিজেন থেরাপির ক্ষমতা সম্প্রসারণ কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গেম-চেঞ্জার হয়েছে।’
নির্বাহী পরিচালক ইউএনওপিএস ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন অংশীদার ও জাতিসংঘের সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম সফর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি ‘শক্তিশালী অংশীদারিত্বের’ মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ তারা।
নির্বাহী পরিচালক জানান, তারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জনগণের জন্য একটি টেকসই, স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশের ‘প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তির’ প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত
প্যালেস্টাইনের গাজায় মানবিক যু্দ্ধ বিরতির জন্য আনা প্রস্তাব দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। যদিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় মানবিক যুদ্ধ বিরতির আলোচনা সফলতার মুখ দেখেনি।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) প্রস্তাবটি পাস করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় সাড়ে ৩ হাজার শিশুসহ প্রায় ৭০০০ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ।
গত ২০ দিন ধরে নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধ বিরতির কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হলেও তা পাস হয়নি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় গাজার অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত জরুরি সেশনে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে ভোটাভুটি আহ্বান করা হলে তা দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হয়। উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ১২১টি দেশ পক্ষে, ১৪টি বিপক্ষে এবং ৪৪টি দেশ ভোট দানে বিরত থাকে।
বাংলাদেশের পক্ষে এ প্রস্তাবে ভোট দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর তিনি বলেন, ‘প্যালেস্টাইন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। তিনি এই বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্যে প্যালেস্টাইনের জনগণের ন্যায্য অধিকার অর্জনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার দৃঢ় আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ সবসময় প্যালেস্টাইনের পাশে থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।’
আরও পড়ুন: এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের আর্থিক সহায়তা অপরিহার্য: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
রাষ্ট্রদূত মুহিত আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদ বিশ্বের কোথাও শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো প্রস্তাব গ্রহণে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জরুরি সেশন অবিলম্বে আহ্বান করতে আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছি। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সব স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।’
এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ফলে অবিলম্বে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি হবে। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা হবে। সেখানে মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা অবাধে প্রবেশের সুযোগ পাবে। বিদ্যুৎ, পানি, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত হবে। হাসপাতালগুলো যাতে আহত ও অসুস্থ নাগরিকদের সেবা দিতে পারে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে। একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
শক্তিশালী কয়েকটি দেশ মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নির্বাচনকে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কারো নাম উল্লেখ না করে শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এটা ‘লজ্জাজনক’ যে কিছু দেশ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করে।
তিনি বলেন, ‘শক্তিশালী কয়েকটি দেশ নিজেদের ক্ষুদ্র জাতীয় স্বার্থ হাসিল করার জন্য কিছু দেশকে বাছাই করে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সুশাসন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, গুমকে তাদের শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যা দেশগুলোর মধ্যে আস্থা ও সংহতি হ্রাস করছে, বর্তমানে এটি সব সংকটের মধ্যে বড় সংকট।’
এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোমেন বলেন, মজার ব্যাপার হলো বিদেশে অবস্থানরত কিছু অসন্তুষ্ট বাংলাদেশি এবং কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের অর্থ দিয়ে দেশ-বিদেশে মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচারের মাধ্যমে তাদের এই ক্ষুদ্র স্বার্থ অর্জনে সহায়তা করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাছাইকরণ ও রাজনীতিকরণ মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রচারের মূল বাধা। এটি তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সামনে উদ্ভূত একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।’
বাংলাদেশ যেহেতু গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো দেশে গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা রয়েছে এবং দেশের জনগণের প্রতি আমাদের আস্থাও আছে। তাই বাংলাদেশ এসব প্রোপাগান্ডা মেশিনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
কূটনৈতিক ম্যাগাজিন ডিপ্লোম্যাটস ওয়ার্ল্ড রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘নেভিগেটিং চ্যালেঞ্জস: বাংলাদেশে’স রেসপন্স টু দ্য কারেন্ট গ্লোবাল সিচুয়েশন’- শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, কূটনীতিক শাহেদ আখতার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসংখ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যার মাধ্যমে টেকসই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের উন্নয়নে তার অঙ্গীকারের প্রতিফলন দেখেছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পূর্ববর্তী দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়েছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করেছে, সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়েছে এবং জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করেছে।
মোমেন বলেন, ‘তার (শেখ হাসিনার) লক্ষ্য তার দেশের জনগণের মঙ্গল এবং তাদের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা প্রদান করা।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পূর্ণ স্বাধীনতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জাল ভোটের সম্ভাবনা দূর করার জন্য ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে এবং ভোটারদের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও এজেন্টদের মধ্যে আস্থা তৈরির জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স তৈরি করা হয়েছে।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ স্থানীয় ও জাতীয় সরকার পর্যায়ে অসংখ্য নির্বাচন করেছে এবং এসব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।
মোমেন বলেন, ‘আমার নিজের শহর সিলেটসহ ওই সব নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের একটি বড় অংশ জয়লাভ করেছে এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকারগুলো অর্জনের জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উদ্বেগগুলো কাটিয়ে উঠতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং চলমান উন্নয়নমূলক লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি এর দীর্ঘকালের লালিত স্বপ্ন অর্জনের জন্য আমাদের সক্ষমতাকে শক্তিশালী করা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন (এফডিএমএন) বাংলাদেশ এবং এ অঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় দিয়েছি। এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভূমিকা পালনের আগেই প্রথম সাড়াদানকারী হিসেবে আমরা আমাদের খাদ্য ভাগাভাগি করে এবং তাদের মৌলিক মানবিক চাহিদা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভূমিকা পালন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ প্রতি বছর রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সহায়তা কমলেও খরচ বাড়ছে। দীর্ঘ ছয় বছর রোহিঙ্গাদের আতিথ্য করার পরও শুধু বাংলাদেশ এই বোঝা বহন করতে থাকবে এটা অন্যায্য।’
তিনি বলেন, একটি ছোট ভূখণ্ডে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ, যারা গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের অতীত স্মৃতি নিয়ে এসেছে, এসব মানুষের কট্টরপন্থা ও চরমপন্থার প্রবণতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
মোমেন বলেন, ‘তাই আমরা আশঙ্কা করি এই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত লোকদের যদি তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন না করা হয়, যদি তাদের আশা ও ভরসা না দেওয়া হয়, তাহলে তারা এই অঞ্চল এবং এর বাইরের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হতে পারে। এমনকি তারা বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ঝুঁকি হতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তারা অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এই অসহায় মানুষদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, শান্তি ও উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে বহুপক্ষীয়, আঞ্চলিক, ত্রিপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় সবদিক থেকে এই সংকটের একটি টেকসই সমাধান আশা করছি।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ একা এই সংকটের সমাধান করতে পারে না এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংকট সমাধানে তাদের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে যাওয়া উচিত নয়। মিয়ানমার বাংলাদেশের ওপর যে বোঝা চাপিয়েছে তা থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রতি যাতে আমাদের সম্মিলিত মনোযোগ থাকে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা এবং অন্যান্য অংশীজনদের। যারা তাদের মানবিক ও জবাবদিহির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ন্যায়সঙ্গত বৈশ্বিক সংহতি ও সমর্থন প্রাপ্য।’
চীনকে হারাতে চাইলে টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী প্রস্তাব নিয়ে আসুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার (২৮ অক্টোবর) বলেছেন, চীনকে পরাজিত করতে চাইলে অন্যান্য দেশের ভয় দেখানো ও উপদেশ দেওয়ার পরিবর্তে টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী মূল্যের প্রস্তাব নিয়ে আসা উচিত।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি চীনকে হারাতে চান, তাহলে আপনাদেরও চীনাদের মতো টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী মূল্যের প্রস্তাব নিয়ে আসা উচিত। শুধু উপদেশই আমাদের সন্তুষ্ট করে না।’
তিনি সাম্প্রতিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ উভয় সফরে এই কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে তিনি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘নেভিগেটিং চ্যালেঞ্জস: বাংলাদেশ’স রেসপন্স টু দ্য কারেন্ট গ্লোবাল সিচুয়েশন’- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
কূটনৈতিক ম্যাগাজিন ডিপ্লোম্যাটস ওয়ার্ল্ড সেমিনারের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইউরোপ সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো বাংলাদেশের কথা শুনেছে এবং তারা এখন তহবিল নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় নেতারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সব ধর্মের নাগরিকের অধিকার সমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন বলেন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের নামে চাপ সৃষ্টি করে অনেক দেশ তাদের পণ্য বিক্রি করতে চায়।
তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন সামরিক সরঞ্জাম কিনতে চায় না।
২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তারা ৩০০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য, নির্ভরশীলতার পরিবর্তে অপরিহার্য সংযোগ স্থাপন করা এবং বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের ঘাটতি বন্ধ করা তাদের লক্ষ্য।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনার সূচনা করেন।
এই উপলক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই সবুজ পরিবর্তনে অবদান রাখার জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের চুক্তি সই করেছে ইইউ, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ। এটি দেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণেরও লক্ষ্য।
৭০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের শিক্ষা সহায়তা, ভালো কাজ, সবুজ নির্মাণ, ই-গভর্নেন্স ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এই পাঁচটি অতিরিক্ত সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড চালু করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন বলেন, ‘ইইউ ও বাংলাদেশ ৫০ বছর ধরে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অংশীদার। এখন আমরা গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে সবুজ পরিবর্তনের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে, এই অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইউরোপীয় কমিশন, ইআইবি ও বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সমর্থন করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বাহিনীতে যোগ দেবে। এই ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ বাংলাদেশের জনগণ এবং এর অর্থনীতির জন্য একটি পরিবর্তন সৃষ্টি করবে।’
আরও পড়ুন: আমরা এগুলোকে গুরুত্ব দিই না: বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায় নির্বাচন: বৈঠকে সালমান এফ রহমান ও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে এক বৈঠক করেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদারসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে তারা বৈঠকে আলোচনা করেন।
সালমান এফ. রহমান এবং আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সংঘাত, রোহিঙ্গা ইস্যু এবং বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন।
আজরা জেয়া ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন এবং তাদের জন্য মার্কিন সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
নির্বাচন ইস্যুতে উভয়ই মনে করেন যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। সালমান এফ. রহমান আসন্ন নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না, বরং তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা দেখতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার এবং বাংলাদেশ দূতাবাস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকায় তুর্কি দূতাবাসের এব্রু শিল্প প্রদর্শনী
ঢাকায় শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ‘এব্রু আর্ট এক্সিবিশন’- শীর্ষক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তুর্কি দূতাবাস।
প্রদর্শনীতে আসা অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন বলেন, ‘এব্রু চিত্রশিল্প খুব অনন্য ও ঐতিহ্যগত একটি শিল্প। এটি তুর্কি সংস্কৃতির সমৃদ্ধি প্রতিফলিত করে।’
২০১৪ সালে, এই ঐতিহ্যবাহী তুর্কি শিল্প ইউনেস্কো ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ- এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেসের (ইউএনওপিএস) নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেইরা দা সিলভা বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি ‘শক্তিশালী অংশীদারিত্বের’ মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ তারা।
তিনি জানান, তারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জনগণের জন্য একটি টেকসই, স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশের ‘প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তির’ প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম সফর।
২৮ ও ২৯ অক্টোবর তার দুই দিনের মিশন চলাকালীন নির্বাহী পরিচালক ইউএনওপিএস ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী ও জাতিসংঘের সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এই সফর সম্পর্কে বলতে গিয়ে মোরেইরা দা সিলভা বলেন, ইউএনওপিএস ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে ইউএনওপিএস এক্সিকিউটিভ বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনের পথে ইউএনওপিএস কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক ২৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
জর্জ মোরেইরা দা সিলভা মহাখালিতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজিজেস অব দ্য চেস্ট অ্যান্ড হসপিটাল (এনআইডিসিএইচ) পরিদর্শন করবেন।
যেখানে ন্যাশনাল ম্যালেরিয়া এলিমিনেশন প্রোগ্রামের (এনএমইপি) মতো অংশীদারদের সঙ্গে এবং গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে ইউএনওপিএস।
এই সফরের সময় ইউএনওপিএসের নির্বাহী পরিচালক স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন।
ইউএনওপিএস বলেছে, এই অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন বাড়ানোর জন্য ইউএনওপিএস ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জর্জ মোরেরা দা সিলভার বাংলাদেশ সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
জাতিসংঘ ও ইউএনওপিএস বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউএনওপিএস ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করার জন্য অবকাঠামো, সংগ্রহ এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরিষেবা প্রদান করে।
ফিলিস্তিন সমস্যায় এবার আরব বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে: সাবেক রাষ্ট্রদূত
ফিলিস্তিন সমস্যায় এবার আরব বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ নিয়ে কোনো বিভক্তি নেই, সবাই ফিলিস্তিনের পক্ষে। ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে আরব বিশ্ব দোদুল্যমান। এখনও তারা জোটবদ্ধ হতে পারেনি। তবে এবার নড়েচড়ে বসেছে।’
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার এফডিসিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম. হুমায়ুন কবির এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কথোপকথোন শুরু হয়েছে, এটি ইতিবাচক। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ একটি সহিংস চক্রের মধ্যে পড়েছে। এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনই ন্যায়ের পক্ষে আছে। এটি হঠাৎ কোনো ঘটনা নয়, দীর্ঘ বঞ্চনার প্রতিফলন। গাজায় আজ যে নৃসংশতা ও মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে দুটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। যাতে দুটি রাষ্ট্র পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করতে পারে। জাতিসংঘ ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতা করতে পারে। তাই বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করে ফিলিস্তিন -ইসরায়েল সংকট সমাধানে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের কাছে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ
গাজায় সাংবাদিকদের ‘টার্গেট কিলিংয়ের’ নিন্দা জানিয়েছে ডিকাব
গাজা উপত্যকায় সাংবাদিকদের টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনায় শুক্রবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব)।
নিরপরাধ সাংবাদিকদের প্রায়শই টার্গেট করা হচ্ছে এবং ৭ অক্টোবর থেকে কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে।
ডিকাবের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস এক বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় নিরীহ সাংবাদিকদের টার্গেট করে হত্যার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি তাদের পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক তানজিম আনোয়ারের বাবার মৃত্যুতে ডিকাবের শোক
তারা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের হত্যা একটি জঘন্য অপরাধ ও কাপুরুষোচিত কাজ। গাজায় নিরপরাধ সাংবাদিক হত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বকে এখন সোচ্চার হতে হবে।
ডিকাব জাতিসংঘের ব্যবস্থায় এসব হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
নিরপরাধ সাংবাদিকদের হত্যা থেকে বিরত থাকার জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডিকাব।
ডিকাবের নির্বাহীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাদের মূল্যবান জীবন হারানো সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো ডিকাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থাপন
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ডিকাবের নবনির্বাচিত কমিটির শ্রদ্ধাঞ্জলি