বিএনপি
রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে দুই দিনের বিরতি দিয়ে আগামীকাল রবিবার থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বুধবার সকাল ৬টায় শুরু হওয়া দেশব্যাপী বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা আগে এই নতুন আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। চলমান অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরসহ ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসা অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
রিজভী বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্মরণে শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের মসজিদগুলোতে দোয়ার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিহত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সব নেতাদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে তাদের অবরোধ সফল হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদও জানান তিনি।
এর আগে ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ ঘোষণা করেছিল দলটি।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল পালন করে দলটি। এতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষ এবং তিনজন নিহত হওয়ার মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং সমাবেশ মাঝপথে ভেস্তে যায়।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দল যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তা পালন করবে। আমাদের গন্তব্য হয় জেলখানা অথবা মহাসড়ক।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
রিজভী বলেন, ‘এই দুইয়ের মাঝখানে কিছুই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের জেলে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, নির্যাতন করতে পারে, কিন্তু আমরা সবকিছু মেনে নেব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরা তুলে নিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের একজন ছাত্রনেতা কোথায় আছেন বা কেমন আছে তা আমরা জানি না। শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিদিন এসব কাজ করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সামগ্রিক নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার ব্যর্থ হবে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে উন্নত মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর পুলিশের হামলায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, দেশব্যাপী অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ‘২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯টি মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত নিপীড়ন, নির্যাতন ও নাশকতার মধ্যে দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে। এই কর্মসূচি সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কারণ তারা যাত্রী পায়নি। তার মানে আমাদের কর্মসূচির প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মেজর হাফিজ
বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তিনি শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে নতুন দল গঠনের গুঞ্জনের মধ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি বলেন, 'আমি শারীরিকভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারি না। আমি শিগগিরই অবসর নেব। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। আমি অসুস্থ থাকায় রাজনীতিতে সক্রিয় নই। এখন আমার অগ্রাধিকার আমার স্বাস্থ্য।’
তিনি বলেন, 'এটা সত্য নয় যে আমি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতিতে সক্রিয় নই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি অংশ নেব। আমি এখনো বিএনপির সঙ্গে আছি এবং দলের সঙ্গেই থাকব।’
আরও পড়ুন: বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
‘মেজর হাফিজ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন’ - তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্য দেওয়ার পর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও ছয়বারের জাতীয় সংসদ সদস্য এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এটা সুষ্ঠু হবে না। সুতরাং নিরপেক্ষ সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারই হতে পারে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ। আশা করি সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটবে।’
তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সম্প্রীতির স্বার্থে এখনই সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনার অবস্থান যাই হোক না কেন, আপনার উচিত আপনার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করা এবং একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা করা। তার আগে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিএনপির সংস্কার, গণতান্ত্রিক উপায়ে দল পরিচালনা, বিভিন্ন পর্যায়ে নেতা তৈরি, নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের মূল্যায়নের আহ্বানও জানান তিনি।
জিয়ার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ায় বিএনপি ক্ষমতার বাইরে বলেও উল্লেখ করেন দলটির এই নেতা।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত: হাফিজউদ্দিন
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আবারও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গুম করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সরকার বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে তাদের ওপর দোষ চাপানোর পরিকল্পনা করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে ডিবি পুলিশ তুলে নেয়ার পর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের নেতা-কর্মীদের গুম করা নতুন করে শুরু হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটারদের অংশগ্রহণ ছাড়া আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। ‘তাই জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য তারা (সরকার) গুমের নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার তরুণদের গুম করার জন্য টার্গেট করছে, যেহেতু তরুণরা অগ্রগামী হিসেবে রাজপথে আন্দোলন করছে।
অবিলম্বে এফ মাহমুদুল ও সাইফুল ইসলামকে তাদের পরিবারের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান রিজভী।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তাদের এক দফা দাবি আদায়ে বুধবার সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি জনগণের দাবির ওপর ভিত্তি করে। এটা শুধু বিএনপির কর্মসূচি নয়। যারা দেশের মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের সবার কর্মসূচি এটি।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় ১১২ মামলায় ১০ দিনে গ্রেপ্তার ১৬৩৬ জন : ডিএমপি
বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের অতীতের মতো সব বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক অবরোধ করুন, মহাসড়ক অবরোধ করুন এবং শান্তিপূর্ণ থাকুন। কিন্তু তারা (সরকার) আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার বিভিন্ন মহাপরিকল্পনা করছে। আমরা রাজপথে থাকব এবং সরকারের অশুভ চক্রান্ত প্রতিহত করবো।
চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে দেশের লাখ লাখ মানুষ বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৪৯৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত: হাফিজউদ্দিন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত।
তবে তিনি জানান, বর্তমানে তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন।
মঙ্গলবার হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় নির্বাচনে যাওয়া। বিএনপি নির্বাচনে যোগ দিলে আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেবো।’
তিনি নতুন দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মন্তব্যের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এই বিএনপি নেতা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু বলতে পারি যে আমি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি...আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না।’
৭৯ বছর বয়সী হাফিজ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতার জন্য দুই মাস আগে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে, অভিযোগ হাফিজউদ্দিনের
তিনি জানান, অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য ভিসার জন্য আবেদন করব।’
হাফিজ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম সামরিক ব্রিগেড 'জেড ফোর্সের' অধীনে যুদ্ধ করেন।
সাহসিকতার জন্য তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার বীর বিক্রমে ভূষিত হন।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসন থেকে ছয়বার এমপি নির্বাচিত হন।
২০০১ সালে বিএনপি গঠিত সরকারে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। হাফিজ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে হাফিজকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বিরুদ্ধে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লিখিত অভিযোগগুলিকে অসত্য বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, পার্টির নোটিশের ভাষা ‘আক্রমণাত্মক’ এবং তা ‘সৌজন্য ও প্রটোকল বিরোধী’। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের নোটিশ জারি করায় তিনি অপমানিত বোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
৭ নভেম্বরের সাধারণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি
জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
বিএনপি অভিযোগ করেছে, কারাগারে তাদের নেতা-কর্মীরা মানবিক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। কারাগারের ওয়ার্ডগুলোতে ইতোমধ্যে ভিড় রয়েছে, যা তাদের স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার চারগুণ বেশি।
সোমবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির 'শান্তিপূর্ণ' আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে এবং বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে সরকার তাদের বিরুদ্ধে 'অগ্নিসংযোগের গল্প' তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
তিনি বলেন, কারাগারগুলো মানবিক বিপর্যয়ের সাক্ষী। কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো নেতা-কর্মীদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা জানতে পারছেন না আইনজীবী ও স্বজনরা। কারাগারের অভ্যন্তরে প্রতিটি ভবনের ঘনবসতিপূর্ণ ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীদের রাখা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪০-৫০ জন বন্দি রাখা হচ্ছে, যেখানে ১০-১৫ জনের বেশি বন্দি রাখা যাবে না। ‘এমনকি কারাবন্দি বিএনপির নেতা-কর্মীদের দিন বা রাত কোনো সময়ই ওয়ার্ডের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’
রিজভী আরও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাবন্দি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৭৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিরোধী দলের ৯৯৫ জন অনুসারীকে আসামি করে আরও নয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিদিন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য তাদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান আন্দোলন দমন করতে সরকার বিএনপিকে দোষারোপ করতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের খেলা শুরু করেছে। যার অসংখ্য প্রমাণ এখন মানুষের হাতে রয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রওনা হওয়া বাসে যারা আগুন দিয়েছে তাদের একটি ভিডিও রয়েছে। তিনি বলেন, 'প্রতিদিনই বিভিন্ন ঘটনায় এ ধরনের দৃশ্য দেখা যায়। শুধু গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই বিএনপির বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগের গল্প তৈরি ও প্রচার করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকারপন্থী কিছু টিভি স্টেশনের ক্যামেরাপার্সনরা গাড়ি পোড়ানোর সময় উপস্থিত রয়েছেন। ‘এতে সহজেই বোঝা যায় অগ্নিসংযোগ তাদেরই মাস্টার প্ল্যানের অংশ।’
রিজভী অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে কোনো প্ররোচনায় সাড়া না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তায় নামতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
৭ নভেম্বরের সাধারণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি
সরকারের দমন-পীড়ন ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ব্যাপক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবারের কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
৭ নভেম্বর তাদের কর্মসূচি স্থগিত করার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রকামী মানুষ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন অমানবিক ও ভয়ংকর পরিবেশে দিন কাটাচ্ছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকারের নিষ্ঠুর ও নির্মম নিপীড়নের প্রতিবাদে আগামীকাল (মঙ্গলবার) ৭ নভেম্বর আমাদের শহীদ রাষ্ট্রপতি ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস ও বাকস্বাধীনতা দমন করে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
রিজভী বলেন, ‘৭ নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাকশাল থেকে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল। প্রতি বছর গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ভালোবাসে এমন মানুষেরা এই দিন উদযাপন করে। কিন্তু '৭৫ সালে গণতন্ত্রকে হত্যাকারী শাসকেরা এখন আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা নতুনভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে বিএনপি কার্যালয়ে তালা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সরকার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় তারা ঘরে থাকতে পারছেন না। সরকারের দমন-পীড়নের কারণে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।’
১৯৭৫ সালের ‘বেসামরিক-সামরিক অভ্যুত্থান’ উপলক্ষে প্রতি বছর ৭ নভেম্বরকে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে বিএনপি।
১৯৭৫ সালের এই দিনে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সৈন্য ও বেসামরিক জনগণ যৌথভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে তার ক্ষমতায় আসার পথ সুগম করে।
বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সমমনা সংগঠনগুলো একে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস হিসেবে বিবেচনা করে।
বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে আগামী বুধবার থেকে ফের সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ‘বেসামরিক-সামরিক অভ্যুত্থান’ উপলক্ষে বিএনপি ৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে বিবেচনা করায় মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলো তাদের কর্মসূচি পালনে বিরতি দেয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী অন্য বিরোধী দলগুলোও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের চলমান অবরোধ সফলভাবে পালিত হচ্ছে বলে দাবি করেন রিজভী।
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিরোধীদের ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধের শেষ দিনে নতুন আন্দোলনের ঘোষণা করা হয়েছে।
গত সপ্তাহের শুরুতে হরতাল চলাকালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে।
দেশব্যাপী তিন দিনের অবরোধে সংঘর্ষ এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ব্যাপক ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া, নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রবিবারও তারা দেশব্যাপী ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরোধ পালন করে; যা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজনের প্রাণহানির মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দলটির নেতা-কর্মীরা। ক্রমেই তা নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশটি মাঝপথে ভণ্ডুল হয়ে যায়।
অন্যদিকে, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই রাজনৈতিক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেদিন থেকেই অবরুদ্ধ হয়ে আছে দলটির প্রধান কার্যালয়।
আরও পড়ুন: নেতাদের পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযোগ বিএনপির
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ
রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ব্যাপক গ্রেপ্তার ও দমন-পীড়নের মধ্যেও বিরোধী দলের বিপুল উপস্থিতি দেখে আতঙ্কিত হয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বেপরোয়া মন্তব্য করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন। তীব্র দমন-পীড়নের পরও বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে জনগণের উপস্থিতি দেখে সরকার বিস্মিত হয়ে পড়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা বেপরোয়া মন্তব্য করছেন।’
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
সোমবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বলেন, জনগণের সমর্থন পেলে তাদের চলমান এক দফা আন্দোলনের সাফল্য নিশ্চিত।
এদিকে, অবরোধ কর্মসূচির মধ্যেই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পল্লীমা সংসদের সামনে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে আকস্মিক মিছিল বের করেন রিজভী।
অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে তারা সেখানে কিছুক্ষণের জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং পরে তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
রিজভী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর দমন-পীড়ন ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সরকার বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন থামাতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে রিমান্ডে নিয়ে তাদের মনোবল দুর্বল করা সম্ভব হবে না। নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়ছে, আমাদের নেতা-কর্মীরা ততই জোরালোভাবে রাস্তায় নামছে।’
সোমবার (৬ নভেম্বর) ভোরে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) শামসুজ্জামান দুদুসহ আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। যারা আমাদের ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচির মাধ্যমে পবিত্র হয়ে উঠেছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘তারা সারা দেশে গ্রেপ্তারের ঝড় তুলেছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত। সরকারের পতন আসন্ন হওয়ায় আমাদের অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল হবে।’
এদিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আগের মতোই তালাবদ্ধ রয়েছে এবং সেখানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
নেতাদের পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযোগ বিএনপির
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অন্যায়ভাবে তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সোমবার (৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, দেশের জনগণের সহায়তায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তারা বদ্ধপরিকর।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য দিন-রাত যেকোনো সময় বাড়িঘরে হানা দিচ্ছে। যখন টার্গেট করা ব্যক্তিদের বাড়িতে পাওয়া যায় না, তখন তাদের বাবা ও ভাই বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অন্যায়ভাবে আটক করা হচ্ছে।’
বিএনপি নেতাদের আটক স্বজনদের থানায় নিয়ে গেলে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে সারাদেশে ভয়াবহ দমন-পীড়ন শুরু করেছে। তবে বিএনপিকে নির্মূলের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে, কারণ বিএনপি জনগণের পাশাপাশি বর্তমান অবৈধ সরকারের পতন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
বিএনপি ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচিতে ভয় পেয়ে ফ্যাসিবাদী সরকার শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি শামসুজ্জামান দুদুর নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।
সোমবার ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বাসা থেকে দুদুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।