বিএনপি
ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সফররত নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়েছে বলে দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত আছেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধিদলের বৈঠক
এদিকে আগামী জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ইইউ প্রতিনিধিদল ও বিএনপির মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আগের নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে কথা বলতে পারে এবং তাদের দলের ‘নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকার ছাড়া নির্বাচনে যোগ না দেওয়ার’ অবস্থানের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে নথি সরবরাহ করতে পারে।
তারা দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ‘৪০ লাখ’ বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য নেতাদের জেলে যাওয়া এবং বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের কথিত দমনমূলক কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে শনিবার (১৫ জুলাই) জাতীয় পার্টি, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে ইইউ দলের বৈঠকের কথা রয়েছে।
ইইউ নির্বাচন অনুসন্ধানী মিশন ৯ জুলাই দুই সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। এবং তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন বাংলাদেশে পাঠানো উচিত কিনা তারা ইতোমধ্যেই তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছে। । বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইইউ কর্তৃক।
আরও পড়ুন: সংসদ সদস্যদের গোলটেবিল বৈঠক: কপ-২৮ এর আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ককাস গঠনের প্রস্তাব
আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের বৈঠক
'সময় শেষ, পদত্যাগ করুন': সরকারের প্রতি ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বলেছেন, তাদের ক্ষমতায় থাকার সময় শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আর সময় নেই। তাদের সময় শেষ। আমি আগেও এটা পরিষ্কার করে বলেছি এবং আবারও বলছি।‘
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালীর শহীদ বুলু স্টেডিয়ামে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ' ভালো ছেলের মতো পদত্যাগ করুন । সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন তদারকির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন।’
সরকার তা না মানলে রাজপথে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রশ্ন করেছেন, সিদ্ধান্ত কোথায় নেওয়া হবে?
এ সময় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা চিৎকার করে বলেন, 'রাস্তায়।'
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে: রিজভী
এ সময় মির্জা ফখরুল সরকার পরিবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা খাত ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে এবং এটিকে অবৈধ উপার্জনের স্বর্গে পরিণত করেছে। লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো জনগণের সম্পদ কেড়ে নিয়েছে, কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তা ছাড়া, তারা আড়াই শতাংশ প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়ে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা করেছে।
মির্জা ফখরুল আরোও বলেন, এটা হাস্যকর যে তারা আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে চোরদের পুরস্কৃত করছে এবং আমাদের পকেট থেকে কেটে নিচ্ছে। এ বিষয় শুধু বিএনপি, খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের সমস্যা নয়, এটি পুরো জাতিকে প্রভাবিত করে। আমরা ভোটাধিকারের সংকট, স্বাধীনতা বিপন্ন এবং ভেঙে পড়া অর্থনীতির মুখোমুখি হয়েছি।
খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য অবিচল সংগ্রাম করেও তাকে অন্যায়ভাবে আট বছর কারারুদ্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত হলে দেশ পুনর্গঠনের জন্য আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফার মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশের রূপকল্প উপস্থাপন করেছেন।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল ও জাসাসের যৌথ উদ্যোগে শোভাযাত্রাটি দুপুর আড়াইটায় শুরু হয়। দেশের ছয়টি জেলা শহরে এই পাঁচ সংগঠনের পরিকল্পিত কর্মসূচির মধ্যে এই শোভাযাত্রাটি প্রথম।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ নেই: কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এক দফা আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে গণতন্ত্রমনা সকল দল কর্মসূচি দিয়েছে। উনি আর ক্ষমতায় থাকতে পারছেন না।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) খুলনা মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত খুলনা বিভাগে বিএনপির গুম, খুন, নির্যাতিত অসহায় ও অসচ্ছল নেতাকর্মীদের সন্তানদের শিক্ষাউপবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত রিজভী হাসপাতালে ভর্তি
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারির কাছে শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি নাকি ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করছেন।
তিনি বলেন, আসলে কাউকে যদি মিথ্যা শিখতে হয় কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। প্রতিদিন শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করলেই হবে।
রিজভী আরও বলেন, জনগণের সব ধরনের অধিকার কেড়ে নিয়ে উনি মিথ্যাচারের মডেলে পরিণত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আইএমএফ’র চাপে সরকার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে রিজার্ভ ২৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার। এরা দুর্নীতির মাধ্যমে রিজার্ভ শেষ করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্র শেষ করেছে। ব্যাংকগুলো এলসি খোলা বন্ধ করে দিয়েছে।
ঢাকার সমাবেশ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মাত্র তিনদিনের প্রস্তুতিতে নয়াপল্টনে জনগণের স্রোত দেখেছেন। সেখানে নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ছুটে এসেছিলেন। শত বাধা দিয়েও তাদেরকে আটকানো যায়নি।
তিনি বলেন, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শান্তি সমাবেশ করেছে। সেখানে হয়েছে চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি। আবার নাম দিয়েছে শান্তি সমাবেশ। এ যেন একাত্তরের সেই পিস কমিটির কথাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, আর ঢাকা দক্ষিণের মেয়র তাপস বলছেন তারা আগামী নির্বাচনে ঢাকা দখলে রাখবেন। মানে শেখ হাসিনার নির্বাচনের রোডম্যাপ তিনি বলে দিয়েছেন। তারা ঢাকা দখল করে সুষ্ঠু ভোট করবেন! এই হলো শেখ হাসিনার সুষ্ঠু নির্বাচনের নমুনা।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড তুলে ধরে রিজভী বলেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে ফাউন্ডেশন। তাদের চিকিৎসা, শিক্ষা ও পুনর্বাসনে সহায়তা করা হচ্ছে। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকতে এ ধরনের গণমুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাজনীতিকে জনগণের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।
দেশ আজ চরম সংকট ও সমাজে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে দাবি করে রিজভী বলেন, জনগণের কাছে দেশের মালিকানা থাকলে আজকের রাজনীতি অন্য রকম হতো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রিজভী ও ইশরাকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বিএনপি নেতা রিজভী ও দুলুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
আ.লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ নেই: কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ করার কোনো সুযোগ নেই বলে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসকে জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার কানাডার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, তারা কানাডার হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র, সবার জন্য সমান সুযোগ, মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই।
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
বিএনপি নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো কানাডাও বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
খসরু বলেন, ‘মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ভোটাধিকারের প্রতি তাদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে এবং তাদের নৈতিক ভিত্তি উচ্চতর।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও নির্বাচন নিয়ে কানাডার ‘উদ্বেগ’ রয়েছে। ‘অন্যান্য পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো, এখানে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কি না তা নিয়ে কানাডারও ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচন করতে পারবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত কানাডাও।’
তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। তারা আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জানতে চান। তারা সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও জানতে চেয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
দুপুর ১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুরু হওয়া বৈঠক চলে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে।
বৈঠকে আমির খসরু ছাড়াও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও কানাডিয়ান হাইকমিশনের কর্মকর্তা ব্র্যাডলি কোটস উপস্থিত ছিলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কানাডিয়ান হাইকমিশন জানিয়েছে, লিলি নিকোলস ও বিএনপি নেতারা ‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব’সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
হাইকমিশনার বলেন, ‘ কোন দল সরকার গঠন করবে তা নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবেন নাগরিকরা। এটি নির্ধারণের জন্য সুযোগ দরকার। আমরা আশা করি আসন্ন নির্বাচনে মত প্রকাশ, আলোচনা ও সংলাপের বিস্তৃত পরিসর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এভাবে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের ভবিষ্যৎ বেছে নিতে পারবে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
বিএনপি তাদের এক দফা দাবি ঘোষণার একদিন পর সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার ‘সংস্কার’ এবং অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা উন্মোচন ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ৩১ দফা রূপরেখা তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে যেসব দল আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই রূপরেখা প্রণয়ন করেছি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমি এটা জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই।’
বিএনপি নেতা বলেন, ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য তারা বুধবার রাজধানীতে তাদের সমাবেশ থেকে এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র নির্বাচন ও শাসন পরিবর্তনের জন্য নয় বরং রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সামগ্রিক গুণগত পরিবর্তন এবং দেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা এখন ৩১-দফা রূপরেখা ঘোষণা করছি।’
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
ফখরুল বলেন, এই রূপরেখা জাতির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ,’ কারণ, এতে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তাদের দলের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল। ‘তারা (জনগণ) এখন দেশের মালিকানা হারিয়েছে।’
আরও পড়ুন: সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
তিনি বলেন, ‘বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।এই রাষ্ট্রটি মেরামত এবং পুনর্নির্মাণ করা দরকার।’
ফখরুল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশের জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যমতের একটি জনকল্যাণমুখী সরকার গঠন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অতীতের নৈরাজ্যের জন্য বিএনপি দায়ী: তথ্যমন্ত্রী
অতীতের নৈরাজ্যের জন্য বিএনপি দায়ী: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে অগ্নি সন্ত্রাসের হুকুমদাতা ও নির্মমতার জন্য দায়ী।
বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নৈরাজ্য ও মানুষ পোড়ানোর ঘটনায় সন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে এক মানববন্ধন থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যারা জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়েছিল তাদের উপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল, বোমা হামলা করা হয়েছিল। এই নির্মমতার জন্য দায়ী বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, মির্জা ফখরুলসহ আজ যারা লম্বা লম্বা বড় বড় কথা বলে, আজ যারা বিকেল বেলা সমাবেশ করবে তারা সবাই হুকুমদাতা ও নির্মমতার জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, আজকে আমার বামপাশে জিয়াউর রহমানের নির্মমতার যারা শিকার তারা দাঁড়িয়েছে আর ডানপাশে বিএনপি নেতাদের নির্মমতার যারা শিকার তারা দাঁড়িয়েছে। আজ তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারের দাবি জানাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ তাদের বিচার হবে।
মানববন্ধনে অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা হামলা ও নৈরাজ্যের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এসময় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা।
আরও পড়ুন: বিএনপির ‘এক দফা’ কোনো গুরুত্ববহন করে না: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপিকে তো সংলাপে ডাকা হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
তত্ত্বাধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না: তথ্যমন্ত্রী
সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এক দফা আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের পদযাত্রা ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ফখরুল এ ঘোষণা দেন।
আগামী ১৮ জুলাই এক দফা দাবি আদায়ে সারাদেশের সকল মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে এবং একইদিন ঢাকায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত একই কর্মসূচি পালিত হবে।
আগামী ১৯ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বিএনপি ছাড়াও আরও ৩৬টি সমমনা রাজনৈতিক দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
সমাবেশে যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দলের ডাকে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় পুলিশের সামনে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী ভিড় করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়াপল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন নেতা-কর্মীরা।
এ সময় তাদের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ‘এক দফা’ আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।
সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়াপল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বুধবারের সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি
এর আগে মঙ্গলবার পৃথক নোটিশে বিএনপিকে নয়াপল্টনে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে 'শান্তি সমাবেশ' এর অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে উভয় দলকে বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ সম্পন্নসহ ২৩টি শর্ত দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো আজ বুধবার রাজধানীতে পৃথক সমাবেশের মাধ্যমে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
এদিকে বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের বাইরে এক দফা দাবি ঘোষণার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করবে ছয় দলীয় জোট গণতন্ত্র।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে মত পোষণ করা ১২ দলের জোট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে সমাবেশ করবে একই দাবিতে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার ও সামন্তবাদ পছন্দ করে: ফখরুল
বিজয়নগরে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, তেজগাঁওয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মতিঝিলে গণফোরাম ও পিপলস পার্টি এবং নয়াপল্টনে লেবার পার্টির পক্ষ থেকেও একই ঘোষণা আসবে।
এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদের দুটি পৃথক অংশ (একটি রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বে এবং অন্যটি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে), গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে এক দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবে।
বিএনপিসহ আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্য দলের নেতারা ইউএনবিকে জানান, এক দফা আন্দোলনের যৌথ ঘোষণায় আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও থাকবে।
আরও পড়ুন: বুধবার রাজধানীতে বিশাল জনসভায় একদফা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি
বুধবার রাজধানীতে বিশাল জনসভায় একদফা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি
বুধবার রাজধানীতে সমাবেশের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো যৌথভাবে ‘একদফা’ যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিবে।
দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা করার কথা রয়েছে দলটির। এই জনসভা থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক দফা আন্দোলন শুরুর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
নির্বাচনের আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটাতে হবে বলে বিএনপির অভিমত পোষণকারী ছয় দলের একটি প্ল্যাটফর্ম গণতন্ত্র মঞ্চ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সভা করে এক দফা আন্দোলনে তাদের অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবে।
আরও পড়ুন: সরকার ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের স্মার্টফোন হ্যাক করছে: ফখরুল
একটি পৃথক ১২-দলীয় জোট যেটি একইভাবে বিশ্বাস করে যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তারাও বেলা ১২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে একটি সমাবেশ থেকে অনুরূপ ঘোষণা দিবে। এদিন বিভিন্ন সময়ে বিজয়নগরে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, তেজগাঁওয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও গণফোরাম এবং মতিঝিলে পিপলস পার্টি এবং নয়াপল্টনে লেবার পার্টিরও একই ধরণের কর্মসূচি রয়েছে।
এছাড়াও গণ অধিকার পরিষদের দুটি বিভক্ত গ্রুপ (একটির নেতৃত্বে রেজা কিবরিয়া এবং অন্যটির নেতৃত্বে নুরুল হক নুর), গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট এবং সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে। বিকেল ৩টার দিকে এক দফা আন্দোলনে তাদের অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবেন।
এসব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপি পৃথক বৈঠক করে তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা চূড়ান্ত করেছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত দলগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে এক দফা আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা দেবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এই জাতীয় ঘোষণার মাধ্যমে জাতি আশাবাদী এবং উৎসাহিত হবে। এটি বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করতে আন্দোলনকে আরও তীব্র করতে সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন: শিগগিরই ৩৬টি দল একসঙ্গে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে: বুলু
বিএনপি ও অনেক ছোট দলের নেতাদের সঙ্গে কথোপকথন থেকে ধারণা করা হচ্ছে এক দফা আন্দোলনের যৌথ ঘোষণায় আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া,একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন গঠনের দাবি থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি, সকল গায়েবি মামলা প্রত্যাহার এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে সকল মিথ্যা মালা বাতিল এবং সংবিধান সংশোধন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা হবে।
কিন্তু এগুলোর মধ্যে অধিক গুরুত্ব পাবে আগামী সংসদ নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয়, কার্যকর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সোমবার এক কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের দল ও জোটের শরিকরা বুধবার তাদের বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সব দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ১২ জুলাই নিজ নিজ জায়গা থেকে নতুন যাত্রা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন: বিএনপির বুধবারের সমাবেশ থেকে বড় প্রত্যাশা ফখরুলের
এক দফা আন্দোলনের আগে ব্যাপক শোডাউন করতে দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
মৌখিক 'অনুমতি' অনুসরণ করে এটি বিএনপিকে তাদের প্রস্তাবিত স্থানে সময়ের দুই দিন আগে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পৃথক নোটিশ জারি করেছে কেবলমাত্র বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার অনুমতি নিশ্চিত করেনি। নয়াপল্টন ও আওয়ামী লীগের পক্ষে খুব বেশি দূরে নয় বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে 'শান্তি সমাবেশ' করা হবে।
বিএনপি ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, তাদের সমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে এবং তা সফল করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বুধবারের সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে আমাদের সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ঢাকাবাসী তাদের দাবি নিয়ে রাজপথে নামবে।’
আমান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে তারা অনেক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করেছেন। আমরা সহযোগিতা চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকেও চিঠি দিয়েছি।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে এক জনসভায় সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ ১০ দফা দাবি ঘোষণা করে বিএনপি।
বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো ১০ দফা আন্দোলনের ঘোষণার পর থেকে গত সাত মাসে সারাদেশে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, রোডমার্চ, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে যা এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আগস্ট মাসে শুরু হওয়া বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া ফেলে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার ও সামন্তবাদ পছন্দ করে: ফখরুল
আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার ও সামন্তবাদ পছন্দ করে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না বলেই স্বৈরাচার ও সামন্তবাদ পছন্দ করে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ত্রুটিপূর্ণ ও 'একতরফা' নির্বাচন করে দুই দফায় গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে বলেই বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছে নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে।
মঙ্গলবার দলের দলীয় চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির নারী নেত্রী ও কর্মীদের জন্য এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একটি বৈশিষ্ট্যগত সমস্যা আছে। তাহলো তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা একনায়কত্ব ও সামন্ততন্ত্রকে পছন্দ করে। তারা মনে করে যে তারা ছাড়া দেশে আর কেউ নেই এবং তারাই দেশের একমাত্র মালিক।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক যে দেশে গণতন্ত্র নেই এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে গেছে।
তিনি প্রশ্ন করেন, বিএনপি ছাড়া পৃথিবীতে এমন আর কোনো গণতান্ত্রিক দল আছে কি, যে দলটির ৪০ লাখ নেতা-কর্মী মিথ্যা রাজনৈতিক মামলার সম্মুখীন। দলীয় প্রধানকে মিথ্যা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকার নির্বাচনকে ‘ফ্যাসিজম’ প্রতিষ্ঠার অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে: ফখরুল
একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ফখরুল অভিযোগ করেন,
দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর বিচার দ্রুত করার চেষ্টা করছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘তারা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, এমনকি আইন মন্ত্রণালয় বিচারকদের কাছেও একটি চিঠি দিয়েছে; যাতে দ্রুত বিচার এবং মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। শাসকরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই এটা করছে। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় এবং তারা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মান ও গ্রাহ্য করে না।’
ফখরুল বলেন, দখলদার সরকার জোর করে জনগণকে সম্পূর্ণভাবে প্রতারিত করে দুটি নির্বাচন করায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন গণতান্ত্রিক চর্চাকে সমুন্নত রাখার মূল উপাদান। কিন্তু এদেশের শাসকরা গণতন্ত্রের কথা বললেও নিজেরা কখনোই তা চর্চা করেন না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের ঘন ঘন সফর নিয়ে এখন অনেক আলোচনা হচ্ছে।
ফখরুল বলেন,‘আজ (মঙ্গলবার) একটি আমেরিকান প্রতিনিধি দল আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি দল ইতোমধ্যে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে জানতে দেশে এসেছে। তারা বাংলাদেশে কেন আসে? কারণ এখানে কোনো গণতন্ত্র নেই এবং কোনো (বিশ্বাসযোগ্য) নির্বাচন নেই এবং এখানে নির্বাচন (সুষ্ঠুভাবে) হয় না।’
তিনি বলেন, একটি ভালো নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ থাকা দরকার। কিন্তু সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, জেল, হত্যা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দমন করার চেষ্টা করে তখন তা (সুষ্ঠু নির্বাচন) নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির বুধবারের সমাবেশ থেকে বড় প্রত্যাশা ফখরুলের
শিগগিরই ৩৬টি দল একসঙ্গে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে: বুলু