শিক্ষা
শতভাগ শিক্ষার্থী বান্ধব শাবিপ্রবি করার চেষ্টা করবো: উপাচার্য
পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর এই প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শাবিপ্রবিকে শতভাগ শিক্ষার্থী বান্ধব করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সবাইকে একসঙ্গে হয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো শতভাগ শিক্ষার্থী বান্ধব শাবিপ্রবি করার।’
শাবিপ্রবির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি এসব কথা বলেন।
পহেলা ফাল্গুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-২ এর সামনে সকাল ১০টার দিকে ‘জাতীয় সংগীত’পরিবেশনের সঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম যথাক্রমে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির হল খুলছে সোমবার, অনলাইন ক্লাস শুরু মঙ্গলবার
এরপরে ১০টা ১০মিনিটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়৷ পরবর্তীতে ১০টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য ‘শোভাযাত্রা’বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে গোল চত্বরে মিলিত হয়৷ সেখানে কেক কাটার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়।
২৭ দিন পরে নিজ অফিসে শাবি উপাচার্য
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ২৭ দিন পর তার অফিসে ফিরেছেন। রবিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে, একই দিন শাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগ উপাচার্য বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এ কথা জানান।বিজ্ঞপ্তিতে তারা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু ও পাঠদানের যথোপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে কিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। দাবি গুলো হচ্ছে- অতিদ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা। যত দ্রুত সম্ভব অনলাইন/অফলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা। ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলায় আহত ছাত্রলীগ সহ সকল শিক্ষার্থী যারা ইতোমধ্যে নিজের ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা করেছেন তাদের ব্যয় বহন করা। সকল হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়া খুলে দেয়া এবং খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধি ও মূল্য হ্রাস করা। অতি দ্রুত ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আধুনিক ফুডকোর্টের ব্যবস্থা করা ও নির্মাণাধীন ফুডকোর্টের কাজ শেষ করা। বিভিন্ন দেয়ালে দেয়াল লিখন মুছনসহ ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করে’।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে ছাত্রীরা তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ’ ছাত্রী।
এছাড়া ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ের জন্য উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে ভিসিকে মুক্ত করে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
এতে ১৯ জানুয়ারি বুধবার বেলা ৩টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এতে শুরুতে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে অংশ নেয়।
পরে ২৩ জানুয়ারি গণঅনশনের অংশ হিসেবে যোগ দেয় পাঁচজন শিক্ষার্থী।
২৬ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল সস্ত্রীক ক্যাম্পাসে এসে পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ১৬৩ ঘন্টার এ অনশন ভাঙান।পরে, শনিবার (১২ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চলমান আন্দোলন শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
শাবিপ্রবির হল খুলছে সোমবার, অনলাইন ক্লাস শুরু মঙ্গলবার
দীর্ঘ ২৭ দিন পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একাডেমিক কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে। স্বশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে খোলা থাকবে সকল আবাসিক হল।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
তিনি জানান, ‘সরকারের কোন বিধি নিষেধ না থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশ’ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার সিলেট সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। তাঁরা মামলা প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিটি শিক্ষামন্ত্রী আচার্যের (রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ) কাছে উপস্থাপন করবেন।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
এইচএসসি: এক নজরে কোন বোর্ডে পাসের হার কত
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এইচএসসিতে এ বছর পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী।
রবিবার দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরা।
এরপর প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের সার্বিক বিষয় গণমাধ্যমে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফল প্রকাশ আজ
ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৫২ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, রাজশাহী ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ, মাদরাসা বোর্ডে ৯৫ দশমিক ৪৯ ও কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে ফল জানতে পারবে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে।
এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৩ হাজার ২৪৪ জন। এর মধ্যে অংশগ্রহণ করে ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন।
সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিল মাসে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হলেও করোনা মহামারির কারণে এই পাবলিক পরীক্ষা ২০২১ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ ডিসেম্বর।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষা অন্যান্য বছরের মতো হয়নি। পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। আর আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাদ দেয়া হয় চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষাও।
সর্বোচ্চ পাস যশোরে, জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা
২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হারে এগিয়ে আছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। তবে জিপিএ-৫ এর দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করছে ঢাকা বোর্ড।
যশোর বোর্ডে অংশ নেয়া এক লাখ ২৮ হাজার ১৬৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ২০ হাজার ৮৭৮ জন শিক্ষার্থী
পাসের হারে যশোরের ঠিক পরেই কুমিল্লা। এই বোর্ডে অংশ নেয়া এক লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
পাসের হারে তৃতীয় রাজশাহী বোর্ড। অংশ নেয়া এক লাখ ৪৭ হাজার ৪৮৪ জন পরীক্ষার মধ্যে পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ৩২ হাজার ৮০০ জন।
এ তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাক বোর্ড। অংশ নেয়া তিন লাখ ১০ হাজার ১৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশের হার ঢাকা ৯৬ দশমিক ২০ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ৫৯ হাজার ২৩৩।
এরপরের অবস্থানে বরিশাল বোর্ড। অংশ নেয়া ৬৬ হাজার ৭৯৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ৯ হাজার ৯৭১।
এরপর আছে ময়মনসিংহ বোর্ডের অবস্থান। অংশ নেয়া ৬৯ হাজার ২১৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশের হার ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ৭ হাজার ৬৮৭।
তালিকায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে সিলেট বোর্ড। অংশ নেয়া ৬৬ হাজার ৬৬১ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী চার হাজার ৭৩১।
এরপরের অবস্থানে রয়েছে দিনাজপুর বোর্ড। অংশ নেয়া এক লাখ ১৩ হাজার ৪৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ১৫ হাজার ৩৪৯।
সর্বশেষ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বোর্ড। অংশ নেয়া ৯৯ হাজার ৬২৯ শিক্ষার্থীর পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ১৩ হাজার ৭২০।
ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন সোমবার থেকে
এবারের প্রকাশিত ফলে পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে যেসব শিক্ষার্থী অসন্তুষ্ট হবেন তারা ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবেন।
আগামীকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে।
পাস ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে মেয়েরা
এইচএসসি পরীক্ষায় পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে আছে। এবার মেয়েদের পাসের হার ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ছেলেদের ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ।
মোট ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল সাত লাখ ৩২ হাজার ২৯ জন। এর মধ্যে অংশগ্রহণ করে সাত লাখ ১৫ হাজার ৫১৬ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ছয় লাখ ৭৩ হাজার ৫৮০ জন। আর মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ছয় লাখ ৭১ হাজার ২১৫ জন। এর মধ্যে অংশ গ্রহণ করে ছয় লাখ ৫৬ হাজার ১৬৫জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ছয় লাখ ৩৩ হাজার ১৩৮ জন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ১৩ ফেব্রুয়ারি
এবার এইচএসসি জিপিএ--৫ পাওয়াদের মধ্যেও এগিয়ে মেয়েরা। জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট এক লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। এর মধ্যে ছাত্রী এক লাখ দুই হাজার ৪০৬ জন। ছাত্র ৮৬ হাজার ৭৬৩ জন। জিপিএ-৫ পাওয়ায় মেয়েদের হার ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ছেলেদের হার ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
মাদরাসা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮৭২
এবার মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ ভাগ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ১৩ হাজার ১৬৭ জন।
এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ এক হাজার ৭৬৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৮৭২ জন। তার মধ্যে ছেলে ২ হাজার ৭৮৬ জন এবং মেয়ে ২ হাজার ৮৬ জন।
গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল চার হাজার ৪৮ জন। সে হিসেবে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৮২৪ জনের।
৫ প্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল
২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ৯ হাজার ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী উর্ত্তীণ হতে পারেনি।
এইচএসসিতে সর্বোচ্চ পাশের হার বরিশালে
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে পাশের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বোর্ডের ইতিহাসে এইচএসসিতে এবারই সর্বোচ্চ পাশের হার বরিশাল বোর্ডে।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল ঘোষণা করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন।
আরও পড়ুন: এইচএসসির ফলাফল: কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৯৭.৪৯ শতাংশ
তিনি বলেন, ২০২১ সালের পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৬৬ হাজার ৭৯৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৬৩ হাজার ৯৬৪ জন। ছেলে ৩০ হাজার ২৮৯ জন ও মেয়ে ৩৩ হাজার ৬৭৫ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৯৭১ জন। এর মধ্যে ছেলে ৩ হাজার ৪৮১ ও মেয়ে ৬ হাজার ৪৯০ জন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
বরিশাল বোর্ডে পরীক্ষায় ফলাফলে পাশের হারে দিক থেকে বরিশাল জেলা এগিয়ে রয়েছে। এই জেলায় পাশের হার ৯৬ দশমিক ৯৩ ভাগ। এছাড়া ঝালকাঠিতে ৯৬ দশমিক ৪০ ভাগ, বরগুনায় ৯৬ দশমিক ৩১ ভাগ, পিরোজপুরে ৯৬ দশমিক ১৫ ভাগ, ভোলায় ৯৪ দশমিক ৫৮ ও পটুয়াখালীতে ৯৩ দশমিক ৪৬ ভাগ।
এইচএসসির ফলাফল: কুমিল্লা বোর্ডে পাশের হার ৯৭.৪৯ শতাংশ
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে কুমিল্লায় পাশের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ১৫৩ জন। মোট পাশ করেছে এক লাখ ১১ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষার্থী। এ বোর্ডে ৪০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৫১ হাজার ৬১৫ জন। আর ছাত্রী ৬২ হাজার ৯৪৪ জন। ৯৭টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাশ করেছে।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
এ বছরের তুলনায় গেল বছর ৪ হাজার ৭৮৯ জন বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে এই বছরে কুমিল্লা বোর্ডে থেকে একজনও পাশ করেনি এমন প্রতিষ্ঠান একটিও নেই।
এইচএসসি ও সমমানে পাসের হার ৯৫.২৬ শতাংশ
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।
এর মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ, মাদরাসায় ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং কারিগরি পরীক্ষায় ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৯ হাজার ১১১টি প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মোট ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন পরীক্ষার্থী অংশ অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালেরএইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল তুলে দেন।
এ বছর মোট ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে, এ সংখ্যা গত বছর ছিল ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন।
এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭২২ জন, মাদরাসা বোর্ডে ৪ হাজার ৮৭২ জন বেং কারিগরি বোর্ডে ৫ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে সাত মাস বিলম্বের পর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও এর সমমানের পরীক্ষা ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
এইচএসসির ফল প্রকাশ আজ
উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
উন্নত ক্যারিয়ার ও উত্তম জীবনযাত্রার উৎকৃষ্ট নির্ণায়ক হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষা। আর সেজন্যেই প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান তাদের স্বপ্নের দেশে। বিদেশি ইউনিভার্সিটির প্রাঙ্গনে প্রবেশের প্রথম দিনটির পেছনে থাকে শত প্রচেষ্টা। নূন্যতম এক বছরের একটি সুপরিকল্পিত কার্যকলাপের উত্তরোত্তর সফলতার চূড়ান্ত ফল হিসেবে পেরনো যায় যায় দেশের সীমানা। এই পরিকল্পনার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক তথ্য ভান্ডার। এই জায়গাটিতে ঘাটতি থাকলে পুরো পরিকল্পনাটাই বিফলে যেতে পারে। আজকের ফিচাটি তেমনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে, যেগুলো সেই পরিকল্পনায় রশদ যোগাতে পারে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
সংকল্প এবং পরিকল্পনা
সবার আগে যে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে তা হলো- দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে মনস্থির করা। সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক দিক হলেও পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের সময় এর প্রভাব পড়ে থাকে। যেহেতু এখানে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পরিক্ষা দিতে হয় তাই মানসিক ও শারীরিক শ্রমের পাশাপাশি একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সময় ও অর্থের খরচ করতে হয়। এক্ষেত্রে প্রথমেই যে কোন সম্ভাব্য কার্যক্রমের জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য মনস্থির করাটা আবশ্যক।
আর এর মনস্থির হওয়া সামনের প্রতিটি কাজের জন্য পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সংকল্প ও পরিকল্পনার যুগপৎ ক্রমবিকাশ ঘটে ব্যাচেলর ডিগ্রী নেয়ার শুরু থেকেই। জব মার্কেটের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বিষয়টি নির্বাচন সাধারণত এ সময়েই করা হয়ে থাকে। এর ধারাবাহিকতাতেই পরবর্তীতে ব্যাচেলর শেষ করে সেই বিষয়েই উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে পড়তে যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
আন্ডারগ্রাজুয়েশনের এই সময়টাতে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনায় রশদ যোগাতে সহায়ক হতে পারে ক্যারিয়ার ও বিদেশে উচ্চশিক্ষার উপর বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ অথবা কাউন্সিলিং। তবে দিন শেষে মনস্থির করতে হবে নিজেকেই।
ভাষার দক্ষতা পরীক্ষা
ভাষা দক্ষতার ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা দক্ষতা যাচাই বিদেশে উচ্চশিক্ষার যোগ্যতা প্রমাণের প্রথম ধাপ। অধিকাংশ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে পড়াশোনার জন্য প্রয়োজন হয় ইংরেজি ভাষার। ইউরোপের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অন্য ভাষাতে দক্ষ হওয়ার প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে প্রধান ভাষাগুলো হলো- ম্যান্ডারিন চাইনিজ, জার্মান, ফরাসি, আরবি, জাপানিজ। ইংরেজি ভাষার শংসাপত্রগুলোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একাডেমিক আইইএলটিএস(ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম), টিওইএফএল(টেস্ট অফ ইংলিশ এ্যাজ এ ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ) গ্রহণ করে থাকে।
যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল, আইডিপি (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট সেরা মাধ্যম।
পড়ুন: শিক্ষা সনদপত্র হারিয়ে গেলে করণীয়
গবেষণা, বিশ্লেষণ এবং নির্বাচন
পূর্বে পরিকল্পনার খসড়াটাকে পরিপূর্ণ রূপ দান করতে পারে এই বিশ্লেষণধর্মী গবেষণাটি। এটি মূলত কোন পর্যায়ক্রমিক ধাপ নয়; বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই গবেষণা প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে কোর্স, বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অবস্থানগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। কোর্সের ভেতরে কি কি অন্তর্ভুক্ত আছে, নির্দিষ্ট বিষয়টি নিয়ে গবেষণার সুযোগ, ক্যাম্পাস জীবন এবং কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাগুলো যাচাই করতে হবে। এর জন্য ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার, কাউন্সিলিং খুব কাজে লাগে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
বর্তমানে তথ্য-প্রযুক্তি যুগে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সহজেই করা যায় ফেসবুকের মাধ্যমে। এখন বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপ আছে যেগুলোতে প্রায়ই উচ্চশিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার খরচ এবং বৃত্তির ব্যাপারে সুস্পষ্টভাবে জেনে নেয়া বাঞ্ছনীয়।
এসব দিক বিবেচনা করে ২ থেকে ৩টি আদর্শ গন্তব্য বাছাই করা যেতে পারে। অতঃপর প্রতিটির সুবিধা এবং অসুবিধা তুলনা করতে হবে।
পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন
শীর্ষ সিজিপি প্রাপ্তরাও এই কাজটি করে থাকে। এই একাধিক আবেদনের মূলে থাকবে চূড়ান্ত শিক্ষাবর্ষের থিসিস বা প্রোজেক্ট পেপারটি। এই গুরুত্বপূর্ণ নথিটির মাধ্যমে আরো ভালোভাবে অল্প কথায় পরিবেশন করতে হবে থিসিসের সম্ভাবনাময় দিকগুলো।
এই আবেদনের মুহূর্তে সর্বপ্রথম খেয়াল রাখতে হবে ভর্তির প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলো ঠিক ভাবে পড়া হচ্ছে কিনা। আবেদন সফল হওয়া এই নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে অনুসরণের উপর নির্ভরশীল।
এর জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটির আদ্যোপান্ত ভালভাবে দেখা উচিত। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনের জন্য সংগত কাগজপত্রের শুধুমাত্র ডিজিটাল কপি চায়; কিছু আছে ডিজিটাল স্ক্যান ছাড়াও পোস্টের মাধ্যমে ফিজিক্যাল কপি পাঠানোর নির্দেশনা দেয়। এই কাগজপত্রগুলোর ব্যবস্থা করা বিশেষ করে প্রতিটি সার্টিফিকেটে তথ্যের সামঞ্জস্যতা বিধান করতে হবে।
পড়ুন: পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয়
ফান্ডিং-এর ব্যবস্থা
ইতোমধ্যে যে দেশ বা বিশ্ববিদ্যালয়টি পড়াশোনার জন্য ঠিক করার হয়েছে; এবার তার জন্য আনুষঙ্গিক খরচ যোগাড়ের পালা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশগুলোতে টিউশন ফি’র পরিমাণ অনেক বেশি।
পড়াশোনা করার সময় কাজ করা যেতে পারে, কিন্তু শুধুমাত্র খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনার খরচ বহন সম্ভবই নয়। তাছাড়া এটি পড়াশোনায় চাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের জন্য প্রতি সপ্তাহে সীমিত সংখ্যক ঘন্টা বরাদ্দ থাকে।
নরওয়ে, জার্মানি, চীনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের জাতীয়তা নির্বিশেষে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডিগ্রি প্রদান করে। কিন্তু এর বাইরেও আছে জীবনযাত্রার বিশাল খরচ। তাই বৃত্তির জন্য আবেদন করা ফান্ডিং-এর সেরা উপায়।
পড়ুন: বিদেশি ভাষা শিক্ষা: যে ভাষাগুলো উন্নত ক্যারিয়ারে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে
এছাড়া দেশের বাইরে যাবার পূর্বে সে দেশে থাকার যাবতীয় ব্যায়ভার বহনের জন্য ব্যাংক-ব্যালেন্স দেখানোর ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণ
যে দেশে পড়াশোনার জন্য চেষ্টা চলছে সে দেশে যাবার জন্য এবার অনুমতি নেয়ার পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে সংক্ষিপ্ত ভাষা কোর্সে কখনও কখনও ট্যুরিস্ট ভিসায় অধ্যয়নের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তিন মাসের বেশি সময় ধরে প্রায় সমস্ত কোর্সের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হবে। সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করার আগে যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির জন্য অফার লেটার পেতে হবে। প্রয়োজনীয় ভর্তি ফি প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সরবরাহ করবে।
ভিসা প্রক্রিয়া দেশ থেকে দেশে ভিন্ন হয়। তাই ভিসা আবেদনের মূহূর্তে প্রাসঙ্গিক নিয়মগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করতে হবে।
পড়ুন: জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
আবাসনের ব্যবস্থা করা
কিছু কিছু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের প্রোগ্রামে ভর্তি বাবদ শিক্ষার্থীদের আবাসন সরবরাহ করে বা ভালো পরিমাণের বৃত্তি পাওয়া গেলে তাতে আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। এর বাইরে বিভিন্ন ধরণের আবাসনের ব্যবস্থার সময় শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তাই থাকার জায়গাটি নিজের দেশ থেকে ঠিক করে যাওয়াটাই উত্তম।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার সময় স্টুডেন্ট ডরমিটরি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি থাকার জন্য বেশ ভালো উপায়। সাধারণত সব ডর্মগুলোই আলাদা থাকে কিন্তু কখনো রান্নাঘর বা বাথরুম শেয়ার করতে হতে পারে।
স্থানীয়দের সাথে শেয়ার করে থাকাটা সাশ্রয়ের মধ্যে আরেকটি ভালো উপায়। এটি হতে পারে কোন একজন বা পুরো পরিবারের সাথে বসবাস করা; বাংলাদেশে যেটাকে সাবলেট বলা হয়।
পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
এগুলোর বিকল্প হিসেবে আছে অ্যাপার্টমেন্ট। এই মাধ্যমটিতে আলাদা ভাবে নিজের মত করে থাকা গেলেও একটু বেশি খরচ গুনতে হবে। অনেকে একসাথে কয়েকজন মিলে একটা অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে থাকে।
ভ্রমণ প্রস্তুতি
সবকিছুর প্রস্তুতি শেষ; এবার সময় হলো প্লেনে উঠার। যতটা সম্ভব আগে ভাগে প্লেনের টিকেট করে রাখাটা ভালো। এতে টিকেট খরচ বাঁচানো যায়। টিকিটের জন্য বাতিল বা পরিবর্তন নীতিগুলো যাচাই করে নিতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস কবে শুরু হবে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তার আগে যথেষ্ট সময় রেখেই সেই দেশে পৌছাতে হবে। কেননা পারিপার্শ্বিকের সাথে মানিয়ে নেয়ার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন।
লাগেজ গুছানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনের নির্দেশনাগুলোর দিকে যথাযথ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রত্যেকটি এয়ারলাইনেরই নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকে। অতিরিক্ত স্যুটকেস বা লাগেজের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হয়।
পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ ও সময়
তবে গোছ-গাছের সময় যে জিনিসগুলো মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি সেগুলো হলো স্টুডেন্ট আইডি, পাসপোর্ট এবং কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র। এর সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের।
এই পদক্ষেপগুলোর সঠিক অনুসরণ বিদেশে উচ্চাশিক্ষার জন্য যাবতীয় পরিশ্রমকে সার্থক করে তুলতে পারে। এখানে বলা বাহুল্য যে, জীবনের প্রতিটি অর্জনের অন্তরালে নিজেকে প্রমাণের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা অনস্বীকার্য। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ফাইনাল পরিক্ষার মতই দেশের বাইরের বিদ্যাপীঠগুলোতে পড়াশোনার জন্য নিজের যোগ্যতা প্রমাণের পরীক্ষায় উতড়ে যেতে হয়। স্বভাবতই পরিক্ষার আগের দিনগুলোর প্রস্তুতির মত এখানেও উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নির্ভর করে এই পূর্ব প্রস্তুতির উপর।
পড়ুন: স্মার্ট আইডি কার্ড: জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে যেভাবে সংশোধন করবেন
এইচএসসির ফল প্রকাশ আজ
২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আজ রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হবে।
শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের ইউএনবিকে বলেন, ‘রবিবার এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি ভোকেশনাল, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এবং ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’
করোনা মহামারির কারণে সাত মাস বিলম্বের পর, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও এর সমমানের পরীক্ষা ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এরপর সরকার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
পড়ুন: এইচএসসির ফল প্রকাশ রবিবার
গত ১৪ নভেম্বর শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ২৩ নভেম্বর এবং এইচএসসি পরীক্ষা ৩০ ডিসেম্বর শেষ হয়।
করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ মাস থেকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।
অবশেষে, করোনা পরিস্থিতি উন্নতির পরে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সরকার স্কুল ও কলেজ খুলে দেয়।
গত বছর পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।
পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ১৩ ফেব্রুয়ারি
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছেন। সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের মুখপাত্র মোহাইমিনুল ইসলাম রাজ বলেন, ‘আপনারা সবাই অবগত আছেন গতকাল (শুক্রবার) শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণে শাবিপ্রবিতে এসেছিলেন। মন্ত্রীদের সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সকল দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন এবং আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এজন্য আমরা মন্ত্রীদ্বয়’কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা শুক্রবার তাদের ছয় দফা দাবি এবং সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাত্মক উন্নয়নের কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে রবিবার থেকে আগের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি পদক্ষেপের জন্য উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি সেদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহত ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীসহ সকলের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করছি।
শুক্রবার শিক্ষার্থীদের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির। তাদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও, আন্দোলনের সময় বন্ধ থাকা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট এবং নম্বরগুলো কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় সক্রিয় করা হবে বলে জানান তিনি।
দীপু মনি পুলিশের গুলিতে আহত সজল কুণ্ডের যথাযথ চিকিৎসা এবং তার জন্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগেরও আশ্বাস দিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান।