%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F
শিশুদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের মন ও মেধাকে ফুটিয়ে তুলতে তাদের মধ্যে খেলাধুলা ও খেলাধুলার প্রসারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের মধ্যে খেলাধুলা এবং খেলাধুলা যত ছড়িয়ে দিতে পারবো আমাদের শিশুদের মন এবং প্রতিভা ততই বিকাশ লাভ করবে। তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য আরও উন্নত হবে এবং তাদের মন উদার হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ ইয়ুথ গেম-২০২৩ এর ফাইনাল রাউন্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
বনানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ০২ থেকে ২২ জানুয়ারি-২০২৩ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আন্তঃ-উপজেলা ও আন্তঃজেলা পর্বের সফল সমাপ্তির পর সপ্তাহব্যাপী ফাইনাল রাউন্ডের পর্দা উঠানো হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলা তরুণদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি করে যা তাদের খেলাধুলা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও সমৃদ্ধি ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, এ কারণেই তার সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা চালু করেছে। ‘সুতরাং, আমাদের দেশে খেলাধুলা যথেষ্ট সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ খেলোয়াড় তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে চায়।
‘আজকে আমাদের লক্ষ্য একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা’ উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট খেলোয়াড় তৈরি করবে যাতে বাংলাদেশ যেকোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
তার পরিবারের সদস্যদের বিশেষ করে শেখ কামালের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা কামালকে একজন বহুমুখী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেন। কামাল একাধারে ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ বিভিন্ন খেলায় জড়িত ছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি (শেখ কামাল) আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলা ও খেলাধুলায় আরও ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তার প্রতিভা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাপিয়ে গেছে। তিনি এখানে আধুনিক ফুটবল খেলার সূচনা করেছিলেন, আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
হাসিনা বলেন, ভবিষ্যৎ ক্রীড়া তারকাদের খুঁজে বের করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এই যুব খেলা একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।
১৯৩টি স্বর্ণ, ১৯৩টি রৌপ্য এবং ১৮৭টি ব্রোঞ্জের জন্য প্রায় ৪০০০ (অনূর্ধ্ব-১৭) প্রতিশ্রুতিশীল ক্রীড়াবিদ মেগা স্পোর্টস ইভেন্টের চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিচ্ছে।
এদিকে, শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩-এর পুরুষ ও মহিলা উভয় ফুটবল প্রতিযোগিতাই রাজধানীর দুটি শহরের পৃথক ভেন্যুতে মিটের উদ্বোধনী দিনে অনুষ্ঠিত হয়।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিওএ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহেদ রেজা।
বিওএ প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে যুব গেমসের আয়োজন করে। গেমসের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন শাখায় জাতীয় দলের জন্য ভবিষ্যত খেলোয়াড় নির্বাচন করা এবং তরুণ ক্রীড়াবিদদের প্রতিভা তৈরি করা।
বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে গেলেও তার সরকার দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য কারণে সৃষ্ট মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন আমাদের প্রচেষ্টা আমাদের অর্থনীতিকে সচল রাখা। আমরা এটি করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. এস এ মালেকের মৃত্যুতে একটি স্মারক আলোচনার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাজধানীর কলাবাগানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. মালেকের স্মরণে আলোচনার আয়োজন করে, যিনি ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মারা যান।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে বাংলাদেশ গড়ছে।
আরও পড়ুন: পূর্ব-পশ্চিমের বিমান চলাচলের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে পেরেছি। একদিন এই বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ডা. মালেকের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহনে তিনি সবসময়ই আন্তরিক ছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ড. মালেক তাদের একজন।
তিনি আরও বলেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি জাতির পিতার আদর্শকে জনগণের সামনে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের গণহত্যার পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ এবং তার আদর্শকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জনগণের সামনে তুলে ধরতে প্রধান ভূমিকা পালনকারী ড. এস এ মালেক তাদের একজন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার প্রবর্তিত ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ শব্দের সঙ্গে জনগণকে পরিচিত করতে প্রয়াত এই নেতার বিরাট ভূমিকা ছিল।
তিনি বলেন, ডা. মালেক এবং ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে (১৯৮১ সালে) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কারণ তারা জনমত তৈরি করেছিলেন এবং দলীয় ফোরামে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: হৃদরোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনকি তিনি বারবার আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার জন্য ড. মালেককে তিরস্কার করেছেন।
মালেক একজন রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে তার ভূমিকা রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে ডা. মালেকের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনে অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনে ড. মতিন চৌধুরীসহ অন্যান্যদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অজিত কুমার সরকার ‘ডক্টর এস এ মালেক: কারেজ পারসোনিফাইড অ্যান্ড শেপড বাই বঙ্গবন্ধু’স আইডিয়ালস’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. আখতারুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল খালেক ও ডা. এসএ মালেকের ছেলে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুরন্ত বিপ্লবের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা দুরন্ত বিপ্লবের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সম্প্রতি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া দুরন্ত বিপ্লবের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু ভালোবাসার অপর নাম’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে রবিবারের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিপ্লবের মা রোকেয়া আক্তার খাতুন, তার ভাই দুর্জয় বিপ্লব ও বোন শাশ্বতী বিপ্লব উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় উপ-কমিটির সাবেক সদস্য বিপ্লব গত ৭ নভেম্বর বুড়িগঙ্গা নদীতে তার নৌকাকে লঞ্চ ধাক্কা দিলে তিনি ডুবে মারা যান।
মায়ের সঙ্গে দেখা করতে কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুর যাচ্ছিলেন ৫১ বছর বয়সী এই উদ্যোক্তা।
আরও পড়ুন: ‘রেণু থেকে বঙ্গমাতা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের বইয়ের উদ্বোধন
হৃদরোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশ প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ১৪ বছরে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্ডিয়াক কেয়ারে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ কার্ডিওভাসকুলার রোগের চিকিৎসার ক্ষমতা রয়েছে কারণ দক্ষ জনশক্তি, আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি দেশে এখানে পাওয়া যায়।’
শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (বিসিআরএফ) আয়োজিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক বেশি সহজলভ্য এবং সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা দেশের রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করায় দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছে এবং এভাবে (দেশের) বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে শিশু কার্ডিয়াক রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও এই ধরনের সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশু হৃদরোগের চিকিৎসার পরিধি বাড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি এবং পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের ফলে শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তৈরির সুযোগ বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: উৎপাদন বাড়াতে কৃষি নিয়ে গবেষণা বাড়ান: বিজ্ঞানীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ শয্যার একটি বিশ্বমানের 'ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট' প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
দেশে কার্ডিয়াক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ সংক্রান্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, ধূমপান এবং অতিরিক্ত ডায়াবেটিসসহ নানা কারণে দেশে দিন দিন হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কার্ডিওভাসকুলার রোগের যত্নের বিকাশের পাশাপাশি আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হৃদরোগ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে মারা যায়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ২৭ শতাংশই কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে। বর্তমানে দেশে প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু কার্ডিওভাসকুলার রোগে ভুগছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন তরুণ হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ২০০৯ সালে ৫০টি থেকে এখন ১১৫টিতে উন্নীত হয়েছে, যেখানে এমবিবিএস কোর্সের আসন সংখ্যা ২০০৯ সালে মাত্র ২ হাজার ৫০টি থেকে ১০ হাজার ৭৮৯ এ দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, তার সরকার প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করবে এবং ইতোমধ্যে চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তৃতীয় বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণ কার্ডিয়াক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি অনন্য সুযোগ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: পূর্ব-পশ্চিমের বিমান চলাচলের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণা অত্যাবশ্যক: প্রধানমন্ত্রী
উৎপাদন বাড়াতে কৃষি নিয়ে গবেষণা বাড়ান: বিজ্ঞানীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি উৎপাদনে উৎকর্ষতা অর্জনে গবেষণায় অতিরিক্ত প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বিজ্ঞানীদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় মনে করি গবেষণা ছাড়া শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা সম্ভব নয়। আমরা কৃষিনির্ভর দেশ হওয়ায় আমরা কৃষিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি।’
বৃহস্পতিবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ‘বঙ্গবন্ধু পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি অবশ্য বলেন, সরকার অন্যান্য খাতেও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিজ্ঞানের ওপর গবেষণায় জোর দিয়েছি।’
খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে ধারাবাহিক গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ প্রায়ই প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়।
‘সুতরাং আমাদের ফসল উৎপাদন করতে হবে,’ তিনি বলেন।
কৃষি গবেষণায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ শুধু খাদ্যশস্য উৎপাদনেই নয়, সবজি, ফলমূল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন জাতের ফসল দিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করতে চলেছে তাই সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বায়ো-ইনফরমেটিক্স, ন্যানো-টেকনোলজি, মেশিন লার্নিং, ইন্টারনেট অব থিংস এবং নতুন কৃষি প্রযুক্তি শেখার এবং উৎপাদনের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক এম মোজাম্মেল হক এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইআরআরআই) মহাপরিচালক জিন বালি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. স্টিভেন ওয়েব এবং বিআইআরআই’র মহাপরিচালক ড. এম শাহজাহান কবিরও বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ‘ব্রি'র গর্ব ও সাফল্যের ৫০ বছর’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিআরআরআই-এ পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কৃষি ক্ষেত্রে গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু পিয়েরে ট্রুডো কৃষি গবেষণা কেন্দ্র’ উদ্বোধন করেন।
কেন্দ্রটি বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক, গবেষণা কার্যক্রম, প্রযুক্তি বিনিময়, উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কানাডা সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তা ও অর্থায়নে এই প্রথম এ ধরনের গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হলো।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মধ্যে বহু-বিষয়ক গবেষণা, টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণ এবং উন্নয়ন অংশীদারিত্বে সহযোগিতার লক্ষ্যে সই করা একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুসরণ করে বিআরআরআই-তে প্রযুক্তি কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রি-এর গর্ব ও সাফল্যের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দেন।
তিনি বৃক্ষরোপণ, ব্রি পরীক্ষাগার পরিদর্শন, এর বিভিন্ন উদ্ভাবন এবং ‘ধান-কাব্য’ শীর্ষক একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
তিনি বিআরআরআই এবং বিএআরসি-এর পাঁচটি গবেষণা প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন।
পূর্ব-পশ্চিমের বিমান চলাচলের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে বিমান চলাচলের প্রবেশদ্বার এবং সংযোগস্থল হবে।
বুধবার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অগ্রগতি প্রদর্শনকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ব্যবহার করলে আন্তর্জাতিক রুটের দূরত্ব কমবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার একটি গেটওয়ে হয়ে উঠবে যেভাবে সবাই এখন দুবাইকে বিমানের রিফুয়েলিংয়ের গেটওয়ে হিসাবে ব্যবহার করে।’
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক রুটে জ্বালানি সরবরাহের জন্য কক্সবাজার অল্প দূরত্বের মধ্যে হবে এবং এয়ারলাইন্স বেশি দূর যেতে পারবে না। তারা কক্সবাজার থেকে সরাসরি এই সুবিধা নিতে পারেন।
তিনি উল্লেখ করেন, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে জ্বালানি সেবা থেকে দেশের আয় বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে সবকিছুই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ দ্রুত এবং সহজে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পেতে সক্ষম হবে। তাই বিমানবন্দরের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব একটি বিদেশি কোম্পানিকে দেয়া হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান 'হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ' প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
আগামী বছরের অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।
এ পর্যন্ত তৃতীয় টার্মিনালের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী বছরের অক্টোবরের মধ্যে মোট প্রকল্পের ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হবে। কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকায় বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও দক্ষতা বাড়বে।
ফরাসি রাডার প্রস্তুতকারক থ্যালেসের রাডার ইনস্টলেশন নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত রাডার স্থাপনের কাজ শেষ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, নতুন রাডার স্থাপনের ফলে এভিয়েশন সেক্টরে আয় বাড়বে এবং এর থেকে ভালো আয় আসবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশসীমার উপর দিয়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলো ট্র্যাক করা সহজ হবে এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের ফি নেয়া সহজ হবে।’
সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন রাডার স্থাপনের প্রকল্পটি ২০২১ সালের অক্টোবরে নেয়া হয়েছিল এবং ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এটি সম্পূর্ণ করার সময়সীমা ছিল।
তবে তৃতীয় টার্মিনাল এবং রাডার দু’টি একই সময়ে উদ্বোধন করা হবে বলে সূত্র জানায়।
সূত্র আরও জানায় যে রাডারের ক্ষমতা ভারত ও মিয়ানমার থেকে পাওয়া সমুদ্রসীমা পর্যন্ত প্রসারিত হবে। বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে আরও আধুনিক ও নিরাপদ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান।
আরও পড়ুন: মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণা অত্যাবশ্যক: প্রধানমন্ত্রী
মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণা অত্যাবশ্যক: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবিত ও বিকাশে গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন,‘আমি সবসময় গবেষণার উপর জোর দিই। কারণটি হলো গবেষণা ছাড়া কোনও কিছুর সমৃদ্ধি সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ উপলক্ষে সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা গবেষণার জন্য ফেলোশিপ দেয়ার পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন,‘আমি মনে করি এই ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব আছে পৃথিবীর সব ভাষা সংরক্ষণ করা, এগুলো নিয়ে গবেষণা করা এবং ভাষার ইতিহাস জানা। আমি মনে করি এটি করা যেতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, প্রয়োজনে ভাষা গবেষকদের ফেলোশিপ দেয়ার জন্য তিনি তহবিলের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি আরও বলেন, গবেষণার সুবাদে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ‘এখন বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপকভাবে গবেষণার প্রয়োজন।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বাংলাদেশের দুই কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে ফেলোশিপ ও উপবৃত্তি এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কোনো টুইটার অ্যাকাউন্ট নেই
তিনি বলেন, তার সরকার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে সাক্ষরতার হার মাত্র ৪৫ শতাংশ থেকে ৬৫ দশমিক পাঁচ শতাংশে উন্নীত করেছিল এবং সেই সময়ে এই অর্জনের জন্য ইউনেস্কোর কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিল। তারপর তার সরকার উচ্চ শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদানের জন্য পুরস্কারের অর্থ দিয়ে একটি তহবিল গঠন করে।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা এখন সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক দুই শতাংশে উন্নীত করেছি। সুতরাং, আমরা (শিক্ষার ক্ষেত্রে) অগ্রসর হচ্ছি।’
শেখ হাসিনা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে ইনস্টিটিউটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা চার প্রাপকের হাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক তুলে দেন।
হাবিবুর রহমান এবং রঞ্জিত সিংহকে জাতীয় পদক প্রদান করা হয় এবং মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মহেন্দ্র কুমার মিত্র এবং মাতৃভাষা প্রেমীদের ওয়ার্ল্ড সোসাইটি, ভ্যাঙ্কুভার, কানাডাকে আন্তর্জাতিক পদক প্রদান করা হয়।
মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভারস অব ওয়ার্ল্ড সোসাইটির সভাপতির পক্ষে পদক গ্রহণ করেন মো. আমিনুল ইসলামের।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) এবং বাংলাদেশে ইউনেস্কোর অফিস প্রধান ও প্রতিনিধি সুসান মারি ভাইজ।
আরও পড়ুন: মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার রবিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
'বহুভাষিক বিশ্বে বহুভাষিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা' বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার।
স্বাগত বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সুলেমান খান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. হাকিম আরিফ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আলজেরিয়া, জাপান, চীন, রাশিয়া ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের শিশুরা প্রধানমন্ত্রীকে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
২০২৩ সালের একুশে পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক ২০২৩’ প্রদান করেছেন।
সোমবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক তুলে দেন।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে খালেদা মঞ্জুর-ই খুদা, মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) এবং হাজী মোহাম্মদ মজিবর রহমান ভাষা আন্দোলনে তাদের ভূমিকার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: একুশে পদক পাচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনসহ ২টি প্রতিষ্ঠান ও ১৯ ব্যক্তিত্ব
অভিনয়ে অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন মাসুদ আলী খান এবং শিমুল ইউসুফ। সঙ্গীতের জন্য মনোরঞ্জন ঘোষাল, গাজী আবদুল হাকিম এবং ফজল-ই-খুদা (মরণোত্তর)। আবৃত্তির জন্য জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও শিল্পকলার (কলা) জন্য নওয়াজিশ আলী খান এবং ছবি আঁকার জন্য কনক চানপা চাকমা।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে মমতাজ উদ্দিন (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় মো. শাহ আলমগীর (মরণোত্তর), গবেষণায় ডা. মো. আব্দুল মজিদ, শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), সমাজসেবায় সাইদুল হক, রাজনীতিতে অ্যাডভোকেট ড. মঞ্জুরুল ইসলাম (মরণোত্তর) ও আখতার উদ্দিন মিয়া (মরণোত্তর) এবং ভাষা ও সাহিত্যে ড. মনিরুজ্জামান।
শিক্ষা ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পুরস্কার পেয়েছে।
প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি একটি স্বর্ণপদক, একটি পদকের রেপ্লিকা, একটি সম্মাননা সনদ এবং চার লাখ টাকার চেক পেয়েছেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এটি সঞ্চালনা করেন এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মো. আবুল মনসুর।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রবর্তিত হয় একুশে পদক।
আরও পড়ুন: একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী গোলাম মোস্তফা মারা গেছেন
মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার রবিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার রবিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে মিরপুর, মিরপুর ডিওএইচএস, পল্লবী, কালশী, মহাখালী, বনানী, উত্তরা ও বিমানবন্দরে যানবাহন চলাচল সহজ হবে।
এদিন সকাল ১০টায় রাজধানীর বালুর মঠ সংলগ্ন কালশী মোড়ে একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী যান চলাচলের উদ্বোধন করবেন।
দুই হাজার ৩৩৫ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি ইসিবি স্কয়ার থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কালশী সার্কেল ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারে একনেকে অনুমোদন পায়।
এটি ইসিবি স্কোয়ার থেকে কালশী পর্যন্ত তিন দশমিক ৭০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড) প্রায় এক হাজার ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
প্রকল্পের তথানুযায়ী, ফ্লাইওভারটি দেখতে ইংরেজি বর্ণমালা ‘ওয়াই’-এর মতো।
যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এর আগে চার লেনের রাস্তাগুলোকে ছয় লেনে প্রশস্ত করা হয়েছে।
প্রধান চার লেনের ফ্লাইওভারটি ইসিবি স্কোয়ার থেকে কালশী এবং মিরপুর ডিওএইচএসের দিকে সংযু্ক্ত হয়েছে এবং একটি দুই লেনের র্যাম্প কালশী মোড় থেকে কালশী রোড পর্যন্ত নেমেছে।
আরও পড়ুন: সমু্দ্র অর্থনীতি ও নিরাপত্তা জোরদারে কোস্টগার্ড আরও শক্তিশালী হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রকল্পের মধ্যে একটি পিসি গার্ডার ব্রিজ সম্প্রসারণ, দুটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ, একটি পাবলিক টয়লেট, দুটি পুলিশ বক্স, একটি সাত দশমিক ৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন এবং প্রসস্ত ড্রেন, একটি একহাজার ৭৫৫ মিটার আরসিসি পাইপ ড্রেন, রিটেইনিং ওয়াল, তিন হজার ৩৮৩ মিটার যোগাযোগ নালা, ৮ লাখ-লিনিয়ার মিটার বালির কম্প্যাকশন পাইল, পৃথক সাইকেল লেন এবং ছয়টি বাস বে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কোনো টুইটার অ্যাকাউন্ট নেই
প্রধানমন্ত্রীর কোনো টুইটার অ্যাকাউন্ট নেই
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টুইটার বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম. এম ইমরুল কায়েস ইউএনবিকে বলেছেন, এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট হিসাবে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, যা মোটেও সত্য নয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফেসবুক, টুইটার বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই।
তাই এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বীর নিবাস: অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ হাজার বাড়ির চাবি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী
আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে: মার্কিন কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রী