প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
সরকারের পদক্ষেপে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার কর্তৃক অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিরুৎসাহিত করা এবং রেমিট্যান্স আয়কে উৎসাহিত করার মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় আগামী দিনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উন্নতি হতে পারে।
বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে নওগাঁর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং কোভিড-পরবর্তী চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি বেড়েছে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য ভারসাম্যের ওপর কিছুটা চাপ সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ফলস্বরুপ, যদিও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২ সালের আগস্টে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরবর্তীতে এই চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এটি হ্রাস পেতে শুরু করে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান বজায় রাখতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবহার শুরু করলে রিজার্ভ হ্রাসের হার বাড়ে।
তিনি আরও বলেন, ‘৩১ মে এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে চার মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।’
লক্ষ্মীপুরের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ নূর উদ্দিন চৌধুরীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ খাতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তার সরকারের সাফল্য এখন সর্বজন স্বীকৃত ও প্রশংসিত।
তার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সেতু বিভাগ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে- ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা পূর্ব-পশ্চিম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, ঢাকা শহরে ২৫৮ কিলোমিটার সাবওয়ে নির্মাণ, ঢাকা শহরে ৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইনার এলিভেটেড সার্কুলার রোড নির্মাণ এবং মেঘনা নদীর উপর প্রায় সোয়া ২ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ। ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর সড়ক।
আরও পড়ুন: স্থানীয়ভাবে তৈরি কোস্ট গার্ডের অত্যাধুনিক ৫ জাহাজ কমিশনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী
পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে: বরিশাল-ভোলা সড়কে তেঁতুলিয়া ও কলাবাদর নদীর ওপর প্রায় সাড়ে১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ; বরিশাল জেলার রহমতপুর-বাবুগঞ্জ-মুলাদী হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ সড়কে আড়িয়াল খা নদীর উপর ১ দশমিক ৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ।
চট্টগ্রাম থেকে আ.লীগের আরেক সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই জমি চাষের উদ্যোগ নেওয়ার ফলে প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর অব্যবহৃত জমি ইতোমধ্যেই চাষের আওতায় আনা হয়েছে।
কৃষি খাতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে ধান, ভুট্টা, আলু, শাকসবজি ও ফলমূলসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বেড়েছে, ক্রমাগত বাড়ছে।
বিশ্বে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ২২টি কৃষিপণ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সংকট মোকাবিলায় সরকার কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর বহুমাত্রিক সম্পর্ককে ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী
সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর বহুমাত্রিক সম্পর্ককে ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর শুধু এই দুই দেশের সঙ্গে নয় বরং আরও কয়েকটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে।
বুধবার (২১ জুন) প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার আগে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যা ২৩-২৫ মে কাতারে তার তিন দিনের সরকারি সফর এবং ১৩ জুন সুইজারল্যান্ডে চার দিনের সরকারি সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগ দিতে সুইজারল্যান্ড যান এবং এর আগে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ‘তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরাম: একটি নিউ গ্লোবাল গ্রোথ স্টোরি’-এ যোগ দেন।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
তার সুইজারল্যান্ড সফরের সময়, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডির সঙ্গে জেনেভায় ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন।
ওই দিন শেখ হাসিনা প্যালেস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসেটের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি বলেন, দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
একই দিনে, প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’ এর প্লেনারিতে তার ভাষণ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল' শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার সরকারের নেতৃত্বে শ্রম খাতের সংস্কারে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসার সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন এবং একই স্থানে আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবো তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও মহাপরিচালকের সদর দপ্তরে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: স্থানীয়ভাবে তৈরি কোস্ট গার্ডের অত্যাধুনিক ৫ জাহাজ কমিশনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী
১৫ জুন শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-ডব্লিউইএফ আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশে’ একটি ইভেন্টে ভাষণ দেন।
এছাড়াও, তিনি ডব্লিউইএফ অফিসে ডব্লিউইএফ এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। সন্ধ্যায় তিনি ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক ড. ওকোনজো-ইওয়ালা তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। একই দিন সন্ধ্যায় তিনি একটি কমিউনিটি সংবর্ধনাতেও যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ১৬ জুন সকালে ঢাকার উদ্দেশে জেনেভা ত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে সহযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার কাতার সফরে তিনি অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে তিন দিনব্যাপী কাতার অর্থনৈতিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন।
এছাড়া তিনি সম্মেলনে যোগদানকারী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে আয়োজিত একটি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং একটি মতবিনিময় অধিবেশনে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি দেখিয়েছেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী আমিরি দেওয়ানে গিয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া র্যাফেলস টাওয়ারে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জেসিম আল থানি এবং দোহায় রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
শেখ হাসিনা দোহার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে ভাষণ দেন।
এগুলো ছাড়াও কাতারের প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল-কাবি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন এবং একই স্থানে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহও তার সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
কাতারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এলএনজি সরবরাহকারী রাসগ্যাসের কাছ থেকে আরও এলএনজি সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে সই করা পরবর্তী চুক্তির জন্য তার পার্শ্ব বৈঠকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল।
ঢাকার উদ্দেশে দোহা ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা আওসাজ একাডেমি পরিদর্শন করেন।
স্থানীয়ভাবে তৈরি কোস্ট গার্ডের অত্যাধুনিক ৫ জাহাজ কমিশনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের স্থানীয়ভাবে তৈরি পাঁচটি অত্যাধুনিক জাহাজ কমিশনিং করেছেন, যা সামুদ্রিক আইন প্রয়োগকারী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে।
জাহাজগুলো হলো- 'বিসিজিএস অপূর্ব বাংলা' ও 'বিসিজিএস জয় বাংলা' নামে দুটি টহল জাহাজ, 'বিসিজিটি প্রত্যয়' ও 'বিসিজিটি প্রমত্ত' নামে দুটি টাগবোট এবং 'বিসিজিএফসি শক্তি' নামে একটি ভাসমান ক্রেন।
প্রধানমন্ত্রী এখানে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের কোস্ট গার্ড পতেঙ্গা বার্থে জাহাজগুলোর উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নারায়ণগঞ্জে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের তৈরি দুটি টহল জাহাজ এবং খুলনা শিপইয়ার্ড দুটি টাগবোট ও ভাসমান ক্রেনটি তৈরি করেছে।
নতুন জাহাজগুলোতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, সেন্সর এবং নজরদারি রাডার সংযুক্ত রয়েছে। উপকূলীয় টহল জাহাজে তিনটি স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে, যা আমাদের নিজেদের সুরক্ষা এবং অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
জাহাজগুলোর নজরদারি ক্ষমতা ৯৬ নটিক্যাল মাইল এবং কামানের পরিসীমা চার কিলোমিটার। জাহাজগুলো এই পরিসীমার মধ্যে অন্যান্য জাহাজ, অপরাধী বা শত্রুদের মতো যে কোনো বিষয় শনাক্ত করতে সক্ষম এবং কামানগুলো কোস্ট গার্ডকে অপারেশনাল কার্যক্রম মসৃণভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করবে।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বক্তৃতা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রী সুইজারল্যান্ড সফর সম্পর্কে বুধবার সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন
ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সমস্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং এই নীতিকে সার্বজনীনভাবে পালিত হওয়া আবশ্যক জানিয়ে এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
সোমবার বিকালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস সেমিহালের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
ফোনালাপে সেমিহাল বাংলাদেশ ও ইউক্রেনের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউক্রেন থেকে খাদ্য শস্যের নির্বিঘ্ন পরিবহনের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে বলেন যে বাংলাদেশ চায় বিদ্যমান যুদ্ধ অতি দ্রুত অবসান হোক, যাতে পৃথিবীর ‘ব্রেড বাস্কেট’ খ্যাত ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য সহজেই খাদ্য ঘাটতির দেশগুলোতে পাঠানো যায়।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত রপ্তানি সুযোগ কাজে লাগান: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের নেতৃত্বে ‘কৃষ্ণ সাগর শস্য উদ্যোগ’-এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান এবং এই উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি এই মহতী উদ্যোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী ডেনিস সেমিহাল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে; বিশেষ করে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংগঠনে ইউক্রেনের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে বাংলাদেশ জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতি অনুযায়ী সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি সমস্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিকে সমর্থন করেন এবং যা সকল ক্ষেত্রে সার্বজনীনভাবে পালিত হওয়া আবশ্যক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান যুদ্ধে সাধারণ জনগণ ও শিশুদের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরাও যুদ্ধ থেকে উঠে এসেছি। যুদ্ধ কোনো পক্ষের জন্যই মঙ্গল বয়ে আনে না। বাংলাদেশ শান্তির নীতিতে বিশ্বাসী।’
পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস সেমিহাল-এর সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং ইউক্রেনের জনগণের কল্যাণ প্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে মধ্যস্থতাকারী হতে পারে ভারত: ভারতীয় গণমাধ্যমকে মোমেন
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশ: বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশ ভোট দেয়নি
বাংলাদেশ বাইরের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের কাছে বাংলাদেশ নতি স্বীকার করবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারো হস্তক্ষেপে নতি স্বীকার করব না। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত।’
রবিবার প্রধানমন্ত্রী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ দরবারে (সমাবেশ) ভাষণ দিচ্ছিলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি স্বাধীন জাতি। আমরা একটি যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ অর্জন করেছি।’
বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারো সাথে বৈরিতা নয়’- নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার প্রয়োজনীয় সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে এবং দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ বারবার বাধা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে এগুলো (বাধা) কাটিয়ে উঠেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি এখনও অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ একটি দেশ যখন দ্রুত এগিয়ে যায়, তখন অনেকেই তা সহ্য করতে পারে না। তাই, তারা বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা শুরু করে।’
বিশ্ব মঞ্চে একটি স্বাধীন ও বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দেশের সকল মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।’
আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নজর দিতে বলেন।
আরও পড়ুন: জেনেভা থেকে বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের পথ খুলে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে, যাতে এই প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, যদি তারা এগুলো ব্যবহার করে।’
প্রযুক্তি অনেক শঙ্কা তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ধরন পাল্টে যাচ্ছে।'
প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য এসএসএফ সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের সঠিক নেতৃত্ব, সঠিক নির্দেশিকা এবং পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ দিনে দিনে উন্নতি করতে থাকবে।’
এসএসএফ প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা ব্যক্ত করেন যে বাহিনীটি শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও পেশাদার মানের দিক থেকে একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনীতে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান।
এসএসএফ এবং এর কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান কর্তৃক সংকলিত ও সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর ৭৫টি উদ্ধৃতির বাছাইকৃত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর উক্তি’- বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
১৯৮৬ সালের ১৫ জুন-এ রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর ১৯৯১ সালে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামে নামকরণ করা হয়।
বাহিনীটি মূলত রাষ্ট্রপতি যেখানেই থাকুক না কেন এবং রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান বা সরকার কর্তৃক ভিআইপি হিসাবে ঘোষিত যেকোনো ব্যক্তি সহ ভিআইপি উভয়কেই 'শারীরিক নিরাপত্তা' প্রদানের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল।
সংসদীয় ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পরে থেকে এই বাহিসীর মূলকাজ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিআইপিদের সুরক্ষা দেওয়া।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
জেনেভা থেকে বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটের যাত্রীদের চমকে দিয়েছেন।
জেনেভা থেকে দেশে ফেরার পথে তিনি বিমানটির ভেতরে ঘুরে দেখেন এবং যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
যাত্রীতে পরিপূর্ণ বাণিজ্যিক ফ্লাইটটিতে প্রধানমন্ত্রী যখন তাদের সিটের কাছে যান এবং কুশল বিনিময় করেন, তখন সবাই একদিনে বিস্ময় ও অন্যদিকে আনন্দ অনুভব করেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ‘ফ্লাইটে আসনের পাশেই তাদের (যাত্রী) প্রধানমন্ত্রীকে দেখে অনেকেই অবাক ও বিস্মিত হয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে জেনেভা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা যাত্রীদের ছবি তোলার অনুরোধ গ্রহণ করেন।
তিনি খুব স্নেহ নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং বেশ কয়েকজনকে তার কোলেও নেন।
যাত্রীদের কেউ কেউ গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত 'ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল' এ যোগ দিতে গত ১৩ জুন জেনেভা যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
সুইজারল্যান্ডে তিন দিনের সরকারি সফর শেষ করে জেনেভা থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট শুক্রবার দিবাগত রাতে (সকাল ১টা ৫৫ মিনিটে) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৩টা ৫০ মিনিট) জেনেভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি যাত্রা শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী বিমানে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে জেনেভা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত 'ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল' এ যোগ দিতে গত ১৩ জুন জেনেভা যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বুধবার প্যালাইস ডি নেশনস-এ 'ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩' এর প্লেনারি সেশনে ভাষণ দেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শীর্ষ সম্মেলন সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে বর্ধিত, সমন্বিত ও সুসঙ্গত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা মোকাবিলায় বৈশ্বিক কণ্ঠস্বরের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম।
সম্মেলনে এক ডজনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, জাতিসংঘ, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসা ও মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলার সঙ্গে পৃথক দুটি বৈঠক করেন।
এছাড়া ওইদিন তিনি ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপ্পো গ্র্যান্ডি, প্রিন্স রহিম আগা খান, সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বার্সেট এবং আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন।
সুইস প্রেসিডেন্ট বার্সেটের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও'র সদর দপ্তরে এর মহাপরিচালক আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন।
গত ১৫ জুন তিনি 'আ টক অ্যাট দ্য ডব্লিউইএফ' এ যোগ দেন এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অফিসে এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি ডব্লিউইএফ আয়োজিত 'নিউ ইকোনোমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এছাড়া কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সামিক আল মারি এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. ওকোনজো ইওয়েলা পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শেখ হাসিনা সন্ধ্যায় একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: সংক্রামক রোগ থেকে বিশ্বব্যাপী শিশুদের রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের ভোট দেবে, জনগণ তাদের ভোটের একমাত্র মালিক হিসেবে তারা যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। আর যে জনগণের ভোট পাবে সে সরকার গঠন করবে।’
বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় হিলটন হোটেলে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সংক্রামক রোগ থেকে বিশ্বব্যাপী শিশুদের রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বরে অথবা আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কারচুপি করা হবে বলে ভোট বর্জনের অঙ্গীকার করেছে, যদিও সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এর পরিবর্তে বিরোধী দলটি নির্বাচন আয়োজনের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসনের পথ প্রশস্ত করতে শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ দাবি করে।
শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু বিএনপি এটা ভালো করেই জানে যে তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের জন্য তারা জনগণের কোনো ভোট পাবে না এবং সে কারণে তারা এখন নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে পিছু হটার বাহানা খুঁজছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আসলে তারা (বিএনপি) চোরের ও ভোট কারচুপিকারীদের দল। ভোট ডাকাতি করা ছাড়া তাদের পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ তাদের আর চায় না এবং সে কারণে তারা জনগণের কাছ থেকে ভোট পায় না।’
সরকার পতনের জন্য বিএনপির বারবার হুমকি প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার অতটা দুর্বল নয়।
নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে বিএনপির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অবদানের জন্য প্রিন্স রহিম ও আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ককে প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিটে যোগ দিতে মঙ্গলবার জেনেভা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেও ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার, যা ২০০৬ সালে ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। দারিদ্র্যের হার প্রায় ৪১ দশমকি ৫ শতাংশ থেকে প্রায় ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা খুনিরা দেশের মানুষের উন্নয়নে কিছুই করেনি।
গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ করেন।
তার সরকার ৫০ লাখ গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একজন মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিটে যোগ দিতে জেনেভার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
তবে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এই চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ গড়তে ভিশন থাকা দরকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিল এবং সেই রূপকল্প ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার রূপকল্প-২০৪১ ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যাতে মানবতাকে ক্ষুণ্ন করতে না পারে: শেখ হাসিনা
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যাতে মানবতাকে ক্ষুণ্ন করতে না পারে: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের (৪আইআর) উপকরণগুলো মানবতাকে আঘাত বা অবমূল্যায়ন করার জন্য ব্যবহার করা হবে না, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ৪আইআর উপকরণগুলো আমাদের মানবতাকে আঘাত বা অবমূল্যায়ন করার জন্য ব্যবহার করা হবে না।’
বৃহস্পতিবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নিজ কার্যালয়ে ‘নিউ ইকোনোমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: আ.লীগ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী সাইবার-আক্রমণ, বিভ্রান্তি এবং অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিতভাবে সাইবার-আক্রমণ, বিভ্রান্তি এবং অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষা রাখতে হবে।’
৪আইআর যাতে সমাজের মধ্যে আরও বিভাজন তৈরি না করে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।