প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের কাছে বাংলাদেশ নতি স্বীকার করবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারো হস্তক্ষেপে নতি স্বীকার করব না। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত।’
রবিবার প্রধানমন্ত্রী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ দরবারে (সমাবেশ) ভাষণ দিচ্ছিলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি স্বাধীন জাতি। আমরা একটি যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ অর্জন করেছি।’
বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারো সাথে বৈরিতা নয়’- নীতি অনুসরণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার প্রয়োজনীয় সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে এবং দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ বারবার বাধা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে এগুলো (বাধা) কাটিয়ে উঠেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি এখনও অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ একটি দেশ যখন দ্রুত এগিয়ে যায়, তখন অনেকেই তা সহ্য করতে পারে না। তাই, তারা বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা শুরু করে।’
বিশ্ব মঞ্চে একটি স্বাধীন ও বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দেশের সকল মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।’
আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নজর দিতে বলেন।
আরও পড়ুন: জেনেভা থেকে বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের পথ খুলে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে, যাতে এই প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, যদি তারা এগুলো ব্যবহার করে।’
প্রযুক্তি অনেক শঙ্কা তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ধরন পাল্টে যাচ্ছে।'
প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য এসএসএফ সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের সঠিক নেতৃত্ব, সঠিক নির্দেশিকা এবং পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ দিনে দিনে উন্নতি করতে থাকবে।’
এসএসএফ প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা ব্যক্ত করেন যে বাহিনীটি শৃঙ্খলা, আনুগত্য ও পেশাদার মানের দিক থেকে একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনীতে পরিণত হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান।
এসএসএফ এবং এর কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান কর্তৃক সংকলিত ও সম্পাদিত বঙ্গবন্ধুর ৭৫টি উদ্ধৃতির বাছাইকৃত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর উক্তি’- বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
১৯৮৬ সালের ১৫ জুন-এ রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর ১৯৯১ সালে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামে নামকরণ করা হয়।
বাহিনীটি মূলত রাষ্ট্রপতি যেখানেই থাকুক না কেন এবং রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান বা সরকার কর্তৃক ভিআইপি হিসাবে ঘোষিত যেকোনো ব্যক্তি সহ ভিআইপি উভয়কেই 'শারীরিক নিরাপত্তা' প্রদানের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল।
সংসদীয় ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পরে থেকে এই বাহিসীর মূলকাজ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য ভিআইপিদের সুরক্ষা দেওয়া।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী