প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
বাংলাদেশ নৌবাহিনী 'ক্রেতা' থেকে 'নির্মাতা' হতে চলেছে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সততা, নেতৃত্ব এবং আত্মত্যাগের গুণাবলিতে উৎসাহিত হয়ে আপনাদের সর্বদা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার পাশাপাশি যে কোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে।বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির (বিএনএ) মিডশিপম্যান ২০২০ আলফা ব্যাচ এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২২ ব্রাভো ব্যাচের উত্তীর্ণ ক্যাডেটদের প্রেসিডেন্ট প্যারেডে ভাষণ দিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে থাকে এবং দক্ষতার সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই আমাদের কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করুক।’
গ্র্যাজুয়েট অফিসারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় আপনারা আমাদের নৌবাহিনীর ভবিষ্যত নেতৃত্বদানকারী।
তিনি তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং শৃঙ্খলা ও সততার অনুভূতিতে সজ্জিত হয়ে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে বলেছিলেন।
আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করছে উল্লেখ করে
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে সক্ষম করার লক্ষ্যে তাদের আধুনিকায়নের কাজ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না, বরং সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। ‘একটি স্বাধীন দেশ হওয়ায় আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং উন্নত সরঞ্জামে সজ্জিত করতে চাই, যাতে আমরা বাইরের শত্রুদের যে কোনও আক্রমণ প্রতিহত করতে পারি এবং যে কোনও যুদ্ধে জয়ী হতে পারি।’
তিনি বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ক্রেতা থেকে নির্মাতা হতে চলেছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সামরিক জাহাজ ও ব্যবস্থার নির্মাতা হয়ে উঠছে যা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব ব্যবহারের জন্য স্থানীয় শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুলনা শিপইয়ার্ডে পাঁচটি পেট্রোল ক্রাফট এবং দুটি বৃহৎ পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। তিনি বলেন, আরও পাঁচটি টহল কারুশিল্প তৈরির কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নৌবাহিনী তিন বাহিনীর জন্য আইএফএফ (বন্ধু ও শত্রুর পরিচয়) ব্যবস্থা প্রস্তুত করেছে। এখন নৌবাহিনী ‘ক্রেতা’ থেকে ‘নির্মাতা’ (সামরিক জাহাজ ও ব্যবস্থার) বাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এটি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে, স্থানীয় প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দক্ষতা বাড়াবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের প্রথম টানেল।
তিনি বলেন, বিএনএস শের-ই-বাংলার নির্মাণ কাজ চলছে এবং কক্সবাজারের পেকুয়ায় একটি স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছে এবং এখন তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে চারটি ফ্রিগেট, ছয়টি করভেট, চারটি বড় পেট্রোল ক্রাফট, পাঁচটি পেট্রোল ক্রাফট এবং দুটি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক সংকটে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় তা নিশ্চিত করুন: স্থানীয় প্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি বলেন, সরকার দক্ষ কমান্ডো ও উদ্ধারকারী দল হিসেবে 'স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ কমান্ড' এবং নেভাল এভিয়েশন উইং প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালে দুটি সাবমেরিন যুক্ত করেছি। ফলস্বরূপ, আমাদের নৌবাহিনী আজ একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ, ফিশিং ট্রলার, নৌকা এবং ব্লু ইকোনমি-সম্পর্কিত মেরিটাইম প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্টের অবকাঠামো উন্নয়ন করছি। নৌবাহিনীতেও ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ নৌবাহিনী সম্প্রতি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে 'ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ-২০২২'-এর আয়োজন করেছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নৌবাহিনীর জন্য ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি জমকালো কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে ২০২০ আলফা ব্যাচের মোট ৩৫ জন মিডশিপম্যানকে কমিশন দেয়া হয়, আর ২০২২ ব্রাভো ব্যাচের ছয়জন সরাসরি প্রবেশকারী কর্মকর্তা স্নাতক হন।
প্রধানমন্ত্রী দুই সেরা অলরাউন্ড মিডশিপম্যানকে সম্মানের তরবারি এবং সিএনএস স্বর্ণপদক এবং সরাসরি প্রবেশকারী সেরা কর্মকর্তাকে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস সমান অধিকার ভোগ করে: প্রধানমন্ত্রী
বিজয়ের মাসে ১০০ মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজয়ের মাসে ১০০টি মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় তার কার্যালয়ে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
তিনি জনগণকে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন কাজের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি দেশের জনগণ অন্তত বিবেচনা করবে যে প্রায় ৩০ বছর (১৯৭৫-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৯) ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা কতটা উন্নয়ন করেছে এবং আওয়ামী লীগ সরকার কী করেছে।’
এক দিনে ১০০টি সেতু উদ্বোধনের দেড় মাসের মধ্যে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ৫০ জেলায় রেকর্ডসংখ্যক ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী একটি নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ও ভ্রমণের সময় কমানোর লক্ষ্যে এই সড়ক-মহাসড়কগুলো উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত দুই বছরে ১৪ হাজাত ৯১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি প্রকল্পের অধীনে দুই হাজার ২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যের মহাসড়কগুলো নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ৫০ জেলায় ১০০ সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার একদিনে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন করেছে এবং এর আগেও একদিনে ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করে। অতীতে কেউ এটা করতে পারে? না। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে ধ্বংস করেছে… আমি জানি না, যারা বলে আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে এর পরেও (১০০টি মহাসড়ক ও ১০০টি সেতু চালু করে) তাদের কথা মানুষ বিশ্বাস করবে কি না। এটাই আমার প্রশ্ন।’
নতুন সড়ক-মহাসড়কের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিভাগের ৬৫৩ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩২টি, খুলনা বিভাগে ৩৫২ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৫৮ দশমিক ৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৪টি, রংপুর বিভাগের ২০৩ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৫টি, রাজশাহী বিভাগের ১৯৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আটটি, ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ছয়টি, সিলেট বিভাগের ১০৬ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি এবং বরিশাল বিভাগের ১০৭ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি।
এর মধ্যে ৯৯টি মহাসড়ক সরকারি অর্থায়নে করা হয়েছে। অন্য একটি ৭০ কিলোমিটার জয়দেবপুর (গাজীপুর)- এলেঙ্গা (টাঙ্গাইল) চার লেনের মহাসড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়েছে বৈদেশিক ঋণ (তিন হাজার ২০৫ কোটি টাকা) ও সরকারি তহবিলের (দুই হাজার ৯৬৩ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা) সমন্বয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী নতুন ১০০টি মহাসড়কের বিষয়ে একটি উপস্থাপনা পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মের জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় তথ্য সংগ্রহ করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাঙ্গাইল ও খুলনা থেকে স্থানীয় সুবিধাভোগী এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অংশীজনদের এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে তিন হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, চার হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।
জাতীয় মহাসড়কগুলো রাজধানীকে বিভাগীয় শহর, সমুদ্র বন্দর, স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে। আঞ্চলিক মহাসড়কগুলো জেলা শহরগুলোকে নদী বন্দর ও স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। জেলা সড়কগুলো জেলা শহরকে উপজেলা বা এক উপজেলার সঙ্গে অন্য উপজেলাকে সংযুক্ত করে।
৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের ২৫টি জেলায় ৮,৭৯ দশমিক ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মোট পাঁচ হাজার ৪৯৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ১০০টি নবনির্মিত সেতু উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী
সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ; মাদক, নারী ও শিশু পাচার আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনসহ সীমান্তবর্তী জনগণের জানমাল রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বিজিবি সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান কারণ তারা তাদের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বিজিবি সদর দপ্তরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২২ এর কুচকাওয়াজে ভাষণ দিচ্ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময়ের সময় সীমান্তরক্ষীরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। ‘উৎসবের পরিবেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় করে আমরা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময়, বিজিবি বাস্তুচ্যুতদের নিবন্ধনসহ তাদের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছে।
শেখ হাসিনা তার শাসনামলে বিজিবির আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিজিবি সংস্কার উদ্যোগের আওতায় বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে এবং একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিজিবি একটি দক্ষ, শক্তিশালী, আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনীর সাংগঠনিক রূপ পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এখন বিজিবি স্থল, জল ও আকাশে তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
আরও পড়ুন: জাতীয় উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করুন: জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার সরকার 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১' গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, 'স্মার্ট ডিজিটাল নজরদারি এবং কৌশলগত বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম' নিরবিচ্ছিন্ন নজরদারি এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে বিজিবিতে উন্নত ও যুগোপযোগী অস্ত্র ও সরঞ্জাম যোগ করার কারণে এর অপারেশনাল সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে মোট এক হাজার ৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের এক লাখ ৪০ হাজার পাঁচটি সীমানা পিলার থেকে ‘পাক’ বা ‘পাকিস্তান’ শব্দগুলো তুলে ফেলে সেগুলোর জায়গায় ‘বাংলাদেশ’ বা ‘বিডি’ লেখার জন্য বিজিবিকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় যেতে দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করুন: জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়তে জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে শপথ নিই যে, সকল ষড়যন্ত্রের জাল ভেঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়কে স্মরণ করে শুক্রবার পালিত হবে বিজয় দিবস।
তিনি একটি সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জাতির প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশ যখন নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন স্বাধীনতা ও উন্নয়নবিরোধী এক চতুর্থাংশ অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ‘তাদের অতীত ইতিহাস দেখুন। তাদের একটি অংশ শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাই করেনি, তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হয়ে মানুষ হত্যা করেছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তাদের (স্বাধীনতাবিরোধীদের) রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেন।’
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনানিবাস থেকে জেনারেলের পকেটে আরেকটি গ্রুপের জন্ম ও প্রজনন, এই দলের হাতে শুধু রক্তের দাগ। এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যার চক্রান্তে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সংসদীয় গণতন্ত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় জাপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এদেশে একাত্তরের শকুনের বংশধর ও ১৯৭৫ সালের হায়েনারা এখনও সক্রিয়।
‘তারা সুযোগ পেলেই দাঁত-নখ দিয়ে দেশকে আঘাত করে।’ তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ভালো থাকবে এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠবে এটা তারা মেনে নিতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের চিহ্নিত করেছে। তাদের (জনগণ) আর ষড়যন্ত্র করে বিভ্রান্ত করা যাবে না।’
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে এ ধরনের উন্নয়ন সম্ভব হতো না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯৭৫ সালের পর ২৯ বছর ক্ষমতায় ছিল এবং তারা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকলে (২০০৯ থেকে ২০২২) বাংলাদেশ কখনোই এতটা উন্নতি করত না। উন্নয়নশীল দেশ হতে পারেনি। এখন এটা আপনার ওপর নির্ভর করছে, দেশের জনগণ, আপনি যা চান তা বেছে নেবেন - একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের ধারাবাহিকতা নাকি বিএনপি-জামায়াত জোটের দুষ্কৃতিতে জীবন কাটাতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতা এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডিত এবং আরেক শীর্ষ নেতা পলাতক এবং অর্থ পাচার, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দণ্ডিত। কেন সাধারণ মানুষ তাদের ভোট দিতে যাবে? তিনি প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের প্রতি আস্থা হারিয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন বিদেশিদের কাছে দেশকে নষ্ট করার জন্য কিছু ভাড়াটে লোক নিয়োগ করেছে। তারা পাচারকৃত অর্থ ব্যবহার করছে এবং দেশের মানহানি করছে।’
বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের দুঃশাসন এবং ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের অগ্নিসংযোগ সহিংসতার উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে ভোট দেয়নি।
তিনি বলেন, জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা এখন অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক হয়েছে:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণের সরকার আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের মূল লক্ষ্য জনগণের কল্যাণে কাজ করা এবং তারা কখনই চায় না জনগণের কষ্ট হোক।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এখন এটি অনেকাংশে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতিও কমছে। ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি সহ যেকোন পণ্যের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দাম সমন্বয় করব।’
আরও পড়ুন: আমরা বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিনির্ভর দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিবেচনা করে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ করছি- এটি বিশ্বের যেখানেই পাওয়া যাক না কেন এবং দাম যাই হোক না কেন।’
প্রধানমন্ত্রী কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং চলমান সংকট মোকাবিলায় এক ইঞ্চি আবাদি জমি অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানান।
সংকট আসতেই পারে এটাই স্বাভাবিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সঙ্কটকে ভয় পাবেন না। জনগণের সহযোগিতায় আমরা সফলভাবে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করেছি। বর্তমান বৈশ্বিক মন্দাও আমরা মোকাবিলা করব, ইনশাআল্লাহ। এ জন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’
পাঁচ মাসের আমদানির জন্য যথেষ্ট রিজার্ভ আছে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য দেশে এখন পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই নানা বানোয়াট মন্তব্য করছেন। মাত্র তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। কিন্তু এখন আমাদের কাছে যা রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট।’
কোভিড-১৯ সময়ের পরে রিজার্ভ কেন ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে কমেছে তার কারণগুলোও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
ব্যাংকের টাকা নিয়ে গুজবে কান দেবেন না:
শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই এমন গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অকারণে গুজবে কান দেবেন না। ব্যাংকগুলোতে টাকার অভাব নেই। নিজের কষ্টার্জিত টাকা ঘরে রেখে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। আমাদের সবকিছু বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠে এসেছে। দেশ এখন খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।’
তিনি বলেন, দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে এবং সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ২২ হাজার ডাক্তার এবং ৪০ হাজার নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি ও সংযোগ, অবকাঠামো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য কর্মসূচি এবং কৃষিসহ অন্যান্য খাতের উন্নয়নের দিকেও মনোনিবেশ করেন।
মহান বিজয় দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিককে তার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের ডাককে প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের ডাককে প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনের’ সময় যেমনটা করেছিল ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকও সেভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি ১০ ডিসেম্বরের জন্য (বিএনপির পক্ষ থেকে) বিশাল ঘোষণা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রত্যাখ্যান করেছে, যারা (অতীতে) জাল ভোটার তালিকা তৈরি করেছে। দেশের মানুষ এখন তাদের শুধু প্রত্যাখ্যান করেনি, ১৯৯৬ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনেও প্রত্যাখ্যান করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের তৃতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও ভোটার ওই নির্বাচনে সাড়া দেয়নি।
তিনি বলেন, ভোট কারচুপির মাধ্যমে তারা জাতির পিতার খুনি রশিদ ও বজলুল হুদাকে সংসদ সদস্য বানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ সেই নির্বাচনকে শুধু প্রত্যাখ্যানই করেনি, তারা আন্দোলনও শুরু করেছিল যা দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে খেলা করা বিএনপির চরিত্র। তারা জনগণের দল নয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে না, ক্ষমতাই তাদের লুটপাটের হাতিয়ার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তাদের জন্য স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, এর মানে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখনই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অর্থই হলো- জুলুম-নির্যাতন, দুঃশাসন, লুটপাট, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও বাংলা ভাই।
আরও পড়ুন: সংসদীয় গণতন্ত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় জাপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বিদায়ী জাপানি রাষ্ট্রদূতের আশা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে: ডেপুটি প্রেস সচিব
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
মহান বিজয় দিবস ২০২২ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করবে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার।
আরও পড়ুন: আমরা বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর একাত্তরের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা
সংসদীয় গণতন্ত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় জাপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
সংসদীয় গণতন্ত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় জাপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে মঙ্গলবার বিকালে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় আশ্বস্ত করেন যে তারা সংসদ ও এর বাইরে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রাখবেন।
বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, উপ-বিরোধীদলীয় নেতা ও জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের ছেলে রাহগীর আল মাহি এরশাদ (সাদ এরশাদ নামেই পরিচিত) উপস্থিত ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতার খোঁজখবর নেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেখ হাসিনা সংসদীয় গণতন্ত্রে গঠনমূলক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জানান।
সংসদ নেতা গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে বিশ্বব্যাপী বিরোধী দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেন।
জাপা নেতারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে অনেক বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে দেশে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে।
দেশের মানুষ এই ব্যবস্থার সুফল পাচ্ছে এবং প্রতিটি সেক্টরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে বলে জানান জাপা নেতারা।
তারা আরও বলেন, জাতীয় পার্টি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিদায়ী জাপানি রাষ্ট্রদূতের আশা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে: ডেপুটি প্রেস সচিব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, উভয়ে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেছেন এবং একমত হয়েছেন যে ১০ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশের জন্য একটি বিশাল বোঝা।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সফর করবেন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
তারা মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ওপর জোর দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ভাসানচর দ্বীপের উন্নয়নের পর রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়স্থল স্থাপনে জাপানের সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য একটি লাভজনক স্থান হওয়ায় জাপানের ব্যবসায়ীদের বৃহত্তর বিনিয়োগে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং ঢাকা মেট্রোরেলের মতো বাংলাদেশের মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানের সহায়তার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত সবসময় দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
শেখ হাসিনা বিদেশিদের জন্য একটি ডেডিকেটেড ট্যুরিস্ট জোন গড়ে তুলতে জাপানের সহযোগিতাও কামনা করেন।
জাপানি রাষ্ট্রদূত এটিকে একটি ভালো উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে তার মেয়াদ সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য এবং বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিতে তার ভূমিকার জন্য জাপানের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি হয়েছিল।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী সম্মানসূচক “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস”-এর উপাধিতে ভূষিত
মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা: বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী, প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন ডলার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ থেকে ২০৫০ সালে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এজন্য মোট ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
রবিবার তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় সংস্থান থেকে আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন থেকে অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০-৫০ বন্টনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘গ্লোবাল হাব অন লোকাললি লেড অ্যাডাপটেশন’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: অভিযোজন গ্লোবাল হাব উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা আমাদের বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ ও মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার অধীনে করা কাজের পরিপূরক হবে। আমি প্যারিস চুক্তির চেতনায় এই প্রচেষ্টায় আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে আমাদের অংশীদারদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন জলবায়ু অভিযোজনে জিডিপির ৬-৭ শতাংশ ব্যয় করে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদে প্রতিষ্ঠিত একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন উভয়ের জন্য ৮০০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি সমস্ত প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে তাদের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানের সুযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সকলকে অবশ্যই বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসনকে জলবায়ু প্রভাবের অভিযোজিত প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের গতিশীলতা বৃদ্ধি প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা উভয়কেই আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
ফ্ল্যাগশিপ আশ্রয়ণ কর্মসূচির অধীনে তার সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের জন্য প্রায় এক মিলিয়ন আধা পাকা দুর্যোগ সহনশীল বাড়ি নির্মাণ করেছে। কক্সবাজারের খুরুশকুলে জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুতল আবাসন প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে। প্রায় পাঁচ হাজার জলবায়ু শরণার্থী পরিবার যারা বিভিন্ন দ্বীপ থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে, তাদের ইতোমধ্যে সেখানে ১৩৯টি বহুতল ভবনে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
স্থানীয় জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করে আসছে। তারা বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য বিপদের বিরুদ্ধে একধরনের স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করেছে। তারা প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছে। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজন হাবে পরিণত করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে তাদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও জলবায়ু অভিযোজনের সমাধান রয়েছে। সরকার সংস্থান ও উদ্ভাবনের সঙ্গে উক্ত সমাধানগুলোকে সমর্থন করে। এই সংমিশ্রণটি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন ব্যবস্থাগুলোর একটি ক্ষেত্র বিকাশে আমাদের ভালভাবে পরিবেশন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় যেতে দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদে উপনেতার পদ আবারও একজন নারী পূরণ করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন প্রায় পূরণ করেছি; কারণ আমরা সংসদে চারজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি- স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা ও সংসদ উপনেতা নারী। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী কিছুদিন আগে ইন্তেকাল করেছেন। আমরা আবার আরেকজন নারী শূন্যপদ পূরণ করব।’
শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস-২০২২ উদযাপন এবং বেগম রোকেয়া পদক-২০২২ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা সমাজ, নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচ নারীর হাতে সম্মানজনক পদক তুলে দেন।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪২তম জন্ম ও ৯০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ৫ নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
নারী শিক্ষায় অবদানের জন্য এ বছর বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত পাঁচজন বিশিষ্ট নারী হলেন-ফরিদপুরের রহিমা খাতুন; নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য চট্টগ্রাম থেকে অধ্যাপক কামরুন নাহার বেগম (অ্যাডভোকেট); নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য খুলনা থেকে ফরিদা ইয়াসমিন; নড়াইলের ড. আফরোজা পারভীন সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারীর আলোকিতকরণে অবদানের জন্য এবং গ্রামীণ উন্নয়নে অবদানের জন্য ঝিনাইদহের নাসিমা বেগম।
প্রাপকদের পক্ষে ড.আফরোজা পারভীন এই অনুষ্ঠানে তার অনুভূতি শেয়ার করেন।
প্রত্যেক প্রাপক একটি স্বর্ণপদক, চার লাখ টাকার চেক ও প্রশংসাপত্র পান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম রোকেয়া স্বপ্ন দেখেছিলেন একদিন নারীরা বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট হবে, বিভিন্ন দায়িত্ব নেবে এবং সর্বত্র উপস্থিত থাকবে। ‘তিনি যা চেয়েছিলেন, আমরা এখন তা ধীরে ধীরে অর্জন করার পথে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে তার সরকার গঠনের পর উচ্চ আদালত, সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, সচিব, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি)ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পদসহ বিভিন্ন সেক্টর ও পদে নারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আজ সর্বত্র নারীর উপস্থিতি।
শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন আমরা অনেকাংশে বাস্তবায়ন করেছি। আজ যদি তিনি (বেগম রোকেয়া) বেঁচে থাকতেন, তবে তিনি খুশি হতেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তার (রোকেয়ার) নামে একটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তার জন্মস্থানে নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে।
আরও পড়ুন: বেগম রোকেয়া পদক বিতরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন ৫ নারী