প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজয়ের মাসে ১০০টি মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় তার কার্যালয়ে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
তিনি জনগণকে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন কাজের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি দেশের জনগণ অন্তত বিবেচনা করবে যে প্রায় ৩০ বছর (১৯৭৫-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৯) ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা কতটা উন্নয়ন করেছে এবং আওয়ামী লীগ সরকার কী করেছে।’
এক দিনে ১০০টি সেতু উদ্বোধনের দেড় মাসের মধ্যে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ৫০ জেলায় রেকর্ডসংখ্যক ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী একটি নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ও ভ্রমণের সময় কমানোর লক্ষ্যে এই সড়ক-মহাসড়কগুলো উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত দুই বছরে ১৪ হাজাত ৯১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি প্রকল্পের অধীনে দুই হাজার ২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যের মহাসড়কগুলো নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ৫০ জেলায় ১০০ সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার একদিনে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন করেছে এবং এর আগেও একদিনে ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করে। অতীতে কেউ এটা করতে পারে? না। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে ধ্বংস করেছে… আমি জানি না, যারা বলে আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে এর পরেও (১০০টি মহাসড়ক ও ১০০টি সেতু চালু করে) তাদের কথা মানুষ বিশ্বাস করবে কি না। এটাই আমার প্রশ্ন।’
নতুন সড়ক-মহাসড়কের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিভাগের ৬৫৩ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩২টি, খুলনা বিভাগে ৩৫২ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৫৮ দশমিক ৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৪টি, রংপুর বিভাগের ২০৩ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৫টি, রাজশাহী বিভাগের ১৯৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আটটি, ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ছয়টি, সিলেট বিভাগের ১০৬ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি এবং বরিশাল বিভাগের ১০৭ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি।
এর মধ্যে ৯৯টি মহাসড়ক সরকারি অর্থায়নে করা হয়েছে। অন্য একটি ৭০ কিলোমিটার জয়দেবপুর (গাজীপুর)- এলেঙ্গা (টাঙ্গাইল) চার লেনের মহাসড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়েছে বৈদেশিক ঋণ (তিন হাজার ২০৫ কোটি টাকা) ও সরকারি তহবিলের (দুই হাজার ৯৬৩ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা) সমন্বয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী নতুন ১০০টি মহাসড়কের বিষয়ে একটি উপস্থাপনা পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মের জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় তথ্য সংগ্রহ করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাঙ্গাইল ও খুলনা থেকে স্থানীয় সুবিধাভোগী এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অংশীজনদের এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে তিন হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, চার হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।
জাতীয় মহাসড়কগুলো রাজধানীকে বিভাগীয় শহর, সমুদ্র বন্দর, স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে। আঞ্চলিক মহাসড়কগুলো জেলা শহরগুলোকে নদী বন্দর ও স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। জেলা সড়কগুলো জেলা শহরকে উপজেলা বা এক উপজেলার সঙ্গে অন্য উপজেলাকে সংযুক্ত করে।
৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের ২৫টি জেলায় ৮,৭৯ দশমিক ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মোট পাঁচ হাজার ৪৯৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ১০০টি নবনির্মিত সেতু উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী