লাল, হলুদ ও সবুজ পতাকার পাশাপাশি নানা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে নিজেদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী এই কৃষকেরা জ্বালানি তেলের পাশাপাশি সারের দাম কমানোর দাবিও তুলেছেন।
তারা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের দাম বৃদ্ধির জন্য ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবদী সরকারকে দায়ী করছেন।
বিক্ষোভ মিছিলে কয়েকজন কৃষককে মরা মানুষের মাথার খুলি হাতে নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
তারা বলছেন, এসব মাথার খুলি ওইসব কৃষকের, যারা কৃষিকাজ করে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এবং তাদের বিধবা স্ত্রীরাও এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।
মিছিলে অনেক কৃষককেই গায়ের সব পোশাক খুলে নগ্ন হয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়, যদিও পরবর্তীতে মিছিলে নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের পরামর্শে তারা আবার পোশাক পরে নেন।
বিক্ষোভরত কৃষকদের দাবি, পার্লামেন্টে তাদের দাবির ব্যাপারে বিশেষ অধিবেশন করতে হবে। তবে বিক্ষোভ মিছিলটি পার্লামেন্টের কাছে নয়াদিল্লীর যন্ত্রর মন্ত্ররের সামনে গেলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন উল্লেখ করে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানারে কৃষকরা বলছেন, মোদি সরকার কৃষকদের খরচের এক থেকে দেড়গুণ উপার্জনের নিশ্চয়তা দিলেও বাস্তবে তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের প্রায় অর্ধেক বৃষ্টি নির্ভর কৃষির ওপরে নির্ভরশীল। কিন্তু এক্ষেত্রে আয় হ্রাসের ফলে বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতের অর্থনীতিতে মাত্র ১৫ শতাংশ অবদান রাখতে পারছে এ খাত।
কৃষি উৎপাদনের সাথে জড়িত অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির কৃষকরা বীজ, সার ও কীটনাশকসহ বিভিন্ন কিছু ক্রয়ের জন্য অতিরিক্ত সুদে ঋণ নিচ্ছেন।
কখনো কখনো কৃষকরা অতি প্রিয় বা সহায় সম্বলের অবলম্বন ভূমি বন্ধক রেখে ঋণ নেয়ায় এবং পরবর্তীতে তা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার মতো পথও বেছে নিচ্ছেন।
কৃষকদের এমন আন্দোলনকে সমর্থন করেন স্বনামধন্য কৃষি বিজ্ঞানী এম এস সোমনাথ। তারা মতে কৃষকরা সরকারের তেমন একটা দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
এক বিৃবতিতে এই কৃষি বিজ্ঞানী বলেন, কৃষিকদের এমন আন্দোলন কৃষিক্ষেত্রে অস্থিরতারই প্রমাণ করে। তবে তার মতে, শুধু বিক্ষোভ বা যুক্তিতে তাদের সমস্যার সমাধান মিলবে না।