দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে উইকেটের পেছনে থেকে দুটি ক্যাচ ও একটি স্ট্যাম্পিং আউট করার পর ব্যাট হাতে যখন ক্রিজে নামেন লিটন দাস, তখন রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপ। সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই ব্যাট হাতে রানের ফুল ফোটান তিনি। তারপর দ্বিতীয় ইনিংসে বোলারদের কৃতিত্বের পর ব্যাটিংয়ে নামাই লাগেনি এই ব্যাটারের, তার আগেই সিরিজ জয় করে তার কৃতিত্বের দারুণ প্রতিদান দিয়েছেন সতীর্থরা।
খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তুলে পাকিস্তানকে তাদের মাটিতেই হোয়াইট ওয়াশ করে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার দিনে দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ের নায়ক তাই লিটন কুমার দাস। তবে ম্যাচ জয়ের কৃতিত্বের সবটা একই নিতে চান না এই এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এই জয় দলীয় প্রচেষ্টার ফল। এই কৃতিত্ব সবার; কোচিং স্টাফদেরও ভূমিকা রয়েছে এই স্মরণীয় জয়ে। টেস্ট ম্যাচ জিততে হলে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- সব বিভাগেই ভালো করতে হয়।’
আরও পড়ুন: সিরিজসেরার প্রাইজমানি আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে উৎসর্গ করলেন মিরাজ
তিনি বলেন, ‘প্রথম টেস্টে আপনি দেখেছেন যে, জাকির যে ক্যাচটি নিয়েছিল এবং আমি বাবরের যে ক্যাচটি নিয়েছিলাম, সেখান থেকেই আমরা মোমেন্টাম পেয়ে যাই। দ্বিতীয় টেস্টের (নিজেদের ব্যাটিংয়ের) প্রথম অংশটুকু বাদ দিলে আমাদের প্রত্যেক ব্যাটারই ভালো ব্যাটিং করেছে। শুধু ব্যাটিং কেন, বোলিং-ফিল্ডিং সবই ভালো হয়েছে।’
‘আমরা যখন এখানে আসি, তখন সবকিছু ঠিকঠাক ছিল না। এখানে আসার পর আমরা সবাই কঠোর অনুশীলন করেছি।’
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে মিরাজের সঙ্গে রেকর্ড গড়া ইনিংসটির কারণেই ম্যাচটি জেতার মানসিকতা পায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের ২৬২ রানের মধ্যে একাই ১৩৮ রান করেন লিটন। তবে জুটিটি গড়ার জন্য মিরাজকেই বেশি কৃতিত্ব দিলেন তিনি।
‘আসলে কৃতিত্বটা মিরাজের। ব্যাটিংয়ে নেমেই প্রথম কয়েকটি বল ও যেভাবে মোকাবিলা করল, ৫ কি ৬টা বাউন্ডারি মেরেছিল মিরাজ, আর সেটিই আমাদের কাজ অনেকটা সহজ করে দিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: অনুভূতি প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না অধিনায়ক শান্ত
২৬ রানের মধ্যে বাংলাদেশের ৬ উইকেট তুলে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর হয়ে বল করছিল পাকিস্তানের বোলাররা। তাই যে কোনোভাবে ওদের মোমেন্টাম নষ্ট করাই লক্ষ্য ছিল বলে জানান লিটন।
তিনি বলেন, ‘(কনুইতে) আঘাত পাওয়ার কারণে আমি শুরুতে ঠিকমতো খেলতে পারছিলাম না। ওর (মিরাজ) মতো অতটা মারতে পারিনি। তবে ওর ওই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণেই চাপ অনেকটা কমে যায়। এরপর মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে আমরা নির্দ্বিধায় ব্যাটিং করে গিয়েছি।’
পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে ফিল্ডিংয়ে নেমেও অসাধারণ কিপিং করেন লিটন। পেসারদের গতি সামলে উইকেটের পেছন থেকে চারটি ক্যাচ নেন তিনি।