ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমানে লড়াই চালিয়ে গেল স্টুটগার্ট। এমনকি পিছিয়ে পড়েও দারুণ গোলে সমতায় ফিরে জয় খুঁজছিল দলটি, কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের চিরায়ত শেষের আক্রমণে আর পায়ের নিচে মাটি পেল না তারা। ফলে লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো জার্মান ক্লাবটিকে।
মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে সেবাস্তিয়ান হোয়েনেসের শিষ্যদের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের প্রথমার্ধ আটকে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রিয়ালকে এগিয়ে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। এরপর ৬৮তম মিনিটে স্টুটগার্টকে সমতায় ফেরান ডেনিস উনডাভ। তবে ৮৩তম মিনিটে আন্টোনিও রুয়েডিগার এবং যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেক ম্যাচেই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন এন্দ্রিক।
তবে স্কোরলাইন দেখে ম্যাচজুড়ে কী হয়েছে, তা বোঝার উপায় নেই।
এদিন বল দখলের লড়াইয়ে রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে ছিল স্টুটগার্ট (৫২ শতাংশ)। গোলে শট নেওয়ায়ও রিয়ালকে (৮টি) টক্কর দিয়েছে দলটি (৭টি)। তবে ম্যাচজুড়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। তার নৈপুণ্যের কারণেই বড় জয় পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে উল্টো হারতে হয়েছে স্টুটগার্টকে।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ড্র: আবারও বায়ার্নের সামনে বার্সা, লিভারপুলকে পেল রিয়াল
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে ওঠে স্টুটগার্ট। দ্বিতীয় মিনিটে ইয়ামি লেভেলিংয়ের পোস্টঘেঁষা নিচু শট প্রতিহত করেন থিবো কোর্তোয়া। এর দুই মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে আঙ্গেলো স্টিলারের বুলেট শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
পরের মিনিটে স্টুটগার্টের ফরাসি মিডফিল্ডার এনসো মিলোতের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। একাদশ মিনিটে লেভেলিংয়ের আরও একটি জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান কোর্তোয়া।
ত্রয়োদশ মিনিটে প্রথম গোলে শট নেয় রিয়াল মাদ্রিদ।আক্রমণে উঠে জোরালো শট নেন এমবাপ্পে, তবে বল সরাসরি গোলরক্ষকের কাছে চলে যায় বল। পরের মিনিটে মিলোতের আরও একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন কোর্তোয়া। এ সময় দারুণ একটি বাঁকানো শট নেন স্টুটগার্টের এই মিডফিল্ডার, কিন্তু বল ক্রসবারের কোণা দিয়ে ঢোকার মুখে হাত প্রসারিত করে কোনোমতে বল বাইরে বের করে দিয়ে রিয়ালকে পিছিয়ে পড়া থেকে বাঁচান দলটির অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।
৩১তম মিনিটে রদ্রিগোর ক্রসে বক্সের মধ্যে থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করেন অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি, কিন্তু ঝাঁপিয়ে তা ঠেকিয়ে দেন স্টুটগার্ট গোলরক্ষক আলেকজান্ডার নুইবেল।
দুই মিনিট পর স্টুটগার্টের এক ডিফেন্ডার বক্সের মধ্যে থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে আন্টোনিও রুয়েডিগারকে ফাউল করে বসেন, ফলে পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ভিএআর রিভিউয়ের পর পিচ সাইড মনিটরে রিপ্লে দেখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রেফারি।
এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় স্টুটগার্ট। কিন্তু স্টিলারের দেওয়া ক্রসে বক্সের মাঝ থেকে হেডার দিয়েও বল লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন উনডাভ।
এরপর আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি না হলে জাল অক্ষত রেখেই বিরতিতে যায় দুই দল।
প্রথমার্ধে রিয়ালের ওপর চোখ রাঙায় সেবাস্টিয়ান হোয়েনেশের শিষ্যরা। শুধু বল দখলেই রিয়ালের (৪৬ শতাংশ) চেয়ে এগিয়ে ছিল না তারা, প্রথমার্ধে আক্রমণেও তাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল ক্লাবটি। মোট ১৮টি শটের ৯টি লক্ষ্যে ছিল স্টুটগার্টের, অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদ প্রথমার্ধে মোট ১৫টি শট নেয়, যেখানে তাদেরও ৯টি শট লক্ষ্যে ছিল।