প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে নিজেদের বিশাল জনসংখ্যা থাকলেও, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
শনিবার প্রচারিত ভয়েস অব আমেরিকা এর বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে তারা (রোহিঙ্গারা) তাদের নাগরিক, তাদের তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।’
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এই বোঝা প্রায় একাই বহন করতে হবে। কিন্তু তারপরও, আমরা তাদের সব ধরনের সাহায্য করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা চাই তারা তাদের দেশে ফিরে যাক। কারণ এখনও শিশুরা জন্মগ্রহণ করছে এবং বড় হচ্ছে। তারা এই ক্যাম্পে বেড়ে ওঠার জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পায় না। শুধু তাই নয়, তাদের অনেকেই মাদক ব্যবসা, অস্ত্র পাচার ও মানব পাচারের মতো বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের একটি ভবিষ্যত আছে। তাই যত তাড়াতাড়ি তারা তাদের দেশে ফিরে যেতে পারবে, তারা আরও ভালো জীবনযাপন করতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি, তাই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি এবং আমরা তাদের জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাতে তারা মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি, আপনাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা, মানবাধিকার, বিদেশে খালেদার চিকিৎসা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সংবিধানসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনেকগুলো প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের যৌথ বাহিনী সেখানে টহল দিচ্ছে, পুলিশ, সেনাবাহিনী, অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সীমান্তরক্ষী সবাই সেখানে সক্রিয় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরের উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছি। সেখানে যারা বসবাস করছেন তারা অনেক ভালো আছেন। সেখানে তারা তেমন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন না। তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, জীবিকার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে, স্কুল, চিকিৎসা কেন্দ্র সবই আছে।’