চট্টগ্রামের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে দু'পক্ষের সংঘর্ষে বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১১ মে) বিকালে নগরীর কোতোয়ালি থানার নন্দনকাননের বৌদ্ধ মন্দির দখল নিয় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-অপু বড়ুয়া, শিমুল বড়ুয়া, অজিত বড়ুয়া, আদর্শ বড়ুয়া, নিপুতি বড়ুয়া, স্বপন বড়ুয়া ও প্রাণ মৃগাংক বড়ুয়া।
জানা গেছে, বৌদ্ধ মন্দিরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছে।
ভিক্ষুদের অভিযোগ আজ সকাল ১১টার দিকে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির নেতারা এসে বিহারের আসন থেকে বৌদ্ধ মূর্তিকে সরিয়ে তারা সেখানেই বসে যায়। তালা ঝুলিয়ে দেয় বিহারে। বিহারে টাঙ্গিয়ে দেয় ব্যানার। দুপুর আড়াইটার পরপর ভিক্ষু নেতারা জড়ো হলে শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা।
মূলত বিহারকে নিজের দখলে নিতেই সমিতির নেতাদের এমন কর্মকাণ্ড বলে অভিযোগ তাদের। তবে, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষ ক্ষোভ জানিয়ে বলেন বিহারের থাকবে ভিক্ষুরা, নেতারা নয়। এ নিয়ে দুই পক্ষ হাতাহাতি মারামারিতে লিপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: রামুর বৌদ্ধ বিহারে আগুন
খবর পেয়ে বিকালে এক পক্ষকে পুলিশ বিহার থেকে বের করে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় আহত ও অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, সন্ধ্যার দিকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে বিহারের সামনে মানববন্ধন করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা জানায়, দুই মাস আগে বিহারের কিছু সম্পত্তি নিয়ে বৌদ্ধ সমিতির নেতদের সঙ্গে তাদের বিরোধ হয়। এটা নিয়ে ৮ মার্চ মারামারির পর বিহার থেকে বৌদ্ধ সমিতির নেতাদের বের করে দেওয়া হয়। আজ শনিবার তারা আবার বিহারের দখল নিতে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
নন্দনকানন বিহারের উপাধ্যক্ষ জিনুবোধি ভিক্ষু বলেন, ‘বৌদ্ধ বিহার কারো সম্পত্তি নয়। কোন সংগঠন করার জায়গাও না। কিন্তু একটা সংগঠন ভিক্ষুদের উপর হামলা করে বিহার দখলে নিতে চায়।’
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল হক জানান, বিহারের দখল ধরে রাখা নিয়ে দুই মাস থেকে ঝামেলা চলছিল। দুপুর থেকে দুইপক্ষ মুখোমুখি হয়। বিকালে হাতাহাতি থেকে মারামারিতে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ এক পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধ বিহার দখল বেদখল নিয়ে গত ৮ মার্চ দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন: রামুর রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনে মুগ্ধ সফররত কূটনীতিকরা